Ajker Patrika

পাকিস্তানে বছরজুড়ে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০: ৩৫
Thumbnail image

অর্থনৈতিক সংকট, খাদ্যসংকট, গণবিক্ষোভ, রাজনীতিক গ্রেপ্তার বা নির্বাচনের তারিখ নিয়ে অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গেছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ২০২৩ সালজুড়ে প্রায়ই শিরোনাম হয়েছে দেশটি। এক বছরে পাকিস্তানে যা ঘটেছিল, তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে সংবাদমাধ্যম মিন্টের প্রতিবেদনে: 

অর্থনৈতিক সংকট 
২০২৩ সালে পাকিস্তানি রুপির মান রেকর্ড সর্বনিম্নে পৌঁছায়। গত আগস্টে ১ ডলারের বিনিময়ে মেলে ৩০০ রুপি। গত জানুয়ারিতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ নেমে যায় ৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে। নগদ অর্থের সংকটে পড়া দেশটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে তহবিল পেতে লড়াই করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার ৩০০ বেসিস পয়েন্ট (বিপিএস) বাড়িয়ে ২০ শতাংশে উন্নীত করে, যা ১৯৯৬ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ।

পাকিস্তানের ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) গত মে মাসে রেকর্ড ৩৮ শতাংশ বাড়ে। মূল্যস্ফীতি এত বাড়ে যে ১ লিটার দুধ ২০০ রুপিতে বিক্রি হয়। মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য পাকিস্তানে বিনা মূল্যে ময়দা কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল। মার্চ-এপ্রিলে করাচিতে বিনা মূল্যে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে পদদলিত হয়ে ১০ জনের বেশি লোক নিহত হয়। 

ইমরান খানের গ্রেপ্তার, রাজনৈতিক নাটকের সূত্রপাত 
পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংকটও অর্থনৈতিক সংকটের থেকে কম ছিল না। গত মে মাসে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁসসহ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়। আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ইমরান খানকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।

ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর ইসলামাবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতা শুরু হয়। পুলিশ ও ইমরান খানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সমর্থকেরা রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর এবং লাহোরে সেনা কমান্ডারের বাসভবনে হামলা চালিয়েছিল। গ্রেপ্তার হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ঘোষণা করে, দলটির প্রতিষ্ঠাতা এবং কারাবন্দী নেতা ইমরান খান অন্তত তিনটি আসন থেকে ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। 

জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া, ভোটের তারিখ নিয়ে বিতর্ক 
২০২৩ সালের আগস্টে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয় এবং কয়েক মাস পরে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) ঘোষণা দেয়, ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তবে ইসিপি বলেছে, সর্বশেষ আদমশুমারির পর সীমানা নির্ধারণের জন্য সময় প্রয়োজন। 

নওয়াজ শরিফের প্রত্যাবর্তন 
পাকিস্তানের রাজনীতিতে আরেক নাটকীয়তা হয় অক্টোবরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দেশে ফিরলে। তিনি চার বছর স্বেচ্ছায় নির্বাসনে ছিলেন। নওয়াজ শরিফই একমাত্র রাজনীতিবিদ, যিনি অভ্যুত্থানপ্রবণ দেশটিতে তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

সন্ত্রাসী হামলা
 ২০২৩ সালে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী ও আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা পাকিস্তানকে নাড়িয়ে দিয়েছে। বছরের প্রথমার্ধে অন্তত ২৭১টি জঙ্গি হামলা হয়েছে। এতে ৩৮৯ জন নিহত এবং ৬৫৬ জন আহত হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের দুটি মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছে। এতে ৫৭ জন নিহত হয়। জুলাইয়ে খাইবার পাখতুনখাওয়ায় একটি রাজনৈতিক সমাবেশে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত