Ajker Patrika

ইসরায়েলি হামলার মুখে প্রত্নসম্পদ লুকিয়ে ফেলেছে ইরান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: দ্য ন্যাশনাল
ছবি: দ্য ন্যাশনাল

ইসরায়েলি হামলার পর সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ জাদুঘরসমূহ থেকে ঐতিহাসিক প্রত্নসম্পদ নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে ইরান। দেশটির রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা ইরান এয়ারের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকে সামাজিক মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রোববার প্রকাশিত এক বার্তায় বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে ইরানি কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে প্রধান জাদুঘরসমূহের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক নিদর্শনসমূহ দেশজুড়ে বিভিন্ন নিরাপদ ভান্ডারে স্থানান্তর করেছে।’

তবে এখন পর্যন্ত এসব প্রত্নসম্পদ কী কী, কোথায় সংরক্ষিত হচ্ছে এবং স্থানান্তরের সময়সূচি কী—এসব বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। ইরানের সংস্কৃতি, পর্যটন ও হস্তশিল্প মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি। ফলে ভবিষ্যতে আরও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, তা-ও অনিশ্চিত।

ইরান মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক। বিশেষ করে, তেহরানে অবস্থিত ইরানের জাতীয় জাদুঘর ও রেজা আব্বাসি জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে আকাশেমেনিদ ও সাসানীয় যুগের পুরাকীর্তি, সেই সঙ্গে ইসলামি যুগের টেক্সটাইল, মৃৎশিল্প ও অলংকৃত পাণ্ডুলিপি।

সম্প্রতি ইসরায়েল একাধিক দিক থেকে ইরানে হামলা চালিয়েছে, যা অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা তীব্র করেছে। রাজধানী তেহরানসহ কয়েকটি শহরে চালানো এই হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ জেনারেল ও বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা চালিয়েছে।

রোববার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এক বৈঠকে বলেছেন, ‘আমাদের এই প্রতিরক্ষা সম্পূর্ণ বৈধ। ইসরায়েল যদি হামলা বন্ধ করে, তাহলে আমরাও প্রতিক্রিয়া বন্ধ করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আত্মরক্ষা করছি, এটি কোনো আগ্রাসন নয়।’

সামগ্রিকভাবে, ঐতিহ্য রক্ষায় নেওয়া এই পদক্ষেপ ইরানের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের প্রতি এক দৃঢ় প্রতিশ্রুতির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার ১৬২ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিভক্ত ইউরোপ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের শুল্কের কশাঘাতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের তৈরি পোশাক শিল্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ট্রাম্পের শুল্কের আঘাতে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের তৈরি পোশাক শিল্প। ছবি: সিনহুয়া
ট্রাম্পের শুল্কের আঘাতে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের তৈরি পোশাক শিল্প। ছবি: সিনহুয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কের কশাঘাতে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানাগুলো। আগস্টের পর থেকে ইয়াঙ্গুনের শিল্পাঞ্চলে অন্তত ৬টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আরও কয়েকটি কারখানা কর্মী ছাঁটাই করছে, অতিরিক্ত কাজের সময় কমাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি আদেশ কমে যাওয়ার পর থেকেই এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

থাইল্যান্ড থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতীর খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের তৈরি পোশাকের চতুর্থ বৃহত্তম বাজার যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের আগস্টে দেশটি মিয়ানমারে তৈরি পোশাকের ওপর শুল্ক প্রায় ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশে নিয়ে যায়। কারখানা মালিক ও শ্রমিকেরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে ইতিমধ্যেই অর্ডার কমে গেছে। বিশেষ করে, জুতা ও ব্যাগ উৎপাদনে বড় ধাক্কা লেগেছে।

ফেডারেশন অব জেনারেল ওয়ার্কার্স মিয়ানমারের (এফজিডব্লিউএম) মুখপাত্র মা ই বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়ানোর কারণে কিছু কারখানা ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। আবার অনেক মালিক অতিরিক্ত সময় (ওভারটাইম) কমিয়ে দিচ্ছেন বা কর্মী ছাঁটাই করছেন। শ্রমিকেরা আতঙ্কে আছে—মালিকেরা না হঠাৎ করে পালিয়ে যায়।’

শ্রমিক সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত যে কারখানাগুলো বন্ধ হয়েছে সেগুলো মূলত চীনা মালিকানাধীন, ইয়াঙ্গুনের শ্বেপিথা এলাকার ওয়ার তায়ার ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন, হ্লাইং থারয়ারের মিয়া সাইন ইয়াউং জোন এবং শ্বে লিন বান জোনে অবস্থিত। বড় ক্ষতিপূরণ দিতে না হওয়ার জন্য অনেক মালিক পুরোপুরি বন্ধ না করে উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছেন। মা ই বলেন, ‘তারা পুরোপুরি বন্ধ না করে ছোট করে ফেলছে, এতে শ্রমিকদের পেছনে কম অর্থ ব্যয় করতে হয়।’

মিয়ানমারের কাটিং, মেকিং অ্যান্ড প্যাকিং (সিএমপি) খাতে প্রায় ৮ লাখ মানুষ কাজ করে। কিন্তু ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, বিদ্যুৎ ঘাটতি, জ্বালানি সংকট এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণ—সব মিলিয়ে খাতটি আগে থেকেই সংকটে ছিল। সরকার রপ্তানি আয়ের মুদ্রা বাজারদরের চেয়ে অনেক কম নির্ধারিত মূল্যে রূপান্তরের বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে।

হ্লাইং থারয়ারের এক কারখানা মালিক দ্য ইরাবতীকে বলেন, ‘আগের মৌসুমের তুলনায় এবার অর্ডার ১০ থেকে ২০ শতাংশ কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্ডার কমেছে, আর শুল্ক না কমলে এই অবস্থা চলতেই থাকবে। ব্যাগ ও জুতার অর্ডারও অনেক পড়ে গেছে। এ কারণেই কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।’ মিয়ানমার গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (এমজিএমএ) জানিয়েছে, আগস্ট পর্যন্ত তাদের ৫৮৯টি সদস্য কারখানার মধ্যে ৫৬ টির কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্যালাওয়ে গলফ কোম্পানি ও ব্যাগ প্রস্তুতকারক ব্র্যান্ড স্যামসোনাইটের জন্য পণ্য উৎপাদন করা টুইঙ্কল (মিয়ানমার) নামের কারখানাটি আগস্টে কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। ইয়াঙ্গুনের কারখানা মালিকেরা জানাচ্ছেন, জান্তা সরকারের আমদানি-নিষেধাজ্ঞার কারণে কাঁচামাল সংগ্রহেও সমস্যা তৈরি হয়েছে।

হ্লাইং থারয়ারের এক শ্রমিক বলেন, ‘আগে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা ওভারটাইম কাজ করতাম, এখন তা পুরোপুরি বন্ধ। তারা বলছে, কাঁচামাল আসছে না, অর্ডারও কমে গেছে। এতে মজুরি কমে গেছে, অনেককে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার ১৬২ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিভক্ত ইউরোপ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর নতুন অস্ত্র এআই: গবেষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ১০
ভারতে মুসলিমবিদ্বেষ ছড়ানোর ক্ষেত্রে নতুন হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এআই। ছবি: এএফপি
ভারতে মুসলিমবিদ্বেষ ছড়ানোর ক্ষেত্রে নতুন হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এআই। ছবি: এএফপি

ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর নতুন অপতৎপরতা সৃষ্টি হয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেট–এর (সিএসওএইচ) এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে এমনই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, এআই এখন সংখ্যালঘুবিরোধী প্রচারণার এক শক্তিশালী অস্ত্রে পরিণত হয়েছে।

জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনভিত্তিক এই অরাজনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি গত ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের ওয়েবসাইটে ‘এআই জেনারেটেড ইমেজারি অ্যান্ড দ্য নিউ ফ্রন্টিয়ার অব ইসলামোফোবিয়া ইন ইন্ডিয়া বা ভারতে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের নতুন সীমানা ও এআই-নির্মিত চিত্র’—শীর্ষক ৬০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভারতে মুসলিমদের লক্ষ্য করে তৈরি করা ১ হাজার ৩২৬টি এআই-নির্ভর ঘৃণামূলক পোস্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো এক্স, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে সক্রিয় ২৯৭টি পাবলিক অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ানো হয়েছে।

সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রাকিব হামিদ নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, ‘এটি কেবল সমুদ্রে ভাসমান বরফের চূড়ার মতোই দৃশ্যমান ক্ষুদ্র এক অংশ। ভারতের ডিজিটাল জগতে এর পরিধি অনেক বিশাল।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে এ ধরনের কার্যক্রম ছিল তুলনামূলক কম। কিন্তু ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ বেড়ে যায়। Stable Diffusion–স্ট্যাবল ডিফিউশন, Midjourney–মিডজার্নি ও DALL·E-ডল–ই—এর মতো এআই টুল সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য সহজলভ্য হয়ে ওঠার সঙ্গে সম্পর্কিত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এআই-নির্মিত ছবিগুলো এখন মুসলিমদের মানবিকতাবোধহীনভাবে উপস্থাপন, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়ানো, সহিংসতাকে নান্দনিকভাবে সাজানো এবং নারীবিদ্বেষ ও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।’

এই প্রতিবেদন ভারতে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কারণ, এতে উঠে এসেছে কীভাবে এআই সাম্প্রদায়িক প্রোপাগান্ডার বিস্তারকে আরও দ্রুততর করছে। এতে আরও সতর্ক করা হয়, মুসলিম নারীদের যৌন অবমাননাকর এআই-নির্মিত ছবি ও কনটেন্ট তৈরির প্রবণতা ক্রমবর্ধমান।

প্রতিবেদন প্রকাশের সময়টাতে ভারতে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ আন্দোলন তুঙ্গে ছিল। সেপ্টেম্বরে উত্তর ভারতের কানপুর শহর থেকে শুরু হয়ে এই আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। একটি ডানপন্থী হিন্দু সংগঠন ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ ব্যানারে আপত্তি জানালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিভিন্ন রাজ্যে পুলিশ হাজার হাজার মুসলিমের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সমাবেশের’ অভিযোগ আনে, যদিও আয়োজকেরা দাবি করেন—এগুলো ছিল শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় সমাবেশ।

সিএসওএইচ–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ‘যেকোনো সাধারণ প্রতিবাদ বা স্থানীয় সংঘাতকেও এখন সহজেই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঘৃণা ছড়াতে চায় তাদের হাতে।’ এতে আরও বলা হয়েছে, ‘এআই-নির্মিত ছবি এসব প্রেক্ষাপটে সহজেই ব্যবহার করা সম্ভব।’

এই অনুসন্ধান প্রকাশের পর উদ্বেগ বেড়েছে। কারণ, ভারত এখনো এআই-নির্মিত মিথ্যা তথ্য ও প্রোপাগান্ডা মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত আইনগত ও সাংস্কৃতিক সক্ষমতা অর্জন করেনি।

ডিজিটাল প্রাইভেসি অধিকারবিষয়ক গবেষক শ্রীনিবাস কোদালি নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো, এসব কনটেন্ট সমাজের বিভিন্ন অংশে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্বাসকে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘এআই-নির্মিত মিডিয়ার প্রভাব সরলরেখায় চলে না। কে দেখছে, কীভাবে ব্যাখ্যা করছে—তা নির্ভর করছে দর্শকের মানসিক প্রেক্ষাপটে।’

ভারত সরকারের ২০২৫ সালের রোডম্যাপ অনুযায়ী, এআই-কে ‘উন্মুক্ত, সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য’ করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে উদ্ভাবন ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ঘটাবে, নাগরিকদের ক্ষমতায়িত করবে এবং বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা এক ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে তুলবে।’

কোদালি আরও বলেন, ‘সরকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিকর বক্তব্য রোধের জন্য নিয়মকানুনের পক্ষে যুক্তি দিয়েছে, কিন্তু এআই সেই সীমানাগুলোকে আরও ঘোলা করে ফেলেছে। এটি একদিকে সৃজনশীল, অন্যদিকে প্রতারণার হাতিয়ার।’ তিনি আরও বলেন, ‘মানহানি, ভুয়া তথ্য বা ঘৃণাবাচক বক্তব্যের মতো প্রচলিত ক্ষতিকর ভাষার ধরন তো ছিলই, এখন এআই সেই জগতে নতুন জটিলতা যোগ করেছে।’

হামিদ বলেন, সমস্যার মূল শিকড় লুকিয়ে আছে এআই মডেল তৈরিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে, ‘যেসব কোম্পানি এই মডেল বানাচ্ছে, তারা বিপুল পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিত তথ্য, ঘৃণা ছড়ায় এমন কনটেন্ট ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দিয়ে সেগুলো প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ফলে যে কেউ চাইলে কয়েক সেকেন্ডেই এসব মডেল দিয়ে মুসলিমবিদ্বেষী কনটেন্ট বানাতে পারে।’

প্রতিবেদনটির শেষে নয়টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। যার কিছু নীতিনির্ধারকদের জন্য, আর কিছু এআই মডেল নির্মাতাদের উদ্দেশ্যে। সেখানে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানকে ‘অবিলম্বে ও ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী শনাক্তকরণ, রিপোর্টিং ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু করতে হবে, যাতে অপব্যবহার তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত ও রোধ করা যায়।’

বুধবার ভারতের ইলেকট্রনিকস ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য নতুন নিয়মের প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে ব্যবহারকারীদের বাধ্যতামূলকভাবে জানাতে হবে যে—তাদের কনটেন্ট এআই-নির্মিত কি না।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার ১৬২ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিভক্ত ইউরোপ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফাটল-ছত্রাকের সংক্রমণ, হুমকির মুখে তুতেনখামেনের সমাধি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৩৩
প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের ত্রয়োদশ ফারাও তুতানখামেন। ছবি: সংগৃহীত
প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের ত্রয়োদশ ফারাও তুতানখামেন। ছবি: সংগৃহীত

ধ্বংসের ঝুঁকিতে প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের ত্রয়োদশ ফারাও তুতানখামেনের সমাধি। ঐতিহাসিক এই সমাধিতে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। পানি ঢুকে এবং ছত্রাক জমে ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নেচার সংবাদপত্রের এনপিজে হেরিটেজ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে এ কথা জানা গেছে।

১৯২২ সালের ৪ নভেম্বর ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ হাওয়ার্ড কার্টার সমাধিটি আবিষ্কার করেন। এই সমাধি চারটি প্রধান অংশে বিভক্ত—প্রবেশদ্বার, অ্যান্টিচেম্বার (অগ্রকক্ষ), সমাধিকক্ষ এবং ভান্ডারঘর।

গবেষণায় বলা হয়েছে, অগ্রকক্ষ এবং সমাধিকক্ষের ছাদ জুড়ে বড় ফাটলের সৃষ্টি হওয়ায় সমাধির কাঠামোটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই ফাটল দিয়ে বৃষ্টির পানি ঢুকে দুর্বল ‘এসনা শেল’ শিলা ভিজিয়ে দিচ্ছে। যার ফলে সেখানে নতুন ফাটল ও ফিসার তৈরি হচ্ছে।

গবেষণাপত্রের লেখক ড. সায়েদ হেমেদা জানান, এই সমাধিটি দীর্ঘকাল ধরে আকস্মিক বন্যা এবং বড় ধরনের ফাটলের শিকার হয়েছে। যার ফলে এর অবস্থা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ খারাপের দিকে গেছে।’

গবেষক জিওটেকনিক্যাল মডেলিং এবং হিসাবের সাহায্যে, জয়েন্টেড রক মডেল-সহ উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন প্ল্যাক্সিস থ্রিডি সফটওয়্যার ব্যবহার করে সমাধির বিদ্যমান সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষণাটিতে সংখ্যাগত সিমুলেশনের মাধ্যমে আকস্মিক বন্যা এবং সমাধিটির প্রধান ফাটলের স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব বিশদভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অ্যান্টিচেম্বার (অগ্রকক্ষ) ও সমাধিকক্ষের ছাদের স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করা প্রধান উপাদানগুলো, বিকৃতি ও ধ্বংসের ধরন এবং গুরুত্বপূর্ণ দুর্বল অঞ্চলগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সমাধির বর্তমান স্থিতিশীলতার স্তরও নির্ধারণ করা হয়েছে।’

এই গবেষণার লক্ষ্য হলো ভবিষ্যতে সমাধির স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য কার্যকর পরামর্শ প্রদান করা। সমাধিটি সংরক্ষণের জন্য এর অভ্যন্তরীণ পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করে আর্দ্রতার তারতম্য কমানো এবং সংরক্ষণের একটি সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এই গবেষণায়।

দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আর্দ্রতার কারণে হওয়া ক্ষতিই একমাত্র কারণ নয়। কায়রো ইউনিভার্সিটির প্রত্নতত্ত্ব অনুষদের স্থাপত্য সংরক্ষণ বিদ্যার অধ্যাপক মোহামেদ আতিয়া হাওয়াশের বরাতে বলা হয়, ভ্যালি অব দ্য কিংস ঘিরে থাকা পাহাড়গুলোতে বড় বড় ফাটল রয়েছে, যার কারণে পাথরের চাঁই ভেঙে পড়লে সমাধিটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অধ্যাপক হাওয়াশ সতর্ক করে বলেন, ‘যে কোনো মুহূর্তে একটি বিপর্যয় ঘটতে পারে। কিংস ভ্যালিকে রক্ষা করতে হলে খুব দেরি হওয়ার আগেই পদক্ষেপ নিতে হবে। এটিকে একটি কঠোর সতর্কতা হিসেবে মানার আহ্বান জানান তিনি।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার ১৬২ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিভক্ত ইউরোপ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাশিয়ার ১৬২ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিভক্ত ইউরোপ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ১৮
ছবি: বিবিসি
ছবি: বিবিসি

ইউরোপীয় দেশগুলো এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে, রাশিয়ার কাছ থেকে জব্দ করা ১৪০ বিলিয়ন ইউরো তথা ১৬২ বিলিয়ন ডলার অর্থ ইউক্রেনকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে কি না। এই অর্থ রাশিয়ার বিরুদ্ধেই যুদ্ধের জন্য অস্ত্র কেনায় ব্যয় হবে। তবে ঋণ অনুমোদনের আগেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক—এই অর্থের সঙ্গে কী শর্ত যুক্ত হবে তা নিয়ে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বড় তিন দেশ—ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালি—চায়, ইউক্রেন যে অর্থে অস্ত্র কিনবে, তা যেন ইউরোপের প্রতিরক্ষা শিল্পেই খরচ হয়। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর হাতে সেই অর্থ না যায়।

তবে রোববার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকে এই ইস্যুতে তীব্র আলোচনা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৈঠকে ইউরোপীয় কমিশনকে ঋণের আইনি প্রস্তাব তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। রাশিয়ার জব্দ সম্পদ থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে এই ঋণ দেওয়া হবে। এটি ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা চাহিদা ও বাজেট ঘাটতি দুই ক্ষেত্রেই ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে, যদিও কী পরিমাণ কোথায় ব্যয় হবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎস এর আগে প্রস্তাব করেছিলেন যে, এই ঋণ ইউরোপের প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করতেও কাজে লাগানো উচিত। তাঁর ভাষায়, ‘এটি ইউরোপের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব উভয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ কিন্তু নেদারল্যান্ডস, নর্ডিক ও বাল্টিক দেশগুলো বলছে, ইউক্রেনের প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ ব্যয়ের স্বাধীনতা থাকা উচিত। তারা মনে করে, ইউক্রেন চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রও কিনতে পারবে।

বার্লিন ও প্যারিসের চাপের কারণে ইইউ সম্মেলনের খসড়া বিবৃতিতে ‘ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা’ উল্লেখ করা হয়েছে। সমালোচকেরা বলছেন, এই শর্ত আসলে ভণ্ডামি। এক ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেন, ‘যদি লক্ষ্য হয় ইউক্রেনকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সাহায্য করা, তাহলে কেনা-বেচার শর্ত খোলা রাখা উচিত।’ তাদের মতে, ‘শুধু ইউরোপীয় অস্ত্র কিনতে হবে’—এমন নিয়ম দিলে ইউক্রেন গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র, যেমন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি প্যাট্রিয়ট মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, পাবে না।

ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেত্তেরি অরপো বলেন, ‘আমরা চাই ইউক্রেন ইউরোপ থেকে আরও বেশি অস্ত্র কিনুক। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ইউরোপের সব সক্ষমতা এখনো নেই। তাই যুক্তরাষ্ট্র থেকেও কেনার সুযোগ রাখতে হবে।’

গত সপ্তাহে ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের এক বৈঠকেও এই বিভাজন প্রকাশ পায়। লিথুয়ানিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দোভিলে শাকালিয়েনে বলেন, ইউক্রেনের সবচেয়ে জরুরি চাহিদা পূরণের জন্য এই ঋণ ব্যবহার করা উচিত—সেই অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের হলেও। তিনি ন্যাটোর একটি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র দেবে, কিন্তু এর দাম পরিশোধ করবে ইউরোপীয় দেশগুলো।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার ১৬২ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিভক্ত ইউরোপ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত