শায়খ আহমাদুল্লাহ
সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মদ (সা.)। তাঁর জীবন-চরিত সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য আদর্শ এবং অনুকরণীয়। কেবল মুসলমানরাই নয়, যেকোনো ধর্মানুসারীরাই তাঁর চারিত্রিক শুদ্ধতায় মুগ্ধ ছিলেন। অনেক অমুসলিম লেখকও তাঁর জীবন-চরিত লিখেছেন এবং সর্বাগ্রে স্থান দিয়েছেন।
তৎকালীন কাফের-মুশরিক, এমনকি নবী করিম (সা.)-এর প্রাণের শত্রুরাও নবীজির চরিত্রে কালিমা লেপন করতে পারেনি। অধুনা কিছু কুচক্রীদের নবী করিম (সা.)-এর শানে এই-সেই বলতে শোনা যায়—যা কেবল শত্রুতা বসত, ভিত্তিহীন অমূলক।
যেসব বৈশিষ্ট্যে নবী করিম (সা.) অনন্য—
নিষ্কলুষ ব্যক্তিত্ব: নবী করিম (সা.) ছিলেন নিষ্কলুষ চরিত্রের মানুষ। চারিত্রিক উৎকর্ষে তিনি অনন্য। যে শহরে তিনি বেড়ে উঠেছেন, সেখানে ইহুদি-নাসারাদের বসবাস ছিল। তবুও তারা নবীজির ব্যক্তিত্বে কোনো অমূলক কথা বলতে পারেননি। সত্যবাদিতা, ন্যায়পরায়ণতা, ধৈর্য, বিনয়—এসব গুণে ছিলেন তিনি গুণবান। শত্রু-মিত্র সবার কাছে বিশ্বস্ত, আস্থাবান।
স্বয়ং আল্লাহ তাআলা রাসুল (সা.)-এর ব্যক্তিত্ব এবং মহান চরিত্রের ব্যাপারে সার্টিফিকেশন করেছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী।’ (সুরা কলম: ৪)
মমত্বপূর্ণ হৃদয়: রাসুলুল্লাহ (সা.) মমত্বে-ভালোবাসায় সর্বোচ্চ আদর্শ। তিনি শুধু পরিবার-পরিজন নয়, শত্রুদের প্রতিও মহানুভবতা দেখিয়েছেন। উহুদ যুদ্ধের পর কাফেররা যখন তাঁকে কষ্ট দেয়, তখনো তাঁদের জন্য বদ দোয়া করেননি, দোয়া করেছেন যেন তারা হেদায়েত পায়।
তায়েফে রাসুল (সা.) যখন দাওয়াত দিতে গেলেন, তায়েফবাসী নবী করিম (সা.)-এর ওপর নির্মম অত্যাচার করেছিল। নবীজি (সা.) চাইলে আল্লাহ তাআলা তাদের ধসিয়ে দিতেন। নবী (সা.) বদ দোয়া করেননি, তাদের জন্য কল্যাণের দোয়া করেছেন।
তাঁর ভালোবাসা কেবল মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, পশু-পাখি, প্রকৃতির প্রতিও ছিলেন দয়ার্দ্র। তিনি বলেছেন, ‘যে দয়া করে না, সে দয়া পায় না।’ (সহিহ্ মুসলিম)
বিশ্বস্ত: বিশ্বস্ততার অতুল নজির তিনি। নবুওয়াতের আগেও মক্কার লোকেরা তাঁকে বিশ্বস্ত (আল-আমিন) বলে চিনত, জানত, ডাকত। মক্কার মুশরিকদের অত্যাচারে যখন তিনি মদিনায় হিজরত করেন, তখন হজরত আলী (রা.)-কে মক্কায় রেখে যান—কাফেরদের আমানত যথাযথভাবে তাদের কাছে ফেরত দেওয়ার জন্য। অথচ, সেই কাফেররাই তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার ফন্দি এঁটেছিল।
আমলে প্রায়োগিকতা: রাসুলুল্লাহ (সা.) শুধু কথার কথা বলে যাননি, নিজে বাস্তবায়ন করে তা দেখিয়েছেন। পৃথিবীতে বহু রাষ্ট্র বিজ্ঞানী ছিল যারা কেবল থিওরি দিয়েছেন, কিন্তু কখনো রাষ্ট্র চালাননি। নবী করিম (সা.) রাষ্ট্র চালিয়ে দেখিয়েছেন। পিতা হিসেবে সন্তানের জন্য কী করণীয় শুধু বলে যাননি, পিতা হয়ে করে গেছেন। পৃথিবীতে দ্বিতীয় কেউ নেই যে, যা বলেছেন তা সব আমলে করে দেখিয়েছেন।
রহমত: রাসুল (সা.)-এর অন্যতম বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো হলো, ‘রহমাতুল্লিল আলামিন।’ সকল সৃষ্টির জন্য তিনি রহমত। কেবল মুসলিমদের জন্য নয়, কাফের-মুশরিকদের জন্যও রহমত। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুদের সঙ্গেও নির্মম আচরণ করতে তিনি বারণ করেছেন, হালাল পশু-পাখি জবাই করে খেতে হলেও প্রয়োজনের অতিরিক্ত কষ্ট দিয়ে জবাই করতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১৭০)
তিনি দাস-দাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, নারীদের মর্যাদা বাড়িয়েছেন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি আপনাকে সমস্ত জগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছি।’ (সুরা আম্বিয়া: ১০৭)
লিওয়াউল হামদের ধারক: লিওয়াউল হামদ হলো সেই বিশেষ পতাকা, যা কিয়ামতের দিন মহানবী (সা.)-এর হাতে থাকবে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, তিনি সেই দিন নবী, রাসুল, শহিদ ও সৎকর্মশীলদের নেতা হিসেবে থাকবেন এবং তাঁর পতাকার নিচে সবাই সমবেত হবে।
তিনি কিয়ামতের দিন উম্মতের জন্য সাফায়াত করবেন—যা অন্য কোনো নবী করতে পারবেন না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি কিয়ামতের দিন আদম সন্তানদের নেতা হব, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’ (সহিহ্ মুসলিম: ২২৭৮)
তাই চারিত্রিক উৎকর্ষ সাধন, সুন্দর ও আলোকিত সমাজ গঠনে সিরাত চর্চা এবং বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।
অনুলিখন: নুরুল ইসলাম তানঈম
সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মদ (সা.)। তাঁর জীবন-চরিত সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য আদর্শ এবং অনুকরণীয়। কেবল মুসলমানরাই নয়, যেকোনো ধর্মানুসারীরাই তাঁর চারিত্রিক শুদ্ধতায় মুগ্ধ ছিলেন। অনেক অমুসলিম লেখকও তাঁর জীবন-চরিত লিখেছেন এবং সর্বাগ্রে স্থান দিয়েছেন।
তৎকালীন কাফের-মুশরিক, এমনকি নবী করিম (সা.)-এর প্রাণের শত্রুরাও নবীজির চরিত্রে কালিমা লেপন করতে পারেনি। অধুনা কিছু কুচক্রীদের নবী করিম (সা.)-এর শানে এই-সেই বলতে শোনা যায়—যা কেবল শত্রুতা বসত, ভিত্তিহীন অমূলক।
যেসব বৈশিষ্ট্যে নবী করিম (সা.) অনন্য—
নিষ্কলুষ ব্যক্তিত্ব: নবী করিম (সা.) ছিলেন নিষ্কলুষ চরিত্রের মানুষ। চারিত্রিক উৎকর্ষে তিনি অনন্য। যে শহরে তিনি বেড়ে উঠেছেন, সেখানে ইহুদি-নাসারাদের বসবাস ছিল। তবুও তারা নবীজির ব্যক্তিত্বে কোনো অমূলক কথা বলতে পারেননি। সত্যবাদিতা, ন্যায়পরায়ণতা, ধৈর্য, বিনয়—এসব গুণে ছিলেন তিনি গুণবান। শত্রু-মিত্র সবার কাছে বিশ্বস্ত, আস্থাবান।
স্বয়ং আল্লাহ তাআলা রাসুল (সা.)-এর ব্যক্তিত্ব এবং মহান চরিত্রের ব্যাপারে সার্টিফিকেশন করেছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী।’ (সুরা কলম: ৪)
মমত্বপূর্ণ হৃদয়: রাসুলুল্লাহ (সা.) মমত্বে-ভালোবাসায় সর্বোচ্চ আদর্শ। তিনি শুধু পরিবার-পরিজন নয়, শত্রুদের প্রতিও মহানুভবতা দেখিয়েছেন। উহুদ যুদ্ধের পর কাফেররা যখন তাঁকে কষ্ট দেয়, তখনো তাঁদের জন্য বদ দোয়া করেননি, দোয়া করেছেন যেন তারা হেদায়েত পায়।
তায়েফে রাসুল (সা.) যখন দাওয়াত দিতে গেলেন, তায়েফবাসী নবী করিম (সা.)-এর ওপর নির্মম অত্যাচার করেছিল। নবীজি (সা.) চাইলে আল্লাহ তাআলা তাদের ধসিয়ে দিতেন। নবী (সা.) বদ দোয়া করেননি, তাদের জন্য কল্যাণের দোয়া করেছেন।
তাঁর ভালোবাসা কেবল মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, পশু-পাখি, প্রকৃতির প্রতিও ছিলেন দয়ার্দ্র। তিনি বলেছেন, ‘যে দয়া করে না, সে দয়া পায় না।’ (সহিহ্ মুসলিম)
বিশ্বস্ত: বিশ্বস্ততার অতুল নজির তিনি। নবুওয়াতের আগেও মক্কার লোকেরা তাঁকে বিশ্বস্ত (আল-আমিন) বলে চিনত, জানত, ডাকত। মক্কার মুশরিকদের অত্যাচারে যখন তিনি মদিনায় হিজরত করেন, তখন হজরত আলী (রা.)-কে মক্কায় রেখে যান—কাফেরদের আমানত যথাযথভাবে তাদের কাছে ফেরত দেওয়ার জন্য। অথচ, সেই কাফেররাই তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার ফন্দি এঁটেছিল।
আমলে প্রায়োগিকতা: রাসুলুল্লাহ (সা.) শুধু কথার কথা বলে যাননি, নিজে বাস্তবায়ন করে তা দেখিয়েছেন। পৃথিবীতে বহু রাষ্ট্র বিজ্ঞানী ছিল যারা কেবল থিওরি দিয়েছেন, কিন্তু কখনো রাষ্ট্র চালাননি। নবী করিম (সা.) রাষ্ট্র চালিয়ে দেখিয়েছেন। পিতা হিসেবে সন্তানের জন্য কী করণীয় শুধু বলে যাননি, পিতা হয়ে করে গেছেন। পৃথিবীতে দ্বিতীয় কেউ নেই যে, যা বলেছেন তা সব আমলে করে দেখিয়েছেন।
রহমত: রাসুল (সা.)-এর অন্যতম বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো হলো, ‘রহমাতুল্লিল আলামিন।’ সকল সৃষ্টির জন্য তিনি রহমত। কেবল মুসলিমদের জন্য নয়, কাফের-মুশরিকদের জন্যও রহমত। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুদের সঙ্গেও নির্মম আচরণ করতে তিনি বারণ করেছেন, হালাল পশু-পাখি জবাই করে খেতে হলেও প্রয়োজনের অতিরিক্ত কষ্ট দিয়ে জবাই করতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১৭০)
তিনি দাস-দাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, নারীদের মর্যাদা বাড়িয়েছেন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি আপনাকে সমস্ত জগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছি।’ (সুরা আম্বিয়া: ১০৭)
লিওয়াউল হামদের ধারক: লিওয়াউল হামদ হলো সেই বিশেষ পতাকা, যা কিয়ামতের দিন মহানবী (সা.)-এর হাতে থাকবে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, তিনি সেই দিন নবী, রাসুল, শহিদ ও সৎকর্মশীলদের নেতা হিসেবে থাকবেন এবং তাঁর পতাকার নিচে সবাই সমবেত হবে।
তিনি কিয়ামতের দিন উম্মতের জন্য সাফায়াত করবেন—যা অন্য কোনো নবী করতে পারবেন না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি কিয়ামতের দিন আদম সন্তানদের নেতা হব, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’ (সহিহ্ মুসলিম: ২২৭৮)
তাই চারিত্রিক উৎকর্ষ সাধন, সুন্দর ও আলোকিত সমাজ গঠনে সিরাত চর্চা এবং বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।
অনুলিখন: নুরুল ইসলাম তানঈম
মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম কোরবানি। কোরবানির গোশত নিজে এবং ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাইকে খাওয়ানো যায়। আল্লাহ তাআলার জন্য পশু জবাই করা হলেও তার মাংস আমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন। আমাদের সমাজে অনেক মানুষ মনে করেন, কোরবানির মাংস তিন ভাগে...
৩ ঘণ্টা আগেদ্বিতীয় হিজরিতে কোরবানির বিধান আসার পর থেকে যত বছর আল্লাহর নবী (সা.) জীবিত ছিলেন, প্রতিবছর কোরবানি দিয়েছেন। নবী করিম (সা.)-এর সাহাবিরাও এই ইবাদতে খুব যত্নশীল ছিলেন। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) দুটি ভেড়া কোরবানি দিতেন।
৮ ঘণ্টা আগেদরজায় কড়া নাড়ছে কোরবানির ঈদ। এই ঈদের অন্যতম ইবাদত পশু কোরবানি করা—তাই পশু কিনতে ভিড় বাড়ছে হাটমুখী মানুষের। কোরবানির পশুর বিধান হলো, তা যদি এই পরিমাণ ল্যাংড়া হয় যে, জবাই করার স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে অক্ষম—তাহলে সেই পশু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হবে না।
১৮ ঘণ্টা আগেতাহাজ্জুদ মুমিনের মর্যাদার সোপান। রবের প্রিয় হওয়ার অন্যতম মাধ্যম। ফরজ নামাজের পরই তাহাজ্জুদের স্থান। তাহাজ্জুদের মাধ্যমে পাপ মুছে যায়। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সরাসরি সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তাহাজ্জুদ প্রাণহীন হৃদয় সজীব করার শ্রেষ্ঠ উপায়। তাহাজ্জুদের বিশেষ পাঁচ পুরস্কার রয়েছে—
১ দিন আগে