আবদুল আযীয কাসেমি
৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর শাসনামলে রোমানদের কাছ থেকে প্রথমবার বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের হাতে আসে। এ উদ্দেশ্যে ওমর (রা.) নিজেই জেরুজালেম সফর করেছিলেন। এরপর দীর্ঘ ৫০০ বছর এই পবিত্র ভূমি মুসলমানদের অধীনে ছিল। ১০৯৯ সালে মুসলিম শাসকদের অন্তর্কোন্দলের সুযোগে খ্রিষ্টান ক্রুসেডররা পবিত্র ভূমি দখল করে নেয়। তারা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এবং ৭০ হাজার মুসলমানকে হত্যা করে। এরপর প্রায় ৯০ বছর তারা এই ভূমি শাসন করে।
১২ শতকে সালাহউদ্দিন আইয়ুবি মিসরের শাসনভার হাতে পেয়ে মুসলিম শাসনাধীন অঞ্চলগুলো ঐক্যবদ্ধ করতে শুরু করেন। বিভিন্ন ফ্রন্টে তিনি ক্রুসেডরদের পরাজিত করতে থাকেন। ১১৭০ সালে আসকালানে, ১১৭১ সালে হামায়, ১১৭২ সালে বানিয়াসে ক্রুসেডরদের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেন আইয়ুবি। এরপর ১১৭৯ সালে তিনি বিশাল ইসলামি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
জেরুজালেমে তখন ক্ষমতা নিয়ে খ্রিষ্টানদের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছিল। অনেক ঝক্কিঝামেলার পর মসনদে আসীন হন গাই অব লুজিনান। তাঁর প্রতি খ্রিষ্টানদের মধ্যেও অসন্তুষ্টি ছিল। বিশেষত সেই সময়ের আরেক ক্রুসেডর ত্রিপোলির শাসক রেমন্ড গাইকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সালাহউদ্দিন আইয়ুবির সঙ্গে চুক্তি করেন। এতে অন্য খ্রিষ্টানরাও ক্ষিপ্ত হন।
এদিকে জর্ডানে অবস্থিত দুটি বড় খ্রিষ্টান দুর্গ কার্ক ও শোবকের অধিপতি রেনল্ড ডি শাতিওন সালাহউদ্দিন আইয়ুবির সঙ্গে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করেন। ফলে মুসলমান ও ক্রুসেডরদের মধ্যে শান্তিচুক্তি ভেঙে যায়। এভাবে যুদ্ধ পরিস্থিতি অনিবার্য হয়ে ওঠে। যুদ্ধের শুরুতেই সালাহউদ্দিন আইয়ুবি জেরুজালেমে প্রবেশ করেননি, বরং বর্তমান ইসরায়েলের দখলকৃত তাবারিয়া অঞ্চলকেই তিনি অবরোধ আরোপের জন্য বেছে নেন।
এদিকে ক্রুসেডররা কোনোভাবেই তাবারিয়ার পতন চাইছিল না। ফলে তারা জেরুজালেম থেকে বের হয়ে আইয়ুবিকে প্রতিরোধ করতে তাবারিয়ার দিকে এগিয়ে আসে। ওদিকে ত্রিপোলির শাসক রেমন্ডও আইয়ুবির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে ফের ক্রুসেডরদের সঙ্গে যুক্ত হন। আইয়ুবি আল্লাহর ইচ্ছায় অপূর্ব রণকৌশলে সব শত্রুকে তাঁর পছন্দের জায়গায় টেনে আনতে সক্ষম হন। তাবারিয়া হ্রদ আগেই তিনি দখলে নিয়েছিলেন। এটি ছাড়া সেখানে কোনো পানির ব্যবস্থা ছিল না। ক্রুসেডরদের জন্য তাই বেশি দিন এখানে অবস্থানের সুযোগ ছিল না। আবার সেখানকার ঘাসগুলোও পুড়িয়ে ফেলেন আইয়ুবি।
মাত্র ১২ হাজার সৈন্য নিয়ে আইয়ুবি আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ৬৩ হাজারের বিশাল ক্রুসেডর বাহিনীর মুখোমুখি হন। ১১৮০ সালের ৪ জুলাই হিত্তিনের ময়দানে সংঘটিত হয় তুমুল যুদ্ধ। যুদ্ধের মাঝখানে ত্রিপোলির শাসক রেমন্ড পালিয়ে যান। আইয়ুবি তাঁকে দেখেও আটকাননি। তাঁর পলায়নে খ্রিষ্টান যোদ্ধাদের মনোবল ভেঙে যায়। এদিকে জুলাই মাসের প্রচণ্ড খরতাপ, পিপাসা, ধোঁয়া ও আগুনের উত্তাপে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে শত্রুশিবির। ফলে মুসলমানেরা নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে।
এই যুদ্ধে সালাহউদ্দিন আইয়ুবি বড় বিজয় অর্জন করেন। ঐতিহাসিকদের মতে, শত্রুপক্ষের প্রায় ৩০ হাজার সৈন্য নিহত হয় এবং প্রায় সমানসংখ্যক বন্দী হয়। গাই লুজিনানও বন্দী হন। যুদ্ধের ফলাফল শুনে বেদনায় নীল হয়ে রেমন্ডও কয়েক দিন পর মারা যান। বিশ্বাসঘাতক রেনল্ডকে আইয়ুবি নিজ হাতে হত্যা করেন। এভাবে আইয়ুবি আল-কুদ্স বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছান।
এরপর ১১৮৭ সালে আইয়ুবি জেরুজালেম অবরোধ করেন। কয়েক দিনের মধ্যেই ক্রুসেডররা আত্মসমর্পণ করতে সম্মত হয়। নির্ধারিত মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের ৪০ দিনের মধ্যে জেরুজালেম ত্যাগের সুযোগ দেন আইয়ুবি। অনেককে দারিদ্র্যের কারণে মুক্তিপণ ছাড়াই মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবে বিনা রক্তপাতে মহাবীর সালাহউদ্দিন আইয়ুবি পবিত্র ভূমি জেরুজালেম জয় করেন।
৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর শাসনামলে রোমানদের কাছ থেকে প্রথমবার বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের হাতে আসে। এ উদ্দেশ্যে ওমর (রা.) নিজেই জেরুজালেম সফর করেছিলেন। এরপর দীর্ঘ ৫০০ বছর এই পবিত্র ভূমি মুসলমানদের অধীনে ছিল। ১০৯৯ সালে মুসলিম শাসকদের অন্তর্কোন্দলের সুযোগে খ্রিষ্টান ক্রুসেডররা পবিত্র ভূমি দখল করে নেয়। তারা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এবং ৭০ হাজার মুসলমানকে হত্যা করে। এরপর প্রায় ৯০ বছর তারা এই ভূমি শাসন করে।
১২ শতকে সালাহউদ্দিন আইয়ুবি মিসরের শাসনভার হাতে পেয়ে মুসলিম শাসনাধীন অঞ্চলগুলো ঐক্যবদ্ধ করতে শুরু করেন। বিভিন্ন ফ্রন্টে তিনি ক্রুসেডরদের পরাজিত করতে থাকেন। ১১৭০ সালে আসকালানে, ১১৭১ সালে হামায়, ১১৭২ সালে বানিয়াসে ক্রুসেডরদের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেন আইয়ুবি। এরপর ১১৭৯ সালে তিনি বিশাল ইসলামি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
জেরুজালেমে তখন ক্ষমতা নিয়ে খ্রিষ্টানদের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছিল। অনেক ঝক্কিঝামেলার পর মসনদে আসীন হন গাই অব লুজিনান। তাঁর প্রতি খ্রিষ্টানদের মধ্যেও অসন্তুষ্টি ছিল। বিশেষত সেই সময়ের আরেক ক্রুসেডর ত্রিপোলির শাসক রেমন্ড গাইকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সালাহউদ্দিন আইয়ুবির সঙ্গে চুক্তি করেন। এতে অন্য খ্রিষ্টানরাও ক্ষিপ্ত হন।
এদিকে জর্ডানে অবস্থিত দুটি বড় খ্রিষ্টান দুর্গ কার্ক ও শোবকের অধিপতি রেনল্ড ডি শাতিওন সালাহউদ্দিন আইয়ুবির সঙ্গে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করেন। ফলে মুসলমান ও ক্রুসেডরদের মধ্যে শান্তিচুক্তি ভেঙে যায়। এভাবে যুদ্ধ পরিস্থিতি অনিবার্য হয়ে ওঠে। যুদ্ধের শুরুতেই সালাহউদ্দিন আইয়ুবি জেরুজালেমে প্রবেশ করেননি, বরং বর্তমান ইসরায়েলের দখলকৃত তাবারিয়া অঞ্চলকেই তিনি অবরোধ আরোপের জন্য বেছে নেন।
এদিকে ক্রুসেডররা কোনোভাবেই তাবারিয়ার পতন চাইছিল না। ফলে তারা জেরুজালেম থেকে বের হয়ে আইয়ুবিকে প্রতিরোধ করতে তাবারিয়ার দিকে এগিয়ে আসে। ওদিকে ত্রিপোলির শাসক রেমন্ডও আইয়ুবির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে ফের ক্রুসেডরদের সঙ্গে যুক্ত হন। আইয়ুবি আল্লাহর ইচ্ছায় অপূর্ব রণকৌশলে সব শত্রুকে তাঁর পছন্দের জায়গায় টেনে আনতে সক্ষম হন। তাবারিয়া হ্রদ আগেই তিনি দখলে নিয়েছিলেন। এটি ছাড়া সেখানে কোনো পানির ব্যবস্থা ছিল না। ক্রুসেডরদের জন্য তাই বেশি দিন এখানে অবস্থানের সুযোগ ছিল না। আবার সেখানকার ঘাসগুলোও পুড়িয়ে ফেলেন আইয়ুবি।
মাত্র ১২ হাজার সৈন্য নিয়ে আইয়ুবি আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ৬৩ হাজারের বিশাল ক্রুসেডর বাহিনীর মুখোমুখি হন। ১১৮০ সালের ৪ জুলাই হিত্তিনের ময়দানে সংঘটিত হয় তুমুল যুদ্ধ। যুদ্ধের মাঝখানে ত্রিপোলির শাসক রেমন্ড পালিয়ে যান। আইয়ুবি তাঁকে দেখেও আটকাননি। তাঁর পলায়নে খ্রিষ্টান যোদ্ধাদের মনোবল ভেঙে যায়। এদিকে জুলাই মাসের প্রচণ্ড খরতাপ, পিপাসা, ধোঁয়া ও আগুনের উত্তাপে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে শত্রুশিবির। ফলে মুসলমানেরা নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে।
এই যুদ্ধে সালাহউদ্দিন আইয়ুবি বড় বিজয় অর্জন করেন। ঐতিহাসিকদের মতে, শত্রুপক্ষের প্রায় ৩০ হাজার সৈন্য নিহত হয় এবং প্রায় সমানসংখ্যক বন্দী হয়। গাই লুজিনানও বন্দী হন। যুদ্ধের ফলাফল শুনে বেদনায় নীল হয়ে রেমন্ডও কয়েক দিন পর মারা যান। বিশ্বাসঘাতক রেনল্ডকে আইয়ুবি নিজ হাতে হত্যা করেন। এভাবে আইয়ুবি আল-কুদ্স বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছান।
এরপর ১১৮৭ সালে আইয়ুবি জেরুজালেম অবরোধ করেন। কয়েক দিনের মধ্যেই ক্রুসেডররা আত্মসমর্পণ করতে সম্মত হয়। নির্ধারিত মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের ৪০ দিনের মধ্যে জেরুজালেম ত্যাগের সুযোগ দেন আইয়ুবি। অনেককে দারিদ্র্যের কারণে মুক্তিপণ ছাড়াই মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবে বিনা রক্তপাতে মহাবীর সালাহউদ্দিন আইয়ুবি পবিত্র ভূমি জেরুজালেম জয় করেন।
পবিত্র কোরআন মানবজাতির জন্য আল্লাহর দেওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার। কোরআনের স্পর্শ ছাড়া মানবজনম অর্থহীন। কোরআন সফলতার মৌলিক পাথেয়। কোরআন সঠিক পথের দিশারি। হাজার বছর ধরে কোরআন এর দেখানো বিমল পথে অটল থেকে সফলতার মানজিলে পৌঁছে গিয়েছে অসংখ্য মানুষ। কোরআনের এই স্নিগ্ধ অফুরন্ত ঝরণাধারা সবার জন্যই অবারিত।
১১ ঘণ্টা আগেআমাদের এই আধুনিক সমাজ থেকে সভ্যতা, নৈতিকতা ও আদর্শ দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে, বিলুপ্ত হচ্ছে। এই প্রজন্মের কাছে—ছোট ও বড়র মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। নেই বড়দের সম্মান আর ছোটদের স্নেহ। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) বড়দের সম্মান ও ছোটদের স্নেহের বিষয়ে অনেক গুরুত্ব করেছেন। হাদিসে এসেছে, ‘যে আমাদের ছোটদের স্নেহ করে...
১৪ ঘণ্টা আগেজানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
১৬ ঘণ্টা আগেপৃথিবীর ইতিহাসে শাসকশ্রেণির ভূমিকা সর্বদাই গুরুত্বপূর্ণ ও স্পষ্ট। শাসকের সুশাসন যেমন একটি জাতিকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে পারে, তেমনি অন্যায়ের শাসন জাতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে শাসক ও শাসিত উভয়ের জন্যই পথনির্দেশনা প্রদান করেছে।
১৭ ঘণ্টা আগে