Ajker Patrika

আসাদের ঘনিষ্ঠদের যেভাবে ধরা হচ্ছে সিরিয়ায়

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৫, ২৩: ০১
বাবার শেষকৃত্যানুষ্ঠানে ছোট ভাই মাহেরের সঙ্গে সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। ছবি: এএফপি
বাবার শেষকৃত্যানুষ্ঠানে ছোট ভাই মাহেরের সঙ্গে সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। ছবি: এএফপি

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের পতনের পর নতুন প্রশাসন একের পর এক অভিযান চালিয়ে পুরোনো সরকারের অনুগত সামরিক কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করছে ও গ্রেপ্তার করছে। এই অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছেন সাবেক যোদ্ধা গাজওয়ান আল-সলমোনি, যিনি একসময় সিরিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর (এনডিএফ) কমান্ডার ছিলেন।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ন্যাশনাল’ জানিয়েছে, আল-সলমোনি কেন্দ্রীয় সিরিয়ায় অবস্থিত আলাওয়ি অধ্যুষিত সাব্বুরা গ্রামে অবস্থান করে একটি অপহরণ ও চাঁদাবাজি চক্র পরিচালনা করতেন। গ্রামটি ছিল কুর্দি নিয়ন্ত্রিত বাদিয়া মরুভূমিতে যাওয়ার প্রধান রুটে। আনুগত্যের পুরস্কারস্বরূপ ২০২৩ সালের জুলাইয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ আল-সলমোনিকে সংসদ সদস্য নিযুক্ত করেন। এর ফলে তিনি সব ধরনের অপরাধমূলক বিচার থেকে রক্ষা পান।

কিন্তু পাঁচ মাস পরই আসাদের সরকার পতনের মুখ দেখে এবং হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নামে আল-কায়েদা থেকে বেরিয়ে আসা একটি সংগঠন ক্ষমতা নেয়। এরপরই নতুন প্রশাসন পুরোনো শাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান শুরু করে। গত দুই সপ্তাহ ধরে সাব্বুরায় প্রতিদিনই অভিযান চালানো হচ্ছে আল-সলমোনিকে খুঁজে বের করার জন্য। ইতিমধ্যে সাব্বুরায় ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আল-সলমোনির শ্বশুর ও সাবেক বাথ পার্টির নেতা তামার আল-আসাদ এবং প্রভাবশালী আলাওয়ি ধর্মীয় নেতা সালমান হুনাইদি।

সিরিয়ার লাতাকিয়ার একটি চেকপোস্টে তল্লাশি চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: দ্য ন্যাশনাল
সিরিয়ার লাতাকিয়ার একটি চেকপোস্টে তল্লাশি চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: দ্য ন্যাশনাল

ন্যাশনাল জানিয়েছে, আসাদের ঘনিষ্ঠদের ধরতে গত ২১ জুন থেকে অভিযান শুরু করেছে বর্তমান প্রশাসন। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত সাতজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ধরা পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজন আলাওয়ি এবং অন্য তিনজন সুন্নি। এই সাতজনের মধ্যে অন্যতম হলেন ওয়াসিম আল-আসাদ। সাবেক প্রেসিডেন্ট আসাদের দূরসম্পর্কের আত্মীয় তিনি। বড় একটি মাদক চক্র ও বাথ ব্রিগেডস মিলিশিয়া পরিচালনা করতেন তিনি।

ধরা পড়া গুরুত্বপূর্ণ অন্য ছয়জনের মধ্যে অন্যতম হলেন—ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রামি ইসমাইল, যিনি লাতাকিয়া ও তার্তুস অঞ্চলে বিমানবাহিনীর গোয়েন্দাপ্রধান ছিলেন। মেজর জেনারেল মাওয়াফাক আল-হায়দার, যিনি দামেস্ক-হোমস মহাসড়কের ‘মৃত্যুর চেকপয়েন্ট’-এ নিয়োজিত ছিলেন। সেদনায়া কারাগারের সহকারী প্রধান কর্নেল থায়ের হুসেইন, নির্যাতনের জন্য যিনি মৃত্যুর দূত হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কর্নেল জিয়াদ কোকাশ, যিনি বিদ্রোহী অঞ্চলে সেনা অভিযান পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন।

তাঁদের মধ্যে অনেকেই আটক হয়েছেন স্থানীয় বেদুইন, মাদক পাচারকারী কিংবা তাঁদের আত্মীয়-পরিজনের তথ্য ফাঁসের কারণে। অনেককে ধরা হয়েছে মোবাইল ফোন হ্যাক করে বা সাইবার নজরদারির মাধ্যমে। কিছু সাবেক কর্মকর্তা আবার নতুন সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন, পুরোনো ব্যক্তিদের গুপ্ত অবস্থান ও নম্বর ইত্যাদি জানিয়ে দিচ্ছেন।

উপকূলবর্তী জার্দ পাহাড়ি অঞ্চলে লুকিয়ে থাকা বহু আলাওয়ি যোদ্ধাকে ধরতে এখনো বেগ পেতে হলেও নতুন শাসনব্যবস্থার গোয়েন্দা দক্ষতা বাড়ছে। তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় এইচটিএসের গোয়েন্দা শাখার লোকজন এই অভিযান চালাচ্ছে।

সিরিয়ায় দীর্ঘদিনের সংঘাত ও শাসন পরিবর্তনের পর এই অভিযান প্রমাণ করছে—নতুন শাসন শুধু ক্ষমতা দখলেই নয়, পুরোনো শোষণ ও অপরাধের শেকড় উপড়ে ফেলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুরাদনগরে বাড়ি ঘেরাও করে মা-ছেলেসহ ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা

যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার নারীরা সব ক্ষেত্রে সরাসরি মামলা করতে পারবেন না

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে যাচ্ছে ভারত: পেন্টাগন

চাচাকে বিয়ে করতে না পেরে ৪৫ দিনের মাথায় স্বামীকে খুন করলেন নববধূ

ফরিদগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত