ফারুক মেহেদী
চালের উৎপাদনের তথ্যের সঙ্গে সরবরাহের ঘাটতি কেন? উদ্বৃত্ত থাকলে কেন আমদানি করতে হচ্ছে? উচ্চ ফলনশীল জাত আবিষ্কারে কী কাজ হচ্ছে? এসব বিষয় নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও কৃষিবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: চালের উৎপাদন ও সরবরাহ নিয়ে বিতর্ক চলছে। এটা কেন?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: প্রথমত পরিসংখ্যানগত ত্রুটি থাকলে সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। পরিকল্পনা কমিশন পরিসংখ্যানটা সঠিকভাবে পর্যালোচনা করতে পারে। দ্বিতীয়ত, আমাদের যে চাল, এর একটি অংশ কিন্তু অন্য খাতেও ব্যবহৃত হয়। যেমন, সারা দেশে আমাদের হাঁস-মুরগির যে খামার রয়েছে, সেখানে ঘর থেকে কিছু না কিছু চাল খাবার হিসেবে দেওয়া হয়। খামারে তো নিয়মিতই দেয়। আর পরিসংখ্যান সঠিক না হলে একটা ঘাটতি হতে পারে, না হলে তো আমদানি করার কথা নয়। তাই বিষয়টি স্পষ্ট না করলে কোনো সিদ্ধান্তে আসা যাবে না।
আজকের পত্রিকা: যদি উদ্বৃত্তই হবে, তাহলে আমদানি করতে হয় কেন?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: বাইরে থেকে যে চাল নিয়ে আসা হচ্ছে, এটা আমরা প্রতিনিয়তই দেখছি। যদি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েই যায়, তাহলে একটা বিরাট পরিমাণ আমদানি করতে হয় কেন? ঘাটতিটা তো কম নয়। কাজেই দুদিক থেকেই সংশ্লিষ্ট সবার সতর্ক হওয়া দরকার। কিছু কিছু খাদ্যপণ্য আমাদের আনতেই হয়, কারণ গমের উৎপাদন কমছে, আমাদের যে ফাস্টফুডের চাহিদা রয়েছে, সেখানে গমের উপযোগিতা রয়েছে। তা আমদানি না করলে ফাস্টফুডের উপকরণ জোগান দেওয়া কঠিন।
আজকের পত্রিকা: উৎপাদন বেশির মধ্যে চালে নির্ভরতাও কমছে। তারপরও ঘাটতি কেন?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: লক্ষ্যমাত্রা আর উৎপাদনের মধ্যে আসলে কী হচ্ছে–এটা খুব পরিষ্কার করে বলা কঠিন। তবে আমাদের মনে হচ্ছে যে প্রশ্ন উঠেছে, এগুলো একটু পর্যালোচনা করে দেখা দরকার। প্রতিবছরই যদি এ হারে বাড়তে থাকে তাহলে অনেক উৎপাদন হয়ে যাওয়ার কথা। আবার আমাদের কিন্তু আলুও হচ্ছে। আলু আমাদের শর্করাজাতীয় খাদ্য। আমাদের পুষ্টিবিদেরাও বলছেন ভাতের ওপর চাপ কমাতে। মানুষ সচেতন হচ্ছে। ফলে চালের চাহিদাও স্বাভাবিকভাবে কমে আসার কথা।
আজকের পত্রিকা: ধানের উৎপাদনশীলতায় আমরা পিছিয়ে। এটা বাড়ানোর উপায় কী?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: অন্যরা যদি হেক্টরপ্রতি ৪-৫ টন করতে পারে, আমরা যদি ৩ টন করি, তাহলে আমাদের আরও ১ টন বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। তবে এ জন্য একটি যথাযথ ব্যবস্থাপনা দরকার। সঠিক উপকরণ, প্রয়োজনীয় অর্থও লাগবে। অনেক কৃষকের সেই অর্থ জোগান দেওয়ার সামর্থ্য নেই। আমাদের বেশির ভাগ কৃষক ছোট কৃষক। ছোট কৃষকের জন্য সময়মতো বীজ, সার, সেচ, কীটনাশকসহ সব ধরনের ব্যবস্থাপনা করা কঠিন। চীন পারে, কারণ তাদের জমি রাষ্ট্রীয়ভাবে বড় ব্লক করা। সেখানে যান্ত্রিক উপায়ে চাষাবাদ করা হয়।
আজকের পত্রিকা: আমাদের কৃষি কাঠামো কী চীনের মতো পদ্ধতি সমর্থন করে?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: আমাদের ছোট কৃষককে কীভাবে ওই পর্যায়ে নেব? ছোট কৃষককে তো আমরা সেই সাপোর্ট দিতে পারিনি। ফলে ওই জায়গায় যাওয়া কঠিন। তবে যারা বড় কৃষক রয়েছে, সেখানে হয়তো মেগা ভ্যারাইটি দেওয়া যায়, যেখানে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা করতে পারবে। তাতে ফলন বাড়বে। এ ছাড়া কিছু নতুন ভ্যারাইটিও লাগবে। যেসব জায়গায় বৈরী পরিবেশ বিদ্যমান, লবণাক্ত, খরা এলাকা, হাওর এলাকায় ফলন দিতে পারে এমন জাত আবিষ্কার করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: স্থান ও জলবায়ু সহনশীল উন্নত জাত আবিষ্কারে কাজ হচ্ছে কি না?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: হাওরের উপযোগী জাত নিয়ে কাজ হচ্ছে। ইরি এসব নিয়ে গবেষণা করছে। ইরিকে তহবিল দেওয়া হয়েছে। ইরি এবং ব্রি যৌথভাবে হাওরের জন্য কাজ করছে। আবার অনেক দেশি-বিদেশি ডোনার মিলেও কাজ করছে। শুধু ধান নয়, অন্য ফসলের জন্যও কাজ হচ্ছে। পাহাড়েও এখন বেশি ফল উৎপাদনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
আজকের পত্রিকা: দুর্বল বাজার ব্যবস্থাপনা অস্থিরতার জন্য দায়ী। আপনার কী মত?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। কারণ, উৎপাদনের সঙ্গে বাজারের সম্পর্ক আছে। চাহিদা না থাকলে জোগান বেশি হলে, দাম চাইলেই বাড়ানো যাবে না। কারণ বাজারে উদ্বৃত্ত আর চাহিদা নেই। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর কৃষক এখন নিজেও বাজারে সরাসরি যুক্ত থাকার চেষ্টা করে মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে। তবে মধ্যস্বত্ব ব্যবস্থাটা কতটা কমিয়ে আনতে হবে। সুতরাং বাজার ব্যবস্থাপনাটা একটু জটিল। অর্থাৎ আমরা যা বলছি, তা করতে পারছি না। আরও দক্ষতার জন্য বাজার ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজাতে হবে।
চালের উৎপাদনের তথ্যের সঙ্গে সরবরাহের ঘাটতি কেন? উদ্বৃত্ত থাকলে কেন আমদানি করতে হচ্ছে? উচ্চ ফলনশীল জাত আবিষ্কারে কী কাজ হচ্ছে? এসব বিষয় নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও কৃষিবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: চালের উৎপাদন ও সরবরাহ নিয়ে বিতর্ক চলছে। এটা কেন?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: প্রথমত পরিসংখ্যানগত ত্রুটি থাকলে সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। পরিকল্পনা কমিশন পরিসংখ্যানটা সঠিকভাবে পর্যালোচনা করতে পারে। দ্বিতীয়ত, আমাদের যে চাল, এর একটি অংশ কিন্তু অন্য খাতেও ব্যবহৃত হয়। যেমন, সারা দেশে আমাদের হাঁস-মুরগির যে খামার রয়েছে, সেখানে ঘর থেকে কিছু না কিছু চাল খাবার হিসেবে দেওয়া হয়। খামারে তো নিয়মিতই দেয়। আর পরিসংখ্যান সঠিক না হলে একটা ঘাটতি হতে পারে, না হলে তো আমদানি করার কথা নয়। তাই বিষয়টি স্পষ্ট না করলে কোনো সিদ্ধান্তে আসা যাবে না।
আজকের পত্রিকা: যদি উদ্বৃত্তই হবে, তাহলে আমদানি করতে হয় কেন?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: বাইরে থেকে যে চাল নিয়ে আসা হচ্ছে, এটা আমরা প্রতিনিয়তই দেখছি। যদি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েই যায়, তাহলে একটা বিরাট পরিমাণ আমদানি করতে হয় কেন? ঘাটতিটা তো কম নয়। কাজেই দুদিক থেকেই সংশ্লিষ্ট সবার সতর্ক হওয়া দরকার। কিছু কিছু খাদ্যপণ্য আমাদের আনতেই হয়, কারণ গমের উৎপাদন কমছে, আমাদের যে ফাস্টফুডের চাহিদা রয়েছে, সেখানে গমের উপযোগিতা রয়েছে। তা আমদানি না করলে ফাস্টফুডের উপকরণ জোগান দেওয়া কঠিন।
আজকের পত্রিকা: উৎপাদন বেশির মধ্যে চালে নির্ভরতাও কমছে। তারপরও ঘাটতি কেন?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: লক্ষ্যমাত্রা আর উৎপাদনের মধ্যে আসলে কী হচ্ছে–এটা খুব পরিষ্কার করে বলা কঠিন। তবে আমাদের মনে হচ্ছে যে প্রশ্ন উঠেছে, এগুলো একটু পর্যালোচনা করে দেখা দরকার। প্রতিবছরই যদি এ হারে বাড়তে থাকে তাহলে অনেক উৎপাদন হয়ে যাওয়ার কথা। আবার আমাদের কিন্তু আলুও হচ্ছে। আলু আমাদের শর্করাজাতীয় খাদ্য। আমাদের পুষ্টিবিদেরাও বলছেন ভাতের ওপর চাপ কমাতে। মানুষ সচেতন হচ্ছে। ফলে চালের চাহিদাও স্বাভাবিকভাবে কমে আসার কথা।
আজকের পত্রিকা: ধানের উৎপাদনশীলতায় আমরা পিছিয়ে। এটা বাড়ানোর উপায় কী?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: অন্যরা যদি হেক্টরপ্রতি ৪-৫ টন করতে পারে, আমরা যদি ৩ টন করি, তাহলে আমাদের আরও ১ টন বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। তবে এ জন্য একটি যথাযথ ব্যবস্থাপনা দরকার। সঠিক উপকরণ, প্রয়োজনীয় অর্থও লাগবে। অনেক কৃষকের সেই অর্থ জোগান দেওয়ার সামর্থ্য নেই। আমাদের বেশির ভাগ কৃষক ছোট কৃষক। ছোট কৃষকের জন্য সময়মতো বীজ, সার, সেচ, কীটনাশকসহ সব ধরনের ব্যবস্থাপনা করা কঠিন। চীন পারে, কারণ তাদের জমি রাষ্ট্রীয়ভাবে বড় ব্লক করা। সেখানে যান্ত্রিক উপায়ে চাষাবাদ করা হয়।
আজকের পত্রিকা: আমাদের কৃষি কাঠামো কী চীনের মতো পদ্ধতি সমর্থন করে?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: আমাদের ছোট কৃষককে কীভাবে ওই পর্যায়ে নেব? ছোট কৃষককে তো আমরা সেই সাপোর্ট দিতে পারিনি। ফলে ওই জায়গায় যাওয়া কঠিন। তবে যারা বড় কৃষক রয়েছে, সেখানে হয়তো মেগা ভ্যারাইটি দেওয়া যায়, যেখানে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা করতে পারবে। তাতে ফলন বাড়বে। এ ছাড়া কিছু নতুন ভ্যারাইটিও লাগবে। যেসব জায়গায় বৈরী পরিবেশ বিদ্যমান, লবণাক্ত, খরা এলাকা, হাওর এলাকায় ফলন দিতে পারে এমন জাত আবিষ্কার করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: স্থান ও জলবায়ু সহনশীল উন্নত জাত আবিষ্কারে কাজ হচ্ছে কি না?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: হাওরের উপযোগী জাত নিয়ে কাজ হচ্ছে। ইরি এসব নিয়ে গবেষণা করছে। ইরিকে তহবিল দেওয়া হয়েছে। ইরি এবং ব্রি যৌথভাবে হাওরের জন্য কাজ করছে। আবার অনেক দেশি-বিদেশি ডোনার মিলেও কাজ করছে। শুধু ধান নয়, অন্য ফসলের জন্যও কাজ হচ্ছে। পাহাড়েও এখন বেশি ফল উৎপাদনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
আজকের পত্রিকা: দুর্বল বাজার ব্যবস্থাপনা অস্থিরতার জন্য দায়ী। আপনার কী মত?
ড. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া: বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। কারণ, উৎপাদনের সঙ্গে বাজারের সম্পর্ক আছে। চাহিদা না থাকলে জোগান বেশি হলে, দাম চাইলেই বাড়ানো যাবে না। কারণ বাজারে উদ্বৃত্ত আর চাহিদা নেই। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর কৃষক এখন নিজেও বাজারে সরাসরি যুক্ত থাকার চেষ্টা করে মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে। তবে মধ্যস্বত্ব ব্যবস্থাটা কতটা কমিয়ে আনতে হবে। সুতরাং বাজার ব্যবস্থাপনাটা একটু জটিল। অর্থাৎ আমরা যা বলছি, তা করতে পারছি না। আরও দক্ষতার জন্য বাজার ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজাতে হবে।
অধ্যাপক এম এম আকাশ—বাংলাদেশের বামপন্থী আন্দোলনের এক সুপরিচিত নাম। তিনি শুধু অর্থনীতিবিদ হিসেবেই নন, একজন প্রগতিশীল চিন্তক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) অন্যতম নেতৃত্বদানকারী হিসেবেও পরিচিত। আজকের অস্থির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যখন একদিকে গণতন্ত্র সংকুচিত হচ্ছে আর অন্যদিকে বৈষম্য বাড়ছে...
২০ ঘণ্টা আগেমিয়ানমারের সংকটকবলিত রাখাইনে খাদ্যসহ জরুরি রসদ সরবরাহে মানবিক করিডর দিতে নীতিগত সম্মতির কথা বলছে সরকার। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসবিষয়ক গবেষক আলতাফ পারভেজ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিভুরঞ্জন সরকার ও মাসুদ রানা।
৪ দিন আগেজুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক পক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির নীতি নির্ধারণে অন্যতম ভূমিকা পালন করছেন যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। দলের গঠনতন্ত্র প্রণয়নে গঠিত কমিটিতেও রয়েছেন তিনি।
১২ দিন আগেবাংলাদেশি তরুণ ওমর আহমেদ বর্তমানে বেলজিয়ামের ইএএসপিডি ব্রাসেলসের ইইউ প্রজেক্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত। বেলজিয়ামে উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কাজ, বাংলাদেশিদের সুযোগ ও প্রস্তুতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন নাদিম মজিদ।
২২ মার্চ ২০২৫