Ajker Patrika

রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনারকে অপরাধী সংগঠনের তালিকায় রাখল যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

ভাড়াটে সৈন্য সরবরাহকারী সংগঠন ওয়াগনারকে ‘ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তার মুখপাত্র জন কিরবির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।

স্থানীয় সময় শুক্রবার জন কিরবি বলেছেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের ওয়াগনার থেকে অন্তত ৫০ হাজার সৈন্য ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য নিয়োগ করা হয়েছে। এসব সৈন্যদের ৮০ শতাংশই রাশিয়ার কারাগার থেকে নেওয়া হয়েছে। ওয়াগনার একটি অপরাধী সংগঠন। এরা ব্যাপক নৃশংসতা চালাচ্ছে ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। ওয়াগনার যারা সহায়তা করছে, তাদের চিহ্নিত করে প্রকাশ্যে আনতে এবং তাদের কাজে বাধা দিতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’

ইউক্রেনে যুদ্ধ করার জন্য ওয়াগনারকে অস্ত্র সরবরাহ করেছে উত্তর কোরিয়ার। মার্কিন গোয়েন্দাদের এমন ছবিও দেখিয়েছেন জন কিরবি। এরপর তিনি বলেন, এই ভাড়াটে বাহিনী রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জন কিরবি যে ছবিগুলো দেখিয়েছেন, সেগুলো গত বছরের ১৮ ও ১৯ নভেম্বরে তোলা। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রাশিয়ার রেলগাড়িগুলো উত্তর কোরিয়ার প্রবেশ করছে। তারপর গাড়িগুলোতে রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র তোলা হচ্ছে। শেষে গাড়িগুলো অস্ত্রবোঝাই হয়ে রাশিয়ায় ফিরে যাচ্ছে।

ছবিগুলো দেখিয়ে জন কিরবি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়াগনারকে একটি আন্তর্জাতিক অপরাধী সংস্থা হিসেবে মনোনীত করেছে। এই সংস্থার সঙ্গে ইতালির মাফিয়াদের যোগাযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ওরা (ওয়াগনার) জাপান ও রাশিয়ার সংঘবদ্ধ অপরাধের সঙ্গেও যুক্ত।’

ওয়াগনারকে অপরাধী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করার মাধ্যমে তাদের বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক সংকুচিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এটি ওয়াগনারের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে আরও বিস্তৃত করবে। ফলে আফ্রিকাসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে ওয়াগনারের ভাড়াটে সৈন্যর ব্যবসা ব্যাহত হবে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউএস এক্সিকিউটিভ অর্ডার ১৩৫৮১-এর অধীনে ওয়াগনারকে একটি ‘ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন’ ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ওয়াগনারের যেকোনো সম্পদ জব্দ করতে পারবে মার্কিন প্রশাসন এবং মার্কিন নাগরিকেরা ওয়াগনারকে কোনো ধরনের তহবিল, পণ্য বা পরিষেবা সরবরাহ করতে পারবেন না।

তবে উত্তর কোরিয়া থেকে অস্ত্র নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওয়াগনার মালিক ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে ‘গুজব’ ও ‘জল্পনা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

জন কিরবির মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ইয়েভজেনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়াগনার আসলে সহকর্মী। কারণ আমাদের উভয়েরই উদ্দেশ্য অপরাধীদের নিধন করা।’

ওয়াগনার গ্রুপ হচ্ছে একটি ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এই গ্রুপের সদস্যদের বেশির ভাগই সাবেক রুশ সেনা। ওয়াগনার গ্রুপ লিবিয়া, সিরিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, মালিসহ অন্যান্য দেশে ভাড়াটে সৈন্য সরবরাহ করে থাকে।

প্রতিষ্ঠানটি তাদের সব কার্যক্রম এত দিন গোপন রাখলেও গত বছরের নভেম্বরে জানিয়েছে, সেন্ট পিটার্সবার্গে সদর দপ্তর খুলেছে তারা। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ওয়াগনার গ্রুপের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছিল। ইইউর অভিযোগ, মস্কোর হয়ে এই গোষ্ঠী চোরাগোপ্তা অভিযান চালাচ্ছে। ওয়াগনার নিয়ন্ত্রণের কারণে ইয়োজিনির ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত