ইজাজুল হক, ঢাকা
ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) ছিলেন ইতিহাসের সফলতম রাষ্ট্রনায়ক। প্রথম খলিফা হজরত আবুবকর (রা.) মৃত্যুর আগেই সাধারণ মানুষের মতামতের ভিত্তিতে ওমরকে খলিফা মনোনীত করে যান। তাঁর মর্যাদা সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমার পরে যদি কেউ নবী হতেন, তাহলে তিনি ওমর ইবনে খাত্তাবই হতেন।’ মিশকাত, হাদিস: ৬০৩১) হজরত ওমরের নেতৃত্বেই মদিনার ছোট ইসলামি রাষ্ট্র পৃথিবীর দিগ্দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর শাসনামলেই মুসলিম বাহিনী তৎকালীন বিশ্বের দুই পরাশক্তি বাইজান্টাইন ও সাসানি সাম্রাজ্যকে পরাজিত করে ইসলামি রাষ্ট্রের সীমানা বিস্তার করে। যেসব সহজাত গুণের কারণে তিনি কিংবদন্তি রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হন, তা হলো—
চারিত্রিক দৃঢ়তা
চারিত্রিক দৃঢ়তার জন্য ওমর (রা.) শৈশব থেকেই পরিচিত ছিলেন। যে কথা বা কাজ তিনি ঠিক মনে করতেন, তা থেকে কোনো কিছুই তাঁকে ফেরাতে পারত না; কাউকেই তিনি ভয় পেতেন না। তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘটনাই তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তত দিন পর্যন্ত সবাই গোপনে ইসলাম পালন করত। তিনি ইসলাম গ্রহণের পর কাবা চত্বরে গিয়ে প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন এবং সবাইকে নিয়ে নামাজ আদায় করেন। হিজরতের সময়ও কাফিরদের সামনে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে মক্কা ত্যাগ করেন। এমন আপসহীন চরিত্রের অধিকারী হওয়ার কারণেই রাসুল (সা.) তাঁকে বলেন, ‘হে ইবনুল খাত্তাব, আমার প্রাণ যে সত্তার হাতে, তাঁর কসম করে বলছি, শয়তান যখন তোমাকে এক রাস্তায় দেখে, তখন সে অন্য রাস্তা দিয়ে চলে যায়।’ (বুখারি) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা সত্যকে ওমরের মুখে ও অন্তরে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস: ১৭৩৬)।
দায়িত্ব সচেতনতা
খেলাফতের দায়িত্ব পালনকালে ওমর (রা.)-কে একবার আলী (রা.) কোথাও দ্রুত ছুটে যেতে দেখেন। আলী (রা.) তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে ওমর জানালেন, জাকাতের একটি উট হারিয়ে গেছে। সেটি খোঁজার জন্যই তিনি ছুটছেন। এতেই বোঝা যায়, ওমর (রা.) দায়িত্ব পালনে কত সচেতন ছিলেন। তিনি বলতেন, ‘ফোরাত নদীর তীরে যদি একটি ছাগলও হারিয়ে যায়, ওমরকে শেষবিচারের দিন এর জন্য দায়ী থাকতে হবে।’ ওমর (রা.) এতই দায়িত্বসচেতন ছিলেন যে সারা দিনের দায়িত্ব পালন শেষেও সন্ধ্যায় মদিনা ও আশপাশের এলাকায় মানুষের অবস্থা তদারকির জন্য ছদ্মবেশে বের হতেন। তা ছাড়া মুসলিম-অমুসলিম যেকোনো নাগরিক তাঁর কাছে এসে যেকোনো অভিযোগ সরাসরি জানাতে পারার মতো অবাধ সুযোগ তিনি রেখেছিলেন।
জ্ঞান ও প্রজ্ঞা
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘একবার ঘুমে আমি স্বপ্ন দেখি, আমি দুধ পান করছি। পান করে আমি এতই পূর্ণ হয়ে গেলাম যে আমার নখ বেয়ে দুধ গড়িয়ে পড়ছিল। তাই আমি দুধ পান করার জন্য ওমরের কাছে (পাত্র) বাড়িয়ে দিলাম।’ উপস্থিত সাহাবিরা এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করলে আল্লাহর রাসুল উত্তরে বলেন, ‘(দুধের এই উপমা) জ্ঞান।’ (বুখারি) তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা এতই উন্নত ছিল যে অনেক সময় তাঁর মতামতের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ কথাই আল্লাহ পবিত্র কোরআনের আয়াত হিসেবে নাজিল করেন। তাঁর জ্ঞানের গভীরতা সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘পরবর্তী উম্মতের মধ্যে বহু মুহাদ্দিস তথা জ্ঞানী অতিবাহিত হয়েছেন। আমার উম্মতের মধ্যে যদি কেউ মুহাদ্দিস থাকেন, তিনি ওমর।’ (বুখারি, হাদিস: ৩৪৬৯)
দূরদর্শিতা
ওমর (রা.) যেকোনো মানুষের সঙ্গে সময় কাটানোর পর তার মেধা ও যোগ্যতা সম্পর্কে ধারণা করতে পারতেন। এর মাধ্যমে তিনি কোনো ব্যক্তির প্রতিভা ও দুর্বলতা বুঝতে পারতেন। মানুষ চেনার এই যোগ্যতার মাধ্যমেই তিনি সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক দায়িত্বে নিয়োগ দিতে পারতেন।
এসব গুণ ও যোগ্যতার মাধ্যমেই ওমর (রা.) পৃথিবীর বুকে একটি শক্তিশালী ইসলামি রাষ্ট্রের ভিত্তি গড়ে যেতে সক্ষম হন।
ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) ছিলেন ইতিহাসের সফলতম রাষ্ট্রনায়ক। প্রথম খলিফা হজরত আবুবকর (রা.) মৃত্যুর আগেই সাধারণ মানুষের মতামতের ভিত্তিতে ওমরকে খলিফা মনোনীত করে যান। তাঁর মর্যাদা সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমার পরে যদি কেউ নবী হতেন, তাহলে তিনি ওমর ইবনে খাত্তাবই হতেন।’ মিশকাত, হাদিস: ৬০৩১) হজরত ওমরের নেতৃত্বেই মদিনার ছোট ইসলামি রাষ্ট্র পৃথিবীর দিগ্দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর শাসনামলেই মুসলিম বাহিনী তৎকালীন বিশ্বের দুই পরাশক্তি বাইজান্টাইন ও সাসানি সাম্রাজ্যকে পরাজিত করে ইসলামি রাষ্ট্রের সীমানা বিস্তার করে। যেসব সহজাত গুণের কারণে তিনি কিংবদন্তি রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হন, তা হলো—
চারিত্রিক দৃঢ়তা
চারিত্রিক দৃঢ়তার জন্য ওমর (রা.) শৈশব থেকেই পরিচিত ছিলেন। যে কথা বা কাজ তিনি ঠিক মনে করতেন, তা থেকে কোনো কিছুই তাঁকে ফেরাতে পারত না; কাউকেই তিনি ভয় পেতেন না। তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘটনাই তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তত দিন পর্যন্ত সবাই গোপনে ইসলাম পালন করত। তিনি ইসলাম গ্রহণের পর কাবা চত্বরে গিয়ে প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন এবং সবাইকে নিয়ে নামাজ আদায় করেন। হিজরতের সময়ও কাফিরদের সামনে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে মক্কা ত্যাগ করেন। এমন আপসহীন চরিত্রের অধিকারী হওয়ার কারণেই রাসুল (সা.) তাঁকে বলেন, ‘হে ইবনুল খাত্তাব, আমার প্রাণ যে সত্তার হাতে, তাঁর কসম করে বলছি, শয়তান যখন তোমাকে এক রাস্তায় দেখে, তখন সে অন্য রাস্তা দিয়ে চলে যায়।’ (বুখারি) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা সত্যকে ওমরের মুখে ও অন্তরে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস: ১৭৩৬)।
দায়িত্ব সচেতনতা
খেলাফতের দায়িত্ব পালনকালে ওমর (রা.)-কে একবার আলী (রা.) কোথাও দ্রুত ছুটে যেতে দেখেন। আলী (রা.) তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে ওমর জানালেন, জাকাতের একটি উট হারিয়ে গেছে। সেটি খোঁজার জন্যই তিনি ছুটছেন। এতেই বোঝা যায়, ওমর (রা.) দায়িত্ব পালনে কত সচেতন ছিলেন। তিনি বলতেন, ‘ফোরাত নদীর তীরে যদি একটি ছাগলও হারিয়ে যায়, ওমরকে শেষবিচারের দিন এর জন্য দায়ী থাকতে হবে।’ ওমর (রা.) এতই দায়িত্বসচেতন ছিলেন যে সারা দিনের দায়িত্ব পালন শেষেও সন্ধ্যায় মদিনা ও আশপাশের এলাকায় মানুষের অবস্থা তদারকির জন্য ছদ্মবেশে বের হতেন। তা ছাড়া মুসলিম-অমুসলিম যেকোনো নাগরিক তাঁর কাছে এসে যেকোনো অভিযোগ সরাসরি জানাতে পারার মতো অবাধ সুযোগ তিনি রেখেছিলেন।
জ্ঞান ও প্রজ্ঞা
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘একবার ঘুমে আমি স্বপ্ন দেখি, আমি দুধ পান করছি। পান করে আমি এতই পূর্ণ হয়ে গেলাম যে আমার নখ বেয়ে দুধ গড়িয়ে পড়ছিল। তাই আমি দুধ পান করার জন্য ওমরের কাছে (পাত্র) বাড়িয়ে দিলাম।’ উপস্থিত সাহাবিরা এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করলে আল্লাহর রাসুল উত্তরে বলেন, ‘(দুধের এই উপমা) জ্ঞান।’ (বুখারি) তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা এতই উন্নত ছিল যে অনেক সময় তাঁর মতামতের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ কথাই আল্লাহ পবিত্র কোরআনের আয়াত হিসেবে নাজিল করেন। তাঁর জ্ঞানের গভীরতা সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘পরবর্তী উম্মতের মধ্যে বহু মুহাদ্দিস তথা জ্ঞানী অতিবাহিত হয়েছেন। আমার উম্মতের মধ্যে যদি কেউ মুহাদ্দিস থাকেন, তিনি ওমর।’ (বুখারি, হাদিস: ৩৪৬৯)
দূরদর্শিতা
ওমর (রা.) যেকোনো মানুষের সঙ্গে সময় কাটানোর পর তার মেধা ও যোগ্যতা সম্পর্কে ধারণা করতে পারতেন। এর মাধ্যমে তিনি কোনো ব্যক্তির প্রতিভা ও দুর্বলতা বুঝতে পারতেন। মানুষ চেনার এই যোগ্যতার মাধ্যমেই তিনি সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক দায়িত্বে নিয়োগ দিতে পারতেন।
এসব গুণ ও যোগ্যতার মাধ্যমেই ওমর (রা.) পৃথিবীর বুকে একটি শক্তিশালী ইসলামি রাষ্ট্রের ভিত্তি গড়ে যেতে সক্ষম হন।
বাংলা অঞ্চলের হাজার বছরের ইতিহাসে ধর্ম, সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের যে সমন্বয় ঘটেছে, তার মধ্যে ইসলামি স্থাপত্য এক মহিমান্বিত অধ্যায়। কালের গহ্বরে কিছু নিদর্শন হারিয়ে গেলেও, আজও দাঁড়িয়ে থাকা মসজিদের গম্বুজ, মাদ্রাসার মিনার কিংবা মাজারের কারুকাজ ইসলামের প্রসার ও সৃজনশীলতার এক অনুপম সাক্ষ্য বহন করে।
১২ ঘণ্টা আগেপৃথিবীতে আমরা কেউই চাপমুক্ত নই; দুশ্চিন্তা ও হতাশা সবারই থাকে। তবে এটি অস্বাভাবিক মাত্রায় হলে তা মানসিক রোগে রূপ নেয়, যা অনেক শারীরিক রোগেরও কারণ। তাই প্রতিটি মানুষের দুশ্চিন্তা থেকে বের হয়ে আসা উচিত। চিন্তামুক্ত থাকার জন্য কোরআন-হাদিসে বেশ কিছু আমলের কথা এসেছে। এখানে ৪টি আমলের কথা আলোচনা করছি।
১৩ ঘণ্টা আগেহিজরি সনের অষ্টম মাস শাবান। ইসলামে এ মাসের ফজিলত ও মর্যাদা অনেক। মহানবী (সা.) রজব মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি শুরু করতেন। শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রেখে রমজানের জন্য মানসিকভাবে তৈরি হতেন। এ মাসের মধ্যভাগে রয়েছে ফজিলতের রাত শবে বরাত।
১৩ ঘণ্টা আগেআরবি দাওয়াত শব্দের অর্থ ডাকা এবং তাবলিগ শব্দের অর্থ পৌঁছে দেওয়া। ইসলামের সুমহান বাণীর প্রচার-প্রসারের পদ্ধতিকেই দাওয়াত ও তাবলিগ বলা হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। মুসলমানদের একটি দলকে অবশ্যই এই দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যে একটা...
১৩ ঘণ্টা আগে