ইজাজুল হক, ঢাকা
সম্প্রতি পবিত্র মক্কা নগরীর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পবিত্র কাবাঘরের বেশ কাছের কয়েকটি পাহাড়, মাঠঘাট ও সড়কের দুই পাশ সবুজ তৃণলতায় ছেয়ে গেছে। ছবিগুলোর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক বৃষ্টির পর মক্কার সবুজ দৃশ্য’। সৌদি আরবে বসবাসরত একাধিক বাংলাদেশিও তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
এই পোস্টে অনেককেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মন্তব্য করতে দেখা যায়। তবে বেশির ভাগ মন্তব্যকারীকে মহানবী (সা.)-এর একটি হাদিস স্মরণ করিয়ে দিয়ে মানুষকে সতর্ক করতে দেখা যাচ্ছে। হাদিসটি এ রকম—‘আরব ভূমিতে যত দিন তৃণলতা ও নদী-নালা ফিরে আসবে না, তত দিন কেয়ামত হবে না।’ (মুসলিম)
এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে চলছে তুমুল আলোচনা। এ লেখায় আমরা কোরআন-হাদিসের আলোকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব।
কেয়ামতের আলামত
আরবি কেয়ামত শব্দের অর্থ উঠে দাঁড়ানো। মহাবিশ্বের আয়ু যেদিন ফুরিয়ে যাবে, সেদিন ইসরাফিল (আ.)-এর প্রথম ফুঁকের মাধ্যমে নশ্বর জগতের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে এবং দ্বিতীয় ফুঁকের মাধ্যমে সব সৃষ্টি ফের জীবিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে। এটিই ইসলামের পরিভাষায় কেয়ামত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, ফলে আসমান-জমিনের সবাই মূর্ছা যাবে, তবে আল্লাহ যাদের রক্ষা করতে চাইবেন, তারা ছাড়া। এরপর আবার শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকবে।’ (সুরা যুমার: ৬৮)
কেয়ামত কখন হবে, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। যেমন—পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কেয়ামতের জ্ঞান কেবল তাঁরই জানা…।’ (সুরা হা-মিম-সাজদা: ৪৭)
মহানবী (সা.) হাদিসে পাঁচটি গোপন তথ্যের কথা বলেছেন, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। এর মধ্যে প্রথমটিই হলো কেয়ামত কখন হবে। (বুখারি)
তবে কোরআন-হাদিসে কেয়ামতের অনেকগুলো আলামতের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ছোট আলামত, কিছু বড় আলামত। বড় আলামতগুলো কেয়ামত খুব কাছে এলেই দৃশ্যমান হবে। হাদিসে ১০টি বড় আলামতের কথা এসেছে। যেমন—দাজ্জালের আবির্ভাব, ইমাম মাহদির আগমন ইত্যাদি। আর ছোট আলামতের সংখ্যা ৩০টির কাছাকাছি। প্রায় সব ছোট আলামত এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। যেমন—মহানবী (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুর ঘটনাও কেয়ামতের অন্যতম ছোট আলামত। তেমনি মুসলমানদের বায়তুল মুকাদ্দাস ও কনস্ট্যান্টিনোপল বিজয়ও ছোট আলামত। ছোট আলামতের মধ্যে এখনো পুরোপুরি প্রকাশ পায়নি এমন একটি হলো আরব ভূখণ্ডে তৃণলতা ও নদী-নালা ফিরে আসা।
আরবে তৃণলতা গজানো সম্পর্কে ৩টি হাদিস
এ বিষয়ে তিনটি হাদিস পাওয়া যায়। প্রথম হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আরব ভূখণ্ডে তৃণভূমি ও নদী-নালা ফিরে না আসা পর্যন্ত কেয়ামত হবে না।’ দ্বিতীয় হাদিসেও একই শব্দগুলো এসেছে। তৃতীয় হাদিসে তাবুকের যুদ্ধের একটি ঘটনা প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) তাবুক সম্পর্কে মুআজ ইবনে জাবাল (রা.)-কে বলেছিলেন, ‘হে মুআজ, তোমার আয়ু যদি দীর্ঘ হয়, তবে শিগগিরই তুমি এই স্থান বসতি ও উদ্যানে ভরা দেখতে পাবে।’ (মুসলিম)
হাদিসগুলোর ব্যাখ্যায় আলেমগণ বলেছেন, আরব উপদ্বীপের মরুভূমিগুলোতে কেয়ামতের আগে সবুজ তৃণলতা গজাবে এবং নদী-নালার সৃষ্টি হবে। হাদিসে যেহেতু ‘ফিরে আসবে’ এসেছে, তাই বোঝাই যাচ্ছে, প্রাচীন যুগের কোনো এক সময় আরবের মরু অঞ্চলে সবুজ তৃণভূমি ও নদী-নালা ছিল। কেয়ামতের আগে আবার আরবের সেই রূপ ফিরে আসবে। সাম্প্রতিক সময়ে আরবের বিভিন্ন স্থানে গবেষণা করে অনেক ভূতাত্ত্বিকই এটি নিশ্চিত হয়েছেন। (ইসলামওয়েব ডটকম)
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, আরবে দিনে দিনে শীত বাড়ছে। এমনকি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অন্যান্য দেশে সম্প্রতি তুষারপাত হতেও দেখা যাচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণও বাড়ছে। এসব বিষয় আরবের মরুভূমিতে প্রাণের সঞ্চার করছে। ফসলের উৎপাদন বাড়ছে। চাষাবাদ আগের তুলনায় অনেক বেশি হচ্ছে। তবে পুরো আরব ভূখণ্ডে সবুজ তৃণলতা ও নদী-নালা এখনো সৃষ্টি হয়নি, যার কথা প্রথম ও দ্বিতীয় হাদিসে বলা হয়েছে। তবে তৃতীয় হাদিসে তাবুকের যে স্থানের কথা বলা হয়েছে, তা আজ বাস্তব। তাবুকজুড়েই এখন বিভিন্ন ফল-ফলাদির বাগান, যা মহানবী (সা.)-এর সেই ভবিষ্যদ্বাণীর কথা কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। (নিহায়াতুল আলম)
মক্কায় গজানো তৃণলতা কি কেয়ামতের আলামত
ওপরের আলোচনা থেকে এ বিষয়ে আমরা একটি উপসংহারে পৌঁছাতে পারি। তা হলো, প্রথম ও দ্বিতীয় হাদিসে মহানবী (সা.) আরবে তৃণলতা ও নদী-নালায় ভরে যাওয়ার যে কথা বলেছেন, এটি তারই একটি সূচনা হতে পারে। তবে পুরোপুরি সেটি দৃশ্যমান বলা যাচ্ছে না। কারণ হাদিসে বলা হয়েছে, আরব ভূমিতে তৃণলতা ও নদী-নালা স্বাভাবিক হয়ে যাবে, যেমনটি একসময় ছিল। সেই সময় এখনো আসেনি। তবে তা যে খুব শিগগিরই আসতে চলেছে, আরব বিশ্বের সাম্প্রতিক আবহাওয়া ও জলবায়ু দেখলেই তা আঁচ করা যায়।
এ ছাড়া সৌদি আরব সরকার সম্প্রতি ১ হাজার কোটি গাছ লাগানোর ঘোষণা দিয়েছে। অন্য আরব দেশগুলোও সবুজায়নের জন্য বড় বড় প্রকল্প হাতে নিচ্ছে, যা আরব বিশ্বকে তার আগের সবুজ শ্যামল রূপে শিগগিরই ফিরিয়ে আনবে বলে ধরে নেওয়া যায়।
তবে মক্কার শুকনো পাহাড় ও মরুর বুকে সবুজ ঘাস ও তৃণলতা গজানোর পরপরই কেয়ামত হয়ে যাবে এমন ভাবার কারণ নেই। বরং এ ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা হলো, কেয়ামত আমাদের কাছে চলে এসেছে। সেদিন আল্লাহর দরবারে আমাদের কৃতকর্মের হিসাব দিতে হবে। তাই তাঁর নির্দেশিত পথেই জীবন পরিচালিত করে সেদিনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াই আমাদের কর্তব্য। সেদিন ভালো কাজ ছাড়া কোনো কিছুই আমাদের উপকারে আসবে না।
ভীষণ সংকটের সেই মুহূর্তের কথা পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এভাবে বলেছেন, ‘এরপর যেদিন (কেয়ামতের) ধ্বংসধ্বনি এসে পড়বে, সেদিন মানুষ ভাই, মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান থেকে পালিয়ে যাবে। সেদিন প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সেদিন কিছু মুখ উজ্জ্বল সহাস্য ও উৎফুল্ল হবে। সেদিন কিছু মুখ ধূলিমলিন হবে; সেগুলোকে কালিমা আচ্ছন্ন করে রাখবে। এরাই আল্লাহকে অস্বীকারকারী পাপাচারী।’ (সুরা আবাসা: ৩৪-৪২)
ইসলাম সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
সম্প্রতি পবিত্র মক্কা নগরীর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পবিত্র কাবাঘরের বেশ কাছের কয়েকটি পাহাড়, মাঠঘাট ও সড়কের দুই পাশ সবুজ তৃণলতায় ছেয়ে গেছে। ছবিগুলোর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক বৃষ্টির পর মক্কার সবুজ দৃশ্য’। সৌদি আরবে বসবাসরত একাধিক বাংলাদেশিও তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
এই পোস্টে অনেককেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মন্তব্য করতে দেখা যায়। তবে বেশির ভাগ মন্তব্যকারীকে মহানবী (সা.)-এর একটি হাদিস স্মরণ করিয়ে দিয়ে মানুষকে সতর্ক করতে দেখা যাচ্ছে। হাদিসটি এ রকম—‘আরব ভূমিতে যত দিন তৃণলতা ও নদী-নালা ফিরে আসবে না, তত দিন কেয়ামত হবে না।’ (মুসলিম)
এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে চলছে তুমুল আলোচনা। এ লেখায় আমরা কোরআন-হাদিসের আলোকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব।
কেয়ামতের আলামত
আরবি কেয়ামত শব্দের অর্থ উঠে দাঁড়ানো। মহাবিশ্বের আয়ু যেদিন ফুরিয়ে যাবে, সেদিন ইসরাফিল (আ.)-এর প্রথম ফুঁকের মাধ্যমে নশ্বর জগতের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে এবং দ্বিতীয় ফুঁকের মাধ্যমে সব সৃষ্টি ফের জীবিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে। এটিই ইসলামের পরিভাষায় কেয়ামত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, ফলে আসমান-জমিনের সবাই মূর্ছা যাবে, তবে আল্লাহ যাদের রক্ষা করতে চাইবেন, তারা ছাড়া। এরপর আবার শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকবে।’ (সুরা যুমার: ৬৮)
কেয়ামত কখন হবে, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। যেমন—পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কেয়ামতের জ্ঞান কেবল তাঁরই জানা…।’ (সুরা হা-মিম-সাজদা: ৪৭)
মহানবী (সা.) হাদিসে পাঁচটি গোপন তথ্যের কথা বলেছেন, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। এর মধ্যে প্রথমটিই হলো কেয়ামত কখন হবে। (বুখারি)
তবে কোরআন-হাদিসে কেয়ামতের অনেকগুলো আলামতের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ছোট আলামত, কিছু বড় আলামত। বড় আলামতগুলো কেয়ামত খুব কাছে এলেই দৃশ্যমান হবে। হাদিসে ১০টি বড় আলামতের কথা এসেছে। যেমন—দাজ্জালের আবির্ভাব, ইমাম মাহদির আগমন ইত্যাদি। আর ছোট আলামতের সংখ্যা ৩০টির কাছাকাছি। প্রায় সব ছোট আলামত এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। যেমন—মহানবী (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুর ঘটনাও কেয়ামতের অন্যতম ছোট আলামত। তেমনি মুসলমানদের বায়তুল মুকাদ্দাস ও কনস্ট্যান্টিনোপল বিজয়ও ছোট আলামত। ছোট আলামতের মধ্যে এখনো পুরোপুরি প্রকাশ পায়নি এমন একটি হলো আরব ভূখণ্ডে তৃণলতা ও নদী-নালা ফিরে আসা।
আরবে তৃণলতা গজানো সম্পর্কে ৩টি হাদিস
এ বিষয়ে তিনটি হাদিস পাওয়া যায়। প্রথম হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আরব ভূখণ্ডে তৃণভূমি ও নদী-নালা ফিরে না আসা পর্যন্ত কেয়ামত হবে না।’ দ্বিতীয় হাদিসেও একই শব্দগুলো এসেছে। তৃতীয় হাদিসে তাবুকের যুদ্ধের একটি ঘটনা প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) তাবুক সম্পর্কে মুআজ ইবনে জাবাল (রা.)-কে বলেছিলেন, ‘হে মুআজ, তোমার আয়ু যদি দীর্ঘ হয়, তবে শিগগিরই তুমি এই স্থান বসতি ও উদ্যানে ভরা দেখতে পাবে।’ (মুসলিম)
হাদিসগুলোর ব্যাখ্যায় আলেমগণ বলেছেন, আরব উপদ্বীপের মরুভূমিগুলোতে কেয়ামতের আগে সবুজ তৃণলতা গজাবে এবং নদী-নালার সৃষ্টি হবে। হাদিসে যেহেতু ‘ফিরে আসবে’ এসেছে, তাই বোঝাই যাচ্ছে, প্রাচীন যুগের কোনো এক সময় আরবের মরু অঞ্চলে সবুজ তৃণভূমি ও নদী-নালা ছিল। কেয়ামতের আগে আবার আরবের সেই রূপ ফিরে আসবে। সাম্প্রতিক সময়ে আরবের বিভিন্ন স্থানে গবেষণা করে অনেক ভূতাত্ত্বিকই এটি নিশ্চিত হয়েছেন। (ইসলামওয়েব ডটকম)
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, আরবে দিনে দিনে শীত বাড়ছে। এমনকি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অন্যান্য দেশে সম্প্রতি তুষারপাত হতেও দেখা যাচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণও বাড়ছে। এসব বিষয় আরবের মরুভূমিতে প্রাণের সঞ্চার করছে। ফসলের উৎপাদন বাড়ছে। চাষাবাদ আগের তুলনায় অনেক বেশি হচ্ছে। তবে পুরো আরব ভূখণ্ডে সবুজ তৃণলতা ও নদী-নালা এখনো সৃষ্টি হয়নি, যার কথা প্রথম ও দ্বিতীয় হাদিসে বলা হয়েছে। তবে তৃতীয় হাদিসে তাবুকের যে স্থানের কথা বলা হয়েছে, তা আজ বাস্তব। তাবুকজুড়েই এখন বিভিন্ন ফল-ফলাদির বাগান, যা মহানবী (সা.)-এর সেই ভবিষ্যদ্বাণীর কথা কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। (নিহায়াতুল আলম)
মক্কায় গজানো তৃণলতা কি কেয়ামতের আলামত
ওপরের আলোচনা থেকে এ বিষয়ে আমরা একটি উপসংহারে পৌঁছাতে পারি। তা হলো, প্রথম ও দ্বিতীয় হাদিসে মহানবী (সা.) আরবে তৃণলতা ও নদী-নালায় ভরে যাওয়ার যে কথা বলেছেন, এটি তারই একটি সূচনা হতে পারে। তবে পুরোপুরি সেটি দৃশ্যমান বলা যাচ্ছে না। কারণ হাদিসে বলা হয়েছে, আরব ভূমিতে তৃণলতা ও নদী-নালা স্বাভাবিক হয়ে যাবে, যেমনটি একসময় ছিল। সেই সময় এখনো আসেনি। তবে তা যে খুব শিগগিরই আসতে চলেছে, আরব বিশ্বের সাম্প্রতিক আবহাওয়া ও জলবায়ু দেখলেই তা আঁচ করা যায়।
এ ছাড়া সৌদি আরব সরকার সম্প্রতি ১ হাজার কোটি গাছ লাগানোর ঘোষণা দিয়েছে। অন্য আরব দেশগুলোও সবুজায়নের জন্য বড় বড় প্রকল্প হাতে নিচ্ছে, যা আরব বিশ্বকে তার আগের সবুজ শ্যামল রূপে শিগগিরই ফিরিয়ে আনবে বলে ধরে নেওয়া যায়।
তবে মক্কার শুকনো পাহাড় ও মরুর বুকে সবুজ ঘাস ও তৃণলতা গজানোর পরপরই কেয়ামত হয়ে যাবে এমন ভাবার কারণ নেই। বরং এ ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা হলো, কেয়ামত আমাদের কাছে চলে এসেছে। সেদিন আল্লাহর দরবারে আমাদের কৃতকর্মের হিসাব দিতে হবে। তাই তাঁর নির্দেশিত পথেই জীবন পরিচালিত করে সেদিনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াই আমাদের কর্তব্য। সেদিন ভালো কাজ ছাড়া কোনো কিছুই আমাদের উপকারে আসবে না।
ভীষণ সংকটের সেই মুহূর্তের কথা পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এভাবে বলেছেন, ‘এরপর যেদিন (কেয়ামতের) ধ্বংসধ্বনি এসে পড়বে, সেদিন মানুষ ভাই, মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান থেকে পালিয়ে যাবে। সেদিন প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সেদিন কিছু মুখ উজ্জ্বল সহাস্য ও উৎফুল্ল হবে। সেদিন কিছু মুখ ধূলিমলিন হবে; সেগুলোকে কালিমা আচ্ছন্ন করে রাখবে। এরাই আল্লাহকে অস্বীকারকারী পাপাচারী।’ (সুরা আবাসা: ৩৪-৪২)
ইসলাম সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
ইজাজুল হক, ঢাকা
সম্প্রতি পবিত্র মক্কা নগরীর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পবিত্র কাবাঘরের বেশ কাছের কয়েকটি পাহাড়, মাঠঘাট ও সড়কের দুই পাশ সবুজ তৃণলতায় ছেয়ে গেছে। ছবিগুলোর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক বৃষ্টির পর মক্কার সবুজ দৃশ্য’। সৌদি আরবে বসবাসরত একাধিক বাংলাদেশিও তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
এই পোস্টে অনেককেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মন্তব্য করতে দেখা যায়। তবে বেশির ভাগ মন্তব্যকারীকে মহানবী (সা.)-এর একটি হাদিস স্মরণ করিয়ে দিয়ে মানুষকে সতর্ক করতে দেখা যাচ্ছে। হাদিসটি এ রকম—‘আরব ভূমিতে যত দিন তৃণলতা ও নদী-নালা ফিরে আসবে না, তত দিন কেয়ামত হবে না।’ (মুসলিম)
এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে চলছে তুমুল আলোচনা। এ লেখায় আমরা কোরআন-হাদিসের আলোকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব।
কেয়ামতের আলামত
আরবি কেয়ামত শব্দের অর্থ উঠে দাঁড়ানো। মহাবিশ্বের আয়ু যেদিন ফুরিয়ে যাবে, সেদিন ইসরাফিল (আ.)-এর প্রথম ফুঁকের মাধ্যমে নশ্বর জগতের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে এবং দ্বিতীয় ফুঁকের মাধ্যমে সব সৃষ্টি ফের জীবিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে। এটিই ইসলামের পরিভাষায় কেয়ামত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, ফলে আসমান-জমিনের সবাই মূর্ছা যাবে, তবে আল্লাহ যাদের রক্ষা করতে চাইবেন, তারা ছাড়া। এরপর আবার শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকবে।’ (সুরা যুমার: ৬৮)
কেয়ামত কখন হবে, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। যেমন—পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কেয়ামতের জ্ঞান কেবল তাঁরই জানা…।’ (সুরা হা-মিম-সাজদা: ৪৭)
মহানবী (সা.) হাদিসে পাঁচটি গোপন তথ্যের কথা বলেছেন, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। এর মধ্যে প্রথমটিই হলো কেয়ামত কখন হবে। (বুখারি)
তবে কোরআন-হাদিসে কেয়ামতের অনেকগুলো আলামতের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ছোট আলামত, কিছু বড় আলামত। বড় আলামতগুলো কেয়ামত খুব কাছে এলেই দৃশ্যমান হবে। হাদিসে ১০টি বড় আলামতের কথা এসেছে। যেমন—দাজ্জালের আবির্ভাব, ইমাম মাহদির আগমন ইত্যাদি। আর ছোট আলামতের সংখ্যা ৩০টির কাছাকাছি। প্রায় সব ছোট আলামত এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। যেমন—মহানবী (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুর ঘটনাও কেয়ামতের অন্যতম ছোট আলামত। তেমনি মুসলমানদের বায়তুল মুকাদ্দাস ও কনস্ট্যান্টিনোপল বিজয়ও ছোট আলামত। ছোট আলামতের মধ্যে এখনো পুরোপুরি প্রকাশ পায়নি এমন একটি হলো আরব ভূখণ্ডে তৃণলতা ও নদী-নালা ফিরে আসা।
আরবে তৃণলতা গজানো সম্পর্কে ৩টি হাদিস
এ বিষয়ে তিনটি হাদিস পাওয়া যায়। প্রথম হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আরব ভূখণ্ডে তৃণভূমি ও নদী-নালা ফিরে না আসা পর্যন্ত কেয়ামত হবে না।’ দ্বিতীয় হাদিসেও একই শব্দগুলো এসেছে। তৃতীয় হাদিসে তাবুকের যুদ্ধের একটি ঘটনা প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) তাবুক সম্পর্কে মুআজ ইবনে জাবাল (রা.)-কে বলেছিলেন, ‘হে মুআজ, তোমার আয়ু যদি দীর্ঘ হয়, তবে শিগগিরই তুমি এই স্থান বসতি ও উদ্যানে ভরা দেখতে পাবে।’ (মুসলিম)
হাদিসগুলোর ব্যাখ্যায় আলেমগণ বলেছেন, আরব উপদ্বীপের মরুভূমিগুলোতে কেয়ামতের আগে সবুজ তৃণলতা গজাবে এবং নদী-নালার সৃষ্টি হবে। হাদিসে যেহেতু ‘ফিরে আসবে’ এসেছে, তাই বোঝাই যাচ্ছে, প্রাচীন যুগের কোনো এক সময় আরবের মরু অঞ্চলে সবুজ তৃণভূমি ও নদী-নালা ছিল। কেয়ামতের আগে আবার আরবের সেই রূপ ফিরে আসবে। সাম্প্রতিক সময়ে আরবের বিভিন্ন স্থানে গবেষণা করে অনেক ভূতাত্ত্বিকই এটি নিশ্চিত হয়েছেন। (ইসলামওয়েব ডটকম)
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, আরবে দিনে দিনে শীত বাড়ছে। এমনকি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অন্যান্য দেশে সম্প্রতি তুষারপাত হতেও দেখা যাচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণও বাড়ছে। এসব বিষয় আরবের মরুভূমিতে প্রাণের সঞ্চার করছে। ফসলের উৎপাদন বাড়ছে। চাষাবাদ আগের তুলনায় অনেক বেশি হচ্ছে। তবে পুরো আরব ভূখণ্ডে সবুজ তৃণলতা ও নদী-নালা এখনো সৃষ্টি হয়নি, যার কথা প্রথম ও দ্বিতীয় হাদিসে বলা হয়েছে। তবে তৃতীয় হাদিসে তাবুকের যে স্থানের কথা বলা হয়েছে, তা আজ বাস্তব। তাবুকজুড়েই এখন বিভিন্ন ফল-ফলাদির বাগান, যা মহানবী (সা.)-এর সেই ভবিষ্যদ্বাণীর কথা কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। (নিহায়াতুল আলম)
মক্কায় গজানো তৃণলতা কি কেয়ামতের আলামত
ওপরের আলোচনা থেকে এ বিষয়ে আমরা একটি উপসংহারে পৌঁছাতে পারি। তা হলো, প্রথম ও দ্বিতীয় হাদিসে মহানবী (সা.) আরবে তৃণলতা ও নদী-নালায় ভরে যাওয়ার যে কথা বলেছেন, এটি তারই একটি সূচনা হতে পারে। তবে পুরোপুরি সেটি দৃশ্যমান বলা যাচ্ছে না। কারণ হাদিসে বলা হয়েছে, আরব ভূমিতে তৃণলতা ও নদী-নালা স্বাভাবিক হয়ে যাবে, যেমনটি একসময় ছিল। সেই সময় এখনো আসেনি। তবে তা যে খুব শিগগিরই আসতে চলেছে, আরব বিশ্বের সাম্প্রতিক আবহাওয়া ও জলবায়ু দেখলেই তা আঁচ করা যায়।
এ ছাড়া সৌদি আরব সরকার সম্প্রতি ১ হাজার কোটি গাছ লাগানোর ঘোষণা দিয়েছে। অন্য আরব দেশগুলোও সবুজায়নের জন্য বড় বড় প্রকল্প হাতে নিচ্ছে, যা আরব বিশ্বকে তার আগের সবুজ শ্যামল রূপে শিগগিরই ফিরিয়ে আনবে বলে ধরে নেওয়া যায়।
তবে মক্কার শুকনো পাহাড় ও মরুর বুকে সবুজ ঘাস ও তৃণলতা গজানোর পরপরই কেয়ামত হয়ে যাবে এমন ভাবার কারণ নেই। বরং এ ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা হলো, কেয়ামত আমাদের কাছে চলে এসেছে। সেদিন আল্লাহর দরবারে আমাদের কৃতকর্মের হিসাব দিতে হবে। তাই তাঁর নির্দেশিত পথেই জীবন পরিচালিত করে সেদিনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াই আমাদের কর্তব্য। সেদিন ভালো কাজ ছাড়া কোনো কিছুই আমাদের উপকারে আসবে না।
ভীষণ সংকটের সেই মুহূর্তের কথা পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এভাবে বলেছেন, ‘এরপর যেদিন (কেয়ামতের) ধ্বংসধ্বনি এসে পড়বে, সেদিন মানুষ ভাই, মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান থেকে পালিয়ে যাবে। সেদিন প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সেদিন কিছু মুখ উজ্জ্বল সহাস্য ও উৎফুল্ল হবে। সেদিন কিছু মুখ ধূলিমলিন হবে; সেগুলোকে কালিমা আচ্ছন্ন করে রাখবে। এরাই আল্লাহকে অস্বীকারকারী পাপাচারী।’ (সুরা আবাসা: ৩৪-৪২)
ইসলাম সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
সম্প্রতি পবিত্র মক্কা নগরীর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পবিত্র কাবাঘরের বেশ কাছের কয়েকটি পাহাড়, মাঠঘাট ও সড়কের দুই পাশ সবুজ তৃণলতায় ছেয়ে গেছে। ছবিগুলোর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক বৃষ্টির পর মক্কার সবুজ দৃশ্য’। সৌদি আরবে বসবাসরত একাধিক বাংলাদেশিও তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
এই পোস্টে অনেককেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মন্তব্য করতে দেখা যায়। তবে বেশির ভাগ মন্তব্যকারীকে মহানবী (সা.)-এর একটি হাদিস স্মরণ করিয়ে দিয়ে মানুষকে সতর্ক করতে দেখা যাচ্ছে। হাদিসটি এ রকম—‘আরব ভূমিতে যত দিন তৃণলতা ও নদী-নালা ফিরে আসবে না, তত দিন কেয়ামত হবে না।’ (মুসলিম)
এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে চলছে তুমুল আলোচনা। এ লেখায় আমরা কোরআন-হাদিসের আলোকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব।
কেয়ামতের আলামত
আরবি কেয়ামত শব্দের অর্থ উঠে দাঁড়ানো। মহাবিশ্বের আয়ু যেদিন ফুরিয়ে যাবে, সেদিন ইসরাফিল (আ.)-এর প্রথম ফুঁকের মাধ্যমে নশ্বর জগতের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে এবং দ্বিতীয় ফুঁকের মাধ্যমে সব সৃষ্টি ফের জীবিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে। এটিই ইসলামের পরিভাষায় কেয়ামত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, ফলে আসমান-জমিনের সবাই মূর্ছা যাবে, তবে আল্লাহ যাদের রক্ষা করতে চাইবেন, তারা ছাড়া। এরপর আবার শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকবে।’ (সুরা যুমার: ৬৮)
কেয়ামত কখন হবে, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। যেমন—পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কেয়ামতের জ্ঞান কেবল তাঁরই জানা…।’ (সুরা হা-মিম-সাজদা: ৪৭)
মহানবী (সা.) হাদিসে পাঁচটি গোপন তথ্যের কথা বলেছেন, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। এর মধ্যে প্রথমটিই হলো কেয়ামত কখন হবে। (বুখারি)
তবে কোরআন-হাদিসে কেয়ামতের অনেকগুলো আলামতের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ছোট আলামত, কিছু বড় আলামত। বড় আলামতগুলো কেয়ামত খুব কাছে এলেই দৃশ্যমান হবে। হাদিসে ১০টি বড় আলামতের কথা এসেছে। যেমন—দাজ্জালের আবির্ভাব, ইমাম মাহদির আগমন ইত্যাদি। আর ছোট আলামতের সংখ্যা ৩০টির কাছাকাছি। প্রায় সব ছোট আলামত এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। যেমন—মহানবী (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুর ঘটনাও কেয়ামতের অন্যতম ছোট আলামত। তেমনি মুসলমানদের বায়তুল মুকাদ্দাস ও কনস্ট্যান্টিনোপল বিজয়ও ছোট আলামত। ছোট আলামতের মধ্যে এখনো পুরোপুরি প্রকাশ পায়নি এমন একটি হলো আরব ভূখণ্ডে তৃণলতা ও নদী-নালা ফিরে আসা।
আরবে তৃণলতা গজানো সম্পর্কে ৩টি হাদিস
এ বিষয়ে তিনটি হাদিস পাওয়া যায়। প্রথম হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আরব ভূখণ্ডে তৃণভূমি ও নদী-নালা ফিরে না আসা পর্যন্ত কেয়ামত হবে না।’ দ্বিতীয় হাদিসেও একই শব্দগুলো এসেছে। তৃতীয় হাদিসে তাবুকের যুদ্ধের একটি ঘটনা প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) তাবুক সম্পর্কে মুআজ ইবনে জাবাল (রা.)-কে বলেছিলেন, ‘হে মুআজ, তোমার আয়ু যদি দীর্ঘ হয়, তবে শিগগিরই তুমি এই স্থান বসতি ও উদ্যানে ভরা দেখতে পাবে।’ (মুসলিম)
হাদিসগুলোর ব্যাখ্যায় আলেমগণ বলেছেন, আরব উপদ্বীপের মরুভূমিগুলোতে কেয়ামতের আগে সবুজ তৃণলতা গজাবে এবং নদী-নালার সৃষ্টি হবে। হাদিসে যেহেতু ‘ফিরে আসবে’ এসেছে, তাই বোঝাই যাচ্ছে, প্রাচীন যুগের কোনো এক সময় আরবের মরু অঞ্চলে সবুজ তৃণভূমি ও নদী-নালা ছিল। কেয়ামতের আগে আবার আরবের সেই রূপ ফিরে আসবে। সাম্প্রতিক সময়ে আরবের বিভিন্ন স্থানে গবেষণা করে অনেক ভূতাত্ত্বিকই এটি নিশ্চিত হয়েছেন। (ইসলামওয়েব ডটকম)
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, আরবে দিনে দিনে শীত বাড়ছে। এমনকি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অন্যান্য দেশে সম্প্রতি তুষারপাত হতেও দেখা যাচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণও বাড়ছে। এসব বিষয় আরবের মরুভূমিতে প্রাণের সঞ্চার করছে। ফসলের উৎপাদন বাড়ছে। চাষাবাদ আগের তুলনায় অনেক বেশি হচ্ছে। তবে পুরো আরব ভূখণ্ডে সবুজ তৃণলতা ও নদী-নালা এখনো সৃষ্টি হয়নি, যার কথা প্রথম ও দ্বিতীয় হাদিসে বলা হয়েছে। তবে তৃতীয় হাদিসে তাবুকের যে স্থানের কথা বলা হয়েছে, তা আজ বাস্তব। তাবুকজুড়েই এখন বিভিন্ন ফল-ফলাদির বাগান, যা মহানবী (সা.)-এর সেই ভবিষ্যদ্বাণীর কথা কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। (নিহায়াতুল আলম)
মক্কায় গজানো তৃণলতা কি কেয়ামতের আলামত
ওপরের আলোচনা থেকে এ বিষয়ে আমরা একটি উপসংহারে পৌঁছাতে পারি। তা হলো, প্রথম ও দ্বিতীয় হাদিসে মহানবী (সা.) আরবে তৃণলতা ও নদী-নালায় ভরে যাওয়ার যে কথা বলেছেন, এটি তারই একটি সূচনা হতে পারে। তবে পুরোপুরি সেটি দৃশ্যমান বলা যাচ্ছে না। কারণ হাদিসে বলা হয়েছে, আরব ভূমিতে তৃণলতা ও নদী-নালা স্বাভাবিক হয়ে যাবে, যেমনটি একসময় ছিল। সেই সময় এখনো আসেনি। তবে তা যে খুব শিগগিরই আসতে চলেছে, আরব বিশ্বের সাম্প্রতিক আবহাওয়া ও জলবায়ু দেখলেই তা আঁচ করা যায়।
এ ছাড়া সৌদি আরব সরকার সম্প্রতি ১ হাজার কোটি গাছ লাগানোর ঘোষণা দিয়েছে। অন্য আরব দেশগুলোও সবুজায়নের জন্য বড় বড় প্রকল্প হাতে নিচ্ছে, যা আরব বিশ্বকে তার আগের সবুজ শ্যামল রূপে শিগগিরই ফিরিয়ে আনবে বলে ধরে নেওয়া যায়।
তবে মক্কার শুকনো পাহাড় ও মরুর বুকে সবুজ ঘাস ও তৃণলতা গজানোর পরপরই কেয়ামত হয়ে যাবে এমন ভাবার কারণ নেই। বরং এ ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা হলো, কেয়ামত আমাদের কাছে চলে এসেছে। সেদিন আল্লাহর দরবারে আমাদের কৃতকর্মের হিসাব দিতে হবে। তাই তাঁর নির্দেশিত পথেই জীবন পরিচালিত করে সেদিনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াই আমাদের কর্তব্য। সেদিন ভালো কাজ ছাড়া কোনো কিছুই আমাদের উপকারে আসবে না।
ভীষণ সংকটের সেই মুহূর্তের কথা পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এভাবে বলেছেন, ‘এরপর যেদিন (কেয়ামতের) ধ্বংসধ্বনি এসে পড়বে, সেদিন মানুষ ভাই, মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান থেকে পালিয়ে যাবে। সেদিন প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সেদিন কিছু মুখ উজ্জ্বল সহাস্য ও উৎফুল্ল হবে। সেদিন কিছু মুখ ধূলিমলিন হবে; সেগুলোকে কালিমা আচ্ছন্ন করে রাখবে। এরাই আল্লাহকে অস্বীকারকারী পাপাচারী।’ (সুরা আবাসা: ৩৪-৪২)
ইসলাম সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১৪ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
১ দিন আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৫ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৬ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৮ মিনিট | ০৬: ৪২ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৩ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৫ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৬ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৮ মিনিট | ০৬: ৪২ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৩ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
সম্প্রতি পবিত্র মক্কানগরীর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পবিত্র কাবাঘরের বেশ কাছের কয়েকটি পাহাড়, মাঠঘাট ও সড়কের দুই পাশ সবুজ তৃণলতায় ছেয়ে গেছে। ছবিগুলোর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক বৃষ্টির পর মক্কার সবুজ দৃশ্য’। সৌদি আরবে বসবাসরত একাধিক বাংলাদেশিও তথ্যটি নিশ্চ
০৮ জানুয়ারি ২০২৩যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১৪ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
১ দিন আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেরায়হান আল ইমরান
যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
আবু হানিফা (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
তাঁর পুরো নাম, নুমান বিন সাবেত বিন মারজুবান আল-কুফি। তবে ‘আবু হানিফা’ উপাধিতেই বেশি পরিচিত। বর্ণনা অনুযায়ী, তৎকালীন কুফায় ‘হানিফা’ শব্দটি দোয়াত বা কলমের কালি বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। যেহেতু তিনি অধিকাংশ সময় গবেষণা ও লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকতেন, তাই তিনি ‘আবু হানিফা’ উপাধি লাভ করেন।
তিনি ৮০ হিজরি বর্তমান ইরাকের কুফায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি তীক্ষ্ণ মেধাবী ও অধ্যবসায়ী ছিলেন। মেধা ও সাধনার সমন্বয়েই একসময় তিনি নিজেকে সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ, মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে গড়ে তোলেন।
হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা
তিনি ইসলামি ফিকহ তথা আইনশাস্ত্রের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। ফিকহ গবেষণায় তাঁর গভীর যুক্তি, তীক্ষ্ণ চিন্তাশক্তি ও উপলব্ধিই একদিন তাঁকে পরিণত করে হানাফি মাজহাবের স্থপতিতে, যা আজও বিশ্বের বহু দেশে অনুসৃত।
তিনি একজন তাবেয়ি
তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ি, যা তাঁর মর্যাদাকে ফুটিয়ে তোলে। তিনি কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সাহাবির সাক্ষাৎ পেয়ে ধন্য হোন। যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন, তাঁরা হলেন হজরত আনাস বিন মালিক, আবদুল্লাহ বিন হারিস, আমর বিন হুরাইস, জাবির বিন আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা, সাহল বিন সাদ, আবু তোফাইল, ওয়াসেলা বিন আসকা, আবদুল্লাহ বিন উনাইস, মাকিল বিন ইয়াসার, আয়েশা বিনতে আজরাদ (রা.)।
বিচারপতি পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি
তখন ক্ষমতার মসনদে ছিলেন উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদ বিন হুবায়রা। তিনি একদিন সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ ইমাম আবু হানিফা (রা.)-কে ডেকে পাঠান রাজপ্রসাদে। সেখানে এলে তিনি তাঁকে কুফার বিচারপতি (কাজি) হওয়ার প্রস্তাব দেন।
এ প্রস্তাব বাহ্যিকভাবে যদিও সম্মানের; কিন্তু এর পেছনে ছিল খলিফার চতুর রাজনীতি। খলিফা মনে করতেন—তিনি বিচারপতি হলে খিলাফতের ভিত মজবুত হবে, খলিফার বৈধতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু এ দায়িত্ব যে এতটা মসৃণ নয়; তা আবু হানিফা (রহ.) আগে থেকেই বুঝতে সক্ষম হোন। তাই তিনি স্পষ্টভাবে অস্বীকৃতি জানান।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর এই স্পষ্ট অস্বীকৃতিতে থমকে যায় পুরো রাজদরবার। কিন্তু শাসকের ক্রোধ থামেনি। তিনি ইমামকে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেন।
শাসকের আদেশ লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। তাই শুরু হয় মর্মান্তিক শাস্তি। প্রতিদিন ১০টি করে মোট ১০০টি বেত্রাঘাত করা হয় তাঁকে। তবু তিনি ন্যায়ের পথ থেকে একচুলও নড়েননি।
আবারও প্রস্তাব, আবারও প্রত্যাখ্যান
সময় গড়ায়। ক্ষমতায় আসেন আব্বাসি খলিফা আবু জাফর আল-মানসুর। এবার তিনিও আবু হানিফা (রহ.)-কে একই পদের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু হানিফা (রহ.) আগের মতোই দৃঢ়ভাবে নাকচ করেন এবং খলিফার রোষানলে পড়েন। খলিফা তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারের জীবদ্দশায় খলিফা একদিন আবু হানিফা (রহ.)-কে ডেকে নেন এবং জিজ্ঞেস করেন, এ দায়িত্ব গ্রহণে কেন আপনি অনিচ্ছুক? তিনি জবাব দেন—আমি নিজেকে এ দায়িত্বের যোগ্য মনে করি না। তাঁর এ কথায় খলিফা ক্ষুব্ধ হন। বললেন, তুমি মিথ্যা বলছ! আবু হানিফা (রহ.) দৃঢ়ভাবে জবাব দেন, যদি আমি সত্য বলি, তবে আমি অযোগ্য; আর যদি মিথ্যা বলি, তবে আপনি একজন মিথ্যাবাদীকে বিচারপতি বানাতে চাচ্ছেন। খলিফা তাঁর এমন যুক্তিসংগত কথায় খুব বেশি ক্ষিপ্ত হন এবং তাঁকে পুনরায় কারাগারে বন্দী ও বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেন।
খলিফার কথামতো বেত্রাঘাতসহ নানা নিপীড়ন শুরু হয় তাঁর ওপর। ফলে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অতঃপর ১৫০ হিজরিতে, বন্দিদশায়ই আপন প্রভুর সান্নিধ্যে গমন করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা
সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে, তবুও সত্য বলাই শ্রেয়। সম্মান বা পদ নয়, একজন মানুষের আসল পরিচয়—তার নীতি ও আদর্শ। ক্ষমতার মোহ সবাইকে পায় না; বরং কেউ হন ব্যতিক্রম, যিনি যুগে যুগে স্মরণীয় হয়ে থাকেন।
তথ্যসূত্র: উকুদুল জুমান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান ও আল-খাইরাতুল হিসান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
আবু হানিফা (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
তাঁর পুরো নাম, নুমান বিন সাবেত বিন মারজুবান আল-কুফি। তবে ‘আবু হানিফা’ উপাধিতেই বেশি পরিচিত। বর্ণনা অনুযায়ী, তৎকালীন কুফায় ‘হানিফা’ শব্দটি দোয়াত বা কলমের কালি বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। যেহেতু তিনি অধিকাংশ সময় গবেষণা ও লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকতেন, তাই তিনি ‘আবু হানিফা’ উপাধি লাভ করেন।
তিনি ৮০ হিজরি বর্তমান ইরাকের কুফায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি তীক্ষ্ণ মেধাবী ও অধ্যবসায়ী ছিলেন। মেধা ও সাধনার সমন্বয়েই একসময় তিনি নিজেকে সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ, মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে গড়ে তোলেন।
হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা
তিনি ইসলামি ফিকহ তথা আইনশাস্ত্রের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। ফিকহ গবেষণায় তাঁর গভীর যুক্তি, তীক্ষ্ণ চিন্তাশক্তি ও উপলব্ধিই একদিন তাঁকে পরিণত করে হানাফি মাজহাবের স্থপতিতে, যা আজও বিশ্বের বহু দেশে অনুসৃত।
তিনি একজন তাবেয়ি
তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ি, যা তাঁর মর্যাদাকে ফুটিয়ে তোলে। তিনি কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সাহাবির সাক্ষাৎ পেয়ে ধন্য হোন। যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন, তাঁরা হলেন হজরত আনাস বিন মালিক, আবদুল্লাহ বিন হারিস, আমর বিন হুরাইস, জাবির বিন আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা, সাহল বিন সাদ, আবু তোফাইল, ওয়াসেলা বিন আসকা, আবদুল্লাহ বিন উনাইস, মাকিল বিন ইয়াসার, আয়েশা বিনতে আজরাদ (রা.)।
বিচারপতি পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি
তখন ক্ষমতার মসনদে ছিলেন উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদ বিন হুবায়রা। তিনি একদিন সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ ইমাম আবু হানিফা (রা.)-কে ডেকে পাঠান রাজপ্রসাদে। সেখানে এলে তিনি তাঁকে কুফার বিচারপতি (কাজি) হওয়ার প্রস্তাব দেন।
এ প্রস্তাব বাহ্যিকভাবে যদিও সম্মানের; কিন্তু এর পেছনে ছিল খলিফার চতুর রাজনীতি। খলিফা মনে করতেন—তিনি বিচারপতি হলে খিলাফতের ভিত মজবুত হবে, খলিফার বৈধতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু এ দায়িত্ব যে এতটা মসৃণ নয়; তা আবু হানিফা (রহ.) আগে থেকেই বুঝতে সক্ষম হোন। তাই তিনি স্পষ্টভাবে অস্বীকৃতি জানান।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর এই স্পষ্ট অস্বীকৃতিতে থমকে যায় পুরো রাজদরবার। কিন্তু শাসকের ক্রোধ থামেনি। তিনি ইমামকে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেন।
শাসকের আদেশ লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। তাই শুরু হয় মর্মান্তিক শাস্তি। প্রতিদিন ১০টি করে মোট ১০০টি বেত্রাঘাত করা হয় তাঁকে। তবু তিনি ন্যায়ের পথ থেকে একচুলও নড়েননি।
আবারও প্রস্তাব, আবারও প্রত্যাখ্যান
সময় গড়ায়। ক্ষমতায় আসেন আব্বাসি খলিফা আবু জাফর আল-মানসুর। এবার তিনিও আবু হানিফা (রহ.)-কে একই পদের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু হানিফা (রহ.) আগের মতোই দৃঢ়ভাবে নাকচ করেন এবং খলিফার রোষানলে পড়েন। খলিফা তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারের জীবদ্দশায় খলিফা একদিন আবু হানিফা (রহ.)-কে ডেকে নেন এবং জিজ্ঞেস করেন, এ দায়িত্ব গ্রহণে কেন আপনি অনিচ্ছুক? তিনি জবাব দেন—আমি নিজেকে এ দায়িত্বের যোগ্য মনে করি না। তাঁর এ কথায় খলিফা ক্ষুব্ধ হন। বললেন, তুমি মিথ্যা বলছ! আবু হানিফা (রহ.) দৃঢ়ভাবে জবাব দেন, যদি আমি সত্য বলি, তবে আমি অযোগ্য; আর যদি মিথ্যা বলি, তবে আপনি একজন মিথ্যাবাদীকে বিচারপতি বানাতে চাচ্ছেন। খলিফা তাঁর এমন যুক্তিসংগত কথায় খুব বেশি ক্ষিপ্ত হন এবং তাঁকে পুনরায় কারাগারে বন্দী ও বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেন।
খলিফার কথামতো বেত্রাঘাতসহ নানা নিপীড়ন শুরু হয় তাঁর ওপর। ফলে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অতঃপর ১৫০ হিজরিতে, বন্দিদশায়ই আপন প্রভুর সান্নিধ্যে গমন করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা
সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে, তবুও সত্য বলাই শ্রেয়। সম্মান বা পদ নয়, একজন মানুষের আসল পরিচয়—তার নীতি ও আদর্শ। ক্ষমতার মোহ সবাইকে পায় না; বরং কেউ হন ব্যতিক্রম, যিনি যুগে যুগে স্মরণীয় হয়ে থাকেন।
তথ্যসূত্র: উকুদুল জুমান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান ও আল-খাইরাতুল হিসান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
সম্প্রতি পবিত্র মক্কানগরীর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পবিত্র কাবাঘরের বেশ কাছের কয়েকটি পাহাড়, মাঠঘাট ও সড়কের দুই পাশ সবুজ তৃণলতায় ছেয়ে গেছে। ছবিগুলোর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক বৃষ্টির পর মক্কার সবুজ দৃশ্য’। সৌদি আরবে বসবাসরত একাধিক বাংলাদেশিও তথ্যটি নিশ্চ
০৮ জানুয়ারি ২০২৩নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
১ দিন আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেশাব্বির আহমদ
অগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা। এই আমলগুলো কেবল মানসিক শক্তি জোগায় না, বরং আল্লাহর রহমতে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।
১. উচ্চ স্বরে তাকবির দেওয়া: অগ্নিকাণ্ড দেখলে সর্বাগ্রে যে আমলটি রয়েছে, তা হলো তাকবির দেওয়া। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন কোথাও আগুন (লাগতে) দেখো, তখন (উচ্চ স্বরে) তাকবির দাও।’ (তাবরানি: ১ / ৩০৭)
২. কোরআনের আয়াত পাঠ: বিপদের সময় কোরআনের সাহায্য প্রার্থনা করা মুমিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। পবিত্র কোরআনে এমন একটি আয়াত রয়েছে, যা আল্লাহর নবী ইবরাহিম (আ.)-এর জন্য আগুনের ক্রিয়া নিস্তেজ করে দিয়েছিল। অগ্নিকাণ্ডের সময় এই আয়াতটি পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ: ‘ইয়া না-রু কু-নি বারদাও ওয়া সালামান আলা ইবরাহিম।’ অর্থ: ‘হে আগুন, তুমি ইবরাহিমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও।’ (সুরা আম্বিয়া: ৬৯)
৩. আল্লাহর কাছে সাহায্য ও আজান: তাকবির এবং আয়াত পাঠের পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের সময় আগুন নেভানোর নিয়তে উচ্চ স্বরে আজান দেওয়াও অনেক আলেম উত্তম বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ আজানের ধ্বনিও শয়তানকে বিতাড়িত করে। এ ছাড়া, সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) ও তওবা করা জরুরি।
আগুন মানুষকে মুহূর্তেই নিঃস্ব করে দিতে পারে, কিন্তু মুমিন কখনো নিরাশ হয় না। কারণ সে জানে, সব বিপদের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহর হাতেই। অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়ংকর দুর্যোগেও একজন ইমানদার আল্লাহর স্মরণে আশ্রয় নেয়, তাকবির ও কোরআনের আয়াত পাঠে মন স্থির রাখে এবং দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য কামনা করে। পার্থিব চেষ্টা ও আধ্যাত্মিক আমলের এই সমন্বয়ই হলো প্রকৃত ইমানদারের পথ। কেননা, আগুন নেভানোর যন্ত্র যেমন বাহ্যিক আগুন নেভায়, তেমনি আল্লাহর স্মরণ অন্তরের ভয় ও অস্থিরতা নিভিয়ে দেয়।
অগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা। এই আমলগুলো কেবল মানসিক শক্তি জোগায় না, বরং আল্লাহর রহমতে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।
১. উচ্চ স্বরে তাকবির দেওয়া: অগ্নিকাণ্ড দেখলে সর্বাগ্রে যে আমলটি রয়েছে, তা হলো তাকবির দেওয়া। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন কোথাও আগুন (লাগতে) দেখো, তখন (উচ্চ স্বরে) তাকবির দাও।’ (তাবরানি: ১ / ৩০৭)
২. কোরআনের আয়াত পাঠ: বিপদের সময় কোরআনের সাহায্য প্রার্থনা করা মুমিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। পবিত্র কোরআনে এমন একটি আয়াত রয়েছে, যা আল্লাহর নবী ইবরাহিম (আ.)-এর জন্য আগুনের ক্রিয়া নিস্তেজ করে দিয়েছিল। অগ্নিকাণ্ডের সময় এই আয়াতটি পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ: ‘ইয়া না-রু কু-নি বারদাও ওয়া সালামান আলা ইবরাহিম।’ অর্থ: ‘হে আগুন, তুমি ইবরাহিমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও।’ (সুরা আম্বিয়া: ৬৯)
৩. আল্লাহর কাছে সাহায্য ও আজান: তাকবির এবং আয়াত পাঠের পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের সময় আগুন নেভানোর নিয়তে উচ্চ স্বরে আজান দেওয়াও অনেক আলেম উত্তম বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ আজানের ধ্বনিও শয়তানকে বিতাড়িত করে। এ ছাড়া, সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) ও তওবা করা জরুরি।
আগুন মানুষকে মুহূর্তেই নিঃস্ব করে দিতে পারে, কিন্তু মুমিন কখনো নিরাশ হয় না। কারণ সে জানে, সব বিপদের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহর হাতেই। অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়ংকর দুর্যোগেও একজন ইমানদার আল্লাহর স্মরণে আশ্রয় নেয়, তাকবির ও কোরআনের আয়াত পাঠে মন স্থির রাখে এবং দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য কামনা করে। পার্থিব চেষ্টা ও আধ্যাত্মিক আমলের এই সমন্বয়ই হলো প্রকৃত ইমানদারের পথ। কেননা, আগুন নেভানোর যন্ত্র যেমন বাহ্যিক আগুন নেভায়, তেমনি আল্লাহর স্মরণ অন্তরের ভয় ও অস্থিরতা নিভিয়ে দেয়।
সম্প্রতি পবিত্র মক্কানগরীর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পবিত্র কাবাঘরের বেশ কাছের কয়েকটি পাহাড়, মাঠঘাট ও সড়কের দুই পাশ সবুজ তৃণলতায় ছেয়ে গেছে। ছবিগুলোর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক বৃষ্টির পর মক্কার সবুজ দৃশ্য’। সৌদি আরবে বসবাসরত একাধিক বাংলাদেশিও তথ্যটি নিশ্চ
০৮ জানুয়ারি ২০২৩নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১৪ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৪ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪১ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪২ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৫০ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫১ মিনিট | ০৫: ২৭ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৯ মিনিট | ০৬: ৪৩ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৪ মিনিট | ০৪: ৪১ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৪ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪১ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪২ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৫০ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫১ মিনিট | ০৫: ২৭ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৯ মিনিট | ০৬: ৪৩ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৪ মিনিট | ০৪: ৪১ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
সম্প্রতি পবিত্র মক্কানগরীর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পবিত্র কাবাঘরের বেশ কাছের কয়েকটি পাহাড়, মাঠঘাট ও সড়কের দুই পাশ সবুজ তৃণলতায় ছেয়ে গেছে। ছবিগুলোর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক বৃষ্টির পর মক্কার সবুজ দৃশ্য’। সৌদি আরবে বসবাসরত একাধিক বাংলাদেশিও তথ্যটি নিশ্চ
০৮ জানুয়ারি ২০২৩নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১৪ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
১ দিন আগে