Ajker Patrika

ডিসেম্বরেই ভিয়েতনামের চেয়ে ৫ বিলিয়ন ডলার বেশি রপ্তানি হবে

ফারুক মেহেদী
ডিসেম্বরেই ভিয়েতনামের চেয়ে ৫ বিলিয়ন ডলার বেশি রপ্তানি হবে

পোশাক খাতে বেশি অর্ডার বাড়লেও সক্ষমতা বাড়ছে কি না? পোশাকের দাম বাড়ছে না কেন? ভিয়েতনামকে কি পেছনে ফেলা সম্ভব? এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট শহিদুল্লাহ আজিম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী

আজকের পত্রিকা: অর্ডার পাচ্ছেন, সক্ষমতা বাড়ছে কি না?
শহিদুল্লাহ আজিম: কোভিডের কারণে কিছু কিছু কারখানায় কর্মী কমানো হয়েছিল, লাইন কমানো হয়েছিল এটা ঠিক। তবে এখন অর্ডার আসছে। আমাদের এখন আবার লোক সংকট আছে, শ্রমিক লাগবে। দ্বিতীয়ত, আমাদের অর্ডার আসার কারণ–রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য মিয়ানমারের অনেক অর্ডার শিফট করেছে। লকডাউনের কারণে ভারতেরও কিছু অর্ডার আমাদের এখানে এসেছে। সব মিলিয়ে আমাদের সক্ষমতার চেয়ে বেশি অর্ডার আছে। কিন্তু অর্ডার থাকলেই তো হবে না। বিড়ম্বনা বেড়ে গেছে অনেক। আমরা যদি এয়ারপোর্টে একটা ট্রাক পাঠাই, সেখানে তা আনলোড হতে ৭-৮ দিন সময় লাগছে। সেখানে আবার পুলিশ গিয়ে মামলা দেয়।

আজকের পত্রিকা: সমস্যাটা কোথায়?
শহিদুল্লাহ আজিম: ক্রেতারা ভোগান্তি পছন্দ করছে না। তারা চিন্তা করছে–এমন হলে বাংলাদেশে অর্ডার দেবে কি না। আমরা সিভিল অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে কথা বললাম। তারা বলছে তাদের সক্ষমতার অভাব। আর আমাদের নাকি অর্ডার বেড়ে যাচ্ছে! এখন বেশি অর্ডার আসা কি দোষ হয়ে গেল? আমরা কি অর্ডার বন্ধ করে দেব? অনেক কারখানার মালিক বলছেন, ভাই, আমরা তো আর অর্ডার নেব না। কারখানা বন্ধ করে দেব। কারণ, এখন মনে হচ্ছে, অর্ডার নেওয়া মানে বোঝা নেওয়া। আমরা এখন চিন্তায় পড়ে গেছি, অর্ডার নেব কি নেব না। আসলে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেই। আমরা তাৎক্ষণিক কাজ করি। ট্রেন্ড যেভাবে যাচ্ছে, অর্ডার আরও বাড়বে। ছয় মাস হয়তো অনেক অর্ডার হবে। তখন সক্ষমতা থাকবে কি না–এ জন্য সরকারের সহায়তাকারী সংস্থাগুলোর প্রস্তুতি থাকতে হবে।

আজকের পত্রিকা: তাহলে কি সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা পাচ্ছেন না?
শহিদুল্লাহ আজিম: সরকারের সার্বিক সহায়তা আমরা পাচ্ছি। কিন্তু কিছু কিছু বিভাগ ও সংস্থার কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছি না। তাদের জনবল সংকট আছে। এটা যদি হয়, তাহলে তারা আগেই প্রস্তুতি নিক। সক্ষমতা বাড়াতে হলে বাড়াতে হবে। সক্ষমতা নেই বলে যদি আমাদের অর্ডার কম নিতে বলা হয় বা অর্ডার না নিতে বলে, তাহলে ক্রেতারা কি আবার এখানে ফিরে আসবে? বরং সরকারের দপ্তরগুলোর সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়াতে হবে। আমাদেরও সক্ষমতা বাড়াতে হবে। প্রযুক্তি সংযোজন করতে হবে। তবে ধীরে ধীরে। কারণ, প্রযুক্তির খারাপ দিক হলো–এতে অনেক কর্মী চাকরি হারাবে।

আজকের পত্রিকা: অনেক উদ্যোক্তা লোকসান হচ্ছে বলে দাবি করছেন। বাস্তব চিত্রটা কী?
শহিদুল্লাহ আজিম: কোনো রকমে ব্যবসা টিকিয়ে রাখছে যারা বলে, তাদের সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করি। যখন অর্ডার বাড়ে তখন অপশন থাকে। তখন আমি অর্ডার নেব কি নেব না, এটা আমার সিদ্ধান্ত। দামে না হলে অর্ডার করব না। এটা ভাবার সুযোগ থাকে। আগে তো কাউকে না বলতে পারতাম না। এখন না বলতে পারছি। লোকসান দিয়ে পণ্য দেব কেন? এটা হলো বেশি অর্ডারের ভালো দিক। এর ফলে পণ্যের দাম আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে। যারা এত দিন আমাদের আন্ডারমাইন করেছিল, তারা এখন বুঝতে পারছে যে, এটা করা যাবে না। যে ক্রেতা দাম না বাড়াবে, তাদের কাজ করবেন না।

আজকের পত্রিকা: পণ্যের দাম বাড়াতে চাপ দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে?
শহিদুল্লাহ আজিম: দাম বাড়বে। আসলে কনটেইনার ভাড়া এখন অনেক বেড়ে গেছে। ২ হাজার ডলারের ভাড়া এখন ৮ হাজার ডলার। ৪ হাজার ডলারের কনটেইনার ভাড়া এখন ১৬ হাজার ডলার। বায়াররা ভাড়া দিয়ে পণ্য নিয়ে যায়। এখন যদি আবার তাদের পণ্যের দাম বাড়ানোর চাপ দিই, তখন তারা বেঁকে বসতে পারে। আমি মাত্র যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলাম। আউটলেটগুলো খালি পড়ে আছে। যে পণ্য আছে, সাইজের ঠিক নেই। এ জন্য ওরা বিমানে করেও বেশি খরচ করে পণ্য নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

আজকের পত্রিকা: ভিয়েতনামকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থান ফিরে পাওয়া যাবে কি না?
শহিদুল্লাহ আজিম: করোনার কারণে আমরা যখন বসে আছি, ভিয়েতনাম তখন কারখানা বন্ধ করেনি। এখন আবার আমরা কাজ করছি। ভিয়েতনাম বসে আছে। তাদের এখন অর্ডার কম। গত সাত মাসে দেখলাম, আমরা রপ্তানি করেছি ১৯ বিলিয়ন ডলার আর ভিয়েতনাম করেছে ১৭ বিলিয়ন ডলার। আমরা ইতিমধ্যে ২ বিলিয়ন ডলার বেশি রপ্তানি করে বসে আছি। আমার বিশ্বাস, এখনো যেসব অর্ডার আছে, তার সব যদি রপ্তানি করতে পারি, তাহলে নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা ৪-৫ বিলিয়ন ডলারে এগিয়ে যাব।

বিষয়:

পোশাক
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘালয়ে হানিমুনে গিয়ে বর খুন, নিখোঁজ নববধূকে উদ্ধারে নেমেছে ড্রোন

‘তাণ্ডব’ সিনেমার শো চলার সময় ছায়াবাণী হলে দর্শকদের ভাঙচুর, টাকা লুট

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচার ও কিছু প্রশ্ন

ইরান-ইসরায়েলের সম্ভাব্য মুখোমুখি সংঘর্ষের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত

খালেদা জিয়ার সঙ্গে ফিরোজায় বিএনপি নেতাদের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত