ইজাজুল হক, ঢাকা

আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মানুষ সৃষ্টির কথা জানালে তাঁরা বলেছিলেন, ‘আপনি কি সেখানে বিশৃঙ্খলা করবে এবং খুনোখুনিতে জড়াবে এমন জাতি সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন?’ (সুরা বাকারা: ৩০) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, পৃথিবীতে মানুষ মানুষের রক্ত ঝরাবে; অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অনেক ভালো গুনের মধ্যে অপরাধপ্রবণতাও থাকবে। আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠানোর কিছুদিন পরই ঘটেছিল পৃথিবীতে মানবজাতির প্রথম খুনের ঘটনা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা সেই খুনের সংক্ষিপ্ত বয়ান দিয়েছেন।
হাবিল-কাবিলের দ্বন্দ্ব
হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-এর ঘরে কতজন সন্তানের জন্ম হয়েছিল, তা নিয়ে দুটি মত পাওয়া যায়। মুফাসসির ইবনে জারির (রহ.) বলেছেন, ‘হাওয়া (আ.) ২০ বার গর্ভধারণ করেন; প্রতিবারই যমজ সন্তান জন্ম দেন—একটি ছেলে একটি মেয়ে।’ আবার কেউ বলেছেন, ‘১২০ বার গর্ভধারণ করেন এবং ২৪০ জন সন্তান জন্ম দেন।’ (নবুওয়াতু আদম ওয়া রিসালাতুহু: পৃ.১১৫; মুজাজুত-তারিখিল ইসলামি: ২ / ১৩)
যেহেতু তখন পৃথিবীতে আদমসন্তান ছাড়া কোনো মানুষ ছিল না, তাই বংশবৃদ্ধির জন্য আল্লাহর নির্দেশে আদম (আ.) নিজের ছেলেদের সঙ্গে মেয়েদের বিয়ে দিতেন। প্রতিবারই এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম নিত। নিয়ম ছিল, একবারের ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে অন্যবারের মেয়ে ও ছেলেকে বিয়ে দেওয়া হতো। নিয়ম অনুযায়ী হাবিল-কাবিলের বিয়ের বিষয়ও সামনে আসে। কাবিল বড় ছিলেন এবং তাঁর যমজ বোনটি হাবিলের যমজ বোনের চেয়ে বেশি সুন্দর ছিলেন। এ কারণে কাবিল তাঁর যমজ বোনকে হাবিলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। (ইবনে কাসির, কাসাসুল কোরআন)
কোরবানির ঘটনা
উল্লিখিত সমস্যার সমাধান হিসেবে আদম (আ.) সিদ্ধান্ত দিলেন—তাঁরা উভয়ে আল্লাহর দরবারে কোরবানি পেশ করবেন। যার কোরবানি কবুল হবে, তিনি নিজের ইচ্ছা পূরণের অধিকার পাবেন। তাওরাতের বর্ণনা অনুযায়ী, সেকালে কোরবানি ও মানত কবুল হয়েছে কি না—তা বোঝা যেত। নিয়ম অনুযায়ী, মানত ও কোরবানির বস্তু কোনো উঁচু স্থানে রেখে আসতে হতো। সেটি আল্লাহ দরবারে কবুল হলে আসমান থেকে আগুন এসে বস্তুটি পুড়িয়ে দিত।
হাবিল পশু পালন এবং কাবিল কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। নিয়মান অনুযায়ী হাবিল নিজের পশুর পাল থেকে একটি হৃষ্টপুষ্ট দুম্বা আল্লাহর নামে কোরবানি দেন। আর কাবিল নিজের শস্যভাণ্ডার থেকে কিছু শস্য কোরবানির জন্য পেশ করেন। সেকালের কোরবানির নিয়ম অনুসারে অদৃশ্য থেকে আগুন এসে হাবিলের কোরবানির বস্তু পুড়িয়ে ফেলল। আর কাবিলের কোরবানির বস্তু যেমন রাখা হয়েছিল, তেমনই রয়ে গেল। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত তাদের যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্য জনের কোরবানি কবুল হলো না।’ (সুরা মায়েদা: ২৭)
পৃথিবীর প্রথম খুন
কোরবানি কবুল না হওয়ায় কাবিল অপমানিত হলেন এবং ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘(একজন) বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব।’ বিপরীতে হাবিল শান্ত ভাষায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন এবং খুনের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করলেন। হাবিল বললেন, ‘আল্লাহ তো সংযমীদের কোরবানিই কবুল করে থাকেন। আমাকে খুন করতে তুমি হাত বাড়ালেও তোমাকে খুন করতে আমি হাত বাড়াব না। নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহকে ভয় করি। তুমি আমার ও তোমার পাপের ভার বহন করো এবং জাহান্নামি হও—এই তো আমি চাই; এটিই অনাচারীদের কর্মফল।’ (সুরা মায়েদা: ২৭-২৯)
এরপর কাবিল আর ধৈর্য ধরতে পারলেন না। হাবিলের উপদেশ ও সতর্কবার্তা কাবিলের মনে তীরের মতো বিঁধতে লাগল। তিনি ভীষণ উত্তেজিত হয়ে পড়লেন এবং ছোট ভাই হাবিলকে নির্মমভাবে হত্যা করলেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর তার মন তাকে ভাইকে খুন করতে প্ররোচনা দিল এবং সে (কাবিল) তাকে (হাবিলকে) হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা মায়েদা: ৩০)
কাকের কাছে শিক্ষা
ভাইকে খুন করে কাবিল অস্থির হয়ে পড়লেন। এখন এই মৃতদেহ নিয়ে তিনি কী করবেন, বুঝতে পারছিলেন না। তখনো পৃথিবীর কোনো আদমসন্তান মারা যাননি। হজরত আদম (আ.) মৃতদেহ সম্পর্কে কোনো বিধানের কথাও বলেননি। সেই দিশেহারা অবস্থায় কাবিল খেয়াল করলেন, একটি কাক মাটিতে গর্ত করে আরেকটি মৃত কাককে মাটিচাপা দিচ্ছে। কাবিল তা দেখে নিজের অযোগ্যতার জন্য আফসোস করলেন এবং মনে মনে বললেন, আমি এই তুচ্ছ প্রাণীর চেয়েও নিকৃষ্ট হলাম। নিজের এই অপরাধ গোপন করার যোগ্যতাও আমার নেই। এরপর সেভাবেই ভাইয়ের মৃতদেহ মাটিচাপা দিলেন। (তাবারি, কাসাসুল কোরআন)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, যে তার ভাইয়ের মৃতদেহ কীভাবে গোপন করা যায়, তা দেখাবার জন্য মাটি খুঁড়তে লাগল। সে বলল, হায়! আমি কি এই কাকটির মতোও হতে পারলাম না, যাতে আমার ভাইয়ের মৃতদেহ গোপন করতে পারি! এরপর সে লজ্জিত হলো।’ (সুরা মায়েদা: ৩১)
মানুষ খুনের অপরাধ
মানুষ হত্যা ইসলামে অনেক বড় অপরাধ। হাবিল-কাবিলের এই ঘটনা বর্ণনার পরে আল্লাহ তাআলা মানুষ হত্যা সম্পর্কে বলেছেন, ‘এই কারণেই বনি ইসরাইলের প্রতি বিধান দিলাম, যে ব্যক্তি মানুষ খুন করবে বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজের শাস্তি ছাড়া কাউকে হত্যা করবে, সে যেন পৃথিবীর সব মানুষকেই হত্যা করল। আর কেউ কারও প্রাণরক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’ (সুরা মায়েদা: ৩২)
এই বিধান শুধু বনি ইসরাইলের জন্য নয়; ইসলামেও তা কার্যকর। তাবিই সুলাইমান ইবনে রবি বলেন, ‘আমি হাসান বসরিকে জিজ্ঞেস করলাম, বনি ইসরাইল যেমন এই বিধানের আওতাভুক্ত, তেমনি আমরাও কি আওতাভুক্ত?’ জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম, বনি ইসরাইলের রক্ত আল্লাহর কাছে আমাদের রক্তের চেয়ে কোনোভাবেই বেশি সম্মানিত নয়।’ (ইবনে কাসির)
পৃথিবীতে কোনো নতুন গুনাহের সূচনা করলে পরে যতবারই সেই গুনাহ সংঘটিত হবে, ততবারই সেই সূচনাকারীর জন্য গুনাহের একটি অংশ বরাদ্দ থাকবে। হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, তখন তার পাপের একাংশ আদমের (কোরআনে বর্ণিত দুই সন্তানের) প্রথম সন্তানের ওপর বর্তায়।’ (বুখারি: ৬৮৬৭)
আরও পড়ুন:

আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মানুষ সৃষ্টির কথা জানালে তাঁরা বলেছিলেন, ‘আপনি কি সেখানে বিশৃঙ্খলা করবে এবং খুনোখুনিতে জড়াবে এমন জাতি সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন?’ (সুরা বাকারা: ৩০) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, পৃথিবীতে মানুষ মানুষের রক্ত ঝরাবে; অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অনেক ভালো গুনের মধ্যে অপরাধপ্রবণতাও থাকবে। আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠানোর কিছুদিন পরই ঘটেছিল পৃথিবীতে মানবজাতির প্রথম খুনের ঘটনা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা সেই খুনের সংক্ষিপ্ত বয়ান দিয়েছেন।
হাবিল-কাবিলের দ্বন্দ্ব
হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-এর ঘরে কতজন সন্তানের জন্ম হয়েছিল, তা নিয়ে দুটি মত পাওয়া যায়। মুফাসসির ইবনে জারির (রহ.) বলেছেন, ‘হাওয়া (আ.) ২০ বার গর্ভধারণ করেন; প্রতিবারই যমজ সন্তান জন্ম দেন—একটি ছেলে একটি মেয়ে।’ আবার কেউ বলেছেন, ‘১২০ বার গর্ভধারণ করেন এবং ২৪০ জন সন্তান জন্ম দেন।’ (নবুওয়াতু আদম ওয়া রিসালাতুহু: পৃ.১১৫; মুজাজুত-তারিখিল ইসলামি: ২ / ১৩)
যেহেতু তখন পৃথিবীতে আদমসন্তান ছাড়া কোনো মানুষ ছিল না, তাই বংশবৃদ্ধির জন্য আল্লাহর নির্দেশে আদম (আ.) নিজের ছেলেদের সঙ্গে মেয়েদের বিয়ে দিতেন। প্রতিবারই এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম নিত। নিয়ম ছিল, একবারের ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে অন্যবারের মেয়ে ও ছেলেকে বিয়ে দেওয়া হতো। নিয়ম অনুযায়ী হাবিল-কাবিলের বিয়ের বিষয়ও সামনে আসে। কাবিল বড় ছিলেন এবং তাঁর যমজ বোনটি হাবিলের যমজ বোনের চেয়ে বেশি সুন্দর ছিলেন। এ কারণে কাবিল তাঁর যমজ বোনকে হাবিলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। (ইবনে কাসির, কাসাসুল কোরআন)
কোরবানির ঘটনা
উল্লিখিত সমস্যার সমাধান হিসেবে আদম (আ.) সিদ্ধান্ত দিলেন—তাঁরা উভয়ে আল্লাহর দরবারে কোরবানি পেশ করবেন। যার কোরবানি কবুল হবে, তিনি নিজের ইচ্ছা পূরণের অধিকার পাবেন। তাওরাতের বর্ণনা অনুযায়ী, সেকালে কোরবানি ও মানত কবুল হয়েছে কি না—তা বোঝা যেত। নিয়ম অনুযায়ী, মানত ও কোরবানির বস্তু কোনো উঁচু স্থানে রেখে আসতে হতো। সেটি আল্লাহ দরবারে কবুল হলে আসমান থেকে আগুন এসে বস্তুটি পুড়িয়ে দিত।
হাবিল পশু পালন এবং কাবিল কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। নিয়মান অনুযায়ী হাবিল নিজের পশুর পাল থেকে একটি হৃষ্টপুষ্ট দুম্বা আল্লাহর নামে কোরবানি দেন। আর কাবিল নিজের শস্যভাণ্ডার থেকে কিছু শস্য কোরবানির জন্য পেশ করেন। সেকালের কোরবানির নিয়ম অনুসারে অদৃশ্য থেকে আগুন এসে হাবিলের কোরবানির বস্তু পুড়িয়ে ফেলল। আর কাবিলের কোরবানির বস্তু যেমন রাখা হয়েছিল, তেমনই রয়ে গেল। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত তাদের যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্য জনের কোরবানি কবুল হলো না।’ (সুরা মায়েদা: ২৭)
পৃথিবীর প্রথম খুন
কোরবানি কবুল না হওয়ায় কাবিল অপমানিত হলেন এবং ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘(একজন) বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব।’ বিপরীতে হাবিল শান্ত ভাষায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন এবং খুনের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করলেন। হাবিল বললেন, ‘আল্লাহ তো সংযমীদের কোরবানিই কবুল করে থাকেন। আমাকে খুন করতে তুমি হাত বাড়ালেও তোমাকে খুন করতে আমি হাত বাড়াব না। নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহকে ভয় করি। তুমি আমার ও তোমার পাপের ভার বহন করো এবং জাহান্নামি হও—এই তো আমি চাই; এটিই অনাচারীদের কর্মফল।’ (সুরা মায়েদা: ২৭-২৯)
এরপর কাবিল আর ধৈর্য ধরতে পারলেন না। হাবিলের উপদেশ ও সতর্কবার্তা কাবিলের মনে তীরের মতো বিঁধতে লাগল। তিনি ভীষণ উত্তেজিত হয়ে পড়লেন এবং ছোট ভাই হাবিলকে নির্মমভাবে হত্যা করলেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর তার মন তাকে ভাইকে খুন করতে প্ররোচনা দিল এবং সে (কাবিল) তাকে (হাবিলকে) হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা মায়েদা: ৩০)
কাকের কাছে শিক্ষা
ভাইকে খুন করে কাবিল অস্থির হয়ে পড়লেন। এখন এই মৃতদেহ নিয়ে তিনি কী করবেন, বুঝতে পারছিলেন না। তখনো পৃথিবীর কোনো আদমসন্তান মারা যাননি। হজরত আদম (আ.) মৃতদেহ সম্পর্কে কোনো বিধানের কথাও বলেননি। সেই দিশেহারা অবস্থায় কাবিল খেয়াল করলেন, একটি কাক মাটিতে গর্ত করে আরেকটি মৃত কাককে মাটিচাপা দিচ্ছে। কাবিল তা দেখে নিজের অযোগ্যতার জন্য আফসোস করলেন এবং মনে মনে বললেন, আমি এই তুচ্ছ প্রাণীর চেয়েও নিকৃষ্ট হলাম। নিজের এই অপরাধ গোপন করার যোগ্যতাও আমার নেই। এরপর সেভাবেই ভাইয়ের মৃতদেহ মাটিচাপা দিলেন। (তাবারি, কাসাসুল কোরআন)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, যে তার ভাইয়ের মৃতদেহ কীভাবে গোপন করা যায়, তা দেখাবার জন্য মাটি খুঁড়তে লাগল। সে বলল, হায়! আমি কি এই কাকটির মতোও হতে পারলাম না, যাতে আমার ভাইয়ের মৃতদেহ গোপন করতে পারি! এরপর সে লজ্জিত হলো।’ (সুরা মায়েদা: ৩১)
মানুষ খুনের অপরাধ
মানুষ হত্যা ইসলামে অনেক বড় অপরাধ। হাবিল-কাবিলের এই ঘটনা বর্ণনার পরে আল্লাহ তাআলা মানুষ হত্যা সম্পর্কে বলেছেন, ‘এই কারণেই বনি ইসরাইলের প্রতি বিধান দিলাম, যে ব্যক্তি মানুষ খুন করবে বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজের শাস্তি ছাড়া কাউকে হত্যা করবে, সে যেন পৃথিবীর সব মানুষকেই হত্যা করল। আর কেউ কারও প্রাণরক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’ (সুরা মায়েদা: ৩২)
এই বিধান শুধু বনি ইসরাইলের জন্য নয়; ইসলামেও তা কার্যকর। তাবিই সুলাইমান ইবনে রবি বলেন, ‘আমি হাসান বসরিকে জিজ্ঞেস করলাম, বনি ইসরাইল যেমন এই বিধানের আওতাভুক্ত, তেমনি আমরাও কি আওতাভুক্ত?’ জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম, বনি ইসরাইলের রক্ত আল্লাহর কাছে আমাদের রক্তের চেয়ে কোনোভাবেই বেশি সম্মানিত নয়।’ (ইবনে কাসির)
পৃথিবীতে কোনো নতুন গুনাহের সূচনা করলে পরে যতবারই সেই গুনাহ সংঘটিত হবে, ততবারই সেই সূচনাকারীর জন্য গুনাহের একটি অংশ বরাদ্দ থাকবে। হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, তখন তার পাপের একাংশ আদমের (কোরআনে বর্ণিত দুই সন্তানের) প্রথম সন্তানের ওপর বর্তায়।’ (বুখারি: ৬৮৬৭)
আরও পড়ুন:
ইজাজুল হক, ঢাকা

আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মানুষ সৃষ্টির কথা জানালে তাঁরা বলেছিলেন, ‘আপনি কি সেখানে বিশৃঙ্খলা করবে এবং খুনোখুনিতে জড়াবে এমন জাতি সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন?’ (সুরা বাকারা: ৩০) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, পৃথিবীতে মানুষ মানুষের রক্ত ঝরাবে; অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অনেক ভালো গুনের মধ্যে অপরাধপ্রবণতাও থাকবে। আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠানোর কিছুদিন পরই ঘটেছিল পৃথিবীতে মানবজাতির প্রথম খুনের ঘটনা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা সেই খুনের সংক্ষিপ্ত বয়ান দিয়েছেন।
হাবিল-কাবিলের দ্বন্দ্ব
হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-এর ঘরে কতজন সন্তানের জন্ম হয়েছিল, তা নিয়ে দুটি মত পাওয়া যায়। মুফাসসির ইবনে জারির (রহ.) বলেছেন, ‘হাওয়া (আ.) ২০ বার গর্ভধারণ করেন; প্রতিবারই যমজ সন্তান জন্ম দেন—একটি ছেলে একটি মেয়ে।’ আবার কেউ বলেছেন, ‘১২০ বার গর্ভধারণ করেন এবং ২৪০ জন সন্তান জন্ম দেন।’ (নবুওয়াতু আদম ওয়া রিসালাতুহু: পৃ.১১৫; মুজাজুত-তারিখিল ইসলামি: ২ / ১৩)
যেহেতু তখন পৃথিবীতে আদমসন্তান ছাড়া কোনো মানুষ ছিল না, তাই বংশবৃদ্ধির জন্য আল্লাহর নির্দেশে আদম (আ.) নিজের ছেলেদের সঙ্গে মেয়েদের বিয়ে দিতেন। প্রতিবারই এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম নিত। নিয়ম ছিল, একবারের ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে অন্যবারের মেয়ে ও ছেলেকে বিয়ে দেওয়া হতো। নিয়ম অনুযায়ী হাবিল-কাবিলের বিয়ের বিষয়ও সামনে আসে। কাবিল বড় ছিলেন এবং তাঁর যমজ বোনটি হাবিলের যমজ বোনের চেয়ে বেশি সুন্দর ছিলেন। এ কারণে কাবিল তাঁর যমজ বোনকে হাবিলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। (ইবনে কাসির, কাসাসুল কোরআন)
কোরবানির ঘটনা
উল্লিখিত সমস্যার সমাধান হিসেবে আদম (আ.) সিদ্ধান্ত দিলেন—তাঁরা উভয়ে আল্লাহর দরবারে কোরবানি পেশ করবেন। যার কোরবানি কবুল হবে, তিনি নিজের ইচ্ছা পূরণের অধিকার পাবেন। তাওরাতের বর্ণনা অনুযায়ী, সেকালে কোরবানি ও মানত কবুল হয়েছে কি না—তা বোঝা যেত। নিয়ম অনুযায়ী, মানত ও কোরবানির বস্তু কোনো উঁচু স্থানে রেখে আসতে হতো। সেটি আল্লাহ দরবারে কবুল হলে আসমান থেকে আগুন এসে বস্তুটি পুড়িয়ে দিত।
হাবিল পশু পালন এবং কাবিল কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। নিয়মান অনুযায়ী হাবিল নিজের পশুর পাল থেকে একটি হৃষ্টপুষ্ট দুম্বা আল্লাহর নামে কোরবানি দেন। আর কাবিল নিজের শস্যভাণ্ডার থেকে কিছু শস্য কোরবানির জন্য পেশ করেন। সেকালের কোরবানির নিয়ম অনুসারে অদৃশ্য থেকে আগুন এসে হাবিলের কোরবানির বস্তু পুড়িয়ে ফেলল। আর কাবিলের কোরবানির বস্তু যেমন রাখা হয়েছিল, তেমনই রয়ে গেল। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত তাদের যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্য জনের কোরবানি কবুল হলো না।’ (সুরা মায়েদা: ২৭)
পৃথিবীর প্রথম খুন
কোরবানি কবুল না হওয়ায় কাবিল অপমানিত হলেন এবং ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘(একজন) বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব।’ বিপরীতে হাবিল শান্ত ভাষায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন এবং খুনের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করলেন। হাবিল বললেন, ‘আল্লাহ তো সংযমীদের কোরবানিই কবুল করে থাকেন। আমাকে খুন করতে তুমি হাত বাড়ালেও তোমাকে খুন করতে আমি হাত বাড়াব না। নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহকে ভয় করি। তুমি আমার ও তোমার পাপের ভার বহন করো এবং জাহান্নামি হও—এই তো আমি চাই; এটিই অনাচারীদের কর্মফল।’ (সুরা মায়েদা: ২৭-২৯)
এরপর কাবিল আর ধৈর্য ধরতে পারলেন না। হাবিলের উপদেশ ও সতর্কবার্তা কাবিলের মনে তীরের মতো বিঁধতে লাগল। তিনি ভীষণ উত্তেজিত হয়ে পড়লেন এবং ছোট ভাই হাবিলকে নির্মমভাবে হত্যা করলেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর তার মন তাকে ভাইকে খুন করতে প্ররোচনা দিল এবং সে (কাবিল) তাকে (হাবিলকে) হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা মায়েদা: ৩০)
কাকের কাছে শিক্ষা
ভাইকে খুন করে কাবিল অস্থির হয়ে পড়লেন। এখন এই মৃতদেহ নিয়ে তিনি কী করবেন, বুঝতে পারছিলেন না। তখনো পৃথিবীর কোনো আদমসন্তান মারা যাননি। হজরত আদম (আ.) মৃতদেহ সম্পর্কে কোনো বিধানের কথাও বলেননি। সেই দিশেহারা অবস্থায় কাবিল খেয়াল করলেন, একটি কাক মাটিতে গর্ত করে আরেকটি মৃত কাককে মাটিচাপা দিচ্ছে। কাবিল তা দেখে নিজের অযোগ্যতার জন্য আফসোস করলেন এবং মনে মনে বললেন, আমি এই তুচ্ছ প্রাণীর চেয়েও নিকৃষ্ট হলাম। নিজের এই অপরাধ গোপন করার যোগ্যতাও আমার নেই। এরপর সেভাবেই ভাইয়ের মৃতদেহ মাটিচাপা দিলেন। (তাবারি, কাসাসুল কোরআন)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, যে তার ভাইয়ের মৃতদেহ কীভাবে গোপন করা যায়, তা দেখাবার জন্য মাটি খুঁড়তে লাগল। সে বলল, হায়! আমি কি এই কাকটির মতোও হতে পারলাম না, যাতে আমার ভাইয়ের মৃতদেহ গোপন করতে পারি! এরপর সে লজ্জিত হলো।’ (সুরা মায়েদা: ৩১)
মানুষ খুনের অপরাধ
মানুষ হত্যা ইসলামে অনেক বড় অপরাধ। হাবিল-কাবিলের এই ঘটনা বর্ণনার পরে আল্লাহ তাআলা মানুষ হত্যা সম্পর্কে বলেছেন, ‘এই কারণেই বনি ইসরাইলের প্রতি বিধান দিলাম, যে ব্যক্তি মানুষ খুন করবে বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজের শাস্তি ছাড়া কাউকে হত্যা করবে, সে যেন পৃথিবীর সব মানুষকেই হত্যা করল। আর কেউ কারও প্রাণরক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’ (সুরা মায়েদা: ৩২)
এই বিধান শুধু বনি ইসরাইলের জন্য নয়; ইসলামেও তা কার্যকর। তাবিই সুলাইমান ইবনে রবি বলেন, ‘আমি হাসান বসরিকে জিজ্ঞেস করলাম, বনি ইসরাইল যেমন এই বিধানের আওতাভুক্ত, তেমনি আমরাও কি আওতাভুক্ত?’ জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম, বনি ইসরাইলের রক্ত আল্লাহর কাছে আমাদের রক্তের চেয়ে কোনোভাবেই বেশি সম্মানিত নয়।’ (ইবনে কাসির)
পৃথিবীতে কোনো নতুন গুনাহের সূচনা করলে পরে যতবারই সেই গুনাহ সংঘটিত হবে, ততবারই সেই সূচনাকারীর জন্য গুনাহের একটি অংশ বরাদ্দ থাকবে। হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, তখন তার পাপের একাংশ আদমের (কোরআনে বর্ণিত দুই সন্তানের) প্রথম সন্তানের ওপর বর্তায়।’ (বুখারি: ৬৮৬৭)
আরও পড়ুন:

আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মানুষ সৃষ্টির কথা জানালে তাঁরা বলেছিলেন, ‘আপনি কি সেখানে বিশৃঙ্খলা করবে এবং খুনোখুনিতে জড়াবে এমন জাতি সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন?’ (সুরা বাকারা: ৩০) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, পৃথিবীতে মানুষ মানুষের রক্ত ঝরাবে; অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অনেক ভালো গুনের মধ্যে অপরাধপ্রবণতাও থাকবে। আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠানোর কিছুদিন পরই ঘটেছিল পৃথিবীতে মানবজাতির প্রথম খুনের ঘটনা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা সেই খুনের সংক্ষিপ্ত বয়ান দিয়েছেন।
হাবিল-কাবিলের দ্বন্দ্ব
হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-এর ঘরে কতজন সন্তানের জন্ম হয়েছিল, তা নিয়ে দুটি মত পাওয়া যায়। মুফাসসির ইবনে জারির (রহ.) বলেছেন, ‘হাওয়া (আ.) ২০ বার গর্ভধারণ করেন; প্রতিবারই যমজ সন্তান জন্ম দেন—একটি ছেলে একটি মেয়ে।’ আবার কেউ বলেছেন, ‘১২০ বার গর্ভধারণ করেন এবং ২৪০ জন সন্তান জন্ম দেন।’ (নবুওয়াতু আদম ওয়া রিসালাতুহু: পৃ.১১৫; মুজাজুত-তারিখিল ইসলামি: ২ / ১৩)
যেহেতু তখন পৃথিবীতে আদমসন্তান ছাড়া কোনো মানুষ ছিল না, তাই বংশবৃদ্ধির জন্য আল্লাহর নির্দেশে আদম (আ.) নিজের ছেলেদের সঙ্গে মেয়েদের বিয়ে দিতেন। প্রতিবারই এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম নিত। নিয়ম ছিল, একবারের ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে অন্যবারের মেয়ে ও ছেলেকে বিয়ে দেওয়া হতো। নিয়ম অনুযায়ী হাবিল-কাবিলের বিয়ের বিষয়ও সামনে আসে। কাবিল বড় ছিলেন এবং তাঁর যমজ বোনটি হাবিলের যমজ বোনের চেয়ে বেশি সুন্দর ছিলেন। এ কারণে কাবিল তাঁর যমজ বোনকে হাবিলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। (ইবনে কাসির, কাসাসুল কোরআন)
কোরবানির ঘটনা
উল্লিখিত সমস্যার সমাধান হিসেবে আদম (আ.) সিদ্ধান্ত দিলেন—তাঁরা উভয়ে আল্লাহর দরবারে কোরবানি পেশ করবেন। যার কোরবানি কবুল হবে, তিনি নিজের ইচ্ছা পূরণের অধিকার পাবেন। তাওরাতের বর্ণনা অনুযায়ী, সেকালে কোরবানি ও মানত কবুল হয়েছে কি না—তা বোঝা যেত। নিয়ম অনুযায়ী, মানত ও কোরবানির বস্তু কোনো উঁচু স্থানে রেখে আসতে হতো। সেটি আল্লাহ দরবারে কবুল হলে আসমান থেকে আগুন এসে বস্তুটি পুড়িয়ে দিত।
হাবিল পশু পালন এবং কাবিল কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। নিয়মান অনুযায়ী হাবিল নিজের পশুর পাল থেকে একটি হৃষ্টপুষ্ট দুম্বা আল্লাহর নামে কোরবানি দেন। আর কাবিল নিজের শস্যভাণ্ডার থেকে কিছু শস্য কোরবানির জন্য পেশ করেন। সেকালের কোরবানির নিয়ম অনুসারে অদৃশ্য থেকে আগুন এসে হাবিলের কোরবানির বস্তু পুড়িয়ে ফেলল। আর কাবিলের কোরবানির বস্তু যেমন রাখা হয়েছিল, তেমনই রয়ে গেল। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত তাদের যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্য জনের কোরবানি কবুল হলো না।’ (সুরা মায়েদা: ২৭)
পৃথিবীর প্রথম খুন
কোরবানি কবুল না হওয়ায় কাবিল অপমানিত হলেন এবং ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘(একজন) বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব।’ বিপরীতে হাবিল শান্ত ভাষায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন এবং খুনের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করলেন। হাবিল বললেন, ‘আল্লাহ তো সংযমীদের কোরবানিই কবুল করে থাকেন। আমাকে খুন করতে তুমি হাত বাড়ালেও তোমাকে খুন করতে আমি হাত বাড়াব না। নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহকে ভয় করি। তুমি আমার ও তোমার পাপের ভার বহন করো এবং জাহান্নামি হও—এই তো আমি চাই; এটিই অনাচারীদের কর্মফল।’ (সুরা মায়েদা: ২৭-২৯)
এরপর কাবিল আর ধৈর্য ধরতে পারলেন না। হাবিলের উপদেশ ও সতর্কবার্তা কাবিলের মনে তীরের মতো বিঁধতে লাগল। তিনি ভীষণ উত্তেজিত হয়ে পড়লেন এবং ছোট ভাই হাবিলকে নির্মমভাবে হত্যা করলেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর তার মন তাকে ভাইকে খুন করতে প্ররোচনা দিল এবং সে (কাবিল) তাকে (হাবিলকে) হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা মায়েদা: ৩০)
কাকের কাছে শিক্ষা
ভাইকে খুন করে কাবিল অস্থির হয়ে পড়লেন। এখন এই মৃতদেহ নিয়ে তিনি কী করবেন, বুঝতে পারছিলেন না। তখনো পৃথিবীর কোনো আদমসন্তান মারা যাননি। হজরত আদম (আ.) মৃতদেহ সম্পর্কে কোনো বিধানের কথাও বলেননি। সেই দিশেহারা অবস্থায় কাবিল খেয়াল করলেন, একটি কাক মাটিতে গর্ত করে আরেকটি মৃত কাককে মাটিচাপা দিচ্ছে। কাবিল তা দেখে নিজের অযোগ্যতার জন্য আফসোস করলেন এবং মনে মনে বললেন, আমি এই তুচ্ছ প্রাণীর চেয়েও নিকৃষ্ট হলাম। নিজের এই অপরাধ গোপন করার যোগ্যতাও আমার নেই। এরপর সেভাবেই ভাইয়ের মৃতদেহ মাটিচাপা দিলেন। (তাবারি, কাসাসুল কোরআন)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, যে তার ভাইয়ের মৃতদেহ কীভাবে গোপন করা যায়, তা দেখাবার জন্য মাটি খুঁড়তে লাগল। সে বলল, হায়! আমি কি এই কাকটির মতোও হতে পারলাম না, যাতে আমার ভাইয়ের মৃতদেহ গোপন করতে পারি! এরপর সে লজ্জিত হলো।’ (সুরা মায়েদা: ৩১)
মানুষ খুনের অপরাধ
মানুষ হত্যা ইসলামে অনেক বড় অপরাধ। হাবিল-কাবিলের এই ঘটনা বর্ণনার পরে আল্লাহ তাআলা মানুষ হত্যা সম্পর্কে বলেছেন, ‘এই কারণেই বনি ইসরাইলের প্রতি বিধান দিলাম, যে ব্যক্তি মানুষ খুন করবে বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজের শাস্তি ছাড়া কাউকে হত্যা করবে, সে যেন পৃথিবীর সব মানুষকেই হত্যা করল। আর কেউ কারও প্রাণরক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’ (সুরা মায়েদা: ৩২)
এই বিধান শুধু বনি ইসরাইলের জন্য নয়; ইসলামেও তা কার্যকর। তাবিই সুলাইমান ইবনে রবি বলেন, ‘আমি হাসান বসরিকে জিজ্ঞেস করলাম, বনি ইসরাইল যেমন এই বিধানের আওতাভুক্ত, তেমনি আমরাও কি আওতাভুক্ত?’ জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম, বনি ইসরাইলের রক্ত আল্লাহর কাছে আমাদের রক্তের চেয়ে কোনোভাবেই বেশি সম্মানিত নয়।’ (ইবনে কাসির)
পৃথিবীতে কোনো নতুন গুনাহের সূচনা করলে পরে যতবারই সেই গুনাহ সংঘটিত হবে, ততবারই সেই সূচনাকারীর জন্য গুনাহের একটি অংশ বরাদ্দ থাকবে। হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, তখন তার পাপের একাংশ আদমের (কোরআনে বর্ণিত দুই সন্তানের) প্রথম সন্তানের ওপর বর্তায়।’ (বুখারি: ৬৮৬৭)
আরও পড়ুন:

‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
৬ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১২ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মানুষ সৃষ্টির কথা জানালে তাঁরা বলেছিলেন, ‘আপনি কি সেখানে বিশৃঙ্খলা করবে এবং খুনোখুনিতে জড়াবে এমন জাতি সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন?’ (সুরা বাকারা: ৩০) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, পৃথিবীতে মানুষ মানুষের রক্ত ঝরাবে; অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অনেক ভালো গুনের মধ্যে অপরাধপ্রবণতাও থাকবে। আদম (আ.)-কে প
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১২ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মানুষ সৃষ্টির কথা জানালে তাঁরা বলেছিলেন, ‘আপনি কি সেখানে বিশৃঙ্খলা করবে এবং খুনোখুনিতে জড়াবে এমন জাতি সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন?’ (সুরা বাকারা: ৩০) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, পৃথিবীতে মানুষ মানুষের রক্ত ঝরাবে; অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অনেক ভালো গুনের মধ্যে অপরাধপ্রবণতাও থাকবে। আদম (আ.)-কে প
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
৬ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১২ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মানুষ সৃষ্টির কথা জানালে তাঁরা বলেছিলেন, ‘আপনি কি সেখানে বিশৃঙ্খলা করবে এবং খুনোখুনিতে জড়াবে এমন জাতি সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন?’ (সুরা বাকারা: ৩০) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, পৃথিবীতে মানুষ মানুষের রক্ত ঝরাবে; অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অনেক ভালো গুনের মধ্যে অপরাধপ্রবণতাও থাকবে। আদম (আ.)-কে প
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
৬ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৮ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১২ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মানুষ সৃষ্টির কথা জানালে তাঁরা বলেছিলেন, ‘আপনি কি সেখানে বিশৃঙ্খলা করবে এবং খুনোখুনিতে জড়াবে এমন জাতি সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন?’ (সুরা বাকারা: ৩০) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, পৃথিবীতে মানুষ মানুষের রক্ত ঝরাবে; অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অনেক ভালো গুনের মধ্যে অপরাধপ্রবণতাও থাকবে। আদম (আ.)-কে প
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
৬ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে