Ajker Patrika

ফেসবুকে ঘুরছে নিহত এক ইরানি কবি পারনিয়ার কবিতা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৬ জুন ২০২৫, ০০: ০৬
পারনিয়া আব্বাসি। ছবি: এক্স
পারনিয়া আব্বাসি। ছবি: এক্স

মাত্র ২৩ বছর বয়সে পারনিয়া আব্বাসি হয়ে উঠেছিলেন ইরানের উদীয়মান কবি। তবে পেশায় ছিলেন ইংরেজি শিক্ষিকা। রাজধানী তেহরানের সত্তারখানপাড়ার যে আবাসিক কমপ্লেক্সে পারনিয়া থাকতেন, গত শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলি বোমা এসে পড়ে সেখানেই। পরে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে বের করে আনা হয় পারনিয়ার নিথর দেহ।

শুধু পারনিয়াই নন, সেদিন ইসরায়েলি বোমার আঘাতে তাঁর পুরো পরিবার নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তাঁর বাবা পারভিজ আব্বাসি ছিলেন একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক; মা মাসুমেহ শাহরিয়ারি ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার, আর ছোট ভাই পাহরাম আব্বাসি পড়তেন বিশ্ববিদ্যালয়ে।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পারনিয়া আব্বাসি সমসাময়িক ইরানি কবিদের মধ্যে অন্যতম উজ্জ্বল কণ্ঠ হিসেবে বিবেচিত ছিলেন। তাঁর লেখা গভীর ও আবেগঘন কবিতাগুলো ইরানের সাহিত্যজগতে প্রশংসিত হয়েছিল। তাঁর সবচেয়ে আলোচিত কবিতাটির শিরোনাম বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘নিভে যাওয়া নক্ষত্র’। এটি প্রকাশিত হয়েছিল ভজন-ই-দুনিয়া সাহিত্য পত্রিকার একটি বিশেষ সংখ্যায়। মূলত এই সংখ্যায় জেনারেশন জেড-এর কবিদের নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

পত্রিকাটিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পারনিয়া বলেছিলেন, ‘আমার সঙ্গে যা কিছু ঘটে, আমি চেষ্টা করি সেগুলোকে লেখায় ধরতে—সেই মুহূর্তের অনুভূতিকে কবিতায় রূপ দিতে।’

পারনিয়ার লেখা ‘নিভে যাওয়া নক্ষত্র’ কবিতাটি যেন তাঁর জীবনের নামান্তর হয়ে গেছে। ফেসবুকে শত শত মানুষ কবিতাটি পোস্ট করছেন। কবিতাটির কয়েকটি লাইন এমন—

‘তুমি আর আমি

একদিন শেষ হয়ে যাব

কোথাও, কোনোখানে

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর কবিতা

চুপ হয়ে যাবে।’

কবিতার পাশাপাশি পারনিয়া আব্বাসি পেশাগতভাবে ইংরেজি শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করতেন এবং ব্যাংক মেল্লির প্রধান ব্রাঞ্চে কর্মরত ছিলেন। তিনি কাজভিন আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি অনুবাদ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর করতে ভর্তি হলেও কাজের জন্য তা মুলতবি রেখেছিলেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই বিমান হামলার লক্ষ্য ছিলেন ড. আবদুলহামিদ মিনুশেহর। তিনি ইরানের একজন পরমাণুবিজ্ঞানী ও বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। একই ভবনে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন পারনিয়া আব্বাসি।

পারনিয়াকে বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীরা স্মরণ করছেন ‘জীবন ও কবিতায় পরিপূর্ণ’ একজন মানুষ হিসেবে। তাঁর মৃত্যু ইরানের সাহিত্য ও সংস্কৃতি মহলে গভীর শোক আর ক্ষোভের ঢেউ তুলেছে। একদিকে যেমন বিজ্ঞানীদের মৃত্যুকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে দেখা হচ্ছে, তেমনি নিরীহ নাগরিক ও উদীয়মান শিল্পীদের প্রাণহানিও জাতীয় শোকে রূপ নিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত