Ajker Patrika

চোরা শিকার রুখতে গন্ডারের শিংয়ে তেজস্ক্রিয় পদার্থ!

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৫, ০০: ১৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ আফ্রিকায় চোরা শিকার রুখতে গন্ডারের শিংয়ে তেজস্ক্রিয় পদার্থ প্রবেশ করানোর অভিনব এক প্রকল্প চালু করেছেন বিজ্ঞানীরা। জোহানেসবার্গের উইটওয়াটারস্র্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল জানিয়েছে, এই পদ্ধতিতে গন্ডারদের কোনো ক্ষতি হবে না; তবে এতে চোরা শিকারের মাধ্যমে সংগ্রহ করা শিং বিশ্বজুড়ে পাচার হওয়ার সময় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সহজে শনাক্ত করতে পারবে।

বিবিসি জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গন্ডার রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায় এবং প্রতিবছর সেখানে শত শত গন্ডার চোরা শিকারিদের হাতে প্রাণ হারায়।

তেজস্ক্রিয় পদার্থের সাহায্যে এ ধরনের শিকার রুখে দেওয়ার প্রকল্পটির নাম ‘রাইজোটোপ প্রজেক্ট’। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় সাড়ে ৩ কোটির বেশি টাকা)। এটি বাস্তবায়নে গবেষণা এবং পরীক্ষার জন্য সময় লেগেছে প্রায় ছয় বছর।

এই বিষয়ে উইটস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেমস লারকিন বিবিসিকে বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে অন্তত একটি গন্ডার এখনো চোরা শিকারিদের হাতে মারা পড়ে। আমরা যদি সতর্ক না হই, এই সংখ্যা আরও বাড়বে। এই প্রযুক্তি চোরা শিকার রোধে বড় ধরনের একটি কার্যকর হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।’

এই প্রকল্পের পরীক্ষামূলক পর্যায়ে ২০টি গন্ডারের শিঙে নিরাপদভাবে তেজস্ক্রিয় পদার্থ প্রয়োগ করা হয়েছে। গবেষকদের দাবি, এতে গন্ডারদের শরীরে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়েনি।

এই প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থারও সহায়তা নেওয়া হয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ৪০ ফুট দীর্ঘ কার্গো কনটেইনারের ভেতর থেকেও তেজস্ক্রিয় বস্তু শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে আশা করা হচ্ছে, তেজস্ক্রিয়তার মাধ্যমে চোরাচালান পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিশিষ্ট গন্ডার সংরক্ষণকর্মী ও ‘সেভ দ্য রাইনো’ সংস্থার পরিচালক জেমি জোসেফ এই উদ্যোগ সম্পর্কে বলেছেন, ‘এটি উদ্ভাবনী এবং অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি হয়তো চূড়ান্ত সমাধান নয়, তবে এটি নিশ্চিতভাবে চোরা শিকার ও পাচারে বাধা সৃষ্টি করবে এবং অবৈধ নেটওয়ার্কের মানচিত্র আঁকতে সাহায্য করবে।’

‘সেভ দ্য রাইনো’-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে প্রতিবছর দক্ষিণ আফ্রিকায় গড়ে ৪০০টির বেশি গন্ডার চোরা শিকারিদের হাতে মারা যাচ্ছে।

রাইজোটোপ প্রকল্পের প্রধান জেসিকা ব্যাবিচ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য, এই প্রযুক্তিকে ব্যাপক পরিসরে প্রয়োগ করে আফ্রিকার সবচেয়ে প্রতীকী ও বিপন্ন প্রজাতিগুলোর একটি রক্ষা করা। এটি শুধু গন্ডারকেই নয়, আমাদের প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশকেও রক্ষা করবে।’

উল্লেখ্য, আফ্রিকান গন্ডারের শিং বহু বছর ধরে এশিয়ার বাজারে পাচার হচ্ছে। এটি ঐতিহ্যবাহী ওষুধ তৈরি ও বিত্তের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে শ্বেত গন্ডারের অস্তিত্ব ‘হুমকির মুখে’ এবং কৃষ্ণ গন্ডার ‘চরমভাবে বিপন্ন’ প্রজাতির তালিকায় রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাবেক কেরানির ২৪টি আলিশান বাড়ি ও ৩০ হাজার কোটির সম্পদ

সব কমিটি থেকে নারীদের সিস্টেমেটিক্যালি সাইড করা হয়েছে: সামান্তা শারমিন

অবরোধকারীদের ‘ভুয়া’ আখ্যা দিয়ে ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধাদের’ হামলা, পুলিশের লাঠিপেটায় শাহবাগ ফাঁকা

ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে রেখে ‘৪ কোটি টাকা আদায়’

আরও বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত