Ajker Patrika

যুদ্ধ শেষের নিশ্চয়তা পেলে সব জিম্মিকে মুক্তি দেব: হামাস

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১: ৫০
হামাসের গাজা অঞ্চলের প্রধান খলিল আল-হাইয়া। ছবি: আনাদোলু
হামাসের গাজা অঞ্চলের প্রধান খলিল আল-হাইয়া। ছবি: আনাদোলু

গাজায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধ শেষ হওয়ার নিশ্চয়তা পেলে সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। তবে কেবল যুদ্ধ শেষ করার নিশ্চয়তা দিলেই হবে না, ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী নির্দিষ্টসংখ্যক ফিলিস্তিনিকেও মুক্তি দিতে হবে। এমনটাই জানিয়েছেন হামাসের গাজা অঞ্চলের প্রধান খলিল আল-হাইয়া।

সৌদি আরবের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের গাজা অঞ্চলের প্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেছেন, ইসরায়েলি কারাগারে আটক নির্দিষ্টসংখ্যক ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে তারা প্রস্তুত। এটি গাজায় যুদ্ধ শেষ করার একটি বৃহত্তর চুক্তির অংশ হবে। এ নিয়ে অবিলম্বে আলোচনা শুরু করতে হামাস প্রস্তুত।

টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তৃতায় ইসরায়েলের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনার জন্য হামাসের নেতৃত্ব দেওয়া খলিল আল-হাইয়া বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ্য করে হাইয়া বলেন, ‘নেতানিয়াহু ও তাঁর সরকার আংশিক চুক্তি ব্যবহার করছে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। এই উদ্দেশ্য হলো—যুদ্ধ ও গণহত্যা চালিয়ে যাওয়া, এমনকি এর জন্য যদি তার সব বন্দীকেও (জিম্মি) বলি দিতে হয়। আমরা এই নীতি বাস্তবায়নের অংশ হব না।’

এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণের ঠিক আগের দিন গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরপর তা প্রায় দুই মাস টিকে ছিল। গত মার্চ মাসের শুরুর দিকে সেই যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যায় গাজায় ইসরায়েল ফের আক্রমণ শুরু করলে।

এখনো ভেস্তে যাওয়া সেই যুদ্ধবিরতি পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন কাতার ও মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীরা। কিন্তু কোনো পক্ষই খুব বেশি অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। ইসরায়েল ও হামাস একে অপরের ওপর চুক্তি না হওয়ার দায় চাপাচ্ছে। যুদ্ধবিরতি পুনরুদ্ধার এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির জন্য সোমবার কায়রোতে হওয়া সর্বশেষ দফা আলোচনা কোনো সুস্পষ্ট অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি ও মিসরীয় সূত্র জানিয়েছে।

হাইয়া বলেছেন, মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিসরের একটি প্রস্তাব হামাস গ্রহণ করেছে। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে কিছু জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। এরপর যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় পর্ব বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে, যার মধ্যে যুদ্ধ শেষ করা এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘অসম্ভব শর্তসহ’ একটি পালটা প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

এর আগে, গত সোমবার হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাহের আল-নুনু বলেন, হামাস ‘গুরুতর জিম্মি বিনিময়’ ও গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের নিশ্চয়তার বিনিময়ে সব ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত।

তাহের আল-নুনু বলেন, ‘আমরা একটি গুরুতর বন্দী বিনিময় চুক্তির বিনিময়ে, যুদ্ধের সমাপ্তি, গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহার এবং মানবিক সাহায্যের প্রবেশের বিনিময়ে সমস্ত ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত।’ তিনি অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পথে বাধা সৃষ্টি করছে।

হামাসের এই নেতা বলেন, ‘বিষয়টি বন্দীর সংখ্যা নয় বরং দখলদার (দেশ) তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে সরে যাচ্ছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছে এবং যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তাই হামাস দখলদারকে (ইসরায়েল) চুক্তি মেনে চলতে বাধ্য করার জন্য গ্যারান্টির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত