ফারুক মেহেদী
পোশাক রপ্তানির অর্ডার বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত মুনাফা হচ্ছে কি না? প্রণোদনার সুফল কতটুকু? সামনে করণীয় কী–এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ মালয়েশিয়া চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও ওয়েল গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ নুরুল ইসলাম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: আপনার ব্যবসা কেমন চলছে? রপ্তানিতে তো ভালো অর্ডার আছে শোনা যাচ্ছে।
সৈয়দ নুরুল ইসলাম: আমার ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা খুবই খারাপ। টিকে থাকার লড়াই করছি। অন্যরা কীভাবে ভালো আছে, জানি না। আমি ভালো নেই। আমাদের গ্রোথ হওয়ার কথা ১০ শতাংশ। রপ্তানি হওয়ার কথা ৪২ বিলিয়ন। আর হলো কত বিলিয়ন? সবাই ভালো করছি, ভালো করছি–এসব তথ্য আমার হিসাবে মেলে না। এখন অর্ডার আসতেছে। কিন্তু এ অর্ডার নিলে লোকসান হচ্ছে। কারণ, এক কনটেইনার পণ্য পাঠাতে আগে লাগত এক হাজার ডলার, এখন লাগছে চার হাজার ডলার। ক্রেতা তো সেই টাকা দিচ্ছে না। সুতার দাম ছিল ২ ডলার, এখন তা ৪ ডলার। বায়ার তো একটি প্যান্টের দাম ৪ ডলারেই রেখে দিয়েছে। তার মানে, আমাদের প্রচুর লোকসান হচ্ছে। আমি বলি, ২০২১ সালে বেশির ভাগ কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যাবে।
আজকের পত্রিকা: ভালো অর্ডারেও লোকসান হচ্ছে কেন?
সৈয়দ নুরুল ইসলাম: গেল সপ্তাহে আমি এক মিলিয়ন ডলারের একটি অর্ডার শেষ করেছি। এটার সব হিসাব-নিকাশ করে দেখেছি, আমাদের ৫৪ হাজার ডলার লোকসান হয়েছে। ব্যাংক টাকা পেয়েছে। শ্রমিক-ম্যানেজার বেতন পেয়েছে। আমার পকেট খালি। কারণ, আমি কাপড় কিনতে গিয়ে লোকসান দিয়েছি, ফ্রেইটে লোকসান করেছি। মোটকথা, ফেইল করেছি। আমার ফুডের ব্যবসা অর্ধেক শেষ। মানুষের চলাচল না থাকলে ফুডের ব্যবসা কীভাবে হবে? টেকওয়ে দিয়ে তো পুরো ব্যবসা চালানো যায় না। মানুষের বিয়েশাদি নেই, উৎসব নেই। চিকিৎসা খরচ নিয়ে সবাই উদ্বেগ-আতঙ্কে। অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি মধ্যবিত্ত শ্রেণি। তাদের আয় কমে গেছে।
আজকের পত্রিকা: সরকার তো আপনাদের প্রণোদনা দিয়েছে।
সৈয়দ নুরুল ইসলাম: সরকার আমাদের প্রণোদনা দিয়েছে। সেটা কেমন? সেটা হলো সরকার ৫ শতাংশ দেবে, আমরা ৪ শতাংশ সুদ দেব–এই। এটা তো ঋণ। এই ঋণ সরাসরি শ্রমিকের বেতনে খরচ হয়েছে। এখন আমাদের তা পরিশোধ করতে হচ্ছে। ধরেন, আমি ৯-১০ কোটি টাকা নিয়েছি। এটা তো মাপ নেই। আমাকে এখন তা প্রিন্সিপাল অ্যামাউন্টসহ ফেরত দিতে হচ্ছে। ব্যবসায় যদি লোকসান চলতে থাকে–এ টাকা কোথা থেকে ফেরত দেব, বুঝতে পারছি না।
আজকের পত্রিকা: কারখানা খোলা রেখে তাহলে লাভ হয়নি?
সৈয়দ নুরুল ইসলাম: আমি মনে করি, একুশ সাল পুরোটাই বন্ধ। এখন টিকে থাকার জন্য একমাত্র আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি। এর বেশি কিছু আসলে বলার নেই। কারখানা খোলা রেখে লাভ কী হয়েছে–আমি জানি না। আবার বন্ধ রাখলে ক্ষতি কী হতো, তা-ও জানি না। লোকসান যা হওয়ার ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। খোলা রেখে কার কত বিলিয়ন লাভ হয়েছে, জানি না। আমার লাভ হয়নি। দেখেন, সব ঠিক আছে, আমরা কনটেইনার পাচ্ছি না। ক্রেতারা গোঁ ধরে বসে আছে–আমাকে কনটেইনার চার্জ বেশি দেবে না। মালগুলো এখন বন্দরে পড়ে রয়েছে। মাল ক্লিয়ার না হলে আমি ডকুমেন্টস জমা দিতে পারছি না। ব্যবসায় যে বিদ্যা, তা এখন আমার মাথায় কাজ করছে না। আমি ব্যাংকারদের বলে দিয়েছি, মারেন-কাটেন আমি এখন টাকা-পয়সা দিতে পারব না। শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিচ্ছি। অফিসারদের দিতে পারব না।
আজকের পত্রিকা: শিল্প না টিকলে তো অর্থনীতি টিকবে না। তাহলে করণীয় কী?
সৈয়দ নুরুল ইসলাম: সবচেয়ে বড় কথা হলো, ২০২১ সাল হলো অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের। করোনা আমাদেরকে আইসিওতে নিয়ে গেছে। শুরুতে বুঝিনি। এখন বুঝছি, আঘাতটা কোথায় করেছে। এ আঘাত করেছে কোমরে। সরকার সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে। এখনো মনে করি, সরকার যদি সত্যিকার অর্থে সহযোগিতা না করে, তবে এখানে বিনিয়োগকারীরা টিকে থাকতে পারবে না। আমি তো রপ্তানিমুখী এবং স্থানীয় উভয় শিল্পেই আছি। শুধু আমার বিষয়টি নয়; সামগ্রিকভাবে সব শিল্পের জন্যই এখন চিন্তা করতে হবে।
পোশাক রপ্তানির অর্ডার বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত মুনাফা হচ্ছে কি না? প্রণোদনার সুফল কতটুকু? সামনে করণীয় কী–এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ মালয়েশিয়া চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও ওয়েল গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ নুরুল ইসলাম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: আপনার ব্যবসা কেমন চলছে? রপ্তানিতে তো ভালো অর্ডার আছে শোনা যাচ্ছে।
সৈয়দ নুরুল ইসলাম: আমার ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা খুবই খারাপ। টিকে থাকার লড়াই করছি। অন্যরা কীভাবে ভালো আছে, জানি না। আমি ভালো নেই। আমাদের গ্রোথ হওয়ার কথা ১০ শতাংশ। রপ্তানি হওয়ার কথা ৪২ বিলিয়ন। আর হলো কত বিলিয়ন? সবাই ভালো করছি, ভালো করছি–এসব তথ্য আমার হিসাবে মেলে না। এখন অর্ডার আসতেছে। কিন্তু এ অর্ডার নিলে লোকসান হচ্ছে। কারণ, এক কনটেইনার পণ্য পাঠাতে আগে লাগত এক হাজার ডলার, এখন লাগছে চার হাজার ডলার। ক্রেতা তো সেই টাকা দিচ্ছে না। সুতার দাম ছিল ২ ডলার, এখন তা ৪ ডলার। বায়ার তো একটি প্যান্টের দাম ৪ ডলারেই রেখে দিয়েছে। তার মানে, আমাদের প্রচুর লোকসান হচ্ছে। আমি বলি, ২০২১ সালে বেশির ভাগ কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যাবে।
আজকের পত্রিকা: ভালো অর্ডারেও লোকসান হচ্ছে কেন?
সৈয়দ নুরুল ইসলাম: গেল সপ্তাহে আমি এক মিলিয়ন ডলারের একটি অর্ডার শেষ করেছি। এটার সব হিসাব-নিকাশ করে দেখেছি, আমাদের ৫৪ হাজার ডলার লোকসান হয়েছে। ব্যাংক টাকা পেয়েছে। শ্রমিক-ম্যানেজার বেতন পেয়েছে। আমার পকেট খালি। কারণ, আমি কাপড় কিনতে গিয়ে লোকসান দিয়েছি, ফ্রেইটে লোকসান করেছি। মোটকথা, ফেইল করেছি। আমার ফুডের ব্যবসা অর্ধেক শেষ। মানুষের চলাচল না থাকলে ফুডের ব্যবসা কীভাবে হবে? টেকওয়ে দিয়ে তো পুরো ব্যবসা চালানো যায় না। মানুষের বিয়েশাদি নেই, উৎসব নেই। চিকিৎসা খরচ নিয়ে সবাই উদ্বেগ-আতঙ্কে। অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি মধ্যবিত্ত শ্রেণি। তাদের আয় কমে গেছে।
আজকের পত্রিকা: সরকার তো আপনাদের প্রণোদনা দিয়েছে।
সৈয়দ নুরুল ইসলাম: সরকার আমাদের প্রণোদনা দিয়েছে। সেটা কেমন? সেটা হলো সরকার ৫ শতাংশ দেবে, আমরা ৪ শতাংশ সুদ দেব–এই। এটা তো ঋণ। এই ঋণ সরাসরি শ্রমিকের বেতনে খরচ হয়েছে। এখন আমাদের তা পরিশোধ করতে হচ্ছে। ধরেন, আমি ৯-১০ কোটি টাকা নিয়েছি। এটা তো মাপ নেই। আমাকে এখন তা প্রিন্সিপাল অ্যামাউন্টসহ ফেরত দিতে হচ্ছে। ব্যবসায় যদি লোকসান চলতে থাকে–এ টাকা কোথা থেকে ফেরত দেব, বুঝতে পারছি না।
আজকের পত্রিকা: কারখানা খোলা রেখে তাহলে লাভ হয়নি?
সৈয়দ নুরুল ইসলাম: আমি মনে করি, একুশ সাল পুরোটাই বন্ধ। এখন টিকে থাকার জন্য একমাত্র আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি। এর বেশি কিছু আসলে বলার নেই। কারখানা খোলা রেখে লাভ কী হয়েছে–আমি জানি না। আবার বন্ধ রাখলে ক্ষতি কী হতো, তা-ও জানি না। লোকসান যা হওয়ার ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। খোলা রেখে কার কত বিলিয়ন লাভ হয়েছে, জানি না। আমার লাভ হয়নি। দেখেন, সব ঠিক আছে, আমরা কনটেইনার পাচ্ছি না। ক্রেতারা গোঁ ধরে বসে আছে–আমাকে কনটেইনার চার্জ বেশি দেবে না। মালগুলো এখন বন্দরে পড়ে রয়েছে। মাল ক্লিয়ার না হলে আমি ডকুমেন্টস জমা দিতে পারছি না। ব্যবসায় যে বিদ্যা, তা এখন আমার মাথায় কাজ করছে না। আমি ব্যাংকারদের বলে দিয়েছি, মারেন-কাটেন আমি এখন টাকা-পয়সা দিতে পারব না। শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিচ্ছি। অফিসারদের দিতে পারব না।
আজকের পত্রিকা: শিল্প না টিকলে তো অর্থনীতি টিকবে না। তাহলে করণীয় কী?
সৈয়দ নুরুল ইসলাম: সবচেয়ে বড় কথা হলো, ২০২১ সাল হলো অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের। করোনা আমাদেরকে আইসিওতে নিয়ে গেছে। শুরুতে বুঝিনি। এখন বুঝছি, আঘাতটা কোথায় করেছে। এ আঘাত করেছে কোমরে। সরকার সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে। এখনো মনে করি, সরকার যদি সত্যিকার অর্থে সহযোগিতা না করে, তবে এখানে বিনিয়োগকারীরা টিকে থাকতে পারবে না। আমি তো রপ্তানিমুখী এবং স্থানীয় উভয় শিল্পেই আছি। শুধু আমার বিষয়টি নয়; সামগ্রিকভাবে সব শিল্পের জন্যই এখন চিন্তা করতে হবে।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ। বর্তমানে তিনি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো এবং বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়ন বিষয়ে বেসরকারি উদ্যোগে গঠিত নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক।
৮ দিন আগে২০২৪ সালে সংঘটিত ‘মনসুন রেভল্যুশন’-এর পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে নেতৃত্বশূন্যতা ও প্রশাসনিক অচলাবস্থা। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ আহমেদ মুশফিক মোবারক তুলে ধরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারণ, আইনশৃঙ্খলা সংকট, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও আন্তর্জাতিক কর্মসংস্থানের উদ্যোগসহ নানা...
২২ দিন আগেবদরুদ্দীন উমর লেখক, গবেষক ও বামপন্থী রাজনীতিক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিপিই ডিগ্রি পান। দেশে ফিরে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে
২৩ দিন আগেএক বছরেরও কম সময়ে অনলাইন ফুড ডেলিভারি সার্ভিসে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে ফুডিবিডি ডট কম। প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজারের বেশি অর্ডার ডেলিভারি করছে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের সঙ্গে কাজ করছে সাত হাজারের বেশি রেস্তোরাঁ। ফুডির উদ্দেশ্য, লক্ষ্য, পরিকল্পনা, অনলাইন ফুড ডেলিভারি সার্ভিস খাতের বর্তমান অবস্থাসহ নানা বিষয়ে আজক
০৬ মে ২০২৫