Ajker Patrika

গাজায় ত্রাণ সংগ্রহকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস, পদদলন-শ্বাসরোধে ২১ জনের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১১: ০৭
জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের পাশে পদদলনের ঘটনায় অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন। ছবি: আনাদোলু
জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের পাশে পদদলনের ঘটনায় অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন। ছবি: আনাদোলু

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে নতুন সহিংসতায় অন্তত ২১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের অধিকাংশই পদদলিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে বলে জানা গেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে পরিচালিত বিতর্কিত সংস্থা জিএইচএফ যে অভিযোগ তুলেছে, সেটি ভিত্তিহীন। গতকাল বুধবার সকালে খান ইউনিসে এই পদদলনের ঘটনার জন্য ‘সশস্ত্র উসকানিদাতারা দায়ী’ বলে সংস্থাটি যে দাবি করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে মন্ত্রণালয়।

এর আগে জিএইচএফ এক বিবৃতিতে জানায়, ভিড়ের চাপে ১৯ জন প্রাণ হারায় এবং ‘চরম বিশৃঙ্খলা ও বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে’ একজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়। সংস্থাটি দাবি করে, ‘হামাস সংশ্লিষ্ট কিছু সশস্ত্র ব্যক্তি’ ভিড়ের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল। তবে এ দাবির পক্ষে তারা কোনো প্রমাণ দেয়নি। সংস্থাটি আরও বলেছে, তাদের একজন মার্কিন ঠিকাদারকে অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছিল এবং ভিড়ের মধ্যে একাধিক অস্ত্র দেখা গেছে।

তবে এ ঘটনার জিএইচএফের বয়ান দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্তৃপক্ষ। এক প্রত্যক্ষদর্শী আল-জাজিরাকে বলেন, ‘আমরাও সবার মতো দৌড়াচ্ছিলাম। গেট পর্যন্ত গিয়ে দেখি সেটা বন্ধ। হাজার হাজার মানুষ সেখানে ছিল। তখন মার্কিনরা ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এর পরই হুড়োহুড়ি শুরু হয় এবং অনেকেই পদদলিত হয়ে মারা যায়।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণ সাইটে ২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৫ জন প্রাণ হারায় পদদলিত হয়ে ও শ্বাসরোধে। আর মূলত কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার কারণেই এই হুড়োহুড়ি ও প্রাণহানিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘এই প্রথম ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে এই ভয়ংকর হুড়োহুড়ি ও শ্বাসরোধে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।’

গাজা সিটি থেকে আল জাজিরার সংবাদদাতা হানি মাহমুদ জানান, এক প্রত্যক্ষদর্শী নিশ্চিত করেছেন যে ভিড়ের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। এতে বিশৃঙ্খলা শুরু হয় এবং পদদলনের ঘটনা ঘটে। গাজার নাসের হাসপাতালের এক চিকিৎসক বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘ক্ষুধার্ত ও হতাশ মানুষজন খাদ্যসহায়তা নিতে গিয়েছিল, কিন্তু বিতরণকেন্দ্রের প্রধান গেট বন্ধ ছিল। এরপর ইসরায়েলি সেনারা এবং কেন্দ্রের নিরাপত্তাকর্মীরা গুলি চালায়। এতে বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়।’

জিএইচএফ গত মে মাসের শেষ দিকে গাজায় কাজ শুরু করার পর থেকে জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী অন্তত ৮৭৫ জন খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৬৭৪ জনই প্রাণ হারিয়েছে জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেন, অধিকাংশ নিহতই গুলিতে মারা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত