Ajker Patrika

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন /গাজার গণহত্যায় লাভে আছে বড় কোম্পানিগুলো: জাতিসংঘের বিশেষ দূত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৫, ২১: ৫৮
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলের অভিযানে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ছবি: ইপিএ
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলের অভিযানে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ছবি: ইপিএ

গাজায় ইসরায়েলের চলমান অভিযানে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘের এক বিশেষ দূত। তিনি অভিযোগে করেছেন, এসব প্রতিষ্ঠান গাজার ‘গণহত্যা থেকে মুনাফা অর্জন করছে’। তিনি ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে উপস্থাপিত এই প্রতিবেদনে বিশেষ দূত ফ্রানচেস্কা আলবানিজ বলেন, ‘গাজায় জীবন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে, পশ্চিম তীরেও হামলা বাড়ছে। এই পরিস্থিতির পেছনে এক বড় কারণ হলো—এটা অনেকের জন্য লাভজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

২০২২ সাল থেকে ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ইতালির আইন বিশেষজ্ঞ ফ্রানচেস্কা আলবানিজ। চলতি বছরের জানুয়ারিতেই তিনি গাজায় ইসরায়েলের অভিযানকে ‘গণহত্যা’ বলে আখ্যায়িত করেন।

আলবানিজ বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগ চলছে, তবে তিনি মনে করেন এর জন্য আদালতের চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষা করার দরকার নেই। তাঁর ভাষায়, ‘৬৩০ দিন ধরে আমি প্রতিদিন এই বিষয়টির তদন্ত করেছি। পাঁচ মাস পরেই বলতে পারি এটি গণহত্যা। এর জন্য কাউকে বিজ্ঞানী হওয়ার দরকার নেই, শুধু তথ্যগুলো যাচাই করলেই বোঝা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রায় ৬০ হাজার মানুষকে হত্যা, বসবাসের উপযোগী জীবনধারা ধ্বংস, ৮০ শতাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংস, পানি ও খাদ্যের অনুপস্থিতি–এই সবই গণহত্যার সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলের অভিযানে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ, বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে নিখোঁজ রয়েছেন।

জাতিসংঘের বিশেষ দূতের প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল: ‘দখলদারির অর্থনীতি থেকে গণহত্যার অর্থনীতি।’ এতে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ, ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ধ্বংসে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সরবরাহ, অবৈধ বসতিগুলোর কৃষিপণ্য রপ্তানি এবং যুদ্ধ তহবিল বিনিয়োগের মতো কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘যখন বিশ্বের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সরকারগুলো তাদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে, তখন বহু করপোরেট প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারি, বর্ণবৈষম্য ও এখন গণহত্যা থেকে মুনাফা অর্জন করছে।’

প্রতিবেদনে আরও বলেন, ‘এই প্রতিবেদনে প্রকাশিত সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে বরফ খণ্ডের চূড়া মাত্র। প্রকৃত জবাবদিহির জন্য বেসরকারি খাত এবং সেসব সংস্থার নির্বাহীদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।’

আলবানিজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের জন্য ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা ক্রয় কর্মসূচির সুবিধাভোগী। যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিন কোম্পানির নির্মিত এই বিমানে ১ হাজার ৬০০-এর বেশি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ও আটটি দেশের অংশগ্রহণ রয়েছে। ইসরায়েলই প্রথম দেশ, যারা এটি ‘বিস্ট মোডে’ ব্যবহার করেছে এবং প্রতিবার ১৮ হাজার পাউন্ড বোমা পরিবহন করেছে।

এদিকে সোমবার যুক্তরাজ্যের হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন, ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোর তৈরি যন্ত্রাংশ ইসরায়েলকে রপ্তানি আইনসম্মত, যদিও সেই যন্ত্রাংশ ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের’ কাজে ব্যবহার হতে পারে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। তবে লকহিড মার্টিনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘বিদেশি সামরিক বিক্রয় হলো, এক দেশের সরকারের সঙ্গে আরেক দেশের সরকারের চুক্তি। এ বিষয়ে আলোচনা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মাধ্যমে হওয়া উচিত।’

মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান প্যালান্টিরও সমালোচনা করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। এটি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্বের মাধ্যমে তাদের যুদ্ধ-সম্পর্কিত কার্যক্রমে সহায়তা করছে।

জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রানচেস্কা আলবানিজ। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রানচেস্কা আলবানিজ। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ফ্রানচেস্কা আলবানিজ মনে করেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এরই মধ্যে গাজায় গণহত্যার সম্ভাবনার কথা স্বীকার করেছে, যা বিশ্ব সম্প্রদায়ের ওপর তা প্রতিরোধের দায় আরোপ করে। কিন্তু ইসরায়েল আদালতের আদেশ কার্যত অগ্রাহ্য করেছে এবং এর বিচারিক এখতিয়ারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তিনি বলেন, ‘গণহত্যা চলছে, আর তাতে লাভবান হচ্ছে বহু প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই লাভের চক্র বন্ধ করা এবং দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনা।’

তবে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ‘ল্যাভেন্ডার’ এবং ‘গসপেল’ নামের প্রোগ্রামগুলো ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে মার্কিন ডেটা অ্যানালাইটিকস প্রতিষ্ঠান প্যালান্টির। প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি মন্তব্য না করলেও আগের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বলেছে, ‘এই প্রোগ্রামগুলোর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই এবং এদের ব্যবহারের সঙ্গে আমরা যুক্ত নই। তবে অন্য বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাধ্যমে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তা মিশনে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা গর্বিত।’ তাদের দাবি, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি কমাতে তারা নানান পদ্ধতি অনুসরণ করে।

জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রানচেস্কা আলবানিজ তাঁর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে শুধু প্যালান্টির নয়, আরও কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানিকে ইসরায়েলি হামলায় পরোক্ষভাবে সহযোগিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইডেনভিত্তিক চীনা মালিকানাধীন ভলভো তাদের ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে গাজা ও পশ্চিম তীরে ঘরবাড়ি, মসজিদ ও অবকাঠামো ধ্বংসে সহায়তা করছে। আলবানিজ বলেন, ‘মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আহ্বান উপেক্ষা করে এই কোম্পানিগুলো ইসরায়েলি বাজারে তাদের যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য মালামাল সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছে। এদের নিষ্ক্রিয় অবস্থান প্রকৃতপক্ষে ইসরায়েলের জবরদখলের সহায়তাকারী।’

তবে ভলভো দাবি করেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত অনেক যন্ত্রপাতি তারা সরবরাহ করেনি, বরং সেকেন্ডহ্যান্ড বাজার থেকে কেনা হয়েছে, যেগুলোর ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। উল্লেখ্য, ভলভো ইসরায়েলি কোম্পানি মার্কাভিমের সঙ্গে একটি যৌথ উদ্যোগে বাস তৈরি করে, যার চেসিস ভলভো সরবরাহ করে।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির একজন মুখপাত্র জানান, চুক্তিতে মার্কাভিমকে প্রযোজ্য আইন এবং মানবাধিকারবিষয়ক ভলভোর নীতিমালা মেনে চলার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে। তবে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, মার্কাভিম পশ্চিম তীরে কার্যক্রম চালানো কোম্পানিগুলোর তালিকায় রয়েছে। আলবানিজ বলেন, ‘যেহেতু আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মতে পশ্চিম তীর দখল অবৈধ, তাই ভলভোর উচিত অবিলম্বে ওই অংশীদারত্ব থেকে সরে আসা।’

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ইসরায়েল চলমান যুদ্ধ ও এর ফলে সৃষ্ট বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় ট্রেজারি বন্ড বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করছে এবং আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং খাত তা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ফরাসি আন্তর্জাতিক ব্যাংক ও আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিএনপি পারিবাস ও ব্রিটেনের বার্কলেজ বন্ডগুলো আন্ডাররাইট করে বাজারে আস্থা ফিরিয়েছে, যার ফলে ইসরায়েল উচ্চ সুদের ঝুঁকি মোকাবিলা থেকে রক্ষা পেয়েছে। এ ছাড়া, জার্মান কোম্পানি অ্যালিয়াঞ্জের মালিকানাধীন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান পিমকো ও মার্কিন প্রতিষ্ঠান ভ্যাঙ্গার্ড ইসরায়েলি বন্ড কিনেছে।

পিমকো এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানালেও, ভ্যাঙ্গার্ড জানিয়েছে, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান সব সময় প্রযোজ্য আইন ও বিধিনিষেধ মেনে চলে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য কালো তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকে।’

বিশ্বের বৃহত্তম সার্বভৌম সম্পদ তহবিল নরওয়ের গভর্নমেন্ট পেনশন ফান্ড গ্লোবাল গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের জড়িত থাকা সত্ত্বেও গত অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি কোম্পানিতে তাদের বিনিয়োগ ৩২ শতাংশ বাড়িয়েছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। তবে নরওয়ের বৃহত্তম পেনশন তহবিল কেএলপি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ওশকোশ ও জার্মানির বহুজাতিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান থাইসেনকুরুপের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। কারণ, এই দুটি কোম্পানি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করে।

এ বিষয়ে জানার জন্য ওশকোশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো উত্তর দেয়নি। তবে থাইসেনকুরুপ জানায়, তারা কেবল আইনভাবে এসব সরঞ্জাম সরবরাহ করে এবং জার্মান সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে।

আলবানিজ তাঁর প্রতিবেদনে করপোরেট অপরাধের ইতিহাস তুলে ধরেন, যেমন—দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের বৃহত্তম রাসায়নিক ও ওষুধ কোম্পানি আইজি ফারবেনের বিচার, যেটি নাৎসি জার্মানির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিল। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনেও বড় কোম্পানিগুলোর ভূমিকা চিহ্নিত হয়েছিল।

জাতিসংঘ ২০১১ সালে ‘ব্যবসা ও মানবাধিকার বিষয়ে দিকনির্দেশনা’ প্রকাশ করে বলেছে, কোম্পানিগুলোর উচিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি যথাযথভাবে যাচাই করা এবং ক্ষতিকর প্রভাব প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া।

প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করেছেন আলবানিজ। তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ও বিভিন্ন দেশের বিচার বিভাগকে অনুরোধ করেন, যেন করপোরেট নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধে সহায়তার অভিযোগে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫৯০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর এবার দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে বৈঠক হবে ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২৯ ডিসেম্বর হোয়াইট হাউসে বৈঠকে বসছেন। আজ সোমবার ইসরায়েলি সরকারের একজন মুখপাত্র বৈঠকের তারিখটি নিশ্চিত করেছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের প্রাথমিক ঘোষণা আসে। তবে আজ ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র শশ বেদ্রোসিয়ান অনলাইন ব্রিফিংয়ে বৈঠকের প্রধান আলোচ্যসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।

বৈঠকে নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প গাজার যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ এবং ভবিষ্যতের পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবেন। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) মোতায়েনের বিষয়টি নিয়েও কথা হবে।

গতকাল রোববার নেতানিয়াহু বলেছিলেন, বৈঠকের মূল লক্ষ্য হবে গাজায় হামাসের শাসনের অবসান করা এবং হামাস যেন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় দেওয়া ‘প্রতিশ্রুতি’ (নিরস্ত্রীকরণ) পূরণ করে, তা নিশ্চিত করা। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ ‘আরও কঠিন’ হবে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে প্রধানত ইসরায়েলি বন্দী ও ইসরায়েলের হাতে আটক ফিলিস্তিনিদের বিনিময় এবং গাজার কিছু অংশ থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। দ্বিতীয় ধাপের চুক্তিতে যুদ্ধপরবর্তী গাজা প্রশাসন নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা, যা একটি অত্যন্ত জটিল ও বহুলাংশে অমীমাংসিত বিষয়। এই ধাপে নেতৃত্ব, ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং আইএসএফ বাহিনীর ভূমিকা নির্ধারণ করা বাকি রয়েছে।

গত ১০ অক্টোবর থেকে মার্কিন মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী ৫৯০ বারের বেশি এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে বলে জানা গেছে। যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অন্তত ৩৬০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর ফলে মৃতের সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

এদিকে, বৈঠকটি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে ইসরায়েলকে একটি নতুন নিরাপত্তা চুক্তি করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। গত সপ্তাহে তিনি সামাজিক মাধ্যমে ইসরায়েলকে সিরিয়ার সঙ্গে ‘শক্তিশালী ও ফলপ্রসূ সংলাপের’ আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে সিরিয়ায় ইসরায়েলের বারবার অনুপ্রবেশ এবং বিমান হামলা সেই আলোচনাকে বহুলাংশে ব্যাহত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অস্ট্রেলিয়ায় তরুণীকে হত্যার পর ৪ বছর ভারতে লুকিয়ে ছিলেন ঘাতক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ঘাতক রাজবিন্দর সিং ও হত্যার শিকার টোইয়া কর্ডিঙ্গলি। ছবি: সংগৃহীত
ঘাতক রাজবিন্দর সিং ও হত্যার শিকার টোইয়া কর্ডিঙ্গলি। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে আলোচিত একটি হত্যা মামলায় সাবেক পুরুষ নার্স রাজবিন্দর সিংকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ৪১ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ২০১৮ সালে টোইয়া কর্ডিঙ্গলি নামে ২৪ বছর বয়সী এক তরুণীকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। সোমবার জুরি বোর্ডের সদস্যরা তাঁকে দোষী ঘোষণা করলে আদালতে উপস্থিত মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বিবিসি জানিয়েছে, টোইয়া কর্ডিঙ্গলিকে অন্তত ২৬ বার ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। সেদিন বিকেলে তিনি তাঁর কুকুর নিয়ে সমুদ্র সৈকতে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। পরদিন সমুদ্রসৈকতের বালিয়াড়িতে অর্ধেক ঢেকে থাকা অবস্থায় মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেন তাঁর বাবা। কুইন্সল্যান্ডের কেয়ার্নস ও পোর্ট ডগলাস—এই দুই জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রের মাঝখানে অবস্থিত ওই সৈকতটি।

মামলার শুনানিতে আদালত জানান, কর্ডিঙ্গলিকে বারবার ছুরিকাঘাত করা হয় এবং তাঁর দেহ অগভীর বালুকাময় গর্তে ফেলে রাখা হয়—যেখানে তার বেঁচে থাকার কোনো আশাই ছিল না।

অভিযুক্ত রাজবিন্দর সেই সময়টিতে কুইন্সল্যান্ডের ইনিসফেইল এলাকায় বসবাস করতেন, যা হত্যার স্থান থেকে প্রায় দুই ঘণ্টার দূরত্বে। তদন্ত শুরু হওয়ার পরপরই পুলিশের সন্দেহ তাঁর ওপর গিয়ে পড়ে। তবে সেই সময়ই তিনি হঠাৎ অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। ফেলে রেখে যান তাঁর স্ত্রী, তিন সন্তান এবং বাবা-মাকে।

চার বছর ভারতে লুকিয়ে থাকার পর অবশেষে তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অস্ট্রেলিয়ায়। গত মার্চে এই মামলাটির প্রথম বিচার প্রক্রিয়া জুরি বোর্ডের অমতজনিত কারণে স্থগিত হয়েছিল। দ্বিতীয় দফার বিচার শেষে এবার তাঁকে দোষী ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রসিকিউটররা মত দিয়েছেন, রাজবিন্দরের হঠাৎ দেশত্যাগই তাঁর অপরাধবোধের প্রমাণ। ফরেনসিক প্রমাণও তাঁকেই দোষী সাব্যস্ত করে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা একটি কাঠির ওপর পাওয়া ডিএনএ নমুনা অন্য কারও নয়, বরং রাজবিন্দরের হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ৩.৮ বিলিয়ন গুণ বেশি। এ ছাড়া কর্ডিঙ্গলির মোবাইল ফোনের গতিবিধি এবং সিংয়ের গাড়ির অবস্থান হত্যাকাণ্ডের সময়ের সঙ্গে মিলে যায়।

টোইয়া কর্ডিঙ্গলি স্থানীয় স্বাস্থ্য পণ্যের দোকানে কাজ করতেন এবং পশু উদ্ধারকারী সংগঠনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর কুইন্সল্যান্ড জুড়ে ব্যাপক শোক দেখা দেয়।

দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর রাজবিন্দর সিংকে আগামী মঙ্গলবার সাজা ঘোষণার জন্য আবার আদালতে হাজির করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রণধীর জয়সওয়াল। ফাইল ছবি
রণধীর জয়সওয়াল। ফাইল ছবি

পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল আজ সোমবার সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘গণতন্ত্র এবং পাকিস্তান একসঙ্গে যায় না।’ প্রতিবেশী দেশের গণতন্ত্রের অবস্থা, বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং সেখানে চলমান প্রতিবাদ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে জয়সওয়াল এই মন্তব্য করেন।

ইমরান খানের বর্তমান অবস্থা ও সাম্প্রতিক সময়ে তাঁকে নিয়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরীর মন্তব্য, নানান আলোচনার জন্ম দিয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিককাঠামো দুর্বল হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল বলেন, ভারত সেখানকার সব ঘটনার ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন।

জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানের প্রতিটি ঘটনার ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখি। আপনি জানতে চেয়েছেন, পাকিস্তানের গণতন্ত্র দুর্বল হচ্ছে কি না। আসলে গণতন্ত্র আর পাকিস্তান একসঙ্গে যায় না। এ বিষয়ে আমরা যত কম কথা বলব, ততই ভালো।’

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্ত সংঘর্ষ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল আফগান বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘সীমান্তে সংঘর্ষের খবর আমরা দেখেছি। এতে বহু আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আমরা নিরপরাধ আফগান জনগণের ওপর এই ধরনের হামলার নিন্দা জানাই।’ ভারত আফগানিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে তাদের সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেন, এতে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

গত শুক্রবার কারাবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি’ হিসেবে আখ্যা দেন পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী।

জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী দাবি করেন, ‘ইমরান খান সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রচার চালাচ্ছেন, বিদেশি শক্তির সঙ্গে সমন্বয় করছেন এবং নানা ভুল তথ্য ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছেন।’ তাঁর ভাষ্য, পাকিস্তানের ‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতেই’ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন তিনি। এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘রাষ্ট্রের ওপরে কেউ নয়।’

ইমরান খানের নাম উল্লেখ না করে আইএসপিআর মহাপরিচালক বলেন, একজন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব—যাঁর নাম না নিলেও সবার জানা—নিজের অহংকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন যে তিনি মনে করেন, ‘আমিই কিছু।’ এই বিভ্রান্তিকর মানসিকতার কারণেই তাঁর বয়ান ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিতে’ পরিণত হয়েছে।

এর আগে কারাগারে থাকা ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন তাঁর তিন বোন। এরপরই পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কারাগারে মারা গেছেন—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের পর জাপানে সুনামি সতর্কতা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ০৯
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল সমুদ্রের ৩২ মাইল গভীরে। ছবি: জাপান টাইমস
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল সমুদ্রের ৩২ মাইল গভীরে। ছবি: জাপান টাইমস

জাপানের উত্তর উপকূলে আঘাত হেনেছে ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। এরপরই উপকূলীয় এলাকায় সুনামি সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সময় সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাত ৭টা ৪৫ মিনিটে হোক্কাইডো অঞ্চলের উপকূল থেকে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) প্রাথমিক তথ্যে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল সমুদ্রের ৩২ মাইল গভীরে, ৪১° উত্তর অক্ষাংশ ও ১৪২.৩° পূর্ব দ্রাঘিমাংশের কাছাকাছি।

‘জাপান টাইমস’ সহ জাপানের অন্যান্য সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পরপরই উপকূলীয় এলাকায় সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সুনামির কারণে সমুদ্রতটে ঢেউয়ের উচ্চতা সর্বোচ্চ ১ মিটার পর্যন্ত উঠতে পারে। তবে প্রাথমিক পূর্বাভাসে ৩ মিটার উচ্চতার ঢেউয়ের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছিল।

তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। একইভাবে কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা কাছাকাছি থাকা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়নি বলে জানানো হয়েছে।

এর আগে গত ৯ নভেম্বর উত্তর জাপানে আরও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। সেই সময় উপকূলীয় এলাকায় স্বল্প সময়ের জন্য সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। ৬.৯ মাত্রার সেই ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩ মিনিটে ইওয়াতে উপকূলে আঘাত হানে এবং প্রায় ২০ কিলোমিটার গভীর থেকে এর উৎপত্তি হয়। ওই ঘটনার পর বেশ কয়েকটি পরাঘাতও অনুভূত হয়েছিল।

নভেম্বরের ওই ভূমিকম্পে ওফুনাতো, মিয়াকো, কামাইশি, ওমিনাতো ও কুজিসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় ১০ থেকে ২০ সেন্টিমিটার উচ্চতার ক্ষুদ্র সুনামি ঢেউ রেকর্ড করা হয়েছিল। সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়েছিল প্রায় তিন ঘণ্টা পর। তবে বিশেষজ্ঞরা আগেই জানান, ওই অঞ্চলে পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত শক্তিশালী পরাঘাত অনুভূত হতে পারে।

জাপান প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থিত হওয়ায় ভূমিকম্প প্রবণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রায়ই দেশটিতে ছোট-বড় ভূমিকম্প অনুভূত হয় এবং বড় ধরনের কম্পনের ক্ষেত্রে সেখানে প্রায় সময়ই সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়।

সর্বশেষ ভূমিকম্পের ঘটনায় কর্তৃপক্ষ স্থানীয় জনগণকে সতর্ক থাকতে, প্রয়োজন হলে উঁচু স্থানে সরে যেতে এবং সরকারি ঘোষণার প্রতি নজর রাখার অনুরোধ জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত