Ajker Patrika

‘বাংলাদেশের মডেলদের আমি স্যালুট দিই’

রজত কান্তি রায়
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৩৮
Thumbnail image

আপনার শুরুর দিকের গল্পটা জানতে চাই। 
বুলবুল টুম্পা: তখন আমি স্কুলে পড়ি। চাচ্চুর বিয়ে খেতে গিয়ে তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে আমার দেখা হয়। তিনি আমার চাচ্চুকে অনুরোধ করেন, আমাকে যেন মডেলিংয়ে দেওয়া হয়। ওই সময় আমার বাবা-মা মারা গেছেন। খুব হতাশায় ছিলাম আমি। এর আগে আমার দিন কাটতো খেলাধুলা, স্কুল ও আনন্দের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু বাবা-মা মারা যাওয়ার পর আমার জীবন পরিবর্তন হয়ে যায়। আমি খুব কম কথা বলতাম। কারও সঙ্গে মিশতাম না। তারপর ১৯৯৭ সালের দিকে আমি চাচ্চুর বিয়ে খেতে যাই। সেখানে চাচ্চুর ফ্রেন্ডের সঙ্গে দেখা হয়। চাচ্চুর ফ্রেন্ড আমাকে দেখে মডেলিংয়ের জন্য পছন্দ করেন। কিন্তু আমার বড় ভাই চাননি আমি মডেলিংয়ে আসি। তার পরের বছর ১৯৯৮ সালে আমি মডেলিং শুরু করি। আমার ভাই আমাকে একটি কথা বলেছেন, আমি যেন এমন কিছু না করি, যাতে পরিবারের অসম্মান হয়।

আপনার ওই সময়ের শিক্ষক বা ট্রেনার কে ছিলেন? 
বুলবুল: আমার চাচ্চুর ফ্রেন্ড আমাকে দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে মেয়ে মডেলরা দাঁড়ায়। আমাদের ট্রেনিং হয়ে তারপর কাজ হতো। একটা শোয়ের জন্য দুই মাস তিন মাস ট্রেনিং হতো। তখন যারা ভালো করত, তারা কাজ করত। তখন সূচনা আপু ছিলেন। আরও সিনিয়র অনেক মডেল ছিলেন। তখন আমি নিউকামার।

কোন শোয়ের মধ্যে দিয়ে আপনার যাত্রা শুরু হয়?
বুলবুল: ‘অনামিকা ফ্যাশন শো’। সালটা ছিল ১৯৯৮। ওটা থেকে আমার যাত্রা শুরু। তখন থেকে আমি র‍্যাম্প মডেল। 

তার মানে ১৯৯৮ থেকে ২০২১ সাল। ২৩ বছর ধরে আপনি কাজ করছেন। কেমন দেখলেন এই ২৩ বছরের যাত্রাটা? 
বুলবুল: আমি বলি, আমি সব সময় পজিটিভ দেখতে পছন্দ করি। আমি সবকিছুতে পজিটিভ খুঁজতে পছন্দ করি। আমি যাত্রাটাকে ভালোই দেখেছি। পরিধি বেড়েছে। হ্যাঁ, আগে যেটা ছিল তা হলো, সবার মধ্যে ভালোবাসা, আন্তরিকতা—একজন আরেকজনকে হেল্প করা ইত্যাদি। কিন্তু এখন সবাই প্রফেশনাল। সো, আমি সবকিছুকে পজেটিভলিই দেখি। 

বুলবুল টুম্পা, ২০২১আপনার জার্নিটা কেমন ছিল? 
বুলবুল: আমি যেহেতু কাজটাকে ভালোবাসি। জার্নিটা ভালোই দেখি। আমি কখনোই খারাপ দেখব না এবং খারাপ দেখতে চাইও না। একজন পজেটিভ মানুষ নেগেটিভ মানুষের তুলনায় জীবনে অনেক কিছু করতে পারে। কারণ, নেগেটিভিটি মানুষকে সব সময় দুর্বল করে, দমিয়ে রাখে। 

আপনার বিষয়ে খুব প্রচলিত কথা শোনা যায়, তা হলো, মডেলিংয়ের বাইরে আপনি টেলিভিশন নাটক, সিনেমা—এসব করতে যাননি। এটার কারণ কী?
বুলবুল: এটার অবশ্য কোনো কারণ নাই। আমি র‍্যাম্পটাকে ভালোবাসি। সেখান থেকে র‍্যাম্পেই থেকে গেলাম। র‍্যাম্প মডেলিং যেমন আর্ট, তেমনি নাটক-সিনেমাও আর্ট। যারা মুভি করছেন তাঁরা আর্টিস্ট। আমার মনে হয়, এই গুণটা আমার মধ্যে নাই। আমার মনে হয়, আমি এই জায়গাটাকে (মডেলিং) যদি ভালো অবস্থানে নিয়ে যাই, আমাকে দেখে কেউ যদি আসে, ভালো কিছু করে তাহলে আমার জন্য বিষয়টা গর্বের।

এ জন্য র‍্যাম্প ছেড়ে আর কোথাও যাননি আপনি? 
বুলবুল: না, যাইনি। শখ করে টিভিসি করেছি, মিউজিক ভিডিও করেছি। নাচের প্রোগ্রাম করেছি। মিডিয়াতে থাকলে যা হয়, আরকি। টুকটাক সব কাজই করা হয়েছে। কিন্তু পেশা হিসেবে র‍্যাম্প মডেলিংকেই নিয়েছি।

প্রস্তাব তো পেয়েছেন? 
বুলবুল: হ্যাঁ, পেয়েছি। এখনো পাই। আমার এখনো মনে আছে, একজন আমার জন্য একটা স্ক্রিপ্ট অনেক বছর রেখে দিয়েছিলেন। আমার কাছে মনে হয় আমাকে দিয়ে হবে না। এটা আমার প্রবলেম। আমি অভিনেত্রীদের রেস্পেক্ট করি। কারণ, প্রত্যেকেই সফল হওয়ার জন্য অনেক স্ট্রাগল করেন।

২৩ বছর ধরে কাজ করছেন। অনেক সময়। এই দীর্ঘ সময়ে আপনি সিনিয়র-জুনিয়র অনেকের সঙ্গে কাজ করেছেন। সিনিয়রদের সম্পর্কে কিছু বলুন। ওই সময় কাদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন? 
বুলবুল: আমি যখন আসি, তখন কোরিওগ্রাফার হিসেবে তুপা আপুকে পেয়েছি। তানিয়া আপুকে পেয়েছি। বিবি আপুকে পেয়েছি। বিবি আপু, তানিয়া আপু, তুপা আপু, এলইডি স্বপন ভাইয়ের সঙ্গে অনেক কাজ করেছি। তখনকার মডেলদের যদি আমি এখন দাঁড় করাতে পারতাম—তাঁরা অনেক ভালো কাজ করতেন। খুব হেল্পফুল ছিলেন। ট্যালেন্টেড ছিলেন। তখন তাঁরা ভালো জায়গা পাননি। তখন পত্রিকা বা টেলিভিশন কম ছিল বলে নিজেদের প্রকাশ করার সুযোগ কম ছিল। কিন্তু এখন অনেক মাধ্যম আছে। আমি সিনিয়রদের খুব মিস করি। 

বিবি রাসেলের সঙ্গে কতগুলো কাজ করেছেন? 
বুলবুল: হিসেব ছাড়া। বিবি আপুর অনেক কাজ আমি করেছি। উনি অনেক ভালো ভালো কাজ করেছেন। আমি তাঁকে অনেক রেস্পেক্ট করি। কারণ, ইন্টারন্যাশনালি তিনি আমাদের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। 

শো-স্টপার হিসেবে আপনি কতগুলো কাজ করেছেন? 
বুলবুল: ২০১৪ পর্যন্ত আমি র‍্যাম্প মডেল ছিলাম। (শো-স্টপার হিসেবে) আমার (কাজ) করা হয়। প্রতি বছর দু-তিনটা করা হয়। তবে সংখ্যাটা হিসাব করিনি। আমার শোয়ের সংখ্যাই তো হিসাব করিনি। ২০০০ সাল থেকে বাটেক্সপো শুরু হয়। টানা ২০১৪ সাল পর্যন্ত আমি শো করেছি। বাংলাদেশে টপ টপ কাজ করেছি। ঋতু কুমার এসেছেন, তাঁর কাপড় পরেছি। বাংলাদেশে সানসিল্কের শো, ল্যাকমে শো—অনেক কিছুই করেছি। আগে বাংলাদেশে অনেক ভালো শো হতো, যেগুলোকে আমি এখনো মিস করি। আগে বাটেক্সপো ছিল। এখন তো হয় না। ওই সময় ফ্যাশন শোয়ের আলাদা একটা জায়গা ছিল। কিছু এলিগ্যান্ট মানুষ শো দেখতে আসতেন। তাঁরা ডিজাইনারদের কালেকশন দেখতে আসতেন। আগের ডিজাইনারেরা প্রতি বছর নতুন কালেকশন নিয়ে আসতেন। সেগুলোই দেখতে আসত মানুষ। 

বুলবুল টুম্পা র‍্যাম্পে হাঁটা থেকে অবসর নিয়েছেন ২০১৪ সালেএখন আমাদের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির কী অবস্থা?
বুলবুল: এখন পরিধি অনেক বেড়েছে। সবাই অনেক কাজ করছেন। অনেকেই ভালো করছেন। আগে যেটা ছিল—সবার মধ্যে বন্ডিং ছিল। আমরা একটা পরিবেশের মধ্যে ছিলাম। সবাই সবাইকে ভালোবাসত। এখন সবাই প্রফেশনাল হয়ে গেছে। 

আড়ং ফ্যাশন, আড়ং-নোকিয়া ফ্যাশন শো—এ রকম বড় বড় অনেক ফ্যাশন শো হয়েছে ওই সময়। জাপান-বাংলাদেশ মিলে বিবি আপুর অনেক শো হয়েছে। আমরা অনেক বড় বড় অ্যাম্বাসির কাজ করেছি। অনেক ভালো কাজ করেছি। তখন আসলে প্রচার কম ছিল, মানুষেরা মডেলদের চিনত কম। কিন্তু ওই সময়ে বাংলাদেশে অনেক বড় বড় মডেল এসেছে, যেমন টাপুরটুপুর, জেসিকা, চয়নিকা, কোয়েনা মিত্র। কে আসে নাই, বলেন? 

তার মানে কর্মসূত্রে আপনি কিছু আন্তর্জাতিক মডেলের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁদের এবং আমাদের কোয়ালিটিতে পার্থক্যের জায়গাটা কী? 
বুলবুল: হ্যাঁ, কাজ করেছি। তাঁরা প্রফেশনাল। তাঁরা যখন কাজ করেন, কাজটাকে খুব মনোযোগ দিয়ে করেন। আমাদের দেশের মডেলরা যে মন দিয়ে কাজ করেন না, তা না। আমরা একটা সার্কেলই ছিলাম, যারা মনোযোগ দিয়ে কাজ করতাম। তবে তাঁরা অনেক প্রফেশনাল। আমি তাঁদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। 

তবে বাংলাদেশের মডেলদের আমি স্যালুট দিই। কারণ বাংলাদেশে কোনো এজেন্সি নাই। বাংলাদেশে অনেক বড় বড় মডেল ছিলেন, যাঁরা ইন্টারন্যাশনালি বিট করেছেন। শাওন, সোনিয়া আপুসহ আরও অনেক মডেল ইন্টারন্যাশনাল বিউটি কনটেস্ট জিতে এসেছেন। তাঁরা নিজের যোগ্যতায় গিয়েছেন।

কিন্তু তাঁরা তো পরে মডেলিংয়ে থাকেননি। থেকেছেন কি? 
বুলবুল: বেসিক্যালি, সবার তো একটা সংসার আছে। হয়তো-বা আমি বিয়ে করি নাই বলে আমি সময়টা দিতে পারছি। বিয়ে করলে বা যেকোনো মানুষের লাইফস্টাইল তো যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু আমার মনে হয়, যদি ওদের নিয়ে লেখা হতো যে ওরা ভালো মডেল ছিলেন, তাহলে ভালো হতো। 

আমি যখন শুরু করি তখন লোপা আপু মডেল। তিনি মারা গেছেন। উনি ডিজাইনারও ছিলেন। সোনিয়া আপু, তৃপ্তি আপু মডেল ছিলেন। আই লাভ তৃপ্তি আপু। তার শার্প চেহারা ছিল। তিনি দেখতে খুব সুন্দর ছিলেন। বাংলাদেশে আরও অনেক ভালো ভালো মডেল ছিলেন। 

তাঁদের কোন গুণটা আপনাকে আকৃষ্ট করেছে? 
বুলবুল: তাঁরা টাইম মেনটেইন করতেন। মানুষকে রেস্পেক্ট করতেন। আমাদের ভালোবাসতেন। ভালোবাসতেন দেখেই আজকে তাঁদের মিস করছি। 

একই অবস্থা তো তখনো ছিল। ইন্ডাস্ট্রির কোনো স্ট্রাকচার ছিল না। তাঁরা প্রশিক্ষণ পেতেন কীভাবে? বাইরে থেকে ট্রেইনার আসতেন? 
বুলবুল: যখন আমরা এসেছিলাম, তখন সিনিয়রদের দেখে দেখে শিখেছি। আগে আমরা অনেক বেশি সময় দিতাম। আমাদের সময়ে অডিশন ছাড়া শোয়ের জন্য মডেল নেওয়া হতো না। আমি ২০০৬ সাল পর্যন্ত অডিশন দিয়ে শো করেছি। এখন সবাই প্রফেশনাল হয়ে গেছে। এখন অডিশন ছাড়াই শো হয়। কোরিওগ্রাফারেরা জানেন, কারা মডেল। বিভিন্ন শোয়ের সময় তাঁরা মডেলদের মেইল করেন, মেসেজ করেন বা ফোন করেন। দুদিন রিহার্সাল হয়, একদিন ম্যাজারমেন্ট টাইম, একদিন ওয়ার্কশপ হয়। এভাবে কাজ হচ্ছে। 

বিভিন্ন বিউটি প্রতিযোগিতার ট্রেনার বা মেন্টর হিসেবে কাজ করছেন বুলবুল টুম্পাআমরা যদি বলি, সেই অর্থে এখনো কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নাই দেশে...
বুলবুল: হ্যাঁ, দেশে এজেন্সি নাই। তবে আমি মনে করি, নিজের কাজটাকে ভালোবাসতে হবে। আপনারা কিন্তু ঠিকই আমাকে খুঁজে বের করেছেন। কারণ, আমি ২৩ বছর ধরে কাজ করছি। তেমনি নিজের কাজটাকে ভালোবেসে যেতে হবে। এক সময় একটা পর্যায়ে যাওয়া যাবে। 

তানিয়া আহমেদের অনেক অবদান আছে আপনার জীবনে, যেমনটা বলছিলেন। তাঁর সম্পর্কে কিছু বলুন। 
বুলবুল: আই লাভ তানিয়া আপু। তাঁর কারণেই আজ আমি ট্রেইনার। তানিয়া আপুর সঙ্গে আমি কাজ শুরু করি ১৯৯৯/ ২০০০ সালের দিকে। অনেক কাজ করেছি। তিনি অনেক ট্যালেন্টেড। তাঁর মধ্যে যে ট্যালেন্ট আছে, তার কিছু যদি আমি নিতে পারতাম, তাহলে আমার জন্য অনেক ভালো হতো। 

তাঁর সঙ্গে কাজের একটা অভিজ্ঞতার গল্প শুনি। 
বুলবুল: তানিয়া আপুর সঙ্গে যখন কাজ করি, তখন আমার ক্যাটওয়াক দেখে তাঁর মা বলেছিলেন, আমার মধ্যে নাকি একটা স্পার্ক আছে। আমি যখন ক্যাটওয়াক করি, তখন সবাই আমাকে বলত, তুই কেন প্যারিসে জন্মাসনি, কেন এই দেশে জন্মালি। এখানে তোকে কখনোই সম্মান দিবে না। 

তানিয়া আপুর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে একবার তিনি আমাকে অনেকগুলো কিউ ও লিড দিয়েছিলেন। তখন এক অর্গানাইজার নাকি তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, অনেক ফরসা মেয়েকে বাদ দিয়ে কেন আমার মতো কালো মেয়েকে প্রায়োরিটি দিচ্ছেন। তখন তানিয়া আপু বলেছেন, ‘আমার এই কালো মেয়েটা যখন স্টেজে উঠবে, তখন বুঝবেন কেন প্রায়োরিটি দিচ্ছি।’ পরে সেই শোয়ের পর অর্গানাইজার ও তাঁর স্ত্রী নাকি তানিয়া আপুকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন আমার জন্য। 

তানিয়া আপুর সঙ্গে এবারও আমি লাক্স করলাম, মাসুদ রানা করলাম। তাঁর সঙ্গে আমি আর আজরা ২০০৭ সাল থেকে লাক্স করি। মীম, মেহজাবিন থেকে শুরু করে লাস্ট লাক্সের আগের লাক্স পর্যন্ত আমি ট্রেইনার ছিলাম। আমি লাক্স করেছি, ভাটিকা করেছি, মিস ইউনিভার্স ইত্যাদি অনেক কিছুতে ট্রেইনার হিসেবে কাজ করেছি। 

বিবি রাসেলের সঙ্গে কিছু স্মৃতির কথা বলুন। 
বুলবুল: বিবি আপুকে অনেক পছন্দ করি। উনি বাংলা গান ব্যবহার করেন। তাঁর পোশাকগুলো সুন্দর। উনি প্রফেশনটা মেইনটেইন করেন। আমি সবার থেকে শিখতে পছন্দ করি। আমি আমার স্টুডেন্টদের কাছ থেকেও শিখি। আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শিখতে চাই। 

আপনি কথা প্রসঙ্গে, যখন কাজ শুরু করেন, ১৯৯৮ সালে, সেই সময় আর এই সময়ের মধ্যকার পার্থক্যগুলোর কথা বলছিলেন। সেই সময়ের মডেল ও এখনকার মডেলদের মধ্যে পার্থক্য কী—এগুলো আলাপ হচ্ছিল আমাদের মধ্যে। কোন মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে এই পার্থক্যটা হচ্ছে?
বুলবুল: তখন আমরা সবাই ফ্যামিলির মতো ছিলাম। সবাই সবাইকে হেল্প করতাম। কে কীভাবে বাসায় যাবে, সেটাও ভাবতাম। মুনমুন আপুর মা খাবার রান্না করে আনতেন। একটা প্লেটে খাবার মাখিয়ে সবার মুখে মুখে খাবারের লোকমা তুলে দিতেন। এই বিষয়গুলো ছিল। 

ওই সময়ে কাজ শিখিয়ে একটা মানুষকে নেওয়া হতো। যতই সুন্দর হোক না কেন, অন্য কেউ যতই পুশ করুক না কেন, যার মধ্যে গুণ না থাকত, তাঁকে নেওয়া হতো না। এখন যেটা হচ্ছে তা হলো, টিকটক, লাইকি, ফেসবুকের ছবি ও ফলোয়ার দেখে মডেল নেওয়া হচ্ছে। এই কারণে কাজের মানটা কমে যাচ্ছে। 

তার মানে বলতে চাইছেন, কাজের প্রতি ভালোবাসা ছিল একটা মানদণ্ড। তবে এখনো কাজ চলছে, কোনো না কোনোভাবে। পরিধি বেড়েছে? 
বুলবুল: হ্যাঁ, কাজের পরিধি বেড়েছে। তবে টিকটক, লাইকি বা ফেসবুকের ছবি দেখে ১৫ সেকেন্ডে মানুষকে জাস্টিফাই করা যায় না। তাঁর টাইম মেইনটেইনিং সেন্স, কাজ কেমন করবে—এই বিষয়গুলো জানা যায় না। এখন সময়টাই হয়ে গেছে এমন। আমি অবশ্য দোষ দেব না। 

আপনি যেটা বললেন, আমাদের এখানে আগে অনেক ভালো মডেল ছিলেন। তাহলে আমরা আন্তর্জাতিকভাবে আগাচ্ছি না কেন? 
বুলবুল: বাংলাদেশ থেকে অনেক মডেল আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করেছেন। যারা যাচ্ছেন তাঁরা নিজের যোগ্যতায় যাচ্ছেন। আমি তাঁদের স্যালুট জানাই। মিস ইউনিভার্স, মিস ওয়ার্ল্ডে মেয়েরা যাচ্ছে। এজেন্সি নাই, প্রতিষ্ঠান নাই—তাও যাচ্ছে। এগুলোর জন্য উদ্যোগ প্রয়োজন, আন্তর্জাতিক এজেন্সি চেইন কেনা প্রয়োজন। সে উপায়গুলো প্রয়োজন। এটার জন্য অনেক অর্থের দরকার। একা কারও পক্ষে করা সম্ভব নয় এগুলো। আমি যখন একটা বিউটি কনটেস্ট করতে যাব, তখন একটা চ্যানেল লাগবে, গ্রুপ লাগবে, জায়গাটা কীভাবে সাজাব তা ভাবতে হবে, এতগুলো মানুষের সিকিউরিটি দিতে হবে ইত্যাদি অনেক ব্যাপার আছে। এটার জন্য অর্থের প্রয়োজন। 

ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। আপনার স্কুল কখন করলেন? 
বুলবুল: এটা আমার স্কুল না, ওয়ার্কশপ। ২০০৬ সালে এটা আমি শুরু করি। এটা করে আমি আনন্দ পাই। অ্যাটলিস্ট আমার দ্বারা কারও উপকার হচ্ছে। এই আরকি। 

ওয়ার্কশপ দেওয়ার ইচ্ছে হলো কেন আপনার? 
বুলবুল: আগে যেমন অনেক রিহার্সাল হতো, এটা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। যারা নতুন আসবে, তাদের স্কোপটা কোথায়, তারা কীভাবে শিখবে, জানবে, করবে? সেগুলো থেকেই মনে হলো ওদের জন্য কিছু করি।

কারা কারা আপনার এখান থেকে বের হয়েছেন? 
বুলবুল: আমার এখান থেকে বের হয়েছে অর্ষা, সাদিকা, নায়ক এবিএম সুমন, নায়ক বাপ্পি, নায়ক শরীফুল রাজ, মেঘলা মুক্তা, এখনকার জেনারেশনের নাজিয়া, নির্ঝরসহ আরও অনেকে। 

পারিবারিক গল্পটা শুনতে চাই। আপনার জন্ম, বেড়ে ওঠা, বাবা-মা, ভাই-বোন সম্পর্কে জানতে চাই। 
বুলবুল: আমার আব্বু আম্মু মারা গেছেন। এটা আমার অনেক দুঃখের বিষয়। আপনি যদি বলেন, আমার সবচেয়ে কষ্টের বিষয় কোনটা? আমি বলব আমি যে ইনকাম করি, তা বাবা-মাকে খাওয়াতে পারিনি। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জব করে বাবা-মায়ের জন্য কিছু করব, বাবা-মাকে খাওয়াব। কিন্তু সেই আফসোসটা রয়েই গেল। 

আমি সবাইকে নিয়ে খেতে পছন্দ করি। আমাকে আমার (ওয়ার্কশপের) ছেলেমেয়েরা মা বলে ডাকে। অনেক বছর ধরেই মা ডাকে। এটা তারা ভালোবাসা থেকে ডাকে। আমি আমার ছেলেমেয়েদের সেফটি না দিয়ে কাজ করি না। আমরা আট ভাইবোন। আমার ছোট ভাই আছে একজন। আর বাকি সবার বিয়ে হয়ে গেছে, বাচ্চা কাচ্চা হয়ে গেছে। 

নিজের ওয়ার্কশপে ভবিষ্যতের মডেলদের সঙ্গে বুলবুল টুম্পাএটা অনেক কষ্টের ব্যাপার। ডেফিনেটলি কষ্টের ব্যাপার। 
বুলবুল: হ্যাঁ, আমার এই আফসোসটা সারা জীবনই থেকে যাবে। আর আমি ফ্যামিলি পছন্দ করি। বন্ডিং পছন্দ করি। আমি একা মুভ করি কম। মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করে, অবসরে কী করো, আমি অবসরে ঘুমাই। অনেকে বই কালেক্ট করে, গান শোনে, আমি ঘুমাই। আমি প্রচুর কাজ করতে পছন্দ করি। পরিশ্রম করতে পছন্দ করি। এখন তো করোনার জন্য দুই বছর ধরে কাজ কম। নরমালি আমি অনেক ব্যস্ত থাকি। কোনো না কোনো বিউটি কনটেস্ট থাকে, আমি ট্রেইনার থাকি। কোনো স্কুল বলেন, স্পিচের জন্য বলেন আমার ক্লাস নিতে হয়। 

আপনার জন্ম ও বেড়ে ওঠা তো…
বুলবুল: ঢাকায়। মিরপুরে। আমরা মিরপুরের স্থানীয়। আব্বু পাকিস্তান পিরিয়ডে জায়গা কিনলেন। স্বাধীনতার অনেক পর সেখানে বাড়ি করেন। এখনো সেখানে থাকি। 

আপনার আব্বু কি ঢাকার বাইরে থেকে এসেছিলেন? 
বুলবুল: হ্যাঁ। আব্বু বরিশালের। আব্বু আম্মু পাকিস্তান পিরিয়ড থেকেই ঢাকায়। 

সামনে আপনার ইচ্ছা কী? 
বুলবুল: আমি বর্তমান নিয়ে বিশ্বাসী। বর্তমানে যদি আমি ভালো করি, সামনে ভালো হবে। 

মানুষের একটা গোল থাকে না, আমি এটা করব। 
বুলবুল: আমি কখনো গোল নিয়ে আগাই না। সব সময় ভালো কাজ করার চেষ্টা করেছি। তবে এটা দেখতে চাই, বাংলাদেশের ভালো ভালো ছেলেমেয়েরা যেন ইন্টারন্যাশনালি কাজ করতে পারে। আমার ছেলেমেয়েরা যখন ভালো কাজ করে, তখন আমার এটা ভেবে ভালো লাগে যে, অ্যাটলিস্ট আমরা কিছু করছি। কিছু একটা কাউকে দিতে পারছি। আমি জীবনে অনেক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। প্রতিটা অ্যাওয়ার্ড আমাকে কাজ করার উৎসাহ দেয়। 

আপনার লেখাপড়া শেষ করছেন কোথা থেকে? 
বুলবুল: আমি পড়াশোনা অনেক করতে পারি নাই। এটাও আমার ব্যাড লাক। এর কারণ হলো, আমার বাবা-মা মারা যাওয়ার পর আমাদের অনেক স্ট্রাগলের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। আমি টিভি লাইভেও বলেছি, একটা সময় আমি স্বর্ণের চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছি। কিন্তু আব্বু আম্মু মারা যাওয়ার পর অনেক বাস্তবতা দেখেছি আমরা। তখন আমরা কোনো ভাইবোন স্ট্যাব্লিশ না। সবাই ছোট ছোট। তখন আমার পড়ার টাকাই ছিল না। ভাইয়া কোচিংয়ের টাকা দিতে পারছিল না। আমার মনে আছে, আমি একজোড়া জুতা চেয়েছিলাম। সেটাও এক মাস পরে দিয়েছিল। সেটা থেকে আমি নতুনদের ভালোবাসি। সবাই তো তেলা মাথায় তেল দেয়। কিন্তু একটা মানুষ যখন নতুন অবস্থায় স্ট্রাগল করে, তখন তার অনেক কিছুই থাকে না। 

এটা হয় আসলে। একটা সময় এমন থাকেই। 
বুলবুল: আমি সব সময় লাইভে বলি, আমি অনেক স্ট্রাগল করেছি। পড়ার টাকা পাইনি। আমি অনেক কষ্ট করে রিহার্সাল করতাম। আমাদের যে পেমেন্টটা দিত, সেটা নিয়ে খুশি থাকতাম। আমাদের অনেক কলিগ, যারা এখন সুপারস্টার হয়েছে, তারা এখন বলে তুই আমাদের অনেক হেল্প করেছিস। আমি অনায়াসে হেল্প করতে পছন্দ করি। ভবিষ্যতে যদি আল্লাহ আমাকে আরও ক্ষমতা দেয়, তাহলে আরও কিছু করতে চাই। 

আমি সামাজিক কাজ করতে পছন্দ করি। আমি আরটিভিতে অটিস্টিক শিশুদের নিয়ে শো করেছি। সেই শোতে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, টুম্পা আপু আপনাকে কত টাকা দেব। আমি অটিস্টিক শিশুদের জন্য এমনি করে দেব—বলেছিলাম। আরও কিছু শো করতাম ওই টাকাটাও দিয়ে দিতাম। আমি আমার কোরিওগ্রাফির টাকা নিতাম না। গত বছর আমি একটা সংস্থার সঙ্গে জড়িত হয়েছি। ওদেরকে বলেছি, আমাকে যা দেবেন সেই টাকাটা পুরোটাই বিলিয়ে দেবেন। পরিচিত এক ছোট ভাইয়ের সংস্থা আছে। ও কুকুরদের খাওয়ায়। গরিব মানুষদের দেয়। তখন ওর সঙ্গে মাঝে মাঝে আমি শেয়ার করি। আরেকটা ছোট ভাই আছে, ওর সঙ্গেও আমি শেয়ার করি। আমি আসলে চেষ্টা করি কিছু করার। 

আপনি তাহলে কুকুর পছন্দ করেন। 
বুলবুল: আমি দেখতে পছন্দ করি। ছুঁতে পছন্দ করি না। আমি আসলে সবার জন্যই। আমি অনেক কষ্ট করে বুলবুল টুম্পা হয়েছি। আমার যদি ব্যবহার ভালো না থাকে, মানুষকে ভালো না বাসি, তাহলে মানুষ আমাকে কেন ভালোবাসবে। 

অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন অনেক, সেটা আমরা জানি। কী কী অ্যাওয়ার্ড? 
বুলবুল: আমি বেস্ট কোরিওগ্রাফার, বেস্ট মডেল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। আমি অনেক ম্যাগাজিনের কাভার হয়েছি। সাপ্তাহিক ২০০০, মিরর, নারিন ম্যাগাজিনের কাভার হয়েছি। যখন আমার ক্যারিয়ারের আঠারো বছর হলো, তখন ইন্ডিয়া থেকে ফোন করে সফল নারী হিসেবে আমাকে কাভার করা হলো। একটা ম্যাগাজিন আছে, যেটা ইউকে, ইউএসএ ও জাপানে বের হয়। ওই ম্যাগাজিনে আমি কাজ করেছি। সেখানে ইউকের মডেল, ইউএসএর মডেল, জাপানের মডেল এবং একমাত্র আমি বাংলাদেশের মডেল হিসেবে ছিলাম। ম্যাগাজিনটি একসঙ্গে তিনটি দেশে প্রকাশিত হয়। এই কাজটা হয়েছিল ২০০৭ বা ২০০৮ সালের দিকে। 

নয়টা অপ্রিয় সত্য কথা জানতে চাই আপনার কাছে। 
বুলবুল: অপ্রিয় সত্য হলো আমি দ্বিমুখী মানুষ পছন্দ করি না। মিথ্যা কথা বলা পছন্দ করি না, মানুষের সঙ্গে চালাকি পছন্দ করি না, মানুষকে ঠকাতে পছন্দ করি না, আমি রান্না করতে পছন্দ করি না। আমি ফুড লাভার না। আমার ক্ষুধা লাগলে যেকোনো খাবার হলেই হয়। অনেকে বলে, ও রান্না করতে জানে না, ওর বিয়ে হবে না। আমার ভাবিরা খুব ভালো উত্তর দেয়। বলে, আমরাও তো রান্না করতে জানি না, আমাদের কি বিয়ে হয়নি। 

সমাজে একটা কালো মেয়ে অনেক নেগেটিভ কথা শুনছে। আমিও অনেক শুনেছি। মিডিয়াতে কাজ করতে এসেও নেগেটিভ কথা শুনেছি। মানুষ বলত, মিডিয়াতে ভালো মানুষ কাজ করে না। আমার কাছে অনেক থ্রেটও আসত। তবে এটা আমি সব সময় বলতে চাই, নিজে ভালো তো জগৎ ভালো। 

কারা থ্রেট করত? 
বুলবুল: কারা করত জানি না। তারা বলত, আমাকে গুলি করে মেরে ফেলবে, এটা করব-সেটা করব ইত্যাদি। ভাইয়াকে ফোন দিয়ে বলত, ওকে মডেলিং করতে দিলেই মারব। একদিন আমার ফুপু ফোন ধরেছে, তাকেও এসব বলেছে। তারপর আমি ফোনটা ধরে বলেছি, ‘আমি দরজা খুলে রেখেছি। কে আসবে গুলি করতে আয়। আর আমার ফোন রেকর্ড হচ্ছে। কে ফোন দিছিস আমি বের করে ফেলব।’ এর পর থেকে আর এমন থ্রেট আসেনি। 

এটা কোন সালের ঘটনা? 
বুলবুল: এটা মেবি ২০০১/ ০২ সালের ঘটনা। 

গসিপ বিষয়ে আপনার মতামত কী? 
বুলবুল: আমি অন্য কাউকে নিয়ে গসিপ করি না। এটা আমার অপছন্দের। অন্য কাউকে নিয়ে গসিপ করে তাকে স্ট্যাব্লিশ করার কী আছে?

নিজের সম্পর্কে গসিপ শুনতে আপনার কেমন লাগে? 
বুলবুল: প্রথম অনেক খারাপ লাগত। এখন ভাবি, আমি একটা পজিশনে চলে গেছি। আমাকে নিয়ে তো মানুষ গসিপ করবেই। 

মানে গসিপ নিয়ে আপনার মাথা ব্যথা নেই। 
বুলবুল: না। একটা মানুষ সবার প্রিয় হয় না। আমাকে অপছন্দ করে—এমন কেউ থাকতে পারে। ওরা নিজেদের ঘুম হারাম করে আমাকে স্ট্যাব্লিশ করে, টুম্পাকে কেন এত বেশি ভালোবাসে, টুম্পার কেন এত ছেলেমেয়ে, এসব নিয়ে ভাবে। এটা তাদের সমস্যা। একজন নায়িকাকে সবাই চেনে। কিন্তু আমি একজন মডেল হয়েও সবাই আমাকে চেনে। এটা আমার ক্রেডিট। আমার অর্জন। 

আপনার মন খারাপ হয় কখন? 
বুলবুল: আমার মন খারাপ হয় আব্বু আম্মুকে মিস করলে। ফ্যামিলির খারাপ কিছু দেখলে এবং মিথ্যা কথা শুনলে। 

এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আপনার সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত কোনটা? 
বুলবুল: যদি কাজের ক্ষেত্রে বলেন, তাহলে বলব প্রতিটা কাজই আমাকে সুন্দর মুহূর্ত উপহার দিয়েছে। আমি শিশুদের সঙ্গে, আমার স্টুডেন্টদের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করি। গত ৫ বছর ধরে আমি স্টুডেন্টদের সঙ্গে জন্মদিন পালন করি। ওরা আমাকে সারপ্রাইজ দেয়। আমার ছবি বড় করে, আমার জন্য কেক আনে, রুম সাজায়, খাবার দাবার আনায়। ওদের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করি। 

এই ২৩ বছরের জার্নিকে আপনি কীভাবে দেখেন? 
বুলবুল: ২৩ বছরে অনেক সুখ-দুঃখ আছে। উত্থান-পতন বলব না। কারণ, পতন দেখিনি। পজেটিভলি কাজ করেছি। সবাই যখন পজেটিভ কাজ করবে, তখন আমাদের দেশটা সুন্দর হয়ে যাবে। সবকিছুর নেগেটিভ দিক আছে। আমরা যদি পজিটিভটা নিই, তাহলে আমার মনে হয় সবার জন্য ভালো। 

আপনাকে ধন্যবাদ। 
বুলবুল: আপনাকেও ধন্যবাদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণের ১৩০০ কোটির এক টাকাও দেননি হলিডে ইনের মালিক

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

গণ–সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলেন বিএনপি নেতা

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত