Ajker Patrika

চীনকে ঠেকাতে কংগ্রেসের বিল আনছে যুক্তরাষ্ট্র

চীনকে ঠেকাতে কংগ্রেসের বিল আনছে যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্বশক্তি হিসেবে বেইজিংয়ের আরও এগিয়ে যাওয়া সুস্পষ্ট। তারপরও নিজেদের পড়ন্ত প্রভাবে এতটুকু ছাড় দিতে রাজি নয় যুক্তরাষ্ট্র। প্রভাববলয় রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করছে দেশটি। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র-চীনের প্রতিযোগিতা সম্প্রতি নতুন মোড় নিয়েছে।

চীনকে কাবু করতে ‘এনসিওরিং আমেরিকান গ্লোবাল লিডারশিপ অ্যান্ড এনগেজমেন্ট অ্যাক্ট’ নামের একটি বিল পাসের যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করেছে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ। এটি পাস হলে আইনগত দিক থেকে চীনকে বিভিন্নভাবে নাস্তানাবুদ করতে পারবে বলে মনে করছে ওয়াশিংটন। মার্কিন নীতিনির্ধারকেরা এ-ও মনে করছেন, এই আইনের মাধ্যমে জিনজিয়াংয়ে উইঘুর গণহত্যা, হংকংয়ে গণতন্ত্র ধ্বংস, দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের আধিপত্য বৃদ্ধি, তাইওয়ানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং প্রযুক্তির অপব্যবহারসহ প্রভৃতি বিষয়ে চীনকে বেকায়দায় ফেলতে পারবে তারা। শিগগিরই বিলটি প্রতিনিধি পরিষদে উত্থাপন করা হবে। তবে জলবায়ু বিষয়ে এবং বেইজিংকে চাপে রাখতে এ বিল যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন বিরোধী রিপাবলিকানরা। কিন্তু কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিক উভয় পক্ষ বিলটি নিয়ে মোটাদাগে একমত হওয়ায় প্রতিনিধি পরিষদে এটি সহজে পাস হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ অবস্থায় গত বুধবার জিনজিয়াং থেকে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন সিনেট। তা ছাড়া, হংকংয়ে গণতন্ত্র ধ্বংস করার দায়ে গতকাল শুক্রবার চীনা কর্মকর্তা ও বিভিন্ন কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির কথা রয়েছে বাইডেন প্রশাসনের। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

কিন্তু ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিঝিয়াং বলেন, ‘হংকং চীনের। তাই এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ সহ্য করবে না বেইজিং।’

চীনের বিরুদ্ধে মিত্রদেরও ব্যবহারের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। গত মাসে ন্যাটোর বৈঠকে চীন নিয়ে সরাসরি উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো চীনের সামরিক উত্থান নিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে বৃহত্তম সামরিক জোটটি।

এর বাইরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো তথাকথিত অরাজনৈতিক সংস্থাগুলোকেও চীনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। সংস্থাটির সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে প্রায় ১০ লাখ উইঘুরকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে রাখার অভিযোগ করা হয়েছে। এটা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ক্রমাগত উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। কিন্তু অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক বলে মন্তব্য করেছে বেইজিং।

এদিকে সিএএনের তথ্যমতে, চলতি মাসের মধ্যে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে ২৫টি এফ-২২ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করবে পেন্টাগন। এর জবাবে বেইজিংও যে বড় কিছু করবে, তা বলা বাহুল্য।

এ পরিস্থিতিতে নিজেদের কর্মকর্তা ও কোম্পানিগুলোর ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় চীনও যথেষ্ট আইনি প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত ১০ জুন ‘কাউন্টার ফরেন সেঙ্কশনস ল’ পাস করে চায়না’স ন্যাশনাল পিপল’স কংগ্রেস (এনপিসি)। এটার মাধ্যমে যেকোনো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা বৈধভাবে মোকাবিলা করতে পারবে চীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত