Ajker Patrika

মার্কিন কিশোর-কিশোরীদের নতুন নেশা ক্যাফেইন পাউচ, উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কর্মশক্তি বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ক্যাফেইন পাউচ ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। এই প্রবণতা দেশটির সীমানা পেরিয়ে যেকোনো মুহূর্তে যুক্তরাজ্যে পৌঁছে যেতে পারে, এমনই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

বিবিসি জানিয়েছে, টি-ব্যাগের মতো দেখতে ছোট্ট এসব পাউচ ঠোঁট ও মাড়ির মাঝখানে রেখে ব্যবহার করা হয়। এতে থাকা ক্যাফেইন সরাসরি রক্তে মিশে দ্রুত শক্তি জোগায়।

এই পাউচ ব্যবহারের পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালাচ্ছে ইনফ্লুয়েন্সাররা। সেখানে তারা জিমে যাওয়া কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য বা পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের ক্যাফেইন পাউচ ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. রব ভ্যান ড্যাম বলছেন, তরুণদের আকৃষ্ট করতে টিকটক শপে নানা ব্র্যান্ড ও স্বাদের ক্যাফেইন পাউচ বিক্রি করা হচ্ছে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, একটি পাউচেই প্রায় দুই কাপ কফির সমান ক্যাফেইন থাকে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করার কারণে দেহে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যুক্তরাজ্যে এরই মধ্যে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে নিকোটিন পাউচ বা স্নাস ব্যবহারের প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

ক্যাফেইন পাউচের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো—কারও মুখে এটি আছে কি না, তা বোঝা মুশকিল। ফলে মা-বাবা বা শিক্ষকদের চোখ এড়িয়ে সহজেই ব্যবহার করা যায়।

এই পণ্য ব্যবহারকারীদের কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গর্ব করে জানান, একসঙ্গে দুটি পাউচ ব্যবহারের পর ‘দুর্দান্ত উত্তেজনা’ আসে তাদের মধ্যে।

ক্যাফেইন দ্রুত শোষিত হওয়ায় এর প্রভাব কয়েক মিনিটের মধ্যেই শুরু হতে পারে এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে। অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ভ্যান ড্যাম বিবিসিকে বলেন, তরুণদের ক্যাফেইনের সহনশীলতা সাধারণত কম থাকে। অতিমাত্রায় গ্রহণ করলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যেতে হতে পারে তাদের।

অতিরিক্ত ক্যাফেইনে কী হয়

ক্যাফেইন হলো একধরনের উত্তেজক, যা মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলে। এটি একধরনের সতেজ অনুভূতি দেয়। একই সঙ্গে ঘুমঘুম ভাব দূর করে।

ইংল্যান্ডের লাফবারা ইউনিভার্সিটির স্পোর্টস, এক্সারসাইজ অ্যান্ড হেলথ সায়েন্সেস স্কুলের লুইস জেমস বলেন, ক্যাফেইন ব্যায়ামের ধকল কিছুটা কম অনুভূত হতে সাহায্য করে, এমন প্রমাণও রয়েছে। এই কারণে খেলোয়াড়দের মধ্যে ক্যাফেইন গ্রহণের চল রয়েছে।

ব্যায়ামের সময় শরীর অ্যাডেনোসিন নামে একটি রাসায়নিক তৈরি করে, যা ক্লান্তি আনে। ক্যাফেইন স্নায়ুতন্ত্রের অ্যাডেনোসিন রিসেপ্টরগুলোকে অবরুদ্ধ করে। ফলে মাথাব্যথা বা ক্লান্তির অনুভূতি তুলনামূলকভাবে কম অনুভব হয়।

তবে এটি শরীরের অন্যান্য অংশে প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে হৃদ্‌যন্ত্রে; যা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করলে হৃৎস্পন্দন দ্রুত হওয়া, অনিয়মিত ছন্দে স্পন্দন ও খিঁচুনি দেখা দিতে পারে। বিরল ঘটনা হলেও অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণে মৃত্যুও হতে পারে।

কিছু মানুষ আছে, যারা অন্যদের তুলনায় ক্যাফেইনের প্রতি বেশি সংবেদনশীল। অল্প গ্রহণ করলেও তাদের বমি ভাব, উদ্বেগ, খিটখিটে মেজাজ ও মাথাব্যথা হতে পারে।

সাধারণত সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক ৪০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ক্যাফেইন নিরাপদ; যা প্রায় চার কাপ ইনস্ট্যান্ট কফির সমান।

চায়ে ক্যাফেইনের পরিমাণ একটু কম থাকে, তাই পাঁচ কাপ পর্যন্ত নিরাপদ। গর্ভবতী নারীদের জন্য দৈনিক গ্রহণের সীমা অর্ধেক করে ২০০ মিলিগ্রাম বা তার কম করার পরামর্শ দেওয়া হয়। শিশু-কিশোরেরা ক্যাফেইনের ঝুঁকি ও অতিমাত্রায় গ্রহণে বেশি সংবেদনশীল।

এ কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ম অনুযায়ী, যেসব এনার্জি ড্রিংকে ১৫০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন থাকে, সেগুলোর বোতলে এই সতর্কবার্তা লেখা থাকে—‘উচ্চমাত্রায় ক্যাফেইন রয়েছে। শিশু, গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী নারীদের জন্য সুপারিশকৃত নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পুলিশের হাতে আটক পুনম (মাঝে মুখ ঢাকা)। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশের হাতে আটক পুনম (মাঝে মুখ ঢাকা)। ছবি: সংগৃহীত

হরিয়ানার পানিপথের একটি গ্রামে বিয়ের সানাই বাজছিল। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সবে শেষ হতে শুরু করেছে, তখনই বাড়িতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল। বিয়েবাড়িতে শোরগোল পড়ে গেল, ছয় বছর বয়সী এক শিশু নিখোঁজ। মুহূর্তেই উৎসবের পরিবেশ বদলে যায় বিষাদে। দিন শেষে পুলিশ এক নৃশংস হত্যারহস্য উন্মোচন করে, যেখানে মূল অভিযুক্ত ব্যক্তির কার্যকলাপ জার্মান রূপকথা স্নো হোয়াইটের সেই দুষ্ট রানির কথা মনে করিয়ে দেয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি স্থানীয় পুলিশের বরাতে জানিয়েছে, চার শিশুকে হত্যার দায়ে এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যার পেছনের কারণটি ভয়ংকর। অভিযুক্ত নারী চাননি কেউ তাঁর চেয়ে ‘বেশি সুন্দর’ হোক।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই নারী পুনম তাঁর ভাতিজি বিধিসহ (৬) পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে আসেন। সেখানে ভাতিজিকে দেখে পুনমের মনে হয়, সে তাঁর চেয়েও বেশি সুন্দরী। এরপর পুনম তাঁকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেন।

বিধি তার দাদু পাল সিং, দাদি ওমবতী, বাবা সন্দীপ, মা ও ১০ মাসের ছোট ভাইকে নিয়ে পানিপথের ইজরানা এলাকার নৌলথা গ্রামে এক আত্মীয়ের বিয়েতে এসেছিল। গত সোমবার বেলা ১টা ৩০ মিনিটের দিকে বরযাত্রী নৌলথায় পৌঁছালে তার পরিবারও সেখানে যায়। কিছুক্ষণ পরে সন্দীপের ফোনে খবর আসে, বিধি হারিয়ে গেছে। পরিবার তখনই খোঁজাখুঁজি শুরু করে।

প্রায় এক ঘণ্টা পর দাদি ওমবতী বাড়ির প্রথম তলার একটি স্টোররুমে যান। দরজাটি বাইরে থেকে আটকানো ছিল। দরজা খুলে তিনি দেখেন, পানিভর্তি একটি চৌবাচ্চায় শিশুটির মাথা ডুবানো। বিধিকে দ্রুত স্থানীয় এনসি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সন্দীপ থানায় গিয়ে হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, শিশু বিধির খুনের পেছনে ছিলেন তার ফুফু পুনম। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর উঠে আসে ভয়ংকর তথ্য। তিনি আগে আরও তিনটি শিশুকে একইভাবে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন।

পুলিশ বলছে, পুনমের হত্যার ধরন একই—প্রতিবার পানিভর্তি চৌবাচ্চায় শিশুকে ডুবিয়ে মারা। কারণ, সুন্দর শিশুদের প্রতি তাঁর তীব্র ঈর্ষা, বিশেষ করে, ছোট ও সাজগোজ করা মেয়েদের প্রতি।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, পুনম ২০২৩ সালে প্রথম তাঁর ননদের মেয়েকে হত্যা করেন। ওই ঘটনা দেখে ফেলায় একই বছর তিনি নিজের ছেলেকেও হত্যা করেন। চলতি বছরের আগস্টে তিনি সিওয়া গ্রামে আরও একটি মেয়েকে ‘নিজের চেয়ে সুন্দর’ মনে হওয়ায় হত্যা করেন।

বিধির হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুনম সত্য স্বীকার করার আগপর্যন্ত এই শিশুদের মৃত্যুগুলো দুর্ঘটনাজনিত বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। ছবি: সংগৃহীত
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। ছবি: সংগৃহীত

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এক বক্তব্যে বলেন, ইউরোপ যদি যুদ্ধ করতে চায় বা যুদ্ধ শুরু করে, তবে রাশিয়া ‘এই মুহূর্তেই প্রস্তুত।’ তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে যুক্তরাজ্যের সরকার।

ডাউনিং স্ট্রিটের ভাষ্য অনুযায়ী—পুতিনের ওই বক্তব্য শান্তি নিয়ে অনাগ্রহী এক প্রেসিডেন্টের মুখে আরও একটি ক্রেমলিন–ঘটিত আজগুবি কথা বা ‘ক্রেমলিন-ক্ল্যাপট্রেপ’ ছাড়া আর কিছু নয়।

অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধান অনুযায়ী, ‘ক্ল্যাপট্রেপ’ মূলত নাটকে দর্শকের করতালি পাওয়ার জন্য ব্যবহৃত একধরনের ফন্দি। আধুনিক অর্থে এর মানে—সম্পূর্ণ বাজে কথা বা অর্থহীন মন্তব্য।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের এক মুখপাত্রকে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন—ব্রিটেন কি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। এই প্রশ্নের জবাবে ওই মুখপাত্র জানান, ‘সরকারের প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ সবার সামনে পরিষ্কার এবং ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনী দেশ রক্ষায় সর্বদা প্রস্তুত।’

তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনকে সহায়তায় সম্পূর্ণ একযোগে কাজ করছে। পাশাপাশি ন্যাটো জোট যে কোনো হুমকির মোকাবিলায় ঐক্য ও শক্তি নিয়ে প্রস্তুত।

এদিকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে কোনো সমঝোতায় আসতে চান না। মস্কোতে মার্কিন দূতদের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টার আলোচনায় কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় স্টারমার জানান, যুক্তরাজ্য সব ধরনের উপায়ে রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে থাকবে।

এর আগে পুতিন অভিযোগ করেছিলেন, ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করছে। তিনি শান্তি পরিকল্পনায় ইউরোপ ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলোও প্রত্যাখ্যান করেন।

পার্লামেন্টে এক প্রশ্নের জবাবে স্টারমার বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, পুতিনই আগ্রাসনের জনক এবং আলোচনায় নারাজ।’ তিনি যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি বিষয়ে সরাসরি কিছু না বললেও ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, ন্যাটো যেকোনো হুমকির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে।

এদিকে মার্কিন প্রেরিত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে পুতিনের দীর্ঘ আলোচনা থেকেও শান্তি প্রক্রিয়ায় কোনো বাস্তব অগ্রগতি হয়নি। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ভেট কুপার পুতিনকে ‘বাগাড়ম্বর বন্ধ করে রক্তপাত থামানোর’ আহ্বান জানান এবং ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো মেরামতে অতিরিক্ত ১০ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তার ঘোষণা দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোমালি অভিবাসীদের ‘আবর্জনা’ বললেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এপির সৌজন্যে
হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এপির সৌজন্যে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমালি অভিবাসীদের ‘আবর্জনা’ বলে অভিহিত করেছেন এবং তাঁদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। জানা গেছে, মিনেসোটা রাজ্যে নথিবিহীন সোমালিদের বিরুদ্ধে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা নিতে চলেছে। এমন খবর প্রকাশের মধ্যেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে গতকাল মঙ্গলবার এই মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভার বৈঠকে সোমালি বংশোদ্ভূত ও মার্কিন নাগরিক কংগ্রেসের প্রতিনিধি ইলহান ওমরকেও ট্রাম্প আক্রমণ করেন। বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের দেশে তাঁদের কোনো অবদান নেই। আমি তাঁদের আমাদের দেশে চাই না।’ এ সময় তিনি ইলহান ওমরকেও ‘আবর্জনা’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের দেশে আবর্জনা নিতে থাকি, তবে আমরা ভুল পথে যাব।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সোমালিয়া সম্পর্কে বলেন, ‘সোমালিয়া একটি বাজে দেশ। তাদেরকে ভালো বলার কোনো কারণ আমি দেখি না।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘এরা এমন মানুষ, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছাড়া আর কিছুই নেই। এই ধরনের মানুষ আমরা চাই না। তারা যেখান থেকে এসেছে, সেখানে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’

নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, মিনিয়াপোলিস-সেন্ট পল মেট্রো এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সোমালি কমিউনিটির বাস। মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ চলতি সপ্তাহে ওই এলাকায় অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্তের প্রক্রিয়া জোরদার করার পরিকল্পনা করেছে। মূলত যাঁদের বিরুদ্ধে নির্বাসনের চূড়ান্ত আদেশ রয়েছে, তাঁদের লক্ষ্য করে এই অভিযান চালানো হবে। এই অভিযানের জন্য দেশজুড়ে প্রায় ১০০ জন আইসিই এজেন্ট ও ফেডারেল অফিসারদের নিয়ে একটি ‘স্ট্রাইক টিম’ ব্যবহার করা হবে।

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ এমন সময়ে এল, যখন সোমালি বাসিন্দাদের জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েক বছরের পুরোনো বেশ কিছু জালিয়াতির মামলা সামনে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব মামলায় অভিযুক্তরা খাবার, চিকিৎসা, আবাসন ও অটিজম পরিষেবার জন্য জাল বিল করে রাষ্ট্র থেকে অর্থ নিয়েছেন।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট সোমবার ঘোষণা করেন, তাঁর সংস্থা তদন্ত করে দেখবে, মিনেসোটার করদাতাদের অর্থ আল-শাবাবের (সন্ত্রাসী সংগঠন) কাছে পাচার হয়েছে কি না।

তবে মিনিয়াপোলিসের মেয়র জ্যাকব ফ্রে ও অন্যান্য কর্মকর্তা মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিবাসন অভিযানের প্রতিবাদ করেন। মেয়র ফ্রে সোমালি সম্প্রদায়ের পাশে থাকার ঘোষণা দেন। তিনি সোমালি ভাষায় এবং পরে ইংরেজিতে বলেন, ‘আমাদের সোমালি কমিউনিটি, আমরা তোমাদের ভালোবাসি এবং আমরা তোমাদের পাশে আছি। যেকোনো পরিস্থিতিতে এই অঙ্গীকার অটল থাকবে।’

তিনি সতর্ক করে বলেন, শুধু সোমালিদের লক্ষ্য করে এই অভিযান চালানো হলে ‘আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া লঙ্ঘিত হবে, ভুল হবে। স্পষ্ট করে বললে, কিছু আমেরিকান নাগরিককে আটক করা হবে শুধু এই কারণে যে তাঁরা দেখতে সোমালির মতো।’

উল্লেখ্য, মিনিয়াপোলিসে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সোমালি জনগোষ্ঠী (প্রায় ৮০ হাজার) বাস করে, যাদের বেশির ভাগ মার্কিন নাগরিক বা বৈধ বাসিন্দা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জব্দ করা রুশ সম্পদ ইউক্রেনকে দেওয়ার উদ্যোগ ইইউর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৬
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য জব্দ করা রুশ সম্পদের নগদ ভারসাম্য ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য বেলজিয়াম শুরু থেকেই এই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে আসছে। এই ধরনের আপত্তির বিষয়ে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন জানিয়েছেন, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উদ্বেগ বিবেচনায় নিয়ে প্রায় সব সংশোধনই করা হয়েছে।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে, ইউক্রেনের আগামী দুই বছরের আর্থিক চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ ৯০ বিলিয়ন ইউরো, ইইউ বহন করবে বলে ঘোষণা দেন ভন ডার লিয়েন। বাকি অংশ জোগান দেবে আন্তর্জাতিক অংশীদারেরা।

তাঁর ব্যাখ্যা অনুযায়ী—এই অর্থ ‘ক্ষতিপূরণ ঋণ’ হিসেবে দেওয়া হবে। এই ঋণ ইউক্রেনকে পরিশোধ করতে হবে কেবল তখনই, যখন রাশিয়া যুদ্ধের জন্য ক্ষতিপূরণ পরিশোধ শুরু করবে।

লিয়েন বলেন, ‘ইউক্রেনকে নিজেদের রক্ষার সক্ষমতা দিতে হবে এবং শান্তি আলোচনায় শক্ত অবস্থান তৈরি করে দিতে হবে। ক্রেমলিন শুধু চাপের ভাষাই বোঝে, তাই আমরা চাপ আরও বাড়াতে চাই।’

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়নের পুঁজিবাজারে ঋণ সংগ্রহ এবং রুশ সম্পদের নগদ ভারসাম্য ব্যবহার করে। ইইউ-এর প্রস্তাব অনুযায়ী, ইউরোপের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমে থাকা রুশ ‘ইমোবিলাইজড অ্যাসেট’ থেকে নগদ অংশ সরাসরি ইউক্রেনের জন্য বরাদ্দ করা হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাধ্য করা হবে এই অর্থ ‘ক্ষতিপূরণ ঋণ’ তহবিলে স্থানান্তর করতে। তবে কোন অর্থ কোথায় ব্যয় হবে, সেই বিষয়ে থাকবে কঠোর নজরদারি।

ভন ডার লিয়েন জানান, সহায়তার বড় অংশ ব্যয় হবে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন ও কেনার কাজে—যা মূলত ইউরোপ ও ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইইএ) থেকেই সংগ্রহ করা হবে। প্রয়োজন হলে বাইরে থেকেও সামান্য ক্রয় করা হবে।

প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে বেলজিয়ামের অবস্থান এখনো কঠোর। কারণ রুশ সম্পদের একটি বড় অংশ সেই দেশেই সংরক্ষিত। তবে কমিশন প্রধানের দাবি—বেলজিয়ামের আইনি আশঙ্কা দূর করতে শক্তিশালী সুরক্ষা এবং দায় ভাগাভাগির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব ন্যায়সংগতভাবে ভাগ করব, কোনো সদস্য রাষ্ট্র ঝুঁকির মুখে পড়বে না।’

এদিকে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করার খবরকে অস্বীকার করেছে রাশিয়া এবং বলেছে—এই দাবি ‘পশ্চিমা প্রচারণা’ ছাড়া কিছুই নয়। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে কূটনৈতিক চাপ এবং অর্থনৈতিক প্রতিরোধের এই নতুন পর্যায় তাই আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত