Ajker Patrika

মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির বিধান

আবদুল আযীয কাসেমি
আপডেট : ২১ জুন ২০২৪, ১০: ৩৩
মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির বিধান

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন বিপণিকেন্দ্রে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তাতে দেখা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির কারণে অনেক ব্যবসায়ীকে শাস্তি দেওয়া হয়। গভীরভাবে দেখলে বুঝতে পারব, এটি আসলে কত জঘন্য অপরাধ। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এসব জেনেও কিছু মানুষ অপরাধীদের বিভিন্ন স্বার্থে সমর্থন দিয়ে যায়।

মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য মানে মূলত নষ্ট পণ্য। এটি থেকে আর উপকৃত হওয়া সম্ভব নয়। বিশেষত সেটি যখন হয় খাবার, তখন তা থেকে সৃষ্টি হয় মানুষের জীবনহানির শঙ্কা, কিংবা কোনো মারাত্মক রোগের আশঙ্কা। সহজ-সরল মানুষকে ধোঁকা দিয়ে এই পণ্যগুলো ধরিয়ে দেওয়া হয়। ইসলাম এটাকে কঠোরভাবে নিষেধ করে। ইসলামের নির্দেশনা হলো, একজন ব্যবসায়ী ক্রেতাকে তার পণ্যের গুণমান সম্পর্কে স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন ধারণা দেবে। এরপর ক্রেতা ভালো মনে করলে কিনবে, অন্যথায় এড়িয়ে যাবে।

হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) একদিন বাজারে গেলেন। একজন ব্যবসায়ীকে দেখলেন চালজাতীয় কিছু বিক্রি করছে। নবীজি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কীভাবে বিক্রি করছ?’ ব্যবসায়ী ‍উত্তরে পণ্যের দিকে ইঙ্গিত করল। নবীজি তাকে বললেন, ‘তুমি এখানে তোমার হাত প্রবেশ করাও।’ সে হাত প্রবেশ করাল। হাত বের করার পর দেখা গেল তার হাত ভেজা। নবীজি সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের ধোঁকা দেয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (মুসনাদে আহমদ: ৭২৯২)

হজরত ওমর (রা.) সম্পর্কে বর্ণিত আছে, একজন ব্যবসায়ী দুধে পানি মিশিয়ে ধোঁকা দিয়ে দুধ বিক্রি করছিল। হজরত ওমর (রা.) খবর পেয়ে তার দুধগুলো মাটিতে ফেলে দেন। (আত তামহিদ, ইবনু আবদিল বার: ৪/ ১৪২)

চিন্তা করে দেখুন, নবীজি বলছেন, যে ব্যক্তি ধোঁকা দেয় সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। অর্থাৎ, যেন সে মুসলমানই নয়। যদিও উলামায়ে কেরাম বলেছেন, এই কাজকে হালাল মনে না করে করলে সে ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাবে না। তবে সে মুসলমানের মতো কাজ করেনি। পক্ষান্তরে যারা একে বৈধ মনে করে কোনোরূপ অপরাধবোধ ছাড়াই করছে, তাদের ব্যাপারে ভয়ংকর শঙ্কা রয়েছে। যেখানে পণ্য ভালো হওয়া সত্ত্বেও সামান্য ভেজাল মিশ্রণের কারণে নবীজি একে ধোঁকা বলে অভিহিত করেছেন, সেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ ও নষ্ট পণ্য বিক্রির ব্যাপারে নবীজির অভিব্যক্তি কী হতে পারে?

এক হাদিসে বলা হয়েছে, ‘দ্বীন হলো কল্যাণকামিতার নাম।’ কল্যাণকামিতার দাবি হলো, ক্রেতাকে বিক্রির সময় পণ্যের ব্যাপারে পুরোপুরি ধারণা দেওয়া এবং এ বিষয়ে কোনো রকম ছলচাতুরীর আশ্রয় না নেওয়া। আর যদি পণ্য হয় মেয়াদোত্তীর্ণ কিংবা নষ্ট, তখন তো সেটা বিক্রি করার কোনো অবকাশই নেই।

লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত