Ajker Patrika

গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি ইসরায়েলের, আকাশপথেও ফেলা হচ্ছে সামগ্রী

অনলাইন ডেস্ক
২০২৩ সালের শেষ দিকে ইসরায়েলি হামলায় নিহত এক শিশুর পাশে তার মায়ের আহাজারি। ছবি: এএফপি
২০২৩ সালের শেষ দিকে ইসরায়েলি হামলায় নিহত এক শিশুর পাশে তার মায়ের আহাজারি। ছবি: এএফপি

গাজায় দীর্ঘ কয়েক মাসের ইসরায়েলি অবরোধের পর যখন দুর্ভিক্ষে মানুষ প্রাণ হারানো শুরু করেছে ঠিক তখনই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অঞ্চলটিতে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। পাশাপাশি, আবারও আকাশপথে উড়োজাহাজ থেকেও ত্রাণ ফেলা শুরু হয়েছে। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক চাপ ও গাজার বাসিন্দাদের দুর্ভিক্ষের পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে সহায়তা পাঠানো শুরু হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজার উদ্দেশে। আজ রোববার সকালে মিসরের রাষ্ট্র পরিচালিত টেলিভিশন আল-কাহেরা নিউজ জানিয়েছে, ত্রাণ সহায়তা বহনকারী ট্রাকগুলো গাজার দিকে রওনা হয়েছে।

এদিকে, ইসরায়েল জানিয়েছে—তারা গতকাল শনিবার থেকেই গাজায় আকাশপথে ত্রাণ ফেলা শুরু করেছে এবং মানবিক সংকট লাঘবে আরও কয়েকটি পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, জাতিসংঘের ত্রাণবহরের নিরাপদ চলাচলের জন্য ‘মানবিক করিডোর’ চালু করা হবে এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ‘মানবিক বিরতি’ কার্যকর করা হবে।

আল-কাহেরার প্রতিবেদকের ভাষ্য অনুযায়ী, রাফা সীমান্ত থেকে কয়েক ডজন ট্রাক গাজার দক্ষিণ প্রান্তের কারেম শালোম ক্রসিংয়ের দিকে অগ্রসর হয়েছে। ট্রাকগুলোতে টনকে টন ত্রাণসামগ্রী রয়েছে। আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গাজার ২২ লাখ মানুষ চরম খাদ্যসংকটে রয়েছে। মার্চে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ করে দিলে খাদ্য ফুরিয়ে যেতে শুরু করে। পরে মে মাসে সীমিত সরবরাহ আবার চালু হয় নতুন বিধিনিষেধসহ।

ইসরায়েলের দাবি, তারা যথেষ্ট খাদ্য ঢুকতে দিয়েছে, বরং জাতিসংঘ এই খাদ্য যথাযথভাবে বিতরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে, জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলি বিধিনিষেধের মধ্যেই তারা যতটা সম্ভব দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে।

অপরদিকে, আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহের বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই ত্রাণ ফেলা হবে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ে। এতে থাকবে আট ব্যাগ সহায়তা—যার মধ্যে আটা, চিনি ও টিনজাত খাবার রয়েছে। উত্তর গাজায় ত্রাণ পড়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনি সূত্রগুলো।

আজ রোববার সকালে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা ‘মানবিক করিডোর’ এবং ‘নাগরিক কেন্দ্রে মানবিক বিরতি’ চালু করবে। তবে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। শনিবার সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গাজা উপত্যকায় কোনো দুর্ভিক্ষ চলছে না, এটি হামাসের ছড়ানো একটি মিথ্যা প্রচারণা।’

রোববার ইসরায়েল ১০ ঘণ্টার জন্য গাজার তিনটি এলাকায় ‘সামরিক তৎপরতার কৌশলগত বিরতির’ ঘোষণা দেয়। গাজার মানবিক সংকট নিয়ে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ বাড়তে থাকায় এই পদক্ষেপ নিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গাজায় আরও বেশি পরিমাণে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে স্থানীয়ভাবে কৌশলগত বিরতি দেওয়া হবে।’

এই বিরতি গাজার আল-মাওয়াসি, দেইর আল-বালাহ এবং গাজা সিটির একটি অংশে কার্যকর হবে। স্থানীয় সময় আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই বিরতি চলবে এবং প্রতিদিনই তা অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ না নতুন কিছু জানানো হয়। এ ছাড়া, ভোর ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ‘নিরাপদ করিডর’ চালু থাকবে, যাতে জাতিসংঘ ও মানবিক সংস্থাগুলোর কাফেলাগুলো নিরাপদে খাবার ও ওষুধ বিতরণ করতে পারে।

আইডিএফ জানিয়েছে, "ইসরায়েলি নাগরিকদের রক্ষার জন্য গাজায় সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পাশাপাশি আমরা মানবিক তৎপরতায় সহায়তা করে যাব। প্রয়োজনে এ ধরনের কার্যক্রম আরও বাড়ানো হবে। "

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘গাজার জনগণের মধ্যে খাদ্য বিতরণের দায়িত্ব জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর। তাই তারা যেন এই বিতরণ কার্যক্রম আরও কার্যকর করে এবং নিশ্চিত করে যে, সহায়তা হামাসের হাতে না পৌঁছায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রুয়া নির্বাচন: বিএনপিপন্থীদের বর্জন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জামায়াতপন্থী ২৭ জন নির্বাচিত

‘পাপ কাহিনী’র হাত ধরে দেশের ওটিটিতে ফিরল অশ্লীলতা

আগের তিন ভোটের নির্বাচনী কর্মকর্তারা দায়িত্ব পাবেন না

সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় সমন্বয়ক পরিচয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, আটক ৫

মাখোঁ কেন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র চান, রহস্য কী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত