Ajker Patrika

অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্বের সুযোগ দিচ্ছে কানাডা 

আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮: ৩০
অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্বের সুযোগ দিচ্ছে কানাডা 

কাগজপত্র ও অনুমতিবিহীন অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা করছে কানাডা। দেশটির অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইলের সঙ্গে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন তথ্য জানিয়েছেন। 

অভিবাসনমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর যে পাঁচ লাখ অভিবাসীকে আনার পরিকল্পনা কানাডা করছে; সেটির অংশ হিসেবে অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। 

অভিবাসন কানাডার অর্থনীতির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অধিক হারে অভিবাসী আসায় সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। 

সংবাদমাধ্যমটিকে কানাডার মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, বর্তমানে কানাডায় তিন থেকে ছয় লাখ অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন। এসব অভিবাসী নির্বাসনের ঝুঁকিতে রয়েছেন। 

তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত থাকবে। মূলত যাঁরা অস্থায়ী কাজ ও স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে কানাডায় এসেছেন; কিন্তু ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও নিজ দেশে ফিরে যাননি তাঁরা নাগরিকত্ব পেতে পারেন। 

কানাডার অভিবাসন, শরণার্থী ও নাগরিকত্ব মন্ত্রী মার্ক মিলারতবে অভিবাসনমন্ত্রী জানিয়েছেন, সব অবৈধ অভিবাসীকে নাগরিকত্ব পাওয়ার আবেদন করতে দেওয়া হবে না। যাঁরা সাম্প্রতিক সময়ে কানাডায় গেছেন তাঁরাও নাগরিকত্বের আবেদনের সুযোগ পাবেন না।

আসন্ন বসন্তে মন্ত্রিসভায় এ ব্যাপারে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করবেন বলে জানিয়েছেন অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলার। আগামী দুই বছর পর্যন্ত বার্ষিক প্রায় পাঁচ লাখ অভিবাসীকে কানাডায় আসার সুযোগ দেবে কানাডা। এরপর এই সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। 

কানাডা এ বছর ৪ লাখ ৬৫ হাজার অভিবাসীকে আনার পরিকল্পনা করছে। ২০২৪ সালে এ সংখ্যা হবে ৪ লাখ ৮৫ হাজার। আর ২০২৫ সালে নতুন অভিবাসীর সংখ্যা ৫ লাখ হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাশিয়ার ১৬২ বিলিয়ন ডলার অর্থ অস্ত্র কিনতে ইউক্রেনকে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিভক্ত ইউরোপ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: বিবিসি
ছবি: বিবিসি

ইউরোপীয় দেশগুলো এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে, রাশিয়ার কাছ থেকে জব্দ করা ১৪০ বিলিয়ন ইউরো তথা ১৬২ বিলিয়ন ডলার অর্থ ইউক্রেনকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে কি না। এই অর্থ রাশিয়ার বিরুদ্ধেই যুদ্ধের জন্য অস্ত্র কেনায় ব্যয় হবে। তবে ঋণ অনুমোদনের আগেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক—এই অর্থের সঙ্গে কী শর্ত যুক্ত হবে তা নিয়ে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বড় তিন দেশ—ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালি—চায়, ইউক্রেন যে অর্থে অস্ত্র কিনবে, তা যেন ইউরোপের প্রতিরক্ষা শিল্পেই খরচ হয়। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর হাতে সেই অর্থ না যায়।

তবে রোববার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকে এই ইস্যুতে তীব্র আলোচনা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৈঠকে ইউরোপীয় কমিশনকে ঋণের আইনি প্রস্তাব তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। রাশিয়ার জব্দ সম্পদ থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে এই ঋণ দেওয়া হবে। এটি ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা চাহিদা ও বাজেট ঘাটতি দুই ক্ষেত্রেই ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে, যদিও কী পরিমাণ কোথায় ব্যয় হবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎস এর আগে প্রস্তাব করেছিলেন যে, এই ঋণ ইউরোপের প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করতেও কাজে লাগানো উচিত। তাঁর ভাষায়, ‘এটি ইউরোপের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব উভয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ কিন্তু নেদারল্যান্ডস, নর্ডিক ও বাল্টিক দেশগুলো বলছে, ইউক্রেনের প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ ব্যয়ের স্বাধীনতা থাকা উচিত। তারা মনে করে, ইউক্রেন চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রও কিনতে পারবে।

বার্লিন ও প্যারিসের চাপের কারণে ইইউ সম্মেলনের খসড়া বিবৃতিতে ‘ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা’ উল্লেখ করা হয়েছে। সমালোচকেরা বলছেন, এই শর্ত আসলে ভণ্ডামি। এক ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেন, ‘যদি লক্ষ্য হয় ইউক্রেনকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সাহায্য করা, তাহলে কেনা-বেচার শর্ত খোলা রাখা উচিত।’ তাদের মতে, ‘শুধু ইউরোপীয় অস্ত্র কিনতে হবে’—এমন নিয়ম দিলে ইউক্রেন গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র, যেমন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি প্যাট্রিয়ট মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, পাবে না।

ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেত্তেরি অরপো বলেন, ‘আমরা চাই ইউক্রেন ইউরোপ থেকে আরও বেশি অস্ত্র কিনুক। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ইউরোপের সব সক্ষমতা এখনো নেই। তাই যুক্তরাষ্ট্র থেকেও কেনার সুযোগ রাখতে হবে।’

গত সপ্তাহে ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের এক বৈঠকেও এই বিভাজন প্রকাশ পায়। লিথুয়ানিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দোভিলে শাকালিয়েনে বলেন, ইউক্রেনের সবচেয়ে জরুরি চাহিদা পূরণের জন্য এই ঋণ ব্যবহার করা উচিত—সেই অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের হলেও। তিনি ন্যাটোর একটি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র দেবে, কিন্তু এর দাম পরিশোধ করবে ইউরোপীয় দেশগুলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ছাড়াল ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার, মাথাপিছু ১ লাখ ১১ হাজার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ১৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের পরিমাণ ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। কারণ, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে সরকারি ব্যয় ও রাজস্বের ব্যবধান দ্রুতগতিতে বাড়ছে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮ ট্রিলিয়ন ১৯ বিলিয়ন ৮১৩ মিলিয়ন ডলার।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এই ঋণের পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য গড়ে প্রায় ১ লাখ ১১ হাজার ডলারের সমান। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক থিংকট্যাংক পিটার জি পিটারসন ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, এই ঋণ চীন, ভারত, জাপান, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির সম্মিলিত মূল্যের সমান।

মাত্র দুই মাসের কিছু বেশি সময় আগে, চলতি বছরের আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে দেশটির ঋণ ৩৭ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ২০২৪ সালের নভেম্বরে ঋণ ছিল ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার, আর ওই বছরের জুলাই মাসে ৩৫ ট্রিলিয়ন ডলার। পিটার জি পিটারসন ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল এ পিটারসন বলেছেন, মার্কিন আইনপ্রণেতারা তাদের ‘মৌলিক আর্থিক দায়িত্ব’ পালনে ব্যর্থ হচ্ছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এক ট্রিলিয়নের পর আরেক ট্রিলিয়ন ঋণ যোগ করে সংকটের পর সংকটে বাজেট তৈরি করা, এমন এক মহান জাতির জন্য একেবারেই উপযুক্ত নয়। এর পরিবর্তে ঋণের ঘড়ির কাঁটা যতই দ্রুত ঘুরছে, ততই সংসদ সদস্যদের উচিত দায়িত্বশীল সংস্কারের সুযোগ নেওয়া, যা দেশকে ভবিষ্যতের জন্য শক্তিশালী পথে নিয়ে যেতে পারে।’

এর আগে চলতি বছরের মে মাসে ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিজ যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ঋণের মান ‘Aaa’ থেকে নামিয়ে ‘Aa1’ করেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়, একের পর এক প্রশাসন বৃহৎ বার্ষিক বাজেট ঘাটতি ও সুদের ব্যয় বৃদ্ধির প্রবণতা উল্টে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এর আগে ফিচ ও স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস যথাক্রমে ২০১১ ও ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং নামিয়ে দেয়।

যদিও অর্থনীতিবিদদের মধ্যে এখনো বিতর্ক আছে, যুক্তরাষ্ট্র কতটা ঋণ নিতে পারে আর্থিক বিপর্যয় সৃষ্টি না করে, তবু সবাই একমত যে বর্তমান ঋণের ধারা টেকসই নয়। ২০২৩ সালের এক বিশ্লেষণে পেন ওয়ারটন বাজেট মডেলের অর্থনীতিবিদেরা অনুমান করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ যদি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২০০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, তাহলে আর্থিক বাজার তা সহ্য করবে না।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরপেক্ষ কংগ্রেসনাল বাজেট অফিসের হিসাব অনুযায়ী, ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশটির ঋণ জিডিপির ২০০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এর পেছনে বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রণীত ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’-এর আওতায় দেওয়া ব্যাপক করছাড়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুইডেনের কাছ থেকে ১৫০টি পঞ্চম প্রজন্মের গ্রিপেন–ই যুদ্ধবিমান কিনছে ইউক্রেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সুইডেনের কাছ থেকে ১৫০টি গ্রিপেন যুদ্ধবিমান কিনছে ইউক্রেন। ছবি: সংগৃহীত
সুইডেনের কাছ থেকে ১৫০টি গ্রিপেন যুদ্ধবিমান কিনছে ইউক্রেন। ছবি: সংগৃহীত

সুইডেন ইউক্রেনকে সর্বোচ্চ ১৫০টি নিজস্বভাবে তৈরি পঞ্চম প্রজন্মের গ্রিপেন যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে পারে। দুই দেশ এই বিষয়ে একটি ‘লেটার অব ইনটেন্ট’ বা ‘ইচ্ছাপত্রে’ সই করেছে দেশটি। গতকাল বুধবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর এই তথ্য জানিয়েছেন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ সুইডেনের লিনশপিং শহরে দুই নেতার বৈঠক হয়। এরপর তাঁরা সফর করেন গ্রিপেনের উৎপাদক ‘সাব–SAAB’—এর কারখানায়। এই প্রতিষ্ঠানই তৈরি করে জেএএস ৩৯ গ্রিপেন যুদ্ধবিমান, গ্লোবালআই নজরদারি বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, অ্যান্টি-ট্যাংক অস্ত্র এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম।

সংবাদ সম্মেলনে ক্রিস্টারসন জানান, দুই দেশ আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা চুক্তি করেছে। এই সহযোগিতার মধ্যে রয়েছে ১০০—১৫০টি নতুন গ্রিপেন–ই মডেলের যুদ্ধবিমান রপ্তানির সম্ভাবনা, যা সুইডেনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিমান রপ্তানি অর্ডার হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, সামনে পথটা দীর্ঘ। কিন্তু আজ থেকে আমরা ইউক্রেনকে বিপুলসংখ্যক গ্রিপেন যুদ্ধবিমান সরবরাহের সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’

গত দুই বছর ধরে ইউক্রেনে গ্রিপেন সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। তবে গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান হাতে পাওয়ার পর আপাতত সেটির ওপর মনোযোগ দিতে এই পরিকল্পনা স্থগিত রাখা হয়। জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ইউক্রেনের জন্য গ্রিপেন পাওয়ার কাজ শুরু করেছি। ভবিষ্যৎ চুক্তিতে আমরা কমপক্ষে ১০০টি বিমান অর্জন করতে পারব বলে আশা করছি।’

তিনি আরও জানান, ইউক্রেনীয় পাইলটরা ইতিমধ্যে সুইডেনে গিয়ে গ্রিপেন পরীক্ষা করেছেন, যাতে ভবিষ্যতে বিমান রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজ হয়। গ্রিপেন তুলনামূলকভাবে কম ব্যয়বহুল এবং টেকসই—যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ এর মতো উন্নত বিমানের চেয়ে অনেক সাশ্রয়ী বিকল্প। জেলেনস্কির আশা, আগামী বছর থেকেই ইউক্রেন গ্রিপেন যুদ্ধবিমান পাবে এবং ব্যবহার শুরু করবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনীর জন্য গ্রিপেন অত্যন্ত জরুরি। বিষয়টি অর্থ, কৌশল ও গতিশীলতার সঙ্গে সম্পর্কিত।’

ক্রিস্টারসন জানান, এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। নতুন বিমানের উৎপাদন ও সরবরাহ শুরু হতে তিন বছর লাগতে পারে। পুরোনো গ্রিপেন মডেল পাঠানোর বিষয়টি এখনো খোলা রয়েছে, যদিও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী জানান, বিমান ক্রয়ের অর্থায়ন হতে পারে পশ্চিমা দেশগুলোতে থাকা রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ থেকে এবং ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’—এর অন্তর্ভুক্ত মিত্র দেশগুলোর সহায়তায়। তবে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের আগে এখনো অনেক কাজ বাকি আছে। লন্ডনের রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের (RUSI) বিমানযুদ্ধ বিশেষজ্ঞ জাস্টিন ব্রঙ্ক বলেন, এই সম্ভাব্য চুক্তি দেখায় যে ইউক্রেন কেবল যুদ্ধের তাৎক্ষণিক প্রয়োজন নয়, বরং যুদ্ধোত্তর বিমানবাহিনীর দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েও ভাবছে।

বর্তমানে ইউক্রেনের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ এবং ফ্রান্সের তৈরি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান রয়েছে। ব্রঙ্ক বলেন, গ্রিপেন ই এই দুইয়ের তুলনায় অনেক বেশি সক্ষম মধ্য-ওজনের যুদ্ধবিমান হতে পারে। এর উন্নত রাডার, ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ব্যবস্থা এবং দূরপাল্লার মিটিওর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার ক্ষমতা উল্লেখযোগ্য সুবিধা দেবে।

১৯৯৬ সাল থেকে গ্রিপেন সক্রিয় রয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ২৮০টি বিমান তৈরি করেছে সাব। বুধবার এই খবর প্রকাশিত হওয়ার আগেই কোম্পানিটির শেয়ারমূল্য বেড়েছে ৩.৩ শতাংশ। সুইডেন নিজেই সর্বশেষ গ্রিপেন–ই মডেলের ৬০টি বিমান অর্ডার করেছে। লিনশপিংয়ের কারখানায় সাব উৎপাদনক্ষমতা বাড়াচ্ছে। কয়েক বছরের মধ্যে বছরে ২০–৩০টি বিমান তৈরির লক্ষ্য নিয়েছে তারা। প্রতিষ্ঠানটি ব্রাজিলেও গ্রিপেন নির্মাণ করছে।

লিনশপিংয়ে পৌঁছানোর আগে জেলেনস্কি অল্প সময়ের জন্য নরওয়ের রাজধানী অসলোতে থামেন। সেখানে নরওয়ে সরকার ঘোষণা দেয়—তারা ইউক্রেনকে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের জন্য আরও দেড় বিলিয়ন নরওয়েজীয় ক্রোন (প্রায় ১৪৯.৪ মিলিয়ন ডলার) অনুদান দেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুকওয়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ক্রেমলিনের ওপর চাপ বাড়ানোর অংশ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফেরার পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম নিষেধাজ্ঞা এটি। এই নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য হলো রাশিয়ার তেল বিক্রির আয় বন্ধ করা, যা দেশটির যুদ্ধ পরিচালনার অর্থ জোগায়।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি তথা অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এখন হত্যাযজ্ঞ বন্ধের সময়। প্রেসিডেন্ট পুতিন যুদ্ধ থামাতে অস্বীকৃতি জানানোয় ট্রেজারি রাশিয়ার দুটি বড় তেল কোম্পানিকে নিষিদ্ধ করছে। প্রয়োজনে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

ব্রিটেন গত সপ্তাহে রসনেফট ও লুকওয়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রসনেফটের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তবে বেসরকারি লুকওয়েলকে ছাড় দিয়েছে—হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার জন্য বিশেষ অনুমতির কারণে।

হোয়াইট হাউসে ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেছেন। ট্রাম্প বলেন, ‘বৈঠকটা ঠিক মনে হয়নি, তাই বাতিল করেছি। তবে ভবিষ্যতে করব।’

এর আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ব্রিটেনের দেওয়া স্টর্ম শ্যাডো ক্রুজ মিসাইল রাশিয়ার ভেতরে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। তবে ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই খবরকে ‘ভুয়া’ বলে দাবি করেছেন।

নতুন নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার তেল রপ্তানি থেকে আয় কমানোর সবচেয়ে সরাসরি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। কারণ, ভারত কম দামে রুশ তেল কিনছিল।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড ফিশম্যান বলেন, ‘রসনেফট ছিল রাশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানি, যেটি এখন পর্যন্ত পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার বাইরে ছিল।’ তিনি মনে করেন, এই সিদ্ধান্তের পর স্বল্পমেয়াদে অনেক প্রতিষ্ঠান রুশ তেল কেনা থেকে বিরত থাকতে পারে।

এই পদক্ষেপকে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের জন্য বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ইউক্রেন কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিলে এবং পশ্চিমা অংশীদারিত্ব সীমিত করলে শান্তি আসতে পারে। তবে বিষয়টি পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগ বাড়ায়।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়ন বলেন, ইইউর ১৯তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজও শিগগির গৃহীত হবে। এতে রাশিয়ার তরল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি নিষিদ্ধ, ‘শ্যাডো ফ্লিট’ তেলবাহী জাহাজ কালো তালিকাভুক্ত, রসনেফট ও গ্যাজপ্রম নেফটের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যাওয়া ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

নতুন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে রুশ কূটনীতিকদের শেনজেন এলাকায় অবাধ চলাচলেও বিধিনিষেধ দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত