মোকাবিলা
ইসলাম ডেস্ক
রমজান কোরআন তিলাওয়াতের মাস। এ মাসে পুরো বিশ্বের মসজিদগুলোতে ও মুসলমানদের ঘরে ঘরে কোরআন তিলাওয়াত করতে শোনা যায়। বিশেষ করে রমজানের ‘মোকাবিলা’ অনুষ্ঠান মুসলমানদের হাজার বছরের ঐতিহ্য।
একাধিক ব্যক্তির একে অন্যকে কোরআন তিলাওয়াত করে শোনানোর এক বিশেষ পদ্ধতিই মোকাবিলা। ইসলামি বিশ্বাসমতে, মোকাবিলা প্রথম সম্পাদিত হয়েছিল মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর মধ্যে। সেখান থেকেই মুসলিম বিশ্বে এটি রমজানের স্থায়ী ঐতিহ্য হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এমনকি ইউরোপের মসজিদগুলোতেও কারিদের সুরেলা কণ্ঠের তিলাওয়াত শোনা যায়। তিলাওয়াতের সব নিয়মকানুন মেনেই মোকাবিলা অনুষ্ঠানে কোরআন তিলাওয়াত করা হয়।
বিশুদ্ধ হাদিস অনুসারে, মহানবী (সা.) মৃত্যুর আগের রমজানে দুটি মোকাবিলা সম্পন্ন করেছিলেন। যেহেতু কোরআন রমজান মাসেই নাজিল হয়েছিল, তাই নবী (সা.) প্রথমে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর তিলাওয়াত শুনতেন, এরপর তিনি নিজেই জিবরাইল (আ.)-কে ওই অংশ তিলাওয়াত করে শোনাতেন।
সাহাবায়ে কেরাম ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও রমজানে মোকাবিলার আয়োজন করতেন। হাদিসে এসেছে, মহানবী (স.) ভালো তিলাওয়াত করতে পারেন এমন সাহাবিদের তিলাওয়াত শুনতেন এবং কখনো কখনো অশ্রুসজল হয়ে পড়তেন।
এরপর ঐতিহ্যটি ইসলামের সঙ্গে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তী খলিফা ও সুলতানরা এর বিশ্বস্ত প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। ইতিহাসবিদ ইবনে খাল্লিকান বলেন, ‘আব্বাসীয় রাজবংশের পঞ্চম খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী জুবাইদা প্রায় ১০০ জন কোরআনের হাফেজ খাদেম ছিলেন, যাঁরা প্রাসাদে কোরআন তিলাওয়াত করতেন।
ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত তোপকাপি প্রাসাদ জাদুঘরের যে অংশে মহানবী (সা.)-এর স্মৃতিবিজড়িত পবিত্র নিদর্শনগুলো সংরক্ষিত আছে, সেখানে দিনের প্রায় প্রতি ঘণ্টায় কোরআন তিলাওয়াত করার এই ঐতিহ্য আজও অব্যাহত রয়েছে।
আজও মুসলিম বিশ্বে মোকাবিলা ঐতিহ্য টিকে আছে, যা মহানবী (সা.) ও সাহাবিদের যুগে ছিল। কিছু বলকান দেশে, যেমন মেসিডোনিয়ায়, রমজানের আগে থেকেই মোকাবিলা শুরু হয়।
ইস্তাম্বুলের ওল্ড সিটিতে রমজানের ১৫ দিন আগেই মসজিদে মোকাবিলার আয়োজন শুরু হয়। উসমানি আমলে মসজিদের খাদেমকে ‘কুজান’ বলা হতো। নামাজের আগে পবিত্র কোরআন থেকে এক পারা তিলাওয়াত করা তাঁদের অন্যতম দায়িত্ব ছিল। এ ছাড়া কিছু বড় প্রাসাদে সুরেলা কণ্ঠের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের নিযুক্ত করা হতো, যাঁরা সেহরির পর তিলাওয়াত করতেন।
ইস্তাম্বুলের আইয়ুব সুলতান মসজিদের মোকাবিলার এক ঐশ্বরিক ক্ষমতা ছিল বলে বিশ্বাস করা হতো। এমনকি সাধারণ লোকজনও রমজানের সময় মসজিদের তিলাওয়াতে যোগ দিতেন। সুলতানও কখনো কখনো এসব কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।
এখনো তুরস্কে মোকাবিলার আয়োজন করা হয়। সাধারণত রমজানের প্রথম দিনেই শুরু হয় এবং ঈদের এক দিন আগে তা সম্পন্ন হয়। ইস্তাম্বুলে, বিশেষ করে বড় মসজিদগুলোতে, বিখ্যাত হাফেজরা এখনো রমজানের সময় ঐতিহ্যটি পালন করেন। নারীরা বাড়ির ভেতরে সমবেত হয়ে মোকাবিলার আয়োজন করেন।
মিসরে মসজিদ, বাড়ি, রেডিও ও টেলিভিশনে বিখ্যাত কারি ও হাফেজদের তিলাওয়াত শোনেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। কিছু রেডিও স্টেশন ধারাবাহিকভাবে কোরআন তিলাওয়াত সম্প্রচার করে।
উপমহাদেশেও মোকাবিলার প্রচলন রয়েছে। তবে তা মোকাবিলা হিসেবে প্রসিদ্ধ নয়। মসজিদ, মাদ্রাসা, বাড়িঘর, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদিতে ধারাবাহিক কোরআন তিলাওয়াতের আয়োজনকে যে নামেই ডাকা হোক, আদতে তা মোকাবিলারই ধারাবাহিকতা।
রমজান কোরআন তিলাওয়াতের মাস। এ মাসে পুরো বিশ্বের মসজিদগুলোতে ও মুসলমানদের ঘরে ঘরে কোরআন তিলাওয়াত করতে শোনা যায়। বিশেষ করে রমজানের ‘মোকাবিলা’ অনুষ্ঠান মুসলমানদের হাজার বছরের ঐতিহ্য।
একাধিক ব্যক্তির একে অন্যকে কোরআন তিলাওয়াত করে শোনানোর এক বিশেষ পদ্ধতিই মোকাবিলা। ইসলামি বিশ্বাসমতে, মোকাবিলা প্রথম সম্পাদিত হয়েছিল মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর মধ্যে। সেখান থেকেই মুসলিম বিশ্বে এটি রমজানের স্থায়ী ঐতিহ্য হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এমনকি ইউরোপের মসজিদগুলোতেও কারিদের সুরেলা কণ্ঠের তিলাওয়াত শোনা যায়। তিলাওয়াতের সব নিয়মকানুন মেনেই মোকাবিলা অনুষ্ঠানে কোরআন তিলাওয়াত করা হয়।
বিশুদ্ধ হাদিস অনুসারে, মহানবী (সা.) মৃত্যুর আগের রমজানে দুটি মোকাবিলা সম্পন্ন করেছিলেন। যেহেতু কোরআন রমজান মাসেই নাজিল হয়েছিল, তাই নবী (সা.) প্রথমে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর তিলাওয়াত শুনতেন, এরপর তিনি নিজেই জিবরাইল (আ.)-কে ওই অংশ তিলাওয়াত করে শোনাতেন।
সাহাবায়ে কেরাম ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও রমজানে মোকাবিলার আয়োজন করতেন। হাদিসে এসেছে, মহানবী (স.) ভালো তিলাওয়াত করতে পারেন এমন সাহাবিদের তিলাওয়াত শুনতেন এবং কখনো কখনো অশ্রুসজল হয়ে পড়তেন।
এরপর ঐতিহ্যটি ইসলামের সঙ্গে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তী খলিফা ও সুলতানরা এর বিশ্বস্ত প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। ইতিহাসবিদ ইবনে খাল্লিকান বলেন, ‘আব্বাসীয় রাজবংশের পঞ্চম খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী জুবাইদা প্রায় ১০০ জন কোরআনের হাফেজ খাদেম ছিলেন, যাঁরা প্রাসাদে কোরআন তিলাওয়াত করতেন।
ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত তোপকাপি প্রাসাদ জাদুঘরের যে অংশে মহানবী (সা.)-এর স্মৃতিবিজড়িত পবিত্র নিদর্শনগুলো সংরক্ষিত আছে, সেখানে দিনের প্রায় প্রতি ঘণ্টায় কোরআন তিলাওয়াত করার এই ঐতিহ্য আজও অব্যাহত রয়েছে।
আজও মুসলিম বিশ্বে মোকাবিলা ঐতিহ্য টিকে আছে, যা মহানবী (সা.) ও সাহাবিদের যুগে ছিল। কিছু বলকান দেশে, যেমন মেসিডোনিয়ায়, রমজানের আগে থেকেই মোকাবিলা শুরু হয়।
ইস্তাম্বুলের ওল্ড সিটিতে রমজানের ১৫ দিন আগেই মসজিদে মোকাবিলার আয়োজন শুরু হয়। উসমানি আমলে মসজিদের খাদেমকে ‘কুজান’ বলা হতো। নামাজের আগে পবিত্র কোরআন থেকে এক পারা তিলাওয়াত করা তাঁদের অন্যতম দায়িত্ব ছিল। এ ছাড়া কিছু বড় প্রাসাদে সুরেলা কণ্ঠের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের নিযুক্ত করা হতো, যাঁরা সেহরির পর তিলাওয়াত করতেন।
ইস্তাম্বুলের আইয়ুব সুলতান মসজিদের মোকাবিলার এক ঐশ্বরিক ক্ষমতা ছিল বলে বিশ্বাস করা হতো। এমনকি সাধারণ লোকজনও রমজানের সময় মসজিদের তিলাওয়াতে যোগ দিতেন। সুলতানও কখনো কখনো এসব কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।
এখনো তুরস্কে মোকাবিলার আয়োজন করা হয়। সাধারণত রমজানের প্রথম দিনেই শুরু হয় এবং ঈদের এক দিন আগে তা সম্পন্ন হয়। ইস্তাম্বুলে, বিশেষ করে বড় মসজিদগুলোতে, বিখ্যাত হাফেজরা এখনো রমজানের সময় ঐতিহ্যটি পালন করেন। নারীরা বাড়ির ভেতরে সমবেত হয়ে মোকাবিলার আয়োজন করেন।
মিসরে মসজিদ, বাড়ি, রেডিও ও টেলিভিশনে বিখ্যাত কারি ও হাফেজদের তিলাওয়াত শোনেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। কিছু রেডিও স্টেশন ধারাবাহিকভাবে কোরআন তিলাওয়াত সম্প্রচার করে।
উপমহাদেশেও মোকাবিলার প্রচলন রয়েছে। তবে তা মোকাবিলা হিসেবে প্রসিদ্ধ নয়। মসজিদ, মাদ্রাসা, বাড়িঘর, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদিতে ধারাবাহিক কোরআন তিলাওয়াতের আয়োজনকে যে নামেই ডাকা হোক, আদতে তা মোকাবিলারই ধারাবাহিকতা।
মানুষ সামাজিক জীব। একা চলা তার স্বভাব নয়। জীবনের চলার পথে তাই একজন প্রকৃত বন্ধুর প্রয়োজন হয়, যে পাশে থাকবে বিপদে-আপদে, সুখে-দুঃখে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সবাই কি বন্ধুত্বের যোগ্য? ইসলাম এ বিষয়ে দিয়েছে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা।
৩ ঘণ্টা আগেএকটি সাধারণ দৃশ্য আমরা প্রায়শই দেখি—আজান দেওয়ার সময় মুয়াজ্জিন কানে আঙুল প্রবেশ করিয়ে উচ্চ আওয়াজে আজান দিচ্ছেন। অনেকেই এটি আবশ্যক মনে করেন, আবার কেউ কেউ এটিকে ঐচ্ছিক বা বর্জনযোগ্য বলে থাকেন। এই লেখায় আমরা কানে আঙুল দেওয়ার এ পদ্ধতির শরয়ি ভিত্তি, হাদিস, ওলামায়ে কেরামের ব্যাখ্যা এবং সমকালীন...
১৯ ঘণ্টা আগেইতিহাস কখনো নিছক কাহিনি নয়, কখনো কখনো তা হয়ে ওঠে অনুভূতির প্রতীক। মদিনার অদূরে অবস্থিত এক নিঃশব্দ পাহাড় তেমনই এক ইতিহাসের সাক্ষী। এটি শুধু মাটি-পাথরের সমষ্টি নয়; বরং এই পাহাড় ইসলামের প্রথম যুগের বীরত্ব, আত্মত্যাগ, কষ্ট ও ভালোবাসার জীবন্ত স্মারক। রাসুলুল্লাহ (সা.) যাকে বলেছিলেন, ‘উহুদ...
১ দিন আগেজীবনে প্রিয়জন হারানো এক অপূরণীয় বেদনা। এই কঠিন মুহূর্তে মানুষ কীভাবে আচরণ করবে, কেমনভাবে শোক প্রকাশ করবে—সেই বিষয়ে ইসলাম দিয়েছে পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা। ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো—শোক প্রকাশে ভারসাম্য রাখা, কষ্টকে অস্বীকার না করা, আবার সীমালঙ্ঘনও না করা।
১ দিন আগে