ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা

মহানবী (সা.)-এর সময়ে আরবের প্রখ্যাত পৌত্তলিক নেতা ছিলেন আমর ইবনে হিশাম। তাঁর উপাধি ছিল আবুল হাকাম তথা প্রজ্ঞার জনক। তিনি গভীর জ্ঞানের অধিকারী হিসেবে বিবেচিত ছিলেন এবং কোরাইশের প্রবীণ নেতাদের মধ্যে দক্ষতা ও উপলব্ধির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তবে ইসলামের প্রতি ভীষণ শত্রুতা প্রদর্শন এবং ইসলামের বাণী প্রত্যাখ্যান করায় তিনি আবু জাহল তথা অজ্ঞতার জনক হিসেবে পরিচিতি পান।
ইসলামের সঙ্গে আবু জাহলের শত্রুতা এবং নবী (সা.)-এর প্রতি তাঁর বিদ্বেষ সর্বজনবিদিত। তিনি কোরাইশ বংশের লোক হলেও আবদুল মুত্তালিবের সন্তান না হওয়ায় নবী (সা.)-এর চাচা ছিলেন না। তাঁর বংশধারা হলো, আবু জাহল আমর ইবনে হিশাম ইবনে মুগিরা ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ইবনে মাখজুম। (উমদাতুল কারি: ১৭/৮৪)
ইসলামের আবির্ভাবের পর থেকেই তিনি এর ঘোর বিরোধিতা এবং মুসলমানদের অকথ্য নির্যাতন শুরু করেন। নবী (সা.) তাঁকে এ উম্মতের ফেরাউন উপাধি দিয়েছিলেন। মুসা (আ.)-এর সময়ের মিসরের শাসক ফেরাউন মৃত্যুর সময় আত্মসমর্পণ করে মুসা ও হারুনের রবের প্রতি ইমান আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু একেবারে শেষ সময় হওয়ার কারণে তা গৃহীত হয়নি। তবে আবু জাহল মৃত্যুর সময়ও বলেছিলেন, তাঁকে যেন তাঁর তরবারি দিয়ে হত্যা করা হয় এবং মাথা গলাসহ বড় করে কাটা হয়, যেন দর্শকেরা তাঁকে বড়ই দেখে। তিনি আরও ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাঁর মনে মুহাম্মদ (সা.) ও মুসলমানদের প্রতি অতীতের চেয়ে বেশি শত্রুতা ও ঘৃণা রয়েছে। (মুহাম্মদ ইদরিস কান্ধলভি, সিরাতুল মুস্তাফা: ২/১০১-১০২)
মহান আল্লাহ দুজন কিশোরের হাতে ফেরাউনখ্যাত অহংকারী আবু জাহলের পতন ঘটিয়েছেন। আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) বর্ণনা করেন, বদরের যুদ্ধে আমি সৈন্য সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখি, আমার ডানে ও বাঁয়ে আনসারি দুজন কিশোর দাঁড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে যখন আমি কিছুটা অস্বস্তি বোধ করছি; তখনই তাদের একজন আমাকে চুপিচুপি জিজ্ঞেস করল, ‘চাচা, আপনি আবু জাহলকে চেনেন?’ আমি বললাম, ‘ভাতিজা, আমি তাঁকে চিনি। তবে তাঁকে তোমার কী দরকার?’ সে উত্তর দিল, ‘আমি শুনেছি, সে নবী (সা.)-কে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আল্লাহর কসম, আমি যদি তাকে দেখতে পাই, আমার ছায়া তাকে অতিক্রম করবে না, যতক্ষণ না আমি তাকে হত্যা করি কিংবা সে আমাকে হত্যা করে।’ তিনি বলেন, ‘আমি তার কথায় অভিভূত হলাম এবং স্বস্তি অনুভব করলাম। অন্যজনও আমাকে তেমনই বলল।’
এমন কে আছে, যে আবু জাহলের খবর নিয়ে আসবে?’ তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নিহতদের মধ্যে খোঁজ নিলেন এবং আবু জাহলের সন্ধান পেলেন।
দুই কিশোরের কথায় আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) যখন বিস্মিত হচ্ছিলেন; তখনই যুদ্ধের ময়দানে আবু জাহলকে ছুটতে দেখলেন। তিনি কিশোর দুজনকে দেখিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তোমরা আমার কাছে যার পরিচয় জানতে চেয়েছ; ওই তো সে যাচ্ছে।’ শোনামাত্রই তারা তরবারি নিয়ে আবু জাহলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে ধরাশায়ী করে দিল। (বুখারি, হাদিস: ২৯৭২)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ছিলেন একজন ফকিহ সাহাবি। সবচেয়ে বিনয়ী ছিলেন। নবী (সা.) এক রাতে জিনদের দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। যাওয়ার আগে ঘোষণা করলেন, ‘আজ এমন একজন আমার সঙ্গী হবে, যার হৃদয়ে সামান্য পরিমাণও অহংকার নেই।’ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) দাঁড়িয়ে গেলেন। নবী (সা.) তাঁকে সঙ্গে নিয়ে জিনদের উদ্দেশে বের হলেন। (সিরাতুল মুস্তাফা, ২/১০০) দুজন কিশোরের হাতে আবু জাহল ধরাশায়ী হওয়ার পর শুধু তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাসটুকুই বাকি ছিল। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, (যুদ্ধ শেষে) নবী (সা.) বললেন, ‘এমন কে আছে, যে আবু জাহলের খবর নিয়ে আসবে?’ তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নিহতদের মধ্যে খোঁজ নিলেন এবং আবু জাহলের সন্ধান পেলেন। আফরার দুই ছেলের আঘাতে মৃতপ্রায় অবস্থায় পড়ে আছেন। (বুখারি, হাদিস: ৩৭৪৫) তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর বুকের ওপর উঠে বসেন। আবু জাহল চোখ খুলে দেখেন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ তাঁর বুকের ওপর বসা। এতে আবু জাহল অপমানবোধ করে বলেন, ‘ওহে ছাগল চরানো রাখাল, তুমি অনেক বড় স্থানে চড়ে বসেছ। এত বড় সম্মানিত উচ্চাসনে এর আগে কেউ বসেনি।’ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন, ‘আল্লাহর প্রশংসা, যিনি আমাকে এই সুযোগ দান করেছেন। আজকে কার দিন? আজকে কে বিজয়ী হয়েছে? আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.) বিজয়ী হয়েছেন।’ আবু জাহল বলেন, ‘আমাকে আমার তরবারি দিয়ে হত্যা করবে এবং আমার মাথা গলাসহ বড় করে কাটবে, যেন আমাকে দর্শকেরা বড়ই দেখে। আর মুহাম্মদকে বলবে, আজও আমার মনে তোমাদের প্রতি অতীতের চেয়ে বেশি শত্রুতা ও ঘৃণা রয়েছে।’ এরপর আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর হাতেই আবু জাহল নিহত হন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নবী (সা.)-কে সবকিছু অবগত করলে নবী (সা.) বললেন, ‘আবু জাহল আমার এবং আমার উম্মতের ফেরাউন; যার অনিষ্ট মুসা (আ.)-এর ফেরাউনের অনিষ্ট থেকে বেশি। মুসা (আ.)-এর ফেরাউন মৃত্যুর সময় নমনীয় হয়ে ইমানের কালিমা পড়েছিল। (জীবনের একেবারে শেষ সময় হওয়ার কারণে যদিও তা গ্রহণযোগ্য হয়নি) কিন্তু এই উম্মতের ফেরাউন মৃত্যুর সময়ও কুফর ও অহংকার ছাড়েনি।’ (সিরাতুল মুস্তাফা, ২/১০১-১০২)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

মহানবী (সা.)-এর সময়ে আরবের প্রখ্যাত পৌত্তলিক নেতা ছিলেন আমর ইবনে হিশাম। তাঁর উপাধি ছিল আবুল হাকাম তথা প্রজ্ঞার জনক। তিনি গভীর জ্ঞানের অধিকারী হিসেবে বিবেচিত ছিলেন এবং কোরাইশের প্রবীণ নেতাদের মধ্যে দক্ষতা ও উপলব্ধির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তবে ইসলামের প্রতি ভীষণ শত্রুতা প্রদর্শন এবং ইসলামের বাণী প্রত্যাখ্যান করায় তিনি আবু জাহল তথা অজ্ঞতার জনক হিসেবে পরিচিতি পান।
ইসলামের সঙ্গে আবু জাহলের শত্রুতা এবং নবী (সা.)-এর প্রতি তাঁর বিদ্বেষ সর্বজনবিদিত। তিনি কোরাইশ বংশের লোক হলেও আবদুল মুত্তালিবের সন্তান না হওয়ায় নবী (সা.)-এর চাচা ছিলেন না। তাঁর বংশধারা হলো, আবু জাহল আমর ইবনে হিশাম ইবনে মুগিরা ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ইবনে মাখজুম। (উমদাতুল কারি: ১৭/৮৪)
ইসলামের আবির্ভাবের পর থেকেই তিনি এর ঘোর বিরোধিতা এবং মুসলমানদের অকথ্য নির্যাতন শুরু করেন। নবী (সা.) তাঁকে এ উম্মতের ফেরাউন উপাধি দিয়েছিলেন। মুসা (আ.)-এর সময়ের মিসরের শাসক ফেরাউন মৃত্যুর সময় আত্মসমর্পণ করে মুসা ও হারুনের রবের প্রতি ইমান আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু একেবারে শেষ সময় হওয়ার কারণে তা গৃহীত হয়নি। তবে আবু জাহল মৃত্যুর সময়ও বলেছিলেন, তাঁকে যেন তাঁর তরবারি দিয়ে হত্যা করা হয় এবং মাথা গলাসহ বড় করে কাটা হয়, যেন দর্শকেরা তাঁকে বড়ই দেখে। তিনি আরও ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাঁর মনে মুহাম্মদ (সা.) ও মুসলমানদের প্রতি অতীতের চেয়ে বেশি শত্রুতা ও ঘৃণা রয়েছে। (মুহাম্মদ ইদরিস কান্ধলভি, সিরাতুল মুস্তাফা: ২/১০১-১০২)
মহান আল্লাহ দুজন কিশোরের হাতে ফেরাউনখ্যাত অহংকারী আবু জাহলের পতন ঘটিয়েছেন। আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) বর্ণনা করেন, বদরের যুদ্ধে আমি সৈন্য সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখি, আমার ডানে ও বাঁয়ে আনসারি দুজন কিশোর দাঁড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে যখন আমি কিছুটা অস্বস্তি বোধ করছি; তখনই তাদের একজন আমাকে চুপিচুপি জিজ্ঞেস করল, ‘চাচা, আপনি আবু জাহলকে চেনেন?’ আমি বললাম, ‘ভাতিজা, আমি তাঁকে চিনি। তবে তাঁকে তোমার কী দরকার?’ সে উত্তর দিল, ‘আমি শুনেছি, সে নবী (সা.)-কে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আল্লাহর কসম, আমি যদি তাকে দেখতে পাই, আমার ছায়া তাকে অতিক্রম করবে না, যতক্ষণ না আমি তাকে হত্যা করি কিংবা সে আমাকে হত্যা করে।’ তিনি বলেন, ‘আমি তার কথায় অভিভূত হলাম এবং স্বস্তি অনুভব করলাম। অন্যজনও আমাকে তেমনই বলল।’
এমন কে আছে, যে আবু জাহলের খবর নিয়ে আসবে?’ তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নিহতদের মধ্যে খোঁজ নিলেন এবং আবু জাহলের সন্ধান পেলেন।
দুই কিশোরের কথায় আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) যখন বিস্মিত হচ্ছিলেন; তখনই যুদ্ধের ময়দানে আবু জাহলকে ছুটতে দেখলেন। তিনি কিশোর দুজনকে দেখিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তোমরা আমার কাছে যার পরিচয় জানতে চেয়েছ; ওই তো সে যাচ্ছে।’ শোনামাত্রই তারা তরবারি নিয়ে আবু জাহলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে ধরাশায়ী করে দিল। (বুখারি, হাদিস: ২৯৭২)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ছিলেন একজন ফকিহ সাহাবি। সবচেয়ে বিনয়ী ছিলেন। নবী (সা.) এক রাতে জিনদের দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। যাওয়ার আগে ঘোষণা করলেন, ‘আজ এমন একজন আমার সঙ্গী হবে, যার হৃদয়ে সামান্য পরিমাণও অহংকার নেই।’ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) দাঁড়িয়ে গেলেন। নবী (সা.) তাঁকে সঙ্গে নিয়ে জিনদের উদ্দেশে বের হলেন। (সিরাতুল মুস্তাফা, ২/১০০) দুজন কিশোরের হাতে আবু জাহল ধরাশায়ী হওয়ার পর শুধু তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাসটুকুই বাকি ছিল। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, (যুদ্ধ শেষে) নবী (সা.) বললেন, ‘এমন কে আছে, যে আবু জাহলের খবর নিয়ে আসবে?’ তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নিহতদের মধ্যে খোঁজ নিলেন এবং আবু জাহলের সন্ধান পেলেন। আফরার দুই ছেলের আঘাতে মৃতপ্রায় অবস্থায় পড়ে আছেন। (বুখারি, হাদিস: ৩৭৪৫) তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর বুকের ওপর উঠে বসেন। আবু জাহল চোখ খুলে দেখেন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ তাঁর বুকের ওপর বসা। এতে আবু জাহল অপমানবোধ করে বলেন, ‘ওহে ছাগল চরানো রাখাল, তুমি অনেক বড় স্থানে চড়ে বসেছ। এত বড় সম্মানিত উচ্চাসনে এর আগে কেউ বসেনি।’ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন, ‘আল্লাহর প্রশংসা, যিনি আমাকে এই সুযোগ দান করেছেন। আজকে কার দিন? আজকে কে বিজয়ী হয়েছে? আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.) বিজয়ী হয়েছেন।’ আবু জাহল বলেন, ‘আমাকে আমার তরবারি দিয়ে হত্যা করবে এবং আমার মাথা গলাসহ বড় করে কাটবে, যেন আমাকে দর্শকেরা বড়ই দেখে। আর মুহাম্মদকে বলবে, আজও আমার মনে তোমাদের প্রতি অতীতের চেয়ে বেশি শত্রুতা ও ঘৃণা রয়েছে।’ এরপর আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর হাতেই আবু জাহল নিহত হন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নবী (সা.)-কে সবকিছু অবগত করলে নবী (সা.) বললেন, ‘আবু জাহল আমার এবং আমার উম্মতের ফেরাউন; যার অনিষ্ট মুসা (আ.)-এর ফেরাউনের অনিষ্ট থেকে বেশি। মুসা (আ.)-এর ফেরাউন মৃত্যুর সময় নমনীয় হয়ে ইমানের কালিমা পড়েছিল। (জীবনের একেবারে শেষ সময় হওয়ার কারণে যদিও তা গ্রহণযোগ্য হয়নি) কিন্তু এই উম্মতের ফেরাউন মৃত্যুর সময়ও কুফর ও অহংকার ছাড়েনি।’ (সিরাতুল মুস্তাফা, ২/১০১-১০২)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা

মহানবী (সা.)-এর সময়ে আরবের প্রখ্যাত পৌত্তলিক নেতা ছিলেন আমর ইবনে হিশাম। তাঁর উপাধি ছিল আবুল হাকাম তথা প্রজ্ঞার জনক। তিনি গভীর জ্ঞানের অধিকারী হিসেবে বিবেচিত ছিলেন এবং কোরাইশের প্রবীণ নেতাদের মধ্যে দক্ষতা ও উপলব্ধির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তবে ইসলামের প্রতি ভীষণ শত্রুতা প্রদর্শন এবং ইসলামের বাণী প্রত্যাখ্যান করায় তিনি আবু জাহল তথা অজ্ঞতার জনক হিসেবে পরিচিতি পান।
ইসলামের সঙ্গে আবু জাহলের শত্রুতা এবং নবী (সা.)-এর প্রতি তাঁর বিদ্বেষ সর্বজনবিদিত। তিনি কোরাইশ বংশের লোক হলেও আবদুল মুত্তালিবের সন্তান না হওয়ায় নবী (সা.)-এর চাচা ছিলেন না। তাঁর বংশধারা হলো, আবু জাহল আমর ইবনে হিশাম ইবনে মুগিরা ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ইবনে মাখজুম। (উমদাতুল কারি: ১৭/৮৪)
ইসলামের আবির্ভাবের পর থেকেই তিনি এর ঘোর বিরোধিতা এবং মুসলমানদের অকথ্য নির্যাতন শুরু করেন। নবী (সা.) তাঁকে এ উম্মতের ফেরাউন উপাধি দিয়েছিলেন। মুসা (আ.)-এর সময়ের মিসরের শাসক ফেরাউন মৃত্যুর সময় আত্মসমর্পণ করে মুসা ও হারুনের রবের প্রতি ইমান আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু একেবারে শেষ সময় হওয়ার কারণে তা গৃহীত হয়নি। তবে আবু জাহল মৃত্যুর সময়ও বলেছিলেন, তাঁকে যেন তাঁর তরবারি দিয়ে হত্যা করা হয় এবং মাথা গলাসহ বড় করে কাটা হয়, যেন দর্শকেরা তাঁকে বড়ই দেখে। তিনি আরও ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাঁর মনে মুহাম্মদ (সা.) ও মুসলমানদের প্রতি অতীতের চেয়ে বেশি শত্রুতা ও ঘৃণা রয়েছে। (মুহাম্মদ ইদরিস কান্ধলভি, সিরাতুল মুস্তাফা: ২/১০১-১০২)
মহান আল্লাহ দুজন কিশোরের হাতে ফেরাউনখ্যাত অহংকারী আবু জাহলের পতন ঘটিয়েছেন। আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) বর্ণনা করেন, বদরের যুদ্ধে আমি সৈন্য সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখি, আমার ডানে ও বাঁয়ে আনসারি দুজন কিশোর দাঁড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে যখন আমি কিছুটা অস্বস্তি বোধ করছি; তখনই তাদের একজন আমাকে চুপিচুপি জিজ্ঞেস করল, ‘চাচা, আপনি আবু জাহলকে চেনেন?’ আমি বললাম, ‘ভাতিজা, আমি তাঁকে চিনি। তবে তাঁকে তোমার কী দরকার?’ সে উত্তর দিল, ‘আমি শুনেছি, সে নবী (সা.)-কে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আল্লাহর কসম, আমি যদি তাকে দেখতে পাই, আমার ছায়া তাকে অতিক্রম করবে না, যতক্ষণ না আমি তাকে হত্যা করি কিংবা সে আমাকে হত্যা করে।’ তিনি বলেন, ‘আমি তার কথায় অভিভূত হলাম এবং স্বস্তি অনুভব করলাম। অন্যজনও আমাকে তেমনই বলল।’
এমন কে আছে, যে আবু জাহলের খবর নিয়ে আসবে?’ তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নিহতদের মধ্যে খোঁজ নিলেন এবং আবু জাহলের সন্ধান পেলেন।
দুই কিশোরের কথায় আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) যখন বিস্মিত হচ্ছিলেন; তখনই যুদ্ধের ময়দানে আবু জাহলকে ছুটতে দেখলেন। তিনি কিশোর দুজনকে দেখিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তোমরা আমার কাছে যার পরিচয় জানতে চেয়েছ; ওই তো সে যাচ্ছে।’ শোনামাত্রই তারা তরবারি নিয়ে আবু জাহলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে ধরাশায়ী করে দিল। (বুখারি, হাদিস: ২৯৭২)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ছিলেন একজন ফকিহ সাহাবি। সবচেয়ে বিনয়ী ছিলেন। নবী (সা.) এক রাতে জিনদের দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। যাওয়ার আগে ঘোষণা করলেন, ‘আজ এমন একজন আমার সঙ্গী হবে, যার হৃদয়ে সামান্য পরিমাণও অহংকার নেই।’ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) দাঁড়িয়ে গেলেন। নবী (সা.) তাঁকে সঙ্গে নিয়ে জিনদের উদ্দেশে বের হলেন। (সিরাতুল মুস্তাফা, ২/১০০) দুজন কিশোরের হাতে আবু জাহল ধরাশায়ী হওয়ার পর শুধু তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাসটুকুই বাকি ছিল। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, (যুদ্ধ শেষে) নবী (সা.) বললেন, ‘এমন কে আছে, যে আবু জাহলের খবর নিয়ে আসবে?’ তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নিহতদের মধ্যে খোঁজ নিলেন এবং আবু জাহলের সন্ধান পেলেন। আফরার দুই ছেলের আঘাতে মৃতপ্রায় অবস্থায় পড়ে আছেন। (বুখারি, হাদিস: ৩৭৪৫) তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর বুকের ওপর উঠে বসেন। আবু জাহল চোখ খুলে দেখেন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ তাঁর বুকের ওপর বসা। এতে আবু জাহল অপমানবোধ করে বলেন, ‘ওহে ছাগল চরানো রাখাল, তুমি অনেক বড় স্থানে চড়ে বসেছ। এত বড় সম্মানিত উচ্চাসনে এর আগে কেউ বসেনি।’ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন, ‘আল্লাহর প্রশংসা, যিনি আমাকে এই সুযোগ দান করেছেন। আজকে কার দিন? আজকে কে বিজয়ী হয়েছে? আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.) বিজয়ী হয়েছেন।’ আবু জাহল বলেন, ‘আমাকে আমার তরবারি দিয়ে হত্যা করবে এবং আমার মাথা গলাসহ বড় করে কাটবে, যেন আমাকে দর্শকেরা বড়ই দেখে। আর মুহাম্মদকে বলবে, আজও আমার মনে তোমাদের প্রতি অতীতের চেয়ে বেশি শত্রুতা ও ঘৃণা রয়েছে।’ এরপর আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর হাতেই আবু জাহল নিহত হন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নবী (সা.)-কে সবকিছু অবগত করলে নবী (সা.) বললেন, ‘আবু জাহল আমার এবং আমার উম্মতের ফেরাউন; যার অনিষ্ট মুসা (আ.)-এর ফেরাউনের অনিষ্ট থেকে বেশি। মুসা (আ.)-এর ফেরাউন মৃত্যুর সময় নমনীয় হয়ে ইমানের কালিমা পড়েছিল। (জীবনের একেবারে শেষ সময় হওয়ার কারণে যদিও তা গ্রহণযোগ্য হয়নি) কিন্তু এই উম্মতের ফেরাউন মৃত্যুর সময়ও কুফর ও অহংকার ছাড়েনি।’ (সিরাতুল মুস্তাফা, ২/১০১-১০২)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

মহানবী (সা.)-এর সময়ে আরবের প্রখ্যাত পৌত্তলিক নেতা ছিলেন আমর ইবনে হিশাম। তাঁর উপাধি ছিল আবুল হাকাম তথা প্রজ্ঞার জনক। তিনি গভীর জ্ঞানের অধিকারী হিসেবে বিবেচিত ছিলেন এবং কোরাইশের প্রবীণ নেতাদের মধ্যে দক্ষতা ও উপলব্ধির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তবে ইসলামের প্রতি ভীষণ শত্রুতা প্রদর্শন এবং ইসলামের বাণী প্রত্যাখ্যান করায় তিনি আবু জাহল তথা অজ্ঞতার জনক হিসেবে পরিচিতি পান।
ইসলামের সঙ্গে আবু জাহলের শত্রুতা এবং নবী (সা.)-এর প্রতি তাঁর বিদ্বেষ সর্বজনবিদিত। তিনি কোরাইশ বংশের লোক হলেও আবদুল মুত্তালিবের সন্তান না হওয়ায় নবী (সা.)-এর চাচা ছিলেন না। তাঁর বংশধারা হলো, আবু জাহল আমর ইবনে হিশাম ইবনে মুগিরা ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ইবনে মাখজুম। (উমদাতুল কারি: ১৭/৮৪)
ইসলামের আবির্ভাবের পর থেকেই তিনি এর ঘোর বিরোধিতা এবং মুসলমানদের অকথ্য নির্যাতন শুরু করেন। নবী (সা.) তাঁকে এ উম্মতের ফেরাউন উপাধি দিয়েছিলেন। মুসা (আ.)-এর সময়ের মিসরের শাসক ফেরাউন মৃত্যুর সময় আত্মসমর্পণ করে মুসা ও হারুনের রবের প্রতি ইমান আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু একেবারে শেষ সময় হওয়ার কারণে তা গৃহীত হয়নি। তবে আবু জাহল মৃত্যুর সময়ও বলেছিলেন, তাঁকে যেন তাঁর তরবারি দিয়ে হত্যা করা হয় এবং মাথা গলাসহ বড় করে কাটা হয়, যেন দর্শকেরা তাঁকে বড়ই দেখে। তিনি আরও ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাঁর মনে মুহাম্মদ (সা.) ও মুসলমানদের প্রতি অতীতের চেয়ে বেশি শত্রুতা ও ঘৃণা রয়েছে। (মুহাম্মদ ইদরিস কান্ধলভি, সিরাতুল মুস্তাফা: ২/১০১-১০২)
মহান আল্লাহ দুজন কিশোরের হাতে ফেরাউনখ্যাত অহংকারী আবু জাহলের পতন ঘটিয়েছেন। আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) বর্ণনা করেন, বদরের যুদ্ধে আমি সৈন্য সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখি, আমার ডানে ও বাঁয়ে আনসারি দুজন কিশোর দাঁড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে যখন আমি কিছুটা অস্বস্তি বোধ করছি; তখনই তাদের একজন আমাকে চুপিচুপি জিজ্ঞেস করল, ‘চাচা, আপনি আবু জাহলকে চেনেন?’ আমি বললাম, ‘ভাতিজা, আমি তাঁকে চিনি। তবে তাঁকে তোমার কী দরকার?’ সে উত্তর দিল, ‘আমি শুনেছি, সে নবী (সা.)-কে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আল্লাহর কসম, আমি যদি তাকে দেখতে পাই, আমার ছায়া তাকে অতিক্রম করবে না, যতক্ষণ না আমি তাকে হত্যা করি কিংবা সে আমাকে হত্যা করে।’ তিনি বলেন, ‘আমি তার কথায় অভিভূত হলাম এবং স্বস্তি অনুভব করলাম। অন্যজনও আমাকে তেমনই বলল।’
এমন কে আছে, যে আবু জাহলের খবর নিয়ে আসবে?’ তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নিহতদের মধ্যে খোঁজ নিলেন এবং আবু জাহলের সন্ধান পেলেন।
দুই কিশোরের কথায় আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) যখন বিস্মিত হচ্ছিলেন; তখনই যুদ্ধের ময়দানে আবু জাহলকে ছুটতে দেখলেন। তিনি কিশোর দুজনকে দেখিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তোমরা আমার কাছে যার পরিচয় জানতে চেয়েছ; ওই তো সে যাচ্ছে।’ শোনামাত্রই তারা তরবারি নিয়ে আবু জাহলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে ধরাশায়ী করে দিল। (বুখারি, হাদিস: ২৯৭২)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ছিলেন একজন ফকিহ সাহাবি। সবচেয়ে বিনয়ী ছিলেন। নবী (সা.) এক রাতে জিনদের দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। যাওয়ার আগে ঘোষণা করলেন, ‘আজ এমন একজন আমার সঙ্গী হবে, যার হৃদয়ে সামান্য পরিমাণও অহংকার নেই।’ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) দাঁড়িয়ে গেলেন। নবী (সা.) তাঁকে সঙ্গে নিয়ে জিনদের উদ্দেশে বের হলেন। (সিরাতুল মুস্তাফা, ২/১০০) দুজন কিশোরের হাতে আবু জাহল ধরাশায়ী হওয়ার পর শুধু তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাসটুকুই বাকি ছিল। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, (যুদ্ধ শেষে) নবী (সা.) বললেন, ‘এমন কে আছে, যে আবু জাহলের খবর নিয়ে আসবে?’ তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নিহতদের মধ্যে খোঁজ নিলেন এবং আবু জাহলের সন্ধান পেলেন। আফরার দুই ছেলের আঘাতে মৃতপ্রায় অবস্থায় পড়ে আছেন। (বুখারি, হাদিস: ৩৭৪৫) তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর বুকের ওপর উঠে বসেন। আবু জাহল চোখ খুলে দেখেন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ তাঁর বুকের ওপর বসা। এতে আবু জাহল অপমানবোধ করে বলেন, ‘ওহে ছাগল চরানো রাখাল, তুমি অনেক বড় স্থানে চড়ে বসেছ। এত বড় সম্মানিত উচ্চাসনে এর আগে কেউ বসেনি।’ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন, ‘আল্লাহর প্রশংসা, যিনি আমাকে এই সুযোগ দান করেছেন। আজকে কার দিন? আজকে কে বিজয়ী হয়েছে? আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.) বিজয়ী হয়েছেন।’ আবু জাহল বলেন, ‘আমাকে আমার তরবারি দিয়ে হত্যা করবে এবং আমার মাথা গলাসহ বড় করে কাটবে, যেন আমাকে দর্শকেরা বড়ই দেখে। আর মুহাম্মদকে বলবে, আজও আমার মনে তোমাদের প্রতি অতীতের চেয়ে বেশি শত্রুতা ও ঘৃণা রয়েছে।’ এরপর আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর হাতেই আবু জাহল নিহত হন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নবী (সা.)-কে সবকিছু অবগত করলে নবী (সা.) বললেন, ‘আবু জাহল আমার এবং আমার উম্মতের ফেরাউন; যার অনিষ্ট মুসা (আ.)-এর ফেরাউনের অনিষ্ট থেকে বেশি। মুসা (আ.)-এর ফেরাউন মৃত্যুর সময় নমনীয় হয়ে ইমানের কালিমা পড়েছিল। (জীবনের একেবারে শেষ সময় হওয়ার কারণে যদিও তা গ্রহণযোগ্য হয়নি) কিন্তু এই উম্মতের ফেরাউন মৃত্যুর সময়ও কুফর ও অহংকার ছাড়েনি।’ (সিরাতুল মুস্তাফা, ২/১০১-১০২)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৪৪ মিনিট আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৩ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৪ ঘণ্টা আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

মহানবী (সা.)-এর সময়ে আরবের প্রখ্যাত পৌত্তলিক নেতা ছিলেন আমর ইবনে হিশাম। তাঁর উপাধি ছিল আবুল হাকাম তথা প্রজ্ঞার জনক। তিনি গভীর জ্ঞানের অধিকারী হিসেবে বিবেচিত ছিলেন এবং কোরাইশের প্রবীণ নেতাদের মধ্যে দক্ষতা ও উপলব্ধির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তবে ইসলামের প্রতি ভীষণ শত্রুতা প্রদর্শন এবং ইসলামের বাণী প্রত্যাখ
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৩ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৪ ঘণ্টা আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

মহানবী (সা.)-এর সময়ে আরবের প্রখ্যাত পৌত্তলিক নেতা ছিলেন আমর ইবনে হিশাম। তাঁর উপাধি ছিল আবুল হাকাম তথা প্রজ্ঞার জনক। তিনি গভীর জ্ঞানের অধিকারী হিসেবে বিবেচিত ছিলেন এবং কোরাইশের প্রবীণ নেতাদের মধ্যে দক্ষতা ও উপলব্ধির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তবে ইসলামের প্রতি ভীষণ শত্রুতা প্রদর্শন এবং ইসলামের বাণী প্রত্যাখ
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৪৪ মিনিট আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৪ ঘণ্টা আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

মহানবী (সা.)-এর সময়ে আরবের প্রখ্যাত পৌত্তলিক নেতা ছিলেন আমর ইবনে হিশাম। তাঁর উপাধি ছিল আবুল হাকাম তথা প্রজ্ঞার জনক। তিনি গভীর জ্ঞানের অধিকারী হিসেবে বিবেচিত ছিলেন এবং কোরাইশের প্রবীণ নেতাদের মধ্যে দক্ষতা ও উপলব্ধির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তবে ইসলামের প্রতি ভীষণ শত্রুতা প্রদর্শন এবং ইসলামের বাণী প্রত্যাখ
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৪৪ মিনিট আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৩ ঘণ্টা আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বদনজরের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট্ট ঈর্ষা, অনিচ্ছাকৃত আগ্রহ বা প্রশংসার দৃষ্টি, সবই বদনজরের মাধ্যমে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ইসলামি শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে, আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা এ প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
প্রাচীনকালে বদনজর লাগানোর জন্য সরাসরি দেখার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে, বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদির মাধ্যমে বদনজরের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ‘প্রদর্শনীর মঞ্চ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মানুষ তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো; দামি খাবার, নতুন গাড়ি, বিলাসবহুল অবকাশ, সন্তানের সাফল্য, নতুন চাকরি ইত্যাদি প্রচারের মাধ্যমে শেয়ার করে।
যখন কেউ নিজের আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করে, তখন হাজারো ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার তা দেখেন। এর মধ্যে কারও দৃষ্টিতে হিংসা বা নানাভাবে ক্ষতিকর অভিপ্রায় যে আছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকে নিজের জীবনের অভাব বা দুঃখের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা বা আফসোস অনুভব করতে পারেন। এই অদৃশ্য হিংসুকদের দৃষ্টি বদনজরের কারণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিখুঁত জীবনের ছবি তুলে ধরেন। এটি অন্যদের মধ্যে হতাশা এবং অবচেতনভাবে সে নিয়ামতগুলো হারিয়ে যাওয়ার কামনা সৃষ্টি করতে পারে, যা বদনজরের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী দম্পতি হিসেবে পরিচিতদের কিছুদিন পর বিচ্ছেদ। সফল ব্যবসার ছবি পোস্ট করার পর হঠাৎ ব্যবসায় ক্ষতি বা শিশুর ভাইরাল ছবি দেখার পর তার অসুস্থতা। এ সবই বদনজরের সম্ভাব্য প্রভাবের উদাহরণ।
মুআজ বিন জাবাল (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে সফলতা লাভের জন্য তা গোপন রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর; কারণ প্রত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসিত হয়।’ (হাদিস সম্ভার: ২১৯১)
সোশ্যাল মিডিয়া এই হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে। এখানে গোপনীয়তার বদলে জীবনের প্রতিটি নিয়ামত প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন করা হয়, যা মানুষকে সহজেই হিংসুক ও বদনজরের লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।
বদনজর এমন এক অদৃশ্য বাস্তবতা, যার প্রভাব শুধু শরীরেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মানুষের মন, পরিবার, অর্থনীতি, এমনকি ইমান ও আখিরাত পর্যন্ত গভীরভাবে আঘাত হানতে পারে। আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কাজকর্মে আগ্রহ হারাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। অনেক সময় এসবের পেছনে বদনজরের প্রভাবই কাজ করে। রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বদনজর সত্য।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
বদনজর প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রথমত: বদনজরের চিকিৎসা বা প্রতিকার হলো রুকইয়াহ শারইয়্যাহ, অর্থাৎ শরিয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক। এর পদ্ধতি হলো সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেওয়া বা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর নির্ধারিত দোয়াগুলো পড়া।
দ্বিতীয়ত: অজু বা গোসলের পানি দিয়েও প্রতিকার করা যায়। সাহল ইবনু হুনাইফ (রা.)-এর ঘটনায় প্রমাণিত যে, যার কারণে বদনজর লেগেছিল, তার অজুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আরোগ্য লাভ করেন।
তৃতীয়ত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে, একমাত্র আল্লাহই আরোগ্য দানকারী ও রক্ষাকারী। কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা নিজে থেকে কার্যকর হয় না; বরং আল্লাহর অনুমতিতে তাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। তাই মুমিন কখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না; বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখে।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক, জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়া, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বদনজরের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট্ট ঈর্ষা, অনিচ্ছাকৃত আগ্রহ বা প্রশংসার দৃষ্টি, সবই বদনজরের মাধ্যমে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ইসলামি শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে, আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা এ প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
প্রাচীনকালে বদনজর লাগানোর জন্য সরাসরি দেখার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে, বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদির মাধ্যমে বদনজরের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ‘প্রদর্শনীর মঞ্চ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মানুষ তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো; দামি খাবার, নতুন গাড়ি, বিলাসবহুল অবকাশ, সন্তানের সাফল্য, নতুন চাকরি ইত্যাদি প্রচারের মাধ্যমে শেয়ার করে।
যখন কেউ নিজের আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করে, তখন হাজারো ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার তা দেখেন। এর মধ্যে কারও দৃষ্টিতে হিংসা বা নানাভাবে ক্ষতিকর অভিপ্রায় যে আছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকে নিজের জীবনের অভাব বা দুঃখের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা বা আফসোস অনুভব করতে পারেন। এই অদৃশ্য হিংসুকদের দৃষ্টি বদনজরের কারণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিখুঁত জীবনের ছবি তুলে ধরেন। এটি অন্যদের মধ্যে হতাশা এবং অবচেতনভাবে সে নিয়ামতগুলো হারিয়ে যাওয়ার কামনা সৃষ্টি করতে পারে, যা বদনজরের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী দম্পতি হিসেবে পরিচিতদের কিছুদিন পর বিচ্ছেদ। সফল ব্যবসার ছবি পোস্ট করার পর হঠাৎ ব্যবসায় ক্ষতি বা শিশুর ভাইরাল ছবি দেখার পর তার অসুস্থতা। এ সবই বদনজরের সম্ভাব্য প্রভাবের উদাহরণ।
মুআজ বিন জাবাল (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে সফলতা লাভের জন্য তা গোপন রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর; কারণ প্রত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসিত হয়।’ (হাদিস সম্ভার: ২১৯১)
সোশ্যাল মিডিয়া এই হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে। এখানে গোপনীয়তার বদলে জীবনের প্রতিটি নিয়ামত প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন করা হয়, যা মানুষকে সহজেই হিংসুক ও বদনজরের লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।
বদনজর এমন এক অদৃশ্য বাস্তবতা, যার প্রভাব শুধু শরীরেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মানুষের মন, পরিবার, অর্থনীতি, এমনকি ইমান ও আখিরাত পর্যন্ত গভীরভাবে আঘাত হানতে পারে। আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কাজকর্মে আগ্রহ হারাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। অনেক সময় এসবের পেছনে বদনজরের প্রভাবই কাজ করে। রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বদনজর সত্য।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
বদনজর প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রথমত: বদনজরের চিকিৎসা বা প্রতিকার হলো রুকইয়াহ শারইয়্যাহ, অর্থাৎ শরিয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক। এর পদ্ধতি হলো সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেওয়া বা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর নির্ধারিত দোয়াগুলো পড়া।
দ্বিতীয়ত: অজু বা গোসলের পানি দিয়েও প্রতিকার করা যায়। সাহল ইবনু হুনাইফ (রা.)-এর ঘটনায় প্রমাণিত যে, যার কারণে বদনজর লেগেছিল, তার অজুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আরোগ্য লাভ করেন।
তৃতীয়ত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে, একমাত্র আল্লাহই আরোগ্য দানকারী ও রক্ষাকারী। কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা নিজে থেকে কার্যকর হয় না; বরং আল্লাহর অনুমতিতে তাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। তাই মুমিন কখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না; বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখে।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক, জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়া, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

মহানবী (সা.)-এর সময়ে আরবের প্রখ্যাত পৌত্তলিক নেতা ছিলেন আমর ইবনে হিশাম। তাঁর উপাধি ছিল আবুল হাকাম তথা প্রজ্ঞার জনক। তিনি গভীর জ্ঞানের অধিকারী হিসেবে বিবেচিত ছিলেন এবং কোরাইশের প্রবীণ নেতাদের মধ্যে দক্ষতা ও উপলব্ধির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তবে ইসলামের প্রতি ভীষণ শত্রুতা প্রদর্শন এবং ইসলামের বাণী প্রত্যাখ
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৪৪ মিনিট আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৩ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৪ ঘণ্টা আগে