Ajker Patrika

ট্রাম্পের শুরু করা বাণিজ্যযুদ্ধের ‘শেষ দেখে ছাড়বে’ চীন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৫, ২১: ১১
ছবি: বিবিসি
ছবি: বিবিসি

চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে চীনও। দেশটি এখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা মুরগি, গরুর মাংস, শূকরের মাংস ও সয়াবিনের ওপর ১০-১৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে। বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঘোষণা দিয়েছেন—চীন যে কোনো বাণিজ্য যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে।

আজ মঙ্গলবার চীনা পণ্যের ওপর নতুন করে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ কার্যকর করে যুক্তরাষ্ট্র। এর পরপরই পাল্টা ব্যবস্থা নেয় চীনও। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান এই বিষয়ে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে পরামর্শ দিচ্ছি, ভয় দেখানো বন্ধ করে সহযোগিতার পথে ফিরে আসতে।’

বিবিসি জানিয়েছে, চীনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা মুরগি, গরুর মাংস, শূকরের মাংস ও সয়াবিনের ওপর ১০-১৫ শুল্ক আগামী ১০ মার্চ থেকেই কার্যকর হবে চীনে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বাজারের জন্য নেতিবাচক হবে এবং ফসলের দামও কমতে পারে। চীন সহজেই অন্য দেশ থেকে এসব কৃষিপণ্য সংগ্রহ করতে পারবে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটি সমস্যার কারণ হতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদিত ৩০ শতাংশ সয়াবিন চীনেই রপ্তানি করা হয়।

চীন অবশ্য স্পষ্ট করেছে যে, তারা যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন বলেন, ‘চীনের সঙ্গে আচরণের সঠিক উপায় চাপ প্রয়োগ, ভয় দেখানো বা হুমকি দেওয়া নয়।’

তবে চীন এখন পর্যন্ত মার্কিন পণ্যে ২০১৮ সালের মতো কড়া শুল্ক আরোপ করেনি। সেবার ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চীন মার্কিন পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছিল দেশটি। কিন্তু এবার তা ২০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। চীন উত্তেজনা না বাড়িয়ে প্রশমিত করতে চায় বলেও মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের ফোনালাপের পরিকল্পনা থাকলেও তা শেষ পর্যন্ত হয়নি। চীনের অর্থনীতি ইতিমধ্যে দুর্বলতার মধ্যে রয়েছে। দেশটির বাড়ির দাম কমছে, যুবকদের মধ্যে বেকারত্ব বাড়ছে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারও কম। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বড় বাণিজ্য যুদ্ধ এসব সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এই মুহূর্তে বেইজিং চায় জনগণের ব্যয় বৃদ্ধি পাক, যাতে অর্থনীতিতে গতি আসে। কিন্তু নতুন শুল্ক চাপ দেশটির অর্থনৈতিক শঙ্কা আরও বাড়াবে।

তবে চীন একে কৌশলগত সুযোগ হিসেবেও দেখছে। ট্রাম্প প্রশাসন যখন তার মিত্রদের সঙ্গেও শুল্ক নিয়ে টানাপোড়েন তৈরি করছে, তখন চীন বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছে। চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে একটি ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে একটি ‘বদমাশ’ দেশ হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। এতে বোঝা যাচ্ছে, বেইজিং বাণিজ্য যুদ্ধে নতুন মিত্র খুঁজছে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্ব মঞ্চে বিচ্ছিন্ন করতে চাইছে।

বিশ্বব্যাপী যখন ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তখন চীন নিজেকে বিকল্প শক্তি হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। এই বাণিজ্য যুদ্ধ কোথায় গিয়ে শেষ হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে একদিকে বাণিজ্য যুদ্ধে লিপ্ত থাকা এবং অন্যদিকে আলোচনার দরজা খোলা রাখার চীনের কৌশল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

সোনার দাম ২ লাখের নিচে নামল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘লড়াই’ ভালো নয়, চীনের সঙ্গে ‘ভালো চুক্তিতে’ পৌঁছানোর আশা ট্রাম্পের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, চীন–যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পরস্পরের সঙ্গে লড়াই করা মোটেও ভালো বিষয় নয়। তাই তিনি দেশটির সঙ্গে চুক্তি করতে চান, যা দুই দেশের জন্যই ভালো হবে। দক্ষিণ কোরিয়া সফররত ট্রাম্প আজ বুধবার এই কথা বলেছেন। খবর বিবিসির।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং আগামীকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকবেন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে আমরা একটা চুক্তিতে পৌঁছাতে যাচ্ছি।’ তিনি আরও যোগ করেন, এটি হবে ‘দুই পক্ষের জন্যই ভালো চুক্তি।’

ট্রাম্পের ভাষায়, এটি এমন এক ফলাফল হবে যা ‘লড়াই করার চেয়ে ভালো’ এবং ‘বিভিন্ন সমস্যায় জড়ানোর চেয়ে অনেক যুক্তিসংগত।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্ব আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আর আমার বিশ্বাস, আমরা এমন কিছু পেতে যাচ্ছি যা সবার জন্যই রোমাঞ্চকর হবে।’

এদিকে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের আসন্ন বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে এটাই প্রথম আনুষ্ঠানিক নিশ্চয়তা। এর আগে, বৈঠকটি নিয়ে কথা বলেছিল শুধু হোয়াইট হাউস।

বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিণ কোরিয়ার শহর বুসানে। সি এপেক সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছানোর পরপরই এই বৈঠক হবে। ২০২৫ সালে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর এবং বিশ্বের সব দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর এটাই দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ।

অপরদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল মিউজিয়ামে ট্রাম্পকে দেশটির সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক ‘গ্র্যান্ড অর্ডার অব মুগুংহোয়া’ প্রদান করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্ট এই পদক প্রথমবারের মতো পেলেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের ভাষ্যে, ‘কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবেই এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।’

পুরস্কারটি হাতে নিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘এটা সত্যিই সুন্দর। আমি এখনই এটা পরতে পারি।’ তাঁর এই মন্তব্যে উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে হাসির রোল ওঠে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

সোনার দাম ২ লাখের নিচে নামল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্রাজিলে পুলিশের ব্যাপক অভিযান, নিহত অন্তত ৬৪

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রাজিলের রিও দে জেনেইরোতে অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। ছবি: এএফপি
ব্রাজিলের রিও দে জেনেইরোতে অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। ছবি: এএফপি

ব্রাজিলের অন্যতম বড় শহর রিও দে জেনেইরোতে পুলিশের ব্যাপক অভিযানে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৪ জন পুলিশ। স্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সিএনএন ব্রাজিলকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার এই অভিযান ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

রিও দে জেনেইরো রাজ্যের গভর্নর ক্লাউদিও কাস্ত্রো সাংবাদিকদের বলেন, অভিযানে ‘বিপুল পরিমাণ নেশাজাতীয় দ্রব্য’ জব্দ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছে, অভিযানের সময় অন্তত ৪২টি রাইফেলও জব্দ করা হয়েছে। এক্সে শেয়ার করা পোস্টে কাস্ত্রো অভিযানটিকে ‘রিও দে জেনেইরোর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অভিযান’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

আগামী সপ্তাহে রিও দে জেনেইরোতে জলবায়ু সম্মেলন, ‘সি–৪০ ওয়ার্ল্ড মেয়ার্স সামিট’ অনুষ্ঠিত হবে। তার ঠিক আগে, অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গতকালের ঘটনা ঘটেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা গেছে, অভিযান চলাকালে আলেমাও ফাভেলায় বিশাল কালো ধোঁয়ার স্তম্ভ উঠছে।

রিও দে জেনেইরো রাজ্য সরকার এক্সে জানিয়েছে, অভিযানটি ‘কমান্ডো ভারমেলো বা রেড কমান্ড’ অপরাধী গোষ্ঠীর আঞ্চলিক সম্প্রসারণ রোধে চালানো হয়েছে। সরকার বলেছে, এই অভিযান এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পরিকল্পিত ছিল এবং এতে ২ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি সামরিক ও বেসামরিক পুলিশ কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন।

কমান্ডো ভারমেলো ব্রাজিলের সবচেয়ে পুরোনো সক্রিয় অপরাধী গোষ্ঠী। বামপন্থী বন্দীদের এই সংগঠনটি ব্রাজিলে সামরিক শাসনের সময় গঠিত হয়েছিল। এরপর রেড কমান্ড ক্রমেই বড়, আন্তর্জাতিক অপরাধী গোষ্ঠীতে রূপান্তরিত হয়েছে, মাদক পাচার ও ফৌজদারি ব্যবসায় যুক্ত।

মঙ্গলবার অন্তত ৮১ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রিও দে জেনেইরো পুলিশ। অভিযানের সময় গ্যাং সদস্যরা পুলিশের ওপর ড্রোন ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি এসব ড্রোন থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলাও হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

সোনার দাম ২ লাখের নিচে নামল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাম্পকে দক্ষিণ কোরিয়ায় ‘স্বাগত জানাতে’ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা উত্তরের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ০৫
ট্রাম্প দক্ষিণ পৌঁছানোর পরপরই ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। ছবি: সংগৃহীত
ট্রাম্প দক্ষিণ পৌঁছানোর পরপরই ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট এশিয়া সফরে এসে মালয়েশিয়া ও জাপানের পর এবার দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছেছেন। তিনি সিউলে পৌঁছানোর ঠিক পরেই প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়া একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, উত্তরের প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন যদি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান, তাহলে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীতে তাঁর অবস্থান দীর্ঘায়িত করবেন। তবে জবাবে কিম কিছু না বলে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমে ট্রাম্পকে ‘স্বাগত জানিয়েছেন’ বলে মনে করছেন অনেকে।

জার্মান সংবাদমাধ্যম বিএনই ইন্টেলিনিউজের খবরে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া নিশ্চিত করেছে যে তারা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএন জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি উল্লম্বভাবে ছোড়া হয় এবং প্রায় ১৩০ মিনিট পর্যন্ত উড়েছে। এই পরীক্ষা এমন এক সময়ে হল, যার ঠিক আগে ট্রাম্প এপেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছান। এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ব্যাপকভাবে দেশটির পারমাণবিক সক্ষমতার সংকেত হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।

এপেকের আলোচনার মূল বিষয় বাণিজ্য হলেও তবে অনেকের দৃষ্টি কিম জং-উনের অনুপস্থিতির দিকে। জল্পনা আছে, হয়তো ট্রাম্প এই সফরে তাঁর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করবেন, ২০১৯ সালের পর এটি হতে পারে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ। সম্প্রতি সাংবাদিকদের প্রশ্নে ট্রাম্প যে উত্তেজনা দেখিয়েছেন, তাতে মনে হচ্ছে—কিম সাক্ষাতে রাজি হলে তিনি হয়তো দক্ষিণ কোরিয়ায় আরও কিছুদিন থাকবেন এবং তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হতে পারে।

এ পর্যন্ত কিমের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। পরিবর্তে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ‘স্বাগত জানাতে’ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মাধ্যম এই উৎক্ষেপণকে দেশটির শত্রুদের জন্য উত্তর কোরিয়ার সামরিক শক্তির ‘স্মারক’ হিসেবে উপস্থাপন করেছে। এই উৎক্ষেপণে জাতিসংঘের বিধিনিষেধ ভঙ্গ হয়নি। কারণ, বিধিনিষেধে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিষিদ্ধ, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নয়।

ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়া সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট লি জে মিউংয়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন। দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিনিময়ে শুল্কের হার ২৫ থেকে ১৫ শতাংশে নামানো হবে। তবে এই বিনিয়োগের কতটা সরাসরি নগদে হবে, তা এখনো নির্ধারিত নয়। সিউলে উদ্বেগ রয়েছে যে অত্যধিক বড় প্রতিশ্রুতি দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ ফেলতে পারে।

উল্লেখ্য, এই সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বৈঠক হবে। তাঁরা দুজনেই গিয়ংজুতে থাকবেন, সেখানে নিরাপত্তা প্রস্তুতি ব্যাপক। তাঁদের জন্য নির্ধারিত কামরাগুলোয় বুলেটপ্রুফ কাচ বসানো হয়েছে এবং পর্যবেক্ষণ বাড়ানো হয়েছে। প্রায় ২০ হাজার নিরাপত্তাকর্মী, আর্মার্ড ভেহিকেল এবং অ্যান্টিড্রোন ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

সোনার দাম ২ লাখের নিচে নামল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আসামে কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত’, বিজেপির তোপ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৪৭
আসামে অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত’ গাওয়া নিয়ে বিজেপির তোপের মুখে পড়েছে কংগ্রেস। ছবি: সংগৃহীত
আসামে অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত’ গাওয়া নিয়ে বিজেপির তোপের মুখে পড়েছে কংগ্রেস। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় বাংলাদেশ সংলগ্ন রাজ্য আসামে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ গাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে কেন্দ্র ও রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতেও বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছে বিজেপি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, আসামের করিমগঞ্জ জেলায়—যেটির বর্তমান নাম শ্রীভূমি—কংগ্রেসের এক দলীয় আয়োজনে এক নেতাকে ‘আমার সোনার বাংলা’ গান গাইতে শোনা যায়। এই ঘটনার পর বিজেপি বলেছে, কংগ্রেস ‘বাংলাদেশ নিয়ে সব সময় ঘোরের মধ্যে থাকে।’

এই ঘটনার পর বিজেপি বিপুল রাজনৈতিক আক্রমণ শানালেও মাঠের বাস্তবতা ভিন্ন। ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন ১৯০৫ সালে, প্রথম বঙ্গবিভাজনের প্রতিবাদে। এই উদ্যোগ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ সৃষ্টি করেছিল এবং ১৯১১ সালে বিভাজন বাতিল করা হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭১ সালে এটিকে জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করে।

আমার সোনার বাংলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বঙ্গের মানুষের তার ভূমির সঙ্গে গভীর সংযোগের কথা বর্ণনা করেছেন। সীমান্তের দুই পাশে থাকা বাংলাভাষীরা অনুষ্ঠান বা ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে এই গান প্রায়ই গায়। এমনকি ভারতের বিভিন্ন স্থানে, যেমন দিল্লিতে, বাংলার খাবারের রেস্তোরাঁর নাম ‘আমার সোনার বাংলা’ রাখা হয়েছে।

আসামে শ্রীভূমি জেলা বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত এবং এটি বাংলাভাষা–প্রধান বরাক উপত্যকার অংশ। তাই সেখানে এই গান গাওয়া অস্বাভাবিক নয়। কংগ্রেস এখনো বিজেপির সমালোচনার জবাব দেয়নি।

https://x.com/TheAshokSinghal/status/1983154913590030572?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1983154913590030572%7Ctwgr%5Eabcf50b337355d781dfe38f3ff506178e53048cb%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Fwww.ndtv.com%2Findia-news%2Famar-sonar-bangla-assam-congress-bangladesh-national-anthem-sung-at-congress-event-why-its-not-a-problem-9535260

তবে বিজেপি ভিডিওটি তুলে ধরে কংগ্রেসকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করেছে। বিজেপি আসাম ইউনিট এক্সে লিখেছে, ‘চিহ্নগুলো স্পষ্ট। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ সাহস দেখিয়ে একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছিল যা পুরো উত্তর-পূর্বকে দেখাচ্ছে এবং এখন বাংলাদেশ নিয়ে ঘোরের মধ্যে থাকা কংগ্রেস গর্বের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত এখানে, এই আসামে গাইছে। এরপরও যদি কেউ উদ্দেশ্যটি দেখতে না পারে, তারা হয় অন্ধ, বা সহমর্মী, বা উভয়ই।’

অসমের মন্ত্রী অশোক সিংহাল লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত—আমার সোনার বাংলা—কংগ্রেসের সভায় শ্রীভূমি, অসমে গাওয়া হয়েছে। অথচ, সেই একই দেশ উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারত থেকে আলাদা করতে চায়!’ তিনি আরও বলেছেন, ‘এবার স্পষ্ট হলো, কেন কংগ্রেস দশকের পর দশক ধরে আসামে অবৈধ মিয়া (বাংলাভাষী মুসলিমদের তুচ্ছার্থে মিঞা/মিয়া বলে থাকে অসমীয়রা) অনুপ্রবেশকে উৎসাহিত করেছে। তারা ভোটব্যাংক রাজনীতির জন্য রাজ্যের জনসংখ্যার কাঠামো পরিবর্তন করে “বৃহত্তর বাংলাদেশ” তৈরি করতে চায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

সোনার দাম ২ লাখের নিচে নামল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত