Ajker Patrika

৪৮ বছর জেলে থাকার পর মুক্তি পেলেন নির্দোষ সিমন্স

৪৮ বছর জেলে থাকার পর মুক্তি পেলেন নির্দোষ সিমন্স

যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমার এক বিচারক এমন একজন ব্যক্তিকে মুক্তি দিয়েছেন তিনি হত্যা না করেও এই অভিযোগে টানা ৪৮ বছর কারাগারে ছিলেন। মুক্তি পাওয়া গ্লিন সিমন্সের বয়স বর্তমানে ৭০ বছর। বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে অন্যায় সাজায় তিনিই সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন। 

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার এক আদেশে বিচারক অ্যামি পালুম্বো গ্লিন সিমন্সকে নির্দোষ ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় অ্যামি পালুম্বো বলেন, ‘এই আদালত সুস্পষ্ট এবং দৃঢ়প্রত্যয়ী প্রমাণের মাধ্যমে খুঁজে পেয়েছে, যে অপরাধের জন্য জনাব সিমন্স দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, দণ্ডিত হয়েছিলেন এবং কারাবন্দী হয়েছিলেন—সেই অপরাধ তিনি করেননি।’ 

মুক্তির পর নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে সিমন্স বলেন, ‘এটি সহনশীলতা এবং স্থিরতার একটি পাঠ। আপনাকে উদ্দেশ করে কাউকে বলতে দেবেন না যে—এটি হতে পারে না। কারণ এটি সত্যিই হতে পারে।’ 

সব মিলিয়ে ৪৮ বছর ১ মাস ১৮ দিন কারাগারে ছিলেন সিমন্স। ১৯৭৪ সালে ওকলাহোমার একটি শহরতলিতে একটি মদের দোকানে ডাকাতি করার সময় ডাকাতেরা ক্যারোলিন সু রজার্স নামে একজনকে হত্যা করে। পরে এই ঘটনায় সিমন্স সহ ডন রবার্টস নামে আরও এক ব্যক্তি অভিযুক্ত করা হয়। ১৯৭৫ সালে অনুষ্ঠিত বিচারে যখন অভিযুক্ত দুজনকেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, সিমন্স তখন মাত্র ২২ বছরের যুবক। 

পরবর্তীতে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে সিমন্স ও রবার্টের মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করা হয়। 

তবে শুরু থেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছিলেন সিমন্স। দাবি করেছিলেন, খুনের ঘটনাটি যখন ঘটে সেই মুহূর্তে তিনি তাঁর লুইজিয়ানার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। 

ইতিপূর্বে একটি জেলা জজ আদালত গত জুলাইয়ে সিমন্সকে নির্দোষ ঘোষণা করেছিল। কারণ যে কিশোরের সাক্ষীর সূত্র ধরে সিমন্স এবং রবার্টসকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল তিনি পরবর্তীতে আরও বেশ কয়েকজন পুরুষকে ঘটনায় জড়িত থাকার ইঙ্গিত করেছিলেন। শুরুতে তিনি যে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন পরবর্তীতে সেই সাক্ষ্যেরই বিরোধিতা করেছিলেন। 

হত্যার ঘটনায় সিমন্সের সঙ্গে অভিযুক্ত রবার্টস ২০০৮ সালেই প্যারোলে মুক্তি পেয়েছিলেন। এবার নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে মুক্তি পেলেন সিমন্স। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভুলভাবে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কোনো ব্যক্তি যদি কারাগারে থাকেন তবে তাঁকে ১ লাখ ৭৫ হাজার ডলার পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। 

যৌবনের শুরুতে জেলে প্রবেশ করা সিমন্স বর্তমানে লিভার ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন। তাঁর জীবনযাত্রার খরচ এবং কেমোথেরাপির সহায়তায় কয়েক হাজার ডলার সংগ্রহ করেছে এনজিও তহবিল নিয়ে কাজ করা ‘গোফান্ডমি’ সংস্থাটিও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত