কাউসার লাবীব

সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস। মুসলিম ঐক্যের ভিত্তি তিনটি মৌলিক উপাদানের ওপর প্রতিষ্ঠিত: এক. আল্লাহ, দুই. রাসুলুল্লাহ ও তিন. কিতাবুল্লাহ। যার অর্থ—এক আল্লাহর প্রতি অবিচল ইমান, তাঁর রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসা ও সম্পূর্ণ আনুগত্য এবং আল্লাহর কিতাব পবিত্র কোরআনের পরিপূর্ণ অনুসরণ। এই ভিত্তিই মুসলমানদের জাতি, বর্ণ ও ভাষার ঊর্ধ্বে এক অভিন্ন জাতিসত্তায় পরিণত করে।
মহানবী (সা.) মুমিনের পরিচয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন, ‘যারা আমাদের নামাজ মানে, আমাদের কিবলা মানে এবং আমাদের জবাই করা হালাল পশুকে হালাল মনে করে; তারা মুসলিম। তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল জিম্মাদার। সুতরাং তোমরা আল্লাহর জিম্মাদারি খিয়ানত কোরো না।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮৪-৩৮৫)।
ঐক্যবদ্ধ থাকার সুফল
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে মুমিনদের ঐক্য ও সংহতির বিষয়ে বারবার জোর দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে সম্মিলিতভাবে ধারণ করো, পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো। যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের অন্তরগুলোয় প্রীতি দিয়েছেন, ফলে তোমরা তাঁর অনুগ্রহে ভ্রাতৃরূপ লাভ করেছ।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৩)। এখানে আল্লাহর রজ্জু বলতে ইসলাম ও কোরআনের বিধানকে বোঝানো হয়েছে, যা একাধারে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক এবং মুসলমানদের পরস্পরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হওয়ার মাধ্যম।
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা সতর্ক করে বলেন, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো এবং পরস্পর কলহ কোরো না (ঐক্যবদ্ধ থাকো)। অন্যথায় তোমরা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব বিলুপ্ত হবে। আর তোমরা ধৈর্য ধরো, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা আনফাল: ৪৬)। এই আয়াত পরিষ্কারভাবে বোঝায় যে অনৈক্য কেবল গুনাহের কাজ নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর শক্তি, প্রতিপত্তি ও সুনাম নষ্টের প্রধান কারণ।
ইসলামে মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ককে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় মুমিনেরা পরস্পর ভাই ভাই। কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আশা করা যায় তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হবে।’ (সুরা হুজরাত: ১০)। এই সম্পর্কের নিদর্শন হলো পারস্পরিক সহানুভূতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতা।
মহানবী (সা.) এই সম্পর্কের গভীরতাকে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাসী মুমিনগণ সম্প্রীতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতায় যেন এক দেহ এক প্রাণ—যেমন শরীরের একটি অঙ্গে আঘাত পেলে সারা অঙ্গ ব্যথা অনুভব করে, যন্ত্রণায় নির্ঘুম রাত কাটায় ও জ্বরে ঘর্মাক্ত হয়।’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)। অর্থাৎ, একজন মুসলিমের বিপদ বা দুঃখকে অপর মুসলিম তার নিজের কষ্ট হিসেবে অনুভব করবে—এটাই ইসলামের শিক্ষা। মহানবী (সা.)-এর ভাষায়, প্রকৃত মুমিন তো সেই ব্যক্তি, যার হাত ও জবান থেকে অন্য মুসলমান শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করে।’ (সহিহ বুখারি)।
বিভেদ ও মতানৈক্য নিরসনের পথ
মুসলমানদের মধ্যে মতপার্থক্য বা দ্বন্দ্ব-বিবাদ থাকা স্বাভাবিক। তবে ইসলামে এই মতানৈক্য বহাল রেখে বিচ্ছিন্ন থাকার কোনো সুযোগ নেই। মতবিরোধের সৃষ্টি হলে এর সমাধানের জন্য কোরআন ও সুন্নাহর প্রতি প্রত্যাবর্তন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর কোনো বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ করো, তাহলে তা আল্লাহ ও রাসুলের দিকে প্রত্যর্পণ করো, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমান রাখো। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর।’ (সুরা নিসা: ৫৯)। এ ছাড়া, বিবাদ দেখা দিলে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে পবিত্র কোরআনে। বলা হয়েছে, নিজেদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে নেওয়ার কথা।
অনৈক্যের পরিণাম ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
বর্তমানে মুসলিম উম্মাহ অনৈক্য, বিভেদ-বিসংবাদ ও কলহে জর্জরিত। ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত বিভাজন আজ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। এর ফলস্বরূপ, সারা বিশ্বে মুসলমানেরা নিপীড়িত-নির্যাতিত এবং তাদের রক্ত ঝরছে। এই বিভেদ জিইয়ে রাখা শয়তানের কাজ, যা উম্মাহর মধ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
ইতিহাস সাক্ষী, ঐক্যই শক্তি। পশ্চিমা শক্তিগুলো যখন তাদের ঐতিহাসিক শত্রুতা ভুলে নিজেদের স্বার্থে একই প্ল্যাটফর্মে সমবেত হয়, তখন মুসলিম দেশগুলো নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ ও বিভাজনে ডুবে থাকে। মুসলিম ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ না থাকার কারণেই বহির্বিশ্বে আজ মুসলিমরা তাদের ন্যায্য অধিকার হারাচ্ছে, নিজ ভূখণ্ডে দাসে পরিণত হচ্ছে এবং মজলুমদের কান্না থামছে না।
আখিরাতে মুক্তি ও দুনিয়ায় সফলতার জন্য পারস্পরিক ঐক্য ও সংহতি অপরিহার্য। সকল ভেদাভেদ, বিভেদ-বিভাজন ভুলে এক জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকা মুমিনের ইমানি দায়িত্ব। বিভেদ নয়, বরং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে সহিষ্ণুতা ও কল্যাণকামিতার ভিত্তিতে জীবন পরিচালনা করতে পারলেই আমরা আল্লাহর ভালোবাসার পাত্র হতে পারব এবং বহিঃশত্রুর সামনে সিসাঢালা প্রাচীরের মতো শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হতে পারব।

সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস। মুসলিম ঐক্যের ভিত্তি তিনটি মৌলিক উপাদানের ওপর প্রতিষ্ঠিত: এক. আল্লাহ, দুই. রাসুলুল্লাহ ও তিন. কিতাবুল্লাহ। যার অর্থ—এক আল্লাহর প্রতি অবিচল ইমান, তাঁর রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসা ও সম্পূর্ণ আনুগত্য এবং আল্লাহর কিতাব পবিত্র কোরআনের পরিপূর্ণ অনুসরণ। এই ভিত্তিই মুসলমানদের জাতি, বর্ণ ও ভাষার ঊর্ধ্বে এক অভিন্ন জাতিসত্তায় পরিণত করে।
মহানবী (সা.) মুমিনের পরিচয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন, ‘যারা আমাদের নামাজ মানে, আমাদের কিবলা মানে এবং আমাদের জবাই করা হালাল পশুকে হালাল মনে করে; তারা মুসলিম। তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল জিম্মাদার। সুতরাং তোমরা আল্লাহর জিম্মাদারি খিয়ানত কোরো না।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮৪-৩৮৫)।
ঐক্যবদ্ধ থাকার সুফল
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে মুমিনদের ঐক্য ও সংহতির বিষয়ে বারবার জোর দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে সম্মিলিতভাবে ধারণ করো, পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো। যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের অন্তরগুলোয় প্রীতি দিয়েছেন, ফলে তোমরা তাঁর অনুগ্রহে ভ্রাতৃরূপ লাভ করেছ।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৩)। এখানে আল্লাহর রজ্জু বলতে ইসলাম ও কোরআনের বিধানকে বোঝানো হয়েছে, যা একাধারে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক এবং মুসলমানদের পরস্পরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হওয়ার মাধ্যম।
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা সতর্ক করে বলেন, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো এবং পরস্পর কলহ কোরো না (ঐক্যবদ্ধ থাকো)। অন্যথায় তোমরা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব বিলুপ্ত হবে। আর তোমরা ধৈর্য ধরো, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা আনফাল: ৪৬)। এই আয়াত পরিষ্কারভাবে বোঝায় যে অনৈক্য কেবল গুনাহের কাজ নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর শক্তি, প্রতিপত্তি ও সুনাম নষ্টের প্রধান কারণ।
ইসলামে মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ককে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় মুমিনেরা পরস্পর ভাই ভাই। কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আশা করা যায় তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হবে।’ (সুরা হুজরাত: ১০)। এই সম্পর্কের নিদর্শন হলো পারস্পরিক সহানুভূতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতা।
মহানবী (সা.) এই সম্পর্কের গভীরতাকে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাসী মুমিনগণ সম্প্রীতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতায় যেন এক দেহ এক প্রাণ—যেমন শরীরের একটি অঙ্গে আঘাত পেলে সারা অঙ্গ ব্যথা অনুভব করে, যন্ত্রণায় নির্ঘুম রাত কাটায় ও জ্বরে ঘর্মাক্ত হয়।’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)। অর্থাৎ, একজন মুসলিমের বিপদ বা দুঃখকে অপর মুসলিম তার নিজের কষ্ট হিসেবে অনুভব করবে—এটাই ইসলামের শিক্ষা। মহানবী (সা.)-এর ভাষায়, প্রকৃত মুমিন তো সেই ব্যক্তি, যার হাত ও জবান থেকে অন্য মুসলমান শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করে।’ (সহিহ বুখারি)।
বিভেদ ও মতানৈক্য নিরসনের পথ
মুসলমানদের মধ্যে মতপার্থক্য বা দ্বন্দ্ব-বিবাদ থাকা স্বাভাবিক। তবে ইসলামে এই মতানৈক্য বহাল রেখে বিচ্ছিন্ন থাকার কোনো সুযোগ নেই। মতবিরোধের সৃষ্টি হলে এর সমাধানের জন্য কোরআন ও সুন্নাহর প্রতি প্রত্যাবর্তন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর কোনো বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ করো, তাহলে তা আল্লাহ ও রাসুলের দিকে প্রত্যর্পণ করো, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমান রাখো। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর।’ (সুরা নিসা: ৫৯)। এ ছাড়া, বিবাদ দেখা দিলে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে পবিত্র কোরআনে। বলা হয়েছে, নিজেদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে নেওয়ার কথা।
অনৈক্যের পরিণাম ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
বর্তমানে মুসলিম উম্মাহ অনৈক্য, বিভেদ-বিসংবাদ ও কলহে জর্জরিত। ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত বিভাজন আজ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। এর ফলস্বরূপ, সারা বিশ্বে মুসলমানেরা নিপীড়িত-নির্যাতিত এবং তাদের রক্ত ঝরছে। এই বিভেদ জিইয়ে রাখা শয়তানের কাজ, যা উম্মাহর মধ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
ইতিহাস সাক্ষী, ঐক্যই শক্তি। পশ্চিমা শক্তিগুলো যখন তাদের ঐতিহাসিক শত্রুতা ভুলে নিজেদের স্বার্থে একই প্ল্যাটফর্মে সমবেত হয়, তখন মুসলিম দেশগুলো নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ ও বিভাজনে ডুবে থাকে। মুসলিম ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ না থাকার কারণেই বহির্বিশ্বে আজ মুসলিমরা তাদের ন্যায্য অধিকার হারাচ্ছে, নিজ ভূখণ্ডে দাসে পরিণত হচ্ছে এবং মজলুমদের কান্না থামছে না।
আখিরাতে মুক্তি ও দুনিয়ায় সফলতার জন্য পারস্পরিক ঐক্য ও সংহতি অপরিহার্য। সকল ভেদাভেদ, বিভেদ-বিভাজন ভুলে এক জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকা মুমিনের ইমানি দায়িত্ব। বিভেদ নয়, বরং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে সহিষ্ণুতা ও কল্যাণকামিতার ভিত্তিতে জীবন পরিচালনা করতে পারলেই আমরা আল্লাহর ভালোবাসার পাত্র হতে পারব এবং বহিঃশত্রুর সামনে সিসাঢালা প্রাচীরের মতো শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হতে পারব।

কাউসার লাবীব

সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস। মুসলিম ঐক্যের ভিত্তি তিনটি মৌলিক উপাদানের ওপর প্রতিষ্ঠিত: এক. আল্লাহ, দুই. রাসুলুল্লাহ ও তিন. কিতাবুল্লাহ। যার অর্থ—এক আল্লাহর প্রতি অবিচল ইমান, তাঁর রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসা ও সম্পূর্ণ আনুগত্য এবং আল্লাহর কিতাব পবিত্র কোরআনের পরিপূর্ণ অনুসরণ। এই ভিত্তিই মুসলমানদের জাতি, বর্ণ ও ভাষার ঊর্ধ্বে এক অভিন্ন জাতিসত্তায় পরিণত করে।
মহানবী (সা.) মুমিনের পরিচয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন, ‘যারা আমাদের নামাজ মানে, আমাদের কিবলা মানে এবং আমাদের জবাই করা হালাল পশুকে হালাল মনে করে; তারা মুসলিম। তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল জিম্মাদার। সুতরাং তোমরা আল্লাহর জিম্মাদারি খিয়ানত কোরো না।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮৪-৩৮৫)।
ঐক্যবদ্ধ থাকার সুফল
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে মুমিনদের ঐক্য ও সংহতির বিষয়ে বারবার জোর দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে সম্মিলিতভাবে ধারণ করো, পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো। যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের অন্তরগুলোয় প্রীতি দিয়েছেন, ফলে তোমরা তাঁর অনুগ্রহে ভ্রাতৃরূপ লাভ করেছ।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৩)। এখানে আল্লাহর রজ্জু বলতে ইসলাম ও কোরআনের বিধানকে বোঝানো হয়েছে, যা একাধারে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক এবং মুসলমানদের পরস্পরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হওয়ার মাধ্যম।
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা সতর্ক করে বলেন, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো এবং পরস্পর কলহ কোরো না (ঐক্যবদ্ধ থাকো)। অন্যথায় তোমরা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব বিলুপ্ত হবে। আর তোমরা ধৈর্য ধরো, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা আনফাল: ৪৬)। এই আয়াত পরিষ্কারভাবে বোঝায় যে অনৈক্য কেবল গুনাহের কাজ নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর শক্তি, প্রতিপত্তি ও সুনাম নষ্টের প্রধান কারণ।
ইসলামে মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ককে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় মুমিনেরা পরস্পর ভাই ভাই। কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আশা করা যায় তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হবে।’ (সুরা হুজরাত: ১০)। এই সম্পর্কের নিদর্শন হলো পারস্পরিক সহানুভূতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতা।
মহানবী (সা.) এই সম্পর্কের গভীরতাকে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাসী মুমিনগণ সম্প্রীতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতায় যেন এক দেহ এক প্রাণ—যেমন শরীরের একটি অঙ্গে আঘাত পেলে সারা অঙ্গ ব্যথা অনুভব করে, যন্ত্রণায় নির্ঘুম রাত কাটায় ও জ্বরে ঘর্মাক্ত হয়।’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)। অর্থাৎ, একজন মুসলিমের বিপদ বা দুঃখকে অপর মুসলিম তার নিজের কষ্ট হিসেবে অনুভব করবে—এটাই ইসলামের শিক্ষা। মহানবী (সা.)-এর ভাষায়, প্রকৃত মুমিন তো সেই ব্যক্তি, যার হাত ও জবান থেকে অন্য মুসলমান শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করে।’ (সহিহ বুখারি)।
বিভেদ ও মতানৈক্য নিরসনের পথ
মুসলমানদের মধ্যে মতপার্থক্য বা দ্বন্দ্ব-বিবাদ থাকা স্বাভাবিক। তবে ইসলামে এই মতানৈক্য বহাল রেখে বিচ্ছিন্ন থাকার কোনো সুযোগ নেই। মতবিরোধের সৃষ্টি হলে এর সমাধানের জন্য কোরআন ও সুন্নাহর প্রতি প্রত্যাবর্তন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর কোনো বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ করো, তাহলে তা আল্লাহ ও রাসুলের দিকে প্রত্যর্পণ করো, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমান রাখো। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর।’ (সুরা নিসা: ৫৯)। এ ছাড়া, বিবাদ দেখা দিলে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে পবিত্র কোরআনে। বলা হয়েছে, নিজেদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে নেওয়ার কথা।
অনৈক্যের পরিণাম ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
বর্তমানে মুসলিম উম্মাহ অনৈক্য, বিভেদ-বিসংবাদ ও কলহে জর্জরিত। ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত বিভাজন আজ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। এর ফলস্বরূপ, সারা বিশ্বে মুসলমানেরা নিপীড়িত-নির্যাতিত এবং তাদের রক্ত ঝরছে। এই বিভেদ জিইয়ে রাখা শয়তানের কাজ, যা উম্মাহর মধ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
ইতিহাস সাক্ষী, ঐক্যই শক্তি। পশ্চিমা শক্তিগুলো যখন তাদের ঐতিহাসিক শত্রুতা ভুলে নিজেদের স্বার্থে একই প্ল্যাটফর্মে সমবেত হয়, তখন মুসলিম দেশগুলো নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ ও বিভাজনে ডুবে থাকে। মুসলিম ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ না থাকার কারণেই বহির্বিশ্বে আজ মুসলিমরা তাদের ন্যায্য অধিকার হারাচ্ছে, নিজ ভূখণ্ডে দাসে পরিণত হচ্ছে এবং মজলুমদের কান্না থামছে না।
আখিরাতে মুক্তি ও দুনিয়ায় সফলতার জন্য পারস্পরিক ঐক্য ও সংহতি অপরিহার্য। সকল ভেদাভেদ, বিভেদ-বিভাজন ভুলে এক জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকা মুমিনের ইমানি দায়িত্ব। বিভেদ নয়, বরং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে সহিষ্ণুতা ও কল্যাণকামিতার ভিত্তিতে জীবন পরিচালনা করতে পারলেই আমরা আল্লাহর ভালোবাসার পাত্র হতে পারব এবং বহিঃশত্রুর সামনে সিসাঢালা প্রাচীরের মতো শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হতে পারব।

সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস। মুসলিম ঐক্যের ভিত্তি তিনটি মৌলিক উপাদানের ওপর প্রতিষ্ঠিত: এক. আল্লাহ, দুই. রাসুলুল্লাহ ও তিন. কিতাবুল্লাহ। যার অর্থ—এক আল্লাহর প্রতি অবিচল ইমান, তাঁর রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসা ও সম্পূর্ণ আনুগত্য এবং আল্লাহর কিতাব পবিত্র কোরআনের পরিপূর্ণ অনুসরণ। এই ভিত্তিই মুসলমানদের জাতি, বর্ণ ও ভাষার ঊর্ধ্বে এক অভিন্ন জাতিসত্তায় পরিণত করে।
মহানবী (সা.) মুমিনের পরিচয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন, ‘যারা আমাদের নামাজ মানে, আমাদের কিবলা মানে এবং আমাদের জবাই করা হালাল পশুকে হালাল মনে করে; তারা মুসলিম। তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল জিম্মাদার। সুতরাং তোমরা আল্লাহর জিম্মাদারি খিয়ানত কোরো না।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮৪-৩৮৫)।
ঐক্যবদ্ধ থাকার সুফল
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে মুমিনদের ঐক্য ও সংহতির বিষয়ে বারবার জোর দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে সম্মিলিতভাবে ধারণ করো, পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো। যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের অন্তরগুলোয় প্রীতি দিয়েছেন, ফলে তোমরা তাঁর অনুগ্রহে ভ্রাতৃরূপ লাভ করেছ।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৩)। এখানে আল্লাহর রজ্জু বলতে ইসলাম ও কোরআনের বিধানকে বোঝানো হয়েছে, যা একাধারে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক এবং মুসলমানদের পরস্পরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হওয়ার মাধ্যম।
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা সতর্ক করে বলেন, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো এবং পরস্পর কলহ কোরো না (ঐক্যবদ্ধ থাকো)। অন্যথায় তোমরা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব বিলুপ্ত হবে। আর তোমরা ধৈর্য ধরো, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা আনফাল: ৪৬)। এই আয়াত পরিষ্কারভাবে বোঝায় যে অনৈক্য কেবল গুনাহের কাজ নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর শক্তি, প্রতিপত্তি ও সুনাম নষ্টের প্রধান কারণ।
ইসলামে মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ককে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় মুমিনেরা পরস্পর ভাই ভাই। কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আশা করা যায় তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হবে।’ (সুরা হুজরাত: ১০)। এই সম্পর্কের নিদর্শন হলো পারস্পরিক সহানুভূতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতা।
মহানবী (সা.) এই সম্পর্কের গভীরতাকে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাসী মুমিনগণ সম্প্রীতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতায় যেন এক দেহ এক প্রাণ—যেমন শরীরের একটি অঙ্গে আঘাত পেলে সারা অঙ্গ ব্যথা অনুভব করে, যন্ত্রণায় নির্ঘুম রাত কাটায় ও জ্বরে ঘর্মাক্ত হয়।’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)। অর্থাৎ, একজন মুসলিমের বিপদ বা দুঃখকে অপর মুসলিম তার নিজের কষ্ট হিসেবে অনুভব করবে—এটাই ইসলামের শিক্ষা। মহানবী (সা.)-এর ভাষায়, প্রকৃত মুমিন তো সেই ব্যক্তি, যার হাত ও জবান থেকে অন্য মুসলমান শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করে।’ (সহিহ বুখারি)।
বিভেদ ও মতানৈক্য নিরসনের পথ
মুসলমানদের মধ্যে মতপার্থক্য বা দ্বন্দ্ব-বিবাদ থাকা স্বাভাবিক। তবে ইসলামে এই মতানৈক্য বহাল রেখে বিচ্ছিন্ন থাকার কোনো সুযোগ নেই। মতবিরোধের সৃষ্টি হলে এর সমাধানের জন্য কোরআন ও সুন্নাহর প্রতি প্রত্যাবর্তন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর কোনো বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ করো, তাহলে তা আল্লাহ ও রাসুলের দিকে প্রত্যর্পণ করো, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমান রাখো। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর।’ (সুরা নিসা: ৫৯)। এ ছাড়া, বিবাদ দেখা দিলে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে পবিত্র কোরআনে। বলা হয়েছে, নিজেদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে নেওয়ার কথা।
অনৈক্যের পরিণাম ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
বর্তমানে মুসলিম উম্মাহ অনৈক্য, বিভেদ-বিসংবাদ ও কলহে জর্জরিত। ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত বিভাজন আজ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। এর ফলস্বরূপ, সারা বিশ্বে মুসলমানেরা নিপীড়িত-নির্যাতিত এবং তাদের রক্ত ঝরছে। এই বিভেদ জিইয়ে রাখা শয়তানের কাজ, যা উম্মাহর মধ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
ইতিহাস সাক্ষী, ঐক্যই শক্তি। পশ্চিমা শক্তিগুলো যখন তাদের ঐতিহাসিক শত্রুতা ভুলে নিজেদের স্বার্থে একই প্ল্যাটফর্মে সমবেত হয়, তখন মুসলিম দেশগুলো নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ ও বিভাজনে ডুবে থাকে। মুসলিম ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ না থাকার কারণেই বহির্বিশ্বে আজ মুসলিমরা তাদের ন্যায্য অধিকার হারাচ্ছে, নিজ ভূখণ্ডে দাসে পরিণত হচ্ছে এবং মজলুমদের কান্না থামছে না।
আখিরাতে মুক্তি ও দুনিয়ায় সফলতার জন্য পারস্পরিক ঐক্য ও সংহতি অপরিহার্য। সকল ভেদাভেদ, বিভেদ-বিভাজন ভুলে এক জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকা মুমিনের ইমানি দায়িত্ব। বিভেদ নয়, বরং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে সহিষ্ণুতা ও কল্যাণকামিতার ভিত্তিতে জীবন পরিচালনা করতে পারলেই আমরা আল্লাহর ভালোবাসার পাত্র হতে পারব এবং বহিঃশত্রুর সামনে সিসাঢালা প্রাচীরের মতো শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হতে পারব।


আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।
৯ ঘণ্টা আগে
জমাদিউল আউয়ালের দ্বিতীয় জুমা আমাদের শেখায়—জীবনের প্রতিটি জুমা হতে পারে একটি নতুন শুরু, যদি আমরা অন্তর দিয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার চেষ্টা করি। তাই এই জুমা হোক আত্মার জাগরণের সূচনা। পাপমুক্ত জীবনের শপথ, আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রেরণা।
১০ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত কুড়িগ্রাম জেলা তার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এই জেলার উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নে দাঁড়িয়ে আছে অনন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন—প্রাচীন কাজির মসজিদ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই মসজিদটি এ অঞ্চলের ইসলামিক ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং স্থানীয়...
১০ ঘণ্টা আগে
মানবতার ধর্ম ইসলাম। মানবজীবনের সব ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ বিধান দিয়েছে ইসলাম। শক্তি-সামর্থ্য, অর্থ-সম্পদ ও সময়-সুযোগ—সবকিছুতেই মিতব্যয় ও মধ্যপন্থা অবলম্বন দুনিয়ায় শান্তি এবং পরকালে মুক্তির জন্য অপরিহার্য। কোনো কিছুতেই বাড়াবাড়ি ও সীমা লঙ্ঘন অনুমোদিত নয়।
১০ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।
আলমগীর দেওয়ান, সিলেট
আপনার ২৫ বছরের দাম্পত্যজীবনে সন্তান লাভের আকাঙ্ক্ষা এবং সন্তানহীনতার শূন্যতা পূরণে একটি শিশুকে লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত মানবিক ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ইসলাম আপনার এই মহৎ সিদ্ধান্তকে শুধু অনুমোদনই করে না, বরং এতিম, গৃহহীন বা অসহায় শিশুর অভিভাবকত্ব নিয়ে তাকে যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাকে অত্যন্ত সওয়াবের কাজ হিসেবে উৎসাহিত করে। তবে শরিয়তের কিছু মৌলিক নীতিমালা মেনে এটি করতে হবে, যা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
দত্তক নিলে মানতে হবে যেসব বিধান
ইসলামে অন্য কারও সন্তানকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ, মমতা, অন্ন, বস্ত্র ও শিক্ষা দিয়ে লালন-পালন করাকে কাফালাহ বা অভিভাবকত্ব গ্রহণ বলা হয়। এটি বৈধ, বলা যায় এটি একটি মহৎ ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এতিম বা অসহায় শিশুর দায়িত্ব নেওয়াকে বিপুল সওয়াবের কাজ বলে ঘোষণা করেছেন। (সহিহ বুখারি: ৬০০৫)
তবে সাধারণ অর্থে প্রচলিত দত্তক প্রথা ইসলাম সমর্থন করে না, যেখানে সন্তানের আসল পিতামাতার পরিচয় মুছে ফেলা হয় এবং তাকে জৈবিক সন্তানের মতো সকল আইনি অধিকার (উত্তরাধিকার ও পর্দা) দেওয়া হয়। বরং ইসলাম অনুমোদন করে কাফালাহ, যার মূল শর্ত হলো শিশুর আসল পিতৃপরিচয় বহাল রাখা।
ইসলামে কোনো স্বাধীন মানুষের প্রকৃত পিতৃপরিচয় ছিন্ন করা সম্পূর্ণভাবে হারাম ও কবিরা গুনাহ। দত্তক নেওয়ার কারণে শিশুর আসল মা-বাবা ও বংশের সম্পর্ক কোনোভাবেই বিলুপ্ত হবে না। তাই শিশুর জন্মসনদ, শিক্ষাসনদ, ভোটার আইডি বা অন্য যেকোনো দাপ্তরিক দলিলে তার আসল পিতার নাম উল্লেখ করা আবশ্যক।
দত্তক নেওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হলো পর্দার বিষয়টি। লালন-পালনকারীর সঙ্গে পালিত সন্তানের রক্তের সম্পর্ক স্থাপিত হয় না। ফলে পালক নেওয়া শিশুটি ছেলে হলে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তাকে পালক মায়ের সঙ্গে এবং মেয়ে হলে পালক বাবার সঙ্গে শরিয়তের পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে চলতে হবে। পর্দার এই কঠোরতা এড়ানোর জন্য সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো—শিশুটিকে দুগ্ধপোষ্য অবস্থায় (জন্মের পর প্রথম দুই বছরের মধ্যে) পালক নেওয়া মায়ের কোনো বোন বা মেয়ে দ্বারা এমনভাবে দুধ পান করানো, যাতে সে দুগ্ধ-সম্পর্কীয় মাহরাম হয়ে যায়। দুগ্ধ-সম্পর্ক তৈরি হলে তাদের মধ্যে পর্দা আর আবশ্যক থাকবে না। (সহিহ বুখারি: ২৬৪৫)
পালক সন্তান লালন-পালনকারীর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারী (ওয়ারিশ) হিসেবে তাঁর সম্পত্তি থেকে কোনো অংশ পাবে না। কারণ রক্তের সম্পর্ক না থাকায় সে মিরাসের হকদার হয় না। তবে, লালন-পালনকারী তাঁর জীবদ্দশায় স্নেহবশত পালক সন্তানকে সম্পত্তি দান বা হেবা করতে পারবেন। অথবা, তিনি তাঁর মোট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ থেকে পালক সন্তানের জন্য অসিয়ত (উইল) করে যেতে পারবেন।
পোষ্য সন্তানের তার লালন-পালনকারীকে সম্মান ও কৃতজ্ঞতাবশত মা-বাবা বলে ডাকা জায়েজ। একইভাবে তাঁরাও সন্তানকে স্নেহ করে ছেলেমেয়ে ডাকতে পারবেন।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।
আলমগীর দেওয়ান, সিলেট
আপনার ২৫ বছরের দাম্পত্যজীবনে সন্তান লাভের আকাঙ্ক্ষা এবং সন্তানহীনতার শূন্যতা পূরণে একটি শিশুকে লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত মানবিক ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ইসলাম আপনার এই মহৎ সিদ্ধান্তকে শুধু অনুমোদনই করে না, বরং এতিম, গৃহহীন বা অসহায় শিশুর অভিভাবকত্ব নিয়ে তাকে যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাকে অত্যন্ত সওয়াবের কাজ হিসেবে উৎসাহিত করে। তবে শরিয়তের কিছু মৌলিক নীতিমালা মেনে এটি করতে হবে, যা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
দত্তক নিলে মানতে হবে যেসব বিধান
ইসলামে অন্য কারও সন্তানকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ, মমতা, অন্ন, বস্ত্র ও শিক্ষা দিয়ে লালন-পালন করাকে কাফালাহ বা অভিভাবকত্ব গ্রহণ বলা হয়। এটি বৈধ, বলা যায় এটি একটি মহৎ ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এতিম বা অসহায় শিশুর দায়িত্ব নেওয়াকে বিপুল সওয়াবের কাজ বলে ঘোষণা করেছেন। (সহিহ বুখারি: ৬০০৫)
তবে সাধারণ অর্থে প্রচলিত দত্তক প্রথা ইসলাম সমর্থন করে না, যেখানে সন্তানের আসল পিতামাতার পরিচয় মুছে ফেলা হয় এবং তাকে জৈবিক সন্তানের মতো সকল আইনি অধিকার (উত্তরাধিকার ও পর্দা) দেওয়া হয়। বরং ইসলাম অনুমোদন করে কাফালাহ, যার মূল শর্ত হলো শিশুর আসল পিতৃপরিচয় বহাল রাখা।
ইসলামে কোনো স্বাধীন মানুষের প্রকৃত পিতৃপরিচয় ছিন্ন করা সম্পূর্ণভাবে হারাম ও কবিরা গুনাহ। দত্তক নেওয়ার কারণে শিশুর আসল মা-বাবা ও বংশের সম্পর্ক কোনোভাবেই বিলুপ্ত হবে না। তাই শিশুর জন্মসনদ, শিক্ষাসনদ, ভোটার আইডি বা অন্য যেকোনো দাপ্তরিক দলিলে তার আসল পিতার নাম উল্লেখ করা আবশ্যক।
দত্তক নেওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হলো পর্দার বিষয়টি। লালন-পালনকারীর সঙ্গে পালিত সন্তানের রক্তের সম্পর্ক স্থাপিত হয় না। ফলে পালক নেওয়া শিশুটি ছেলে হলে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তাকে পালক মায়ের সঙ্গে এবং মেয়ে হলে পালক বাবার সঙ্গে শরিয়তের পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে চলতে হবে। পর্দার এই কঠোরতা এড়ানোর জন্য সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো—শিশুটিকে দুগ্ধপোষ্য অবস্থায় (জন্মের পর প্রথম দুই বছরের মধ্যে) পালক নেওয়া মায়ের কোনো বোন বা মেয়ে দ্বারা এমনভাবে দুধ পান করানো, যাতে সে দুগ্ধ-সম্পর্কীয় মাহরাম হয়ে যায়। দুগ্ধ-সম্পর্ক তৈরি হলে তাদের মধ্যে পর্দা আর আবশ্যক থাকবে না। (সহিহ বুখারি: ২৬৪৫)
পালক সন্তান লালন-পালনকারীর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারী (ওয়ারিশ) হিসেবে তাঁর সম্পত্তি থেকে কোনো অংশ পাবে না। কারণ রক্তের সম্পর্ক না থাকায় সে মিরাসের হকদার হয় না। তবে, লালন-পালনকারী তাঁর জীবদ্দশায় স্নেহবশত পালক সন্তানকে সম্পত্তি দান বা হেবা করতে পারবেন। অথবা, তিনি তাঁর মোট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ থেকে পালক সন্তানের জন্য অসিয়ত (উইল) করে যেতে পারবেন।
পোষ্য সন্তানের তার লালন-পালনকারীকে সম্মান ও কৃতজ্ঞতাবশত মা-বাবা বলে ডাকা জায়েজ। একইভাবে তাঁরাও সন্তানকে স্নেহ করে ছেলেমেয়ে ডাকতে পারবেন।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক


সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস।
১০ ঘণ্টা আগে
জমাদিউল আউয়ালের দ্বিতীয় জুমা আমাদের শেখায়—জীবনের প্রতিটি জুমা হতে পারে একটি নতুন শুরু, যদি আমরা অন্তর দিয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার চেষ্টা করি। তাই এই জুমা হোক আত্মার জাগরণের সূচনা। পাপমুক্ত জীবনের শপথ, আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রেরণা।
১০ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত কুড়িগ্রাম জেলা তার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এই জেলার উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নে দাঁড়িয়ে আছে অনন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন—প্রাচীন কাজির মসজিদ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই মসজিদটি এ অঞ্চলের ইসলামিক ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং স্থানীয়...
১০ ঘণ্টা আগে
মানবতার ধর্ম ইসলাম। মানবজীবনের সব ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ বিধান দিয়েছে ইসলাম। শক্তি-সামর্থ্য, অর্থ-সম্পদ ও সময়-সুযোগ—সবকিছুতেই মিতব্যয় ও মধ্যপন্থা অবলম্বন দুনিয়ায় শান্তি এবং পরকালে মুক্তির জন্য অপরিহার্য। কোনো কিছুতেই বাড়াবাড়ি ও সীমা লঙ্ঘন অনুমোদিত নয়।
১০ ঘণ্টা আগেডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

হিজরি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। এ মাসের নামেই রয়েছে গভীর এক ইঙ্গিত। জমাদাহ অর্থ শুষ্কতা, আর আউয়াল মানে প্রথম। যেমন প্রকৃতি শুষ্ক হয়ে বৃষ্টি পেলে সজীব হয়, তেমনি মানুষের হৃদয়ও অনেক সময় আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে গিয়ে শুকিয়ে যায়।
এ মাসের দ্বিতীয় জুমা সেই শুষ্ক হৃদয়কে নরম করার, আত্মাকে জাগ্রত করার সময়।
জুমা-রহমত ও বরকতের দিন
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান দেওয়া হয়, তখন আল্লাহর স্মরণের দিকে ছুটে যাও এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ত্যাগ করো।’ (সুরা জুমা: ৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, আল্লাহ তা কবুল করেন।’ (সহিহ্ বুখারি: ৯৩৫)। অতএব, জুমা কেবল নামাজের দিন নয়—এটি আল্লাহর রহমত, ক্ষমা ও দোয়া কবুলের বিশেষ সময়।
পরিশেষে, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর দিকে আন্তরিক তওবা করো। (সুরা তাহরিম: ৮)
জমাদিউল আউয়ালের দ্বিতীয় জুমা আমাদের শেখায়—জীবনের প্রতিটি জুমা হতে পারে একটি নতুন শুরু, যদি আমরা অন্তর দিয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার চেষ্টা করি। তাই এই জুমা হোক আত্মার জাগরণের সূচনা। পাপমুক্ত জীবনের শপথ, আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রেরণা।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগীকল্যাণ সোসাইটি

হিজরি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। এ মাসের নামেই রয়েছে গভীর এক ইঙ্গিত। জমাদাহ অর্থ শুষ্কতা, আর আউয়াল মানে প্রথম। যেমন প্রকৃতি শুষ্ক হয়ে বৃষ্টি পেলে সজীব হয়, তেমনি মানুষের হৃদয়ও অনেক সময় আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে গিয়ে শুকিয়ে যায়।
এ মাসের দ্বিতীয় জুমা সেই শুষ্ক হৃদয়কে নরম করার, আত্মাকে জাগ্রত করার সময়।
জুমা-রহমত ও বরকতের দিন
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান দেওয়া হয়, তখন আল্লাহর স্মরণের দিকে ছুটে যাও এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ত্যাগ করো।’ (সুরা জুমা: ৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, আল্লাহ তা কবুল করেন।’ (সহিহ্ বুখারি: ৯৩৫)। অতএব, জুমা কেবল নামাজের দিন নয়—এটি আল্লাহর রহমত, ক্ষমা ও দোয়া কবুলের বিশেষ সময়।
পরিশেষে, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর দিকে আন্তরিক তওবা করো। (সুরা তাহরিম: ৮)
জমাদিউল আউয়ালের দ্বিতীয় জুমা আমাদের শেখায়—জীবনের প্রতিটি জুমা হতে পারে একটি নতুন শুরু, যদি আমরা অন্তর দিয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার চেষ্টা করি। তাই এই জুমা হোক আত্মার জাগরণের সূচনা। পাপমুক্ত জীবনের শপথ, আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রেরণা।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগীকল্যাণ সোসাইটি


সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস।
১০ ঘণ্টা আগে
আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।
৯ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত কুড়িগ্রাম জেলা তার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এই জেলার উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নে দাঁড়িয়ে আছে অনন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন—প্রাচীন কাজির মসজিদ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই মসজিদটি এ অঞ্চলের ইসলামিক ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং স্থানীয়...
১০ ঘণ্টা আগে
মানবতার ধর্ম ইসলাম। মানবজীবনের সব ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ বিধান দিয়েছে ইসলাম। শক্তি-সামর্থ্য, অর্থ-সম্পদ ও সময়-সুযোগ—সবকিছুতেই মিতব্যয় ও মধ্যপন্থা অবলম্বন দুনিয়ায় শান্তি এবং পরকালে মুক্তির জন্য অপরিহার্য। কোনো কিছুতেই বাড়াবাড়ি ও সীমা লঙ্ঘন অনুমোদিত নয়।
১০ ঘণ্টা আগেমোখতারুল ইসলাম মিলন

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত কুড়িগ্রাম জেলা তার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এই জেলার উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নে দাঁড়িয়ে আছে অনন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন—প্রাচীন কাজির মসজিদ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই মসজিদটি এ অঞ্চলের ইসলামিক ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং স্থানীয় মুসলিমদের ধর্মীয় কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
কাজির মসজিদ কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার অন্তর্গত দলদলিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত। উলিপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পশ্চিমে এই প্রাচীন মসজিদটির অবস্থান। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃত। রংপুর বিভাগের এই অঞ্চলে ইসলামিক স্থাপত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাসে এই মসজিদের রয়েছে অনন্য মর্যাদা।
কাজির মসজিদের নির্মাণকাল নিয়ে ইতিহাসবিদদের বিভিন্ন মত রয়েছে। তবে স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য ও স্থানীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী ধারণা করা হয় যে এই মসজিদ মধ্যযুগীয় সুলতানি বা প্রাক্-মোগল আমলে নির্মিত হয়েছিল। মসজিদের নামকরণ থেকেই বোঝা যায় এটি সম্ভবত কোনো স্থানীয় কাজির সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। মধ্যযুগে কাজিরা ছিলেন ইসলামিক আইনের বিচারক এবং ধর্মীয় নেতা। তাঁরা তাঁদের এলাকায় ইসলামিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন। এই অঞ্চলে ইসলামের প্রসার ঘটেছিল প্রধানত সুফি সাধকদের প্রচেষ্টায়। সুলতানি আমলে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে যেমন মসজিদ ও খানকাহ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, তেমনি উত্তরবঙ্গেও ইসলামিক স্থাপত্যের নিদর্শন গড়ে উঠেছিল। কাজির মসজিদ সেই ঐতিহ্যেরই একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
যদিও কালের আবর্তনে মসজিদের মূল কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন এসেছে, তবু এর প্রাচীন স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের চিহ্ন দৃশ্যমান। বাংলার সুলতানি আমলের মসজিদগুলোর সাধারণ বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিল রেখে এই মসজিদেও পুরু দেয়াল, খিলানাকৃতির দরজা ও জানালা এবং টেরাকোটার অলংকরণের নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। স্থানীয় উপাদান ব্যবহার করে নির্মিত এই মসজিদে বাংলার ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যরীতির প্রভাব স্পষ্ট। মসজিদের মিহরাব ও মিম্বরের কাজে শিল্পকুশলতার পরিচয় মেলে। দেয়ালের গাঁথুনিতে ব্যবহৃত ইট ও চুন-সুরকির মিশ্রণ সেকালের নির্মাণকৌশলের প্রমাণ বহন করে। মসজিদের চারপাশে একসময় যে প্রাচীর ও অন্যান্য স্থাপনা ছিল, তার অবশেষ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়।
কুড়িগ্রামের প্রাচীন কাজির মসজিদ বাংলাদেশের ইসলামিক ঐতিহ্যের একটি অমূল্য নিদর্শন। এটি কেবল প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা নয়, বরং জীবন্ত ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, যা আজও স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই মসজিদের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের মধ্যযুগীয় ইসলামিক সভ্যতা ও স্থাপত্যের এক অনন্য দিক সম্পর্কে জানতে পারি। আজকের যুগে যখন আধুনিকতার ঢেউয়ে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন হারিয়ে যাচ্ছে, তখন কাজির মসজিদের মতো প্রাচীন স্থাপনা আমাদের অতীতের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করতে সাহায্য করছে। এই মসজিদ সংরক্ষণ ও এর ইতিহাস চর্চার মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পৌঁছে দিতে পারি। প্রাচীন কাজির মসজিদ তাই শুধু কুড়িগ্রামের নয়, সমগ্র বাংলাদেশের একটি গর্বের সম্পদ। এর যথাযথ সংরক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে আগামী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা সম্ভব।
লেখক: শিক্ষার্থী, শরীফবাগ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা, ধামরাই, ঢাকা।

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত কুড়িগ্রাম জেলা তার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এই জেলার উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নে দাঁড়িয়ে আছে অনন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন—প্রাচীন কাজির মসজিদ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই মসজিদটি এ অঞ্চলের ইসলামিক ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং স্থানীয় মুসলিমদের ধর্মীয় কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
কাজির মসজিদ কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার অন্তর্গত দলদলিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত। উলিপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পশ্চিমে এই প্রাচীন মসজিদটির অবস্থান। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃত। রংপুর বিভাগের এই অঞ্চলে ইসলামিক স্থাপত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাসে এই মসজিদের রয়েছে অনন্য মর্যাদা।
কাজির মসজিদের নির্মাণকাল নিয়ে ইতিহাসবিদদের বিভিন্ন মত রয়েছে। তবে স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য ও স্থানীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী ধারণা করা হয় যে এই মসজিদ মধ্যযুগীয় সুলতানি বা প্রাক্-মোগল আমলে নির্মিত হয়েছিল। মসজিদের নামকরণ থেকেই বোঝা যায় এটি সম্ভবত কোনো স্থানীয় কাজির সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। মধ্যযুগে কাজিরা ছিলেন ইসলামিক আইনের বিচারক এবং ধর্মীয় নেতা। তাঁরা তাঁদের এলাকায় ইসলামিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন। এই অঞ্চলে ইসলামের প্রসার ঘটেছিল প্রধানত সুফি সাধকদের প্রচেষ্টায়। সুলতানি আমলে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে যেমন মসজিদ ও খানকাহ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, তেমনি উত্তরবঙ্গেও ইসলামিক স্থাপত্যের নিদর্শন গড়ে উঠেছিল। কাজির মসজিদ সেই ঐতিহ্যেরই একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
যদিও কালের আবর্তনে মসজিদের মূল কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন এসেছে, তবু এর প্রাচীন স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের চিহ্ন দৃশ্যমান। বাংলার সুলতানি আমলের মসজিদগুলোর সাধারণ বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিল রেখে এই মসজিদেও পুরু দেয়াল, খিলানাকৃতির দরজা ও জানালা এবং টেরাকোটার অলংকরণের নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। স্থানীয় উপাদান ব্যবহার করে নির্মিত এই মসজিদে বাংলার ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যরীতির প্রভাব স্পষ্ট। মসজিদের মিহরাব ও মিম্বরের কাজে শিল্পকুশলতার পরিচয় মেলে। দেয়ালের গাঁথুনিতে ব্যবহৃত ইট ও চুন-সুরকির মিশ্রণ সেকালের নির্মাণকৌশলের প্রমাণ বহন করে। মসজিদের চারপাশে একসময় যে প্রাচীর ও অন্যান্য স্থাপনা ছিল, তার অবশেষ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়।
কুড়িগ্রামের প্রাচীন কাজির মসজিদ বাংলাদেশের ইসলামিক ঐতিহ্যের একটি অমূল্য নিদর্শন। এটি কেবল প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা নয়, বরং জীবন্ত ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, যা আজও স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই মসজিদের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের মধ্যযুগীয় ইসলামিক সভ্যতা ও স্থাপত্যের এক অনন্য দিক সম্পর্কে জানতে পারি। আজকের যুগে যখন আধুনিকতার ঢেউয়ে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন হারিয়ে যাচ্ছে, তখন কাজির মসজিদের মতো প্রাচীন স্থাপনা আমাদের অতীতের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করতে সাহায্য করছে। এই মসজিদ সংরক্ষণ ও এর ইতিহাস চর্চার মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পৌঁছে দিতে পারি। প্রাচীন কাজির মসজিদ তাই শুধু কুড়িগ্রামের নয়, সমগ্র বাংলাদেশের একটি গর্বের সম্পদ। এর যথাযথ সংরক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে আগামী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা সম্ভব।
লেখক: শিক্ষার্থী, শরীফবাগ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা, ধামরাই, ঢাকা।


সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস।
১০ ঘণ্টা আগে
আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।
৯ ঘণ্টা আগে
জমাদিউল আউয়ালের দ্বিতীয় জুমা আমাদের শেখায়—জীবনের প্রতিটি জুমা হতে পারে একটি নতুন শুরু, যদি আমরা অন্তর দিয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার চেষ্টা করি। তাই এই জুমা হোক আত্মার জাগরণের সূচনা। পাপমুক্ত জীবনের শপথ, আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রেরণা।
১০ ঘণ্টা আগে
মানবতার ধর্ম ইসলাম। মানবজীবনের সব ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ বিধান দিয়েছে ইসলাম। শক্তি-সামর্থ্য, অর্থ-সম্পদ ও সময়-সুযোগ—সবকিছুতেই মিতব্যয় ও মধ্যপন্থা অবলম্বন দুনিয়ায় শান্তি এবং পরকালে মুক্তির জন্য অপরিহার্য। কোনো কিছুতেই বাড়াবাড়ি ও সীমা লঙ্ঘন অনুমোদিত নয়।
১০ ঘণ্টা আগেআব্দুল্লাহ আফফান

মানবতার ধর্ম ইসলাম। মানবজীবনের সব ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ বিধান দিয়েছে ইসলাম। শক্তি-সামর্থ্য, অর্থ-সম্পদ ও সময়-সুযোগ—সবকিছুতেই মিতব্যয় ও মধ্যপন্থা অবলম্বন দুনিয়ায় শান্তি এবং পরকালে মুক্তির জন্য অপরিহার্য। কোনো কিছুতেই বাড়াবাড়ি ও সীমা লঙ্ঘন অনুমোদিত নয়।
মধ্যপন্থা ও মিতব্যয় মুমিনের গুণ। মিতব্যয় আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের মিতব্যয়ী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। সুরা বনি ইসরাইলের ২৯ নম্বর আয়াতে তিনি বলেন, ‘তুমি একেবারে ব্যয়কুণ্ঠ (কৃপণ) হয়ো না, আবার একেবারে হাতখোলা হয়ো না; তাহলে তুমি তিরস্কৃত ও নিঃস্ব হয়ে বসে থাকবে।’
এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, মহান আল্লাহর নিয়ামতগুলো তাঁর নির্দেশিত পদ্ধতিতে ভোগ করতে হয়, অন্যথায় মানুষকে বিপদ-আপদ, অভাব-অনটনের সম্মুখীন হতে হয়, রিজিকের বরকত উঠে যায়। তাই মানুষের উচিত, আল্লাহর নিয়ামতগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা। অপব্যয় ও কৃপণতা থেকে বিরত থাকা।
সুরা আরাফের ৩১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা খাও ও পান করো এবং অপব্যয় কোরো না। আল্লাহ অপব্যয়কারীকে পছন্দ করেন না।’
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা অপব্যয় করতে নিষেধ করেছেন। এ ছাড়া রাসুলে কারিম (সা.)ও অপব্যয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ছিলেন। একবার তিনি সাদ (রা.)-কে অজুর মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি ব্যয় করতে দেখে বলেন, ‘হে সাদ, অপচয় করছ কেন?’ সাদ (রা.) বলেন, ‘অজুতে কি অপচয় হয়?’ নবীজি (সা.) বলেন, ‘হ্যাঁ। প্রবহমান নদীতে বসেও যদি তুমি অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করো, তা অপচয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪২৫)
মিতব্যয়ী হলে মহান আল্লাহ দারিদ্র্যমুক্ত জীবন দান করবেন। এমনটাই বোঝা যায় রাসুল (সা.)-এর এই হাদিস থেকে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে কারিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পরিমিত ব্যয় করে, সে নিঃস্ব হয় না।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৭/৩০৩)। অর্থাৎ যে ব্যক্তি অর্থব্যয়ে পরিমিতবোধের চর্চা করবে, অনটন তার নাগাল পাবে না।
আমরা অনেক সময় অনর্থক খরচ করি। লোকদেখানো খরচ করি। আল্লাহর দেওয়া রিজিক আমরা যথাযথভাবে খরচ করি না। অপব্যয় করি। এগুলো আল্লাহ তাআলা পছন্দ করেন না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের তিন বস্তু পছন্দ করেন আর তিন বস্তু অপছন্দ করেন। আল্লাহর পছন্দনীয় বিষয়গুলো হলো—তাঁর ইবাদত করা, তাঁর সঙ্গে কাউকে অংশীদার না করা এবং সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকা বা বিচ্ছিন্ন না হওয়া। আর আল্লাহর অপছন্দের বিষয় তিনটি হলো, অহেতুক কথা বলা, অহেতুক প্রশ্ন করা ও অনর্থক সম্পদ বিনষ্ট করা। (সহিহ মুসলিম: ১৭১৫)
আমাদের আচার-আচরণে, আয়-উপার্জনে, ব্যয়ে ও দানে মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে হবে। পিতামাতা, ভাইবোন ও স্ত্রী-সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় করতে হবে। এসব ব্যয়ের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, অনর্থক খরচ যেন না হয়। আমাদের উচিত মিতব্যয়ী হওয়া, কখনো অপচয় না করা। আল্লাহ তাআলা অপচয়কারীর ব্যাপারে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান নিজ প্রতিপালকের প্রতি ঘোর অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ২৭)

মানবতার ধর্ম ইসলাম। মানবজীবনের সব ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ বিধান দিয়েছে ইসলাম। শক্তি-সামর্থ্য, অর্থ-সম্পদ ও সময়-সুযোগ—সবকিছুতেই মিতব্যয় ও মধ্যপন্থা অবলম্বন দুনিয়ায় শান্তি এবং পরকালে মুক্তির জন্য অপরিহার্য। কোনো কিছুতেই বাড়াবাড়ি ও সীমা লঙ্ঘন অনুমোদিত নয়।
মধ্যপন্থা ও মিতব্যয় মুমিনের গুণ। মিতব্যয় আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের মিতব্যয়ী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। সুরা বনি ইসরাইলের ২৯ নম্বর আয়াতে তিনি বলেন, ‘তুমি একেবারে ব্যয়কুণ্ঠ (কৃপণ) হয়ো না, আবার একেবারে হাতখোলা হয়ো না; তাহলে তুমি তিরস্কৃত ও নিঃস্ব হয়ে বসে থাকবে।’
এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, মহান আল্লাহর নিয়ামতগুলো তাঁর নির্দেশিত পদ্ধতিতে ভোগ করতে হয়, অন্যথায় মানুষকে বিপদ-আপদ, অভাব-অনটনের সম্মুখীন হতে হয়, রিজিকের বরকত উঠে যায়। তাই মানুষের উচিত, আল্লাহর নিয়ামতগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা। অপব্যয় ও কৃপণতা থেকে বিরত থাকা।
সুরা আরাফের ৩১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা খাও ও পান করো এবং অপব্যয় কোরো না। আল্লাহ অপব্যয়কারীকে পছন্দ করেন না।’
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা অপব্যয় করতে নিষেধ করেছেন। এ ছাড়া রাসুলে কারিম (সা.)ও অপব্যয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ছিলেন। একবার তিনি সাদ (রা.)-কে অজুর মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি ব্যয় করতে দেখে বলেন, ‘হে সাদ, অপচয় করছ কেন?’ সাদ (রা.) বলেন, ‘অজুতে কি অপচয় হয়?’ নবীজি (সা.) বলেন, ‘হ্যাঁ। প্রবহমান নদীতে বসেও যদি তুমি অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করো, তা অপচয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪২৫)
মিতব্যয়ী হলে মহান আল্লাহ দারিদ্র্যমুক্ত জীবন দান করবেন। এমনটাই বোঝা যায় রাসুল (সা.)-এর এই হাদিস থেকে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে কারিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পরিমিত ব্যয় করে, সে নিঃস্ব হয় না।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৭/৩০৩)। অর্থাৎ যে ব্যক্তি অর্থব্যয়ে পরিমিতবোধের চর্চা করবে, অনটন তার নাগাল পাবে না।
আমরা অনেক সময় অনর্থক খরচ করি। লোকদেখানো খরচ করি। আল্লাহর দেওয়া রিজিক আমরা যথাযথভাবে খরচ করি না। অপব্যয় করি। এগুলো আল্লাহ তাআলা পছন্দ করেন না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের তিন বস্তু পছন্দ করেন আর তিন বস্তু অপছন্দ করেন। আল্লাহর পছন্দনীয় বিষয়গুলো হলো—তাঁর ইবাদত করা, তাঁর সঙ্গে কাউকে অংশীদার না করা এবং সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকা বা বিচ্ছিন্ন না হওয়া। আর আল্লাহর অপছন্দের বিষয় তিনটি হলো, অহেতুক কথা বলা, অহেতুক প্রশ্ন করা ও অনর্থক সম্পদ বিনষ্ট করা। (সহিহ মুসলিম: ১৭১৫)
আমাদের আচার-আচরণে, আয়-উপার্জনে, ব্যয়ে ও দানে মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে হবে। পিতামাতা, ভাইবোন ও স্ত্রী-সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় করতে হবে। এসব ব্যয়ের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, অনর্থক খরচ যেন না হয়। আমাদের উচিত মিতব্যয়ী হওয়া, কখনো অপচয় না করা। আল্লাহ তাআলা অপচয়কারীর ব্যাপারে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান নিজ প্রতিপালকের প্রতি ঘোর অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ২৭)


সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস।
১০ ঘণ্টা আগে
আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।
৯ ঘণ্টা আগে
জমাদিউল আউয়ালের দ্বিতীয় জুমা আমাদের শেখায়—জীবনের প্রতিটি জুমা হতে পারে একটি নতুন শুরু, যদি আমরা অন্তর দিয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার চেষ্টা করি। তাই এই জুমা হোক আত্মার জাগরণের সূচনা। পাপমুক্ত জীবনের শপথ, আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রেরণা।
১০ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত কুড়িগ্রাম জেলা তার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এই জেলার উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নে দাঁড়িয়ে আছে অনন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন—প্রাচীন কাজির মসজিদ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই মসজিদটি এ অঞ্চলের ইসলামিক ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং স্থানীয়...
১০ ঘণ্টা আগে