Ajker Patrika

পয়সা বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পয়সাই তুলে দেওয়ার প্রস্তাব মাস্কের

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক। ছবি: সিএনএন

ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি এবার নতুন একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। যে কোনো মূল্য তারা যুক্তরাষ্ট্রের পয়সা (পেনি) খরচ কমাতে চান। এ জন্য একটি অভিনব পদ্ধতিও খুঁজে পাওয়া গেছে।

ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি একটি পোস্টে জানিয়েছে, প্রতিটি পেনি তৈরি করতে ব্যয় হয় ৩ সেন্টেরও বেশি। এর মাধ্যমে ২০২৩ অর্থবছরে মার্কিন করদাতাদের ১৭৯ মিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ হয়েছে।

পোস্টে বলা হয়েছে—২০২৩ অর্থবছরে সরকারি ‘ইউএস মিন্ট’ ব্যুরো প্রায় ৪৫০ কোটি পয়সা উৎপাদন করেছে। সেই বছর এই ব্যুরো ৪১০ কোটি পয়সা বাজারে পাঠিয়েছে। ২০২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে তারা উল্লেখ করেছে, বর্তমানে প্রতিটি পয়সা তৈরি ও বিতরণ করতে ৩.৭ সেন্ট খরচ হয়। আগের তুলনায় যা ২০ শতাংশ বেশি। ধাতুর ক্রমবর্ধমান খরচ, বিশেষ করে জিংক ও কপারের দামই এই ব্যয়ের পেছনের প্রধান কারণ।

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে পয়সা বাতিল করার আলোচনা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। দেশটিতে পয়সা সাধারণত খুব কমই লেনদেনের কাজে ব্যবহৃত হয় এবং অনেক সময় ঘরে জমিয়ে রাখা হয়।

এ ছাড়া কোভিড-১৯ মহামারির পর থেকে আরও বেশি সংখ্যক গ্রাহক অনলাইনে কেনাকাটা এবং ডিজিটাল লেনদেনে ঝুঁকেছেন। ফলে পয়সা ও কাগজের মুদ্রার ব্যবহার কমে গেছে।

সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিন-এর একটি প্রতিবেদনেও পয়সা বিলুপ্ত করার পক্ষে যুক্তি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘পয়সা বিলুপ্তির প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন ধরে স্পষ্ট। কিন্তু এটি বাস্তবায়ন করতে না পারা আমাদের প্রশাসনিক দুর্বলতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, পয়সা বিলুপ্ত করা হলে ব্যবসায়িক কার্যক্রমেও সময় বাঁচবে। ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব কনভেনিয়েন্স স্টোরস-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেফ লেনার্ড জানিয়েছেন, প্রতিদিন তাদের প্রায় ৫২ মিলিয়ন ক্যাশ লেনদেন হয়।

তিনি বলেন, প্রতিটি গ্রাহকের সময় ২ সেকেন্ড বাঁচালে দিনে ১০৪ মিলিয়ন সেকেন্ড বা প্রায় ১ হাজার ২০৩ দিন সময় সাশ্রয় হবে।’

তবে পয়সার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আরও অনেক আগেই যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। জানা যায়, ২০০১ সালে প্রচারিত জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ‘দ্য ওয়েস্ট উইং’-এর একটি পর্বে স্যাম সিবর্ন নামে একটি কাল্পনিক চরিত্র পয়সার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।

মাস্ক এখন নতুন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সপ্তাহে একটি নির্বাহী আদেশে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি প্রতিষ্ঠা করেছেন। মাস্কের সঙ্গে এই দপ্তরের সহকারী প্রধান হিসেবে ভিভেক রামাস্বামীকে নিযুক্ত করা হলেও ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ভিভেককে এই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পয়সা তৈরি করতে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়া খরচ এবং পরিবর্তিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, হয়তো পয়সা শিগগিরই বিদায় নিতে পারে। তবে এর জন্য প্রশাসনিক ও সামাজিক সমঝোতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত