Ajker Patrika

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

আব্দুল্লাহ আলমামুন আশরাফী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি  ওয়া সাল্লাম

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন পরশপাথর। তাঁর ছোঁয়ায় মাটির মানুষ পরিণত হতো খাঁটি সোনায়। আরবের এক গোলযোগপূর্ণ সময়ে তাঁর আগমন ঘটেছিল পৃথিবীতে। মানুষ হানাহানি, যুদ্ধ, অহংকার ও অমানবিকতায় ডুবে ছিল। আল্লাহ তাঁকে সেই অন্ধকার সমাজে হিদায়াতের প্রদীপ বানিয়ে পাঠালেন। তাঁকে দান করলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারিত্রিক মাধুর্য। শৈশব থেকে তাঁর চারিত্রিক সৌন্দর্য মানুষকে মুগ্ধ করত। যৌবনে মক্কার সবচেয়ে বিশ্বস্ত যুবক তথা আল-আমিন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন খোদ মক্কার নেতৃস্থানীয় মানুষের কাছ থেকে। নবুওয়ত লাভের পর তাঁর অনুপম ব্যক্তিত্বের কথা ছড়িয়ে পড়ে আরবের পথে-প্রান্তরে। তাঁর মানবিক আচরণে মুগ্ধ হয়ে শত্রুরাও নির্দ্বিধায় তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে পাঠ করেছেন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।’ তাঁর জীবদ্দশাতেই সেকালের অনেক বড় শাসকও তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও অন্যান্য আলামত দেখে তাঁকে আল্লাহর প্রেরিত নবী বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। যুগে যুগে সত্যসন্ধানী অনেক অমুসলিম গবেষকও তাঁর অনুপম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কথা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে এনেছেন।

ওমানের বাদশাহ জুলানদি ছিলেন সত্যানুসন্ধানী বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব। তাঁর কাছে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইসলামের দাওয়াত পাঠান। সাহাবি আমর ইবনুল আস (রা.) দাওয়াত নিয়ে যান। বিচক্ষণ এই বাদশাহ নবীজি (সা.)-এর সম্পর্কে মন্তব্য করেন, ‘আল্লাহর কসম, (দূত) আমাকে এমন একজন উম্মি নবীর কথা বলেছেন, তিনি যখনই কোনো ভালো কাজের আদেশ করেন, প্রথমে তিনি নিজেই সেই কাজটি করেন। আর যে কাজ তিনি নিষেধ করেন, প্রথমে তিনি নিজেই তা বর্জন করেন। তিনি বিজয়ী হয়েও অহংকার করেন না। কেউ তাঁর ওপর প্রতাপ দেখালে রুষ্ট হন না। তিনি ওয়াদা পালন করেন। চুক্তিসমূহ বাস্তবায়ন করেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিঃসন্দেহে তিনি একজন সত্য নবী।’ (আশ-শিফা: ১/ ২৪৮)  

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্রমাধুর্যের খানিক ঝলক বাদশাহ জুলানদির এই মন্তব্যে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। নবীজির চরিত্র ছিল পূর্ণতা ও পরিব্যাপ্তিতে বিভাসিত। তাঁর চরিত্রের প্রতিটি দিক ছিল ষোলোকলায় পূর্ণ। পাহাড়সম ধৈর্য ও দুর্বার সাহসিকতার অপূর্ব সমন্বয় ছিল তাঁর যাপিত জীবনের ছত্রে ছত্রে। দয়ামায়া, সহনশীলতা ও আমানতদারির সর্বোচ্চ চূড়ায় ছিল তাঁর অবস্থান। সময়ের আবর্তনে তাঁর চরিত্রিক মাধুর্যে তারতম্য ঘটেনি। জীবনের কোনো সময়ে একটু বেশি আবার কখনো একটু কম—এমনটা ঘটেনি। তিনি ছাড়া জগতের আর কোনো মানুষের মধ্যে একসঙ্গে এত চারিত্রিক গুণের সমাবেশ পরিলক্ষিত হয়নি। বিখ্যাত জার্মান লেখক ও দার্শনিক কবি জোহান গ্যাটে বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘ইতিহাসের পাতায় আমি তন্ন তন্ন করে সর্বোচ্চ শ্রেষ্ঠ মানুষের দৃষ্টান্ত খুঁজেছি, অবশেষে তা পেয়েছি আরবের নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর মধ্যে।’ (শামসুল আরব তাসতায়ু আলাল গারব: ৪৬৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্রাবলির মূল উৎস কী ছিল? কোন সে প্রেরণায় চরিত্রমাধুর্যে তিনি আকাশের উচ্চতাকেও হার মানিয়েছেন? তা ছিল পবিত্র কোরআন। হ্যাঁ, কোরআনই ছিল তাঁর অনন্য চরিত্র মাধুর্যের উৎস। তিনি পবিত্র কোরআন থেকেই তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি আহরণ ও সমৃদ্ধ করেছেন। ফলে কোরআনই তাঁর পূর্ণ গুণাবলিকে পোঁছে দিয়েছে অনন্য উচ্চতায়। তাঁর সুন্দর শিষ্টাচারকে করেছে আরও সৌন্দর্যময়। এটা সম্ভব হয়েছে কোরআনের প্রতি তাঁর আত্মনিবেদনের বদৌলতে। তিনি নিজেকে কোরআনের প্রতিটি কল্যাণের দিকেই সমর্পণ করে দিয়েছিলেন। কোরআনের অনুপম নির্দেশনামালা তাঁর যাপিত জীবনে বাস্তবায়িত হয়েছে চমৎকারভাবে। যেন তিনি ছিলেন কোরআনের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। তাই তো হজরত সাদ ইবনে হিশাম ইবনে আমের (রা.) যখন উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.)কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন, তখন তিনি জবাবে বলেছিলেন, ‘তুমি কি কোরআন পড়োনি?’ সাদ ইবনে হিশাম বললেন, ‘পড়েছি।’ হজরত আয়েশা (রা.) বললেন, ‘কোরআনই ছিল তাঁর চরিত্র-শিষ্টাচার।’ (মুসলিম: ৭৪৬)  

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর পরিবারে, সাথি-সঙ্গী মুমিনদের মাঝে, সমাজে বসবাসরত অমুসলিমদের মাঝে। এমনকি যুদ্ধরত শত্রুদলের মাঝেও তাঁর সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতাপূর্ণ আচরণ তাঁর চরিত্রকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। কুরাইশ সরদার আবু সুফিয়ান ইসলাম গ্রহণের আগেই তাঁর উত্তম চরিত্রের নমুনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি অকপটে স্বীকার করে বলেছিলেন, ‘আপনার ওপর আমার বাবা-মা কোরবান হোক। আল্লাহর কসম, নিশ্চয়ই আপনি একজন মহান ব্যক্তি। আমি যুদ্ধ করেছি আপনার বিরুদ্ধে, আপনি কত-ই না উত্তম যোদ্ধা ছিলেন! আমি আপনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি, আপনি কতই না উত্তম চুক্তিকারী ছিলেন! মহান আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।’ (মারিফাতুস সাহাবাহ: ৩/ ১৫০৯)

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্র এতটা ব্যাপক যে, তা যেন এক বিশাল দরিয়া। তাঁর চরিত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করে বিস্মিত ও বিমুগ্ধ হয়েছেন মুসলিম থেকে শুরু করে বিশ্বের অনেক অমুসলিম পণ্ডিতও। তারা নির্দ্বিধায় তাঁর অনন্য চরিত্রের কথা স্বীকার করেছেন। বিখ্যাত ইংরেজ দার্শনিক উইলিয়াম ম্যুর বলেন, ‘তাঁর পুরো জীবন ছিল সহজ ও স্বাভাবিকতার নান্দনিক চিত্র। তাঁর অনন্য রুচি ও ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর বহু অনুসারীর কথায়। বিনয়, নম্রতা, সহানুভূতি, ধৈর্য, অন্যকে নিজের ওপর প্রাধান্যদান এবং প্রচুর দানশীলতা তাঁর চরিত্রকে দিয়েছিল এক অনন্যসাধারণ সৌন্দর্য। তাঁর ভালোবাসার আকর্ষণ চারপাশের সবাইকে মোহিত করে রাখত...।’ (হায়াতু মুহাম্মদ)

চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সংক্রামক। এটি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে সংক্রমিত হয়। শুদ্ধ ব্যক্তির প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে শুদ্ধ হয় আশপাশের মানুষ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চারিত্রিক পূর্ণতা তাঁর সাহাবিদেরও পূর্ণ মানুষে পরিণত করেছিল। ফলে তাঁরা আমাদের উপহার দিয়েছিলেন অনুপম এক পৃথিবী। তাই নিজেকে শুদ্ধ করতে হলে, সমাজকে উন্নত ও মানবিক করতে হলে তাঁর চরিত্র ধারণ ও বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।

লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া গাফুরিয়া মাখযানুল উলুম টঙ্গী, গাজীপুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্তানকে নামাজি বানাবেন যেভাবে

সাকী মাহবুব
পরিবার। ছবি: সংগৃহীত
পরিবার। ছবি: সংগৃহীত

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।

প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?

আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)

অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।

সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।

আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।

নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।

সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।

আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)

সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।

লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় তিনবারের চ্যাম্পিয়ন হাফেজের ডেঙ্গুতে মৃত্যু

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৩৬
বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী। ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী। ছবি: সংগৃহীত

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে দেওয়া তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী।

আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।

জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর হাফেজ ত্বকীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

বিশ্বজয়ী এই হাফেজ জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অর্জন করেন অসামান্য সাফল্য।

২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।

প্রতিভাবান এই হাফেজ ২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসাশিক্ষক।

হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন তরুণ এই হাফেজের জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আমানত রক্ষা যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

মুফতি খালিদ কাসেমি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার আমানতদারি নেই, তার ইমানও নেই; যার কাছে অঙ্গীকারের মূল্য নেই, তার দ্বীনদারি নেই।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ)

আমানত রক্ষা করার অনেক ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—

এক. আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ পালন: এরশাদ হচ্ছে, ‘(হে মুসলিমগণ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দেবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সঙ্গে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদের যে বিষয়ে উপদেশ দেন, তা কতই-না উৎকৃষ্ট! নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।’ (সুরা নিসা: ৫৮) মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কেউ তোমার কাছে আমানত রাখলে তা তাকে ফেরত দাও। যে ব্যক্তি তোমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তার সঙ্গে তুমি বিশ্বাসঘাতকতা কোরো না।’ (জামে তিরমিজি)

দুই. রাসুলগণের গুণে গুণান্বিত হওয়া: রাসুলগণ আপন সম্প্রদায়ের লোকজনকে লক্ষ করে বলতেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসুল।’ (সুরা শুআরা: ১০৭)

তিন. ইমানদার ও সফলদের গুণ অর্জন: যারা আমানত রক্ষা করে, মহান আল্লাহ তাদের ‘সফলকাম’ আখ্যা দিয়েছেন। এবং তাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদাউসের সুসংবাদ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘...এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে। এরাই হলো সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী হবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা মুমিনুন: ৮-১১)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৮ অক্টোবর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৪: ৪৫ মিনিট
ফজর০৪: ৪৬ মিনিট০৬: ০১ মিনিট
জোহর১১: ৪৩ মিনিট০৩: ৪৫ মিনিট
আসর০৩: ৪৬ মিনিট০৫: ২১ মিনিট
মাগরিব০৫: ২৩ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
এশা০৬: ৩৮ মিনিট০৪: ৪৫ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—

চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট

সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—

খুলনা: ০৩ মিনিট

রাজশাহী: ০৭ মিনিট

রংপুর: ০৮ মিনিট

বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত