Ajker Patrika

রাখাইনে জান্তা বাহিনীর সর্বশেষ বড় ঘাঁটিও আরাকান আর্মির আক্রমণের মুখে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১৩: ০৯
আরাকান আর্মি গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কিয়াকতাউ টাউনশিপে জান্তাবাহিনীর একটি নৌযান জব্দ করে। ছবি: দ্য ইরাবতী
আরাকান আর্মি গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কিয়াকতাউ টাউনশিপে জান্তাবাহিনীর একটি নৌযান জব্দ করে। ছবি: দ্য ইরাবতী

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কায়াকফিউ টাউনশিপে জান্তা বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ চৌকির দিকে অগ্রসর হচ্ছে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। এই ঘাঁটি ঘিরে সংঘর্ষ এরই মধ্যে তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই চৌকি মিয়ানমারের সামরিক নৌঘাঁটি দান্যাওয়াদ্দির মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে থাইল্যান্ড থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, দান্যাওয়াদ্দি নৌঘাঁটির আশপাশে অন্তত এক ডজন চৌকি স্থাপন করেছে জান্তা বাহিনী। এর মধ্যে কাতথাব্যায় গ্রামে অবস্থিত একটি চৌকিতে চলতি মাসের শুরু থেকে টানা হামলা চালাচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)।

কায়াকফিউর এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘নৌঘাঁটির কাছে টানা ছয় দিন ধরে সংঘর্ষ চলছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী প্রচুর ড্রোন দিয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে।’ এএর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, চৌকিটি নৌঘাঁটি রক্ষায় জান্তা বাহিনীর মূল অবস্থান। এটি দখলে গেলে অন্যান্য চৌকির পতন ঘটতে পারে এবং নৌঘাঁটি বিপদের মুখে পড়বে।

এএ এরই মধ্যে কায়াকফিউ শহরের সঙ্গে দান্যাওয়াদ্দি নৌঘাঁটির সংযোগকারী সড়ক নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এবং ওই পথে থাকা জান্তা বাহিনীর তিনটি অবস্থান দখল করেছে।

রাখাইন রাজ্যের ১৭টির মধ্যে ১৪টি টাউনশিপ এরই মধ্যে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এএ। কায়াকফিউয়ে জান্তার একাধিক অবস্থান ঘিরে ফেলেছে তারা। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এত দিন এই অঞ্চলকে বাদ দেওয়ার কারণ হচ্ছে, এখানে চীনের অর্থায়নে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প এবং ইউনান প্রদেশে জ্বালানি সরবরাহের জন্য পাইপলাইন রয়েছে।

এ ছাড়া, চীনের সহায়তায় নির্মিত গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং একটি অনশোর গ্যাস টার্মিনাল রক্ষায় নিযুক্ত জান্তা বাহিনীর অবস্থানেও সংঘর্ষের খবর মিলেছে। পাশাপাশি ৩২ নম্বর পুলিশ ব্যাটালিয়নের ঘাঁটিতেও লড়াই হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্র জানায়, ‘এই তিন এলাকায়ই তীব্র লড়াই চলছে। জান্তা বাহিনী খুব বেশি বিমান হামলা চালাচ্ছে না, তবে প্রতিদিনই ড্রোন দিয়ে আক্রমণ করছে। আমি শুনেছি, সম্প্রতি বহু নতুন ড্রোন এসেছে এবং চীনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ড্রোন অপারেটরও এসেছে।’

সূত্র আরও জানিয়েছে, ড্রোন হামলায় বেসামরিক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। আবার, কিছু কিছু ক্ষেত্রে জান্তা বাহিনীর সদস্যরাই নিজেদের ড্রোন হামলায় আহত বা নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এই তথ্যগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি দ্য ইরাবতী।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সংঘর্ষ ও জান্তা বাহিনীর এলোমেলো বোমাবর্ষণের কারণে ৪০টি গ্রামের ৪০ হাজারের বেশি মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছে। রাখাইনে এখন শুধু তিনটি শহর—রাজ্যের রাজধানী সিতওয়ে ও মানাউংসহ জান্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এএ এরই মধ্যে প্রতিবেশী মগওয়ে, বাগো ও আয়েয়ারওয়াদ্দি অঞ্চলেও অভিযান চালিয়ে সরকারের কাছ থেকে আরও নতুন নতুন এলাকা দখলে নিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত