আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাবার কোলে হাসছে ছোট্ট মোহাম্মদ। প্রায় ১৬ মাস আগে, ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত মায়ের নিথর দেহের পাশে বসে কাঁদছিল ১৩ মাস বয়সী এই শিশু। আশ্রয় নেওয়া স্কুলের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে সেদিন আরও কত মানুষ যে প্রাণ হারিয়েছিল, আহত হয়েছিল তার ইয়ত্তা নেই। সেই ভয়াবহ দিনের বিশৃঙ্খলার মধ্যে, মানুষ দিগ্বিদিক পালাচ্ছিল, সেই থেকে হারিয়ে যায় ছোট্ট মোহাম্মদ।
তার বাবা, তারেক আবু জাবাল, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তন্ন তন্ন করে খুঁজেছেন ছেলেকে। অথচ তিনি জানতেনই না, অন্য একজন মানুষ, যিনি একই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তিনিও তারেকের খোঁজ করছিলেন!
ছোট্ট অতিথি
রাসেম নাবহান এবং তাঁর পরিবারও বাস্তুচ্যুত হয়ে উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকার আল-রাফেই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে ইসরায়েলি বোমার আঘাতে কেঁপে ওঠে স্কুলটি। ৪১ বছর বয়সী রাসেম বলেন, ‘আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম, শিশুরা চিৎকার করছিল। কিছুক্ষণ পরই কোয়াডকপ্টার উড়তে শুরু করে এবং সবাইকে অবিলম্বে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। চারপাশে তখন মুহুর্মুহু গুলির শব্দ।’
রাসেম তখন তাঁর স্ত্রী ও সাত সন্তানকে নিয়ে অন্য নারী ও শিশুদের সঙ্গে স্কুল থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নেন। এরপর তিনি বোমা হামলায় বিধ্বস্ত শ্রেণিকক্ষে জ্বলতে থাকা আগুন নেভাতে ছুটে যান। কেউ জীবিত আছে কিনা খোঁজার চেষ্টা করেন।
রাসেম বলেন, ‘দেয়ালগুলোতে রক্তের দাগ। আহত ও নিহতদের মাঝে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল শরীরের বিভিন্ন অংশ। ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়!’
তিনি বলেন, ‘সেই ভয়াবহ দৃশ্যের মধ্যে আমি একটি শিশুকে চিৎকার করে কাঁদতে দেখলাম। তার পাশে পড়ে ছিল এক নারীর দেহ–মাথা ও পেট ছিন্নভিন্ন, সারা শরীর রক্তে ভেজা। আমার মনে হয় তিনিই ছিলেন শিশুটির মা।’
কোনো কিছু না ভেবে রাসেম শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে দৌড়াতে শুরু করলেন। ‘শিশুর মুখ লাল হয়ে গিয়েছিল, কান্নায় তার দম প্রায় বন্ধ হয়ে আসছিল।’ বলেন রাসেম।
রাসেম বলেন, ‘আমি আশপাশে থাকা লোকজনকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলাম: আপনারা কি এই শিশুকে চেনেন? তার মা মারা গেছে। কিন্তু কেউ চিনতে পারলেন না। এটা অবিশ্বাস্য ছিল... মনে হচ্ছিল যেন কেয়ামতের দিন, সবাই সন্তানদের আঁকড়ে ধরে পালাচ্ছে।’

ততক্ষণে ইসরায়েলি ট্যাংক স্কুলটি ঘিরে ফেলেছে, সবাইকে হেঁটে দক্ষিণে যেতে বাধ্য করে তারা। রাসেম শিশুটিকে কোলে নিয়ে হাঁটতে থাকেন। তাঁর স্ত্রী রাস্তার পাশে সন্তানদের নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে শিশুটি দিলাম এবং বললাম, আমি তাকে স্কুলে তার মৃত মায়ের পাশে পেয়েছি।’
৩৪ বছর বয়সী রাসেমের স্ত্রী ফাওয়াহ নাবহান শিশুটিকে কোলে নিলেন। তাঁদের বড় মেয়েরা তাকে কোলে নেওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে।
ফাওয়াহ বলেন, ‘যখন আমরা এই ছোট্ট অতিথিকে স্বাগত জানালাম, এক মুহূর্তের জন্য ভয় উধাও হয়ে গেল! তার মুখটা ছিল খুবই সুন্দর। আমি দেখার সঙ্গে সঙ্গে ওর প্রতি গভীর টান অনুভব করলাম।’
তাঁরা শিশুটির নাম রাখেন হামুদ, যা মোহাম্মদ ও আহমেদ নামের ছোট রূপ। ফিলিস্তিনে দুটি নামই বেশ জনপ্রিয়। তাঁরা শিশুটিকে নিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নেৎসারিম চেকপয়েন্ট পার হয়ে রশিদ স্ট্রিটের দিকে হেঁটে যান।
রাসেম, ফাওয়াহ এবং তাঁদের দুই বড় মেয়ে, ১৯ বছর বয়সী ইসলাম ও ১৮ বছর বয়সী আমিনা পালা করে শিশুটিকে কোলে নেন।
ফাওয়াহ বলেন, ‘সে আমাদের কোলে ঘুমিয়ে পড়ত আবার জেগে উঠত। অন্য শিশুদের মতোই চারপাশে কী ঘটছে সে সম্পর্কে সে সম্পূর্ণ বেখেয়াল।’
পরিবারটি জানত না শিশুটির বয়স কত, তবে তার আকার ও ওজন দেখে তারা অনুমান করেছিলেন, তার বয়স সাত থেকে নয় মাস হবে।
ফাওয়াহ আরও বলেন, ‘আমরা তাকে আগে স্কুলে দেখিনি। তার আসল বয়স বা কখন তার জন্ম হয়েছিল সে সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না।’
পরিবারটি হেঁটে মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহে পৌঁছায়, সেখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয় এবং পরে খান ইউনিসের দক্ষিণে যায়। সেখানে আশ্রয় শিবির বানানো আরেকটি স্কুল খালি আছে বলে তাঁরা শুনেছিলেন।
ফাওয়াহ বলেন, ‘ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, আমার মনে হয়েছিল তাঁবুর চেয়ে স্কুল ভালো। অন্তত আমাদের মাথার ওপর একটি কংক্রিটের ছাদ তো থাকবে!’
এই পরিবারের বাস্তুচ্যুতির গল্প দীর্ঘ এবং জটিল। তাঁরা স্কুল থেকে উদ্বাস্তু শিবির, খোলা আকাশের নিচে ঘুমানো থেকে শুরু করে মাসের পর মাস তাঁবুতে কাটিয়েছেন। এসব কিছুর মধ্যে, রাসেম ও ফাওয়াহ শিশুটিকে উষ্ণতা ও আনন্দের উৎস হিসেবে দেখেছিলেন।
রাসেম স্মরণ করেন, ‘প্রথমদিকে সে চুপচাপ থাকত, কখনোই হাসত না, আমরা যতই চেষ্টা করি না কেন। প্রায় ৫০ দিন সে এমনই ছিল–যেন সে মাকে খুঁজছে এবং ভাবছে আমরা কারা। কিন্তু ধীরে ধীরে সে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। সে আমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। আমরাও তাকে ভালোবেসে ফেলি।’
রাসেম পরিবারের বাস্তুচ্যুতির পুরো সময় জুড়ে, ফাওয়াহ, ইসলাম ও আমিনা শিশুটির যত্ন নেন। কিন্তু যখন তাকে খাওয়ানোর সময় আসত, তখন ফাওয়াহ নিজেই তা করতেন।
তবে ইসরায়েলের গাজায় চালানো নির্বিচার হামলার মধ্যে একটি শিশুর যত্ন নেওয়া অনেক বড় আর্থিক চাপ। কারণ ফর্মুলা দুধ, ডায়াপার এবং পুষ্টিকর খাবার পাওয়াই কঠিন। পাওয়া গেলেও দাম আকাশছোঁয়া।
ফাওয়াহ বলেন, ‘আমরা যখন দক্ষিণে পৌঁছালাম, তখন ফর্মুলা ও একটি প্যাসিফায়ার কিনেছিলাম, কিন্তু সে মুখে নেয়নি। আমার মনে হয় তার মা তাকে বুকের দুধ খাওয়াতেন। একদিক থেকে, এটা স্বস্তির ছিল কারণ ফর্মুলা খুব দামি ছিল। পরিবর্তে, আমি তাকে ডাল, মটরশুঁটি, ভাত দিতাম। আমরা যা খেতাম, সেও তাই খেত।;
‘সে কলা খুব ভালোবাসত। আমরা মাত্র দুটি কিনতে পারতাম–একটি তার জন্য এবং একটি আমার চার বছর বয়সী ছেলে আবদুল্লাহর জন্য।’ যোগ করেন ফাওয়াহ।
ডায়াপার রেশনিং করতে হতো কারণ দাম আকাশছোঁয়া। প্রতিটি ডায়াপার ১০ শেকেল (প্রায় ২.৭০ ডলার) পর্যন্ত পৌঁছেছিল। ফাওয়াহ ব্যাখ্যা করেন, ‘আমি রাতে তাকে একটি ডায়াপার পরিয়ে দিতাম। দিনের বেলা সুতির কাপড় ব্যবহার করতাম। সেটি ঘন ঘন পরিবর্তন করতাম।’

আশীর্বাদ
পরিবারটি যখন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাচ্ছিল, তখন শিশুটি সবার কাছে সুপরিচিত ও আদরের পাত্র হয়ে ওঠে। রাসেম বলেন, শিশুটি তাঁর পরিবারের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনে।
হামুদ নাবহানদের মতো দেখতে ছিল না। লোকেরা রাসেম ও ফাওয়াহকে শিশুটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করত। যখন তাঁরা তার গল্প শুনতেন, তাঁদের খুব বিগলিত ও আপ্লুত হতেন। শিশুটিকে সবাই সাধ্যমতো ছোটখাটো উপহার দিতেন।
ফাওয়াহ হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পের প্রতিবেশীরা শুধু তার জন্য খাবারের থালা পাঠাত। তারা বলত, দেখবেন, সে যেন অবশ্যই এটা খায়।’
ফাওয়াহ শিশুটির দিকে তাকিয়ে নিচু স্বরে বলেন, ‘সে আমার স্বামীকে বাবা এবং আমাকে মা ডাকে। সে আমার কোলে ঘুমায়, যখনই আরামের প্রয়োজন হয় তখনই সরাসরি আমার কাছে ছুটে আসে।’
তিনি বলেন, ‘আমার চার বছর বয়সী আবদুল্লাহ যখনই দেখত আমি বাচ্চাটির দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছি, তখনই সে খুব ঈর্ষান্বিত হয়ে কাঁদত!’
সব মিলিয়ে, দম্পতির অন্য সন্তানেরা–মোহাম্মদ (২০), ইসলাম (১৯), আমিনা (১৮), মারিয়াম (১২), নূর আল-হুদা (১০), মুস্তাফা (৯) এবং আবদুল্লাহ (৪) –শিশুটিকে তাদের নিজেদের একজন হিসেবে গ্রহণ করেছিল।
বিভিন্ন সংস্থা, এতিম স্পনসরশিপ প্রোগ্রাম এবং এমনকি দত্তক নিতে ইচ্ছুক অন্যান্য পরিবারের কাছ থেকে অসংখ্য প্রস্তাব আসা সত্ত্বেও, রাসেম সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
রাসেম বলেন, ‘সে আমার আট নম্বর সন্তান। আমি তাকে গভীরভাবে ভালোবাসি। আমি তাকে আমার কাছ থেকে কেউ কেড়ে নেবে এটা ভাবতেই পারি না। আমি সব সময় সরাসরি বলেছি, একমাত্র তখনই আমি তাকে যেতে দেব যদি আমি তার আসল পরিবারকে খুঁজে পাই।’
এরপর, চাপা স্বরে রাসেম বলেন, ‘কিন্তু আমার অন্তরে, আমি সব দোয়া করতাম যেন আমি তাদের খুঁজে না পাই! আমি তার পরিবারের খোঁজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আমরা তার প্রতি খুব বেশি অনুরক্ত হয়ে পড়েছিলাম।’
এক পিতার জন্য অনুসন্ধান
যখন রাসেম কথা বলছিলেন, তখন ৩৫ বছর বয়সী মোহাম্মদের বাবা তারেক পাশে বসে তাঁর ছোট ছেলের দিকে তাকিয়ে হাসছিলেন। তাঁর তিন সন্তান–ওমর (১৪), তোলায় (৯) এবং মোহাম্মদ (বর্তমানে ২৬ মাস)। নিখোঁজ সন্তানের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেছেন তারেক।
তারেক স্মরণ করেন, ‘যেদিন আল-রাফেই স্কুলে বোমা হামলা হয়, সেদিন আমার স্ত্রী ও তিন সন্তান একটি শ্রেণিকক্ষে ছিল। বিমান হামলার সময় আমি স্কুলের মাঠে ছিলাম। আমি চিৎকার করতে করতে তাদের দিকে ছুটে যাই।’
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আল-রাফেই ও পাশের স্কুলটিতে বোমা বর্ষণ করেছিল। ‘সেই হামলায় আমার স্ত্রী, আমার ভাগনে এবং আরও ছয়জন নিহত হয়–চোখের পলকে আটটি প্রাণ ঝরে যায়, বলেন তারেক।
তিনি বলেন, ‘যখন আমি আমাদের শ্রেণিকক্ষটিতে পৌঁছালাম, তখন আমি ওমর ও তোলায়কে আহত অবস্থায় দেখলাম। ওমরের পিঠে স্প্লিন্টার লেগেছিল এবং আমার মেয়ের পেটে আঘাত লেগেছিল। তারপর আমি আমার স্ত্রীকে দেখলাম... তার শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল।’
বলতে বলতে তারেকের কণ্ঠ ধরে আসে। কোনো রকম বলেন, ‘আমি ভেঙে পড়ি। কিন্তু কোনোমতে নিজেকে সামলে নিয়ে অন্যদের সঙ্গে তার দেহ সরিয়ে নিতে সাহায্য করি।’
তারেকের স্ত্রী, ইমান আবু জাবালের বয়স ছিল ৩৩ বছর। আর তোলায় তিন মাস ধরে পেটে স্প্লিন্টার বহন করেছিল।
তারেক বলেন, ‘শোক, আহত সন্তানদের জন্য ভয়, চিৎকার, তাড়াহুড়ো করে সরিয়ে নেওয়া, মাথার ওপর চক্কর দেওয়া সেনাবাহিনীর ড্রোন... আতঙ্কিত হয়ে, আমি যখন আমার ভাইবোনদের বের করছিলাম তখন মোহাম্মদকে সঙ্গে নিতে ভুলে গিয়েছিলাম।’
যখন তিনি মোহাম্মদের জন্য ফিরে যান, তখন আর তাকে খুঁজে পাননি। তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে জিজ্ঞাসা করতে শুরু করলাম। কেউ কেউ আমাকে বলেছিল সে মারা গেছে। অন্যরা বলেছিল কেউ তাকে নিয়ে গেছে। গল্পগুলো পাল্টাতে থাকে। আমি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমি ভিড়ের মধ্যে খুঁজেছিলাম, কিন্তু সবাই দৌড়াচ্ছিল, চিৎকার করছিল, তাদের সন্তানদের ধরে পালাচ্ছিল।’
তারেক কয়েকজন লোকের সঙ্গে স্কুলে ফিরে যান বোমা হামলায় নিহতদের কবর দেওয়ার জন্য। তারেক স্মরণ করেন, ‘আমরা আমার স্ত্রীর দেহ একটি চাদরে মুড়ে তিন ঘণ্টা ধরে একটি শ্রেণিকক্ষে অপেক্ষা করেছিলাম। উঠানে তাকে কবর দেওয়ার জন্য বাইরে যেতে পারিনি। বোমাবর্ষণ ও গুলিবর্ষণ অবিরাম ছিল, কিন্তু আমি যেভাবেই হোক আমার স্ত্রীকে কবর দিতে চেয়েছিলাম।’
যারা স্কুলে ছিলেন তাদের মধ্যে একজন সার্জন ছিলেন। তিনি তারেকের সন্তানদেরসহ আহতদের সাধ্যমতো চিকিৎসা করেছিলেন। তারেক বলেন, ‘আমার ভাগনের প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। একজন যুবক তাকে স্কুল থেকে বের করে জাবালিয়ার আল-আওদা হাসপাতালে হেঁটে যেতে সাহায্য করেছিল, কিন্তু সে গুরুতর অবস্থায় সেখানে পৌঁছে মারা যায়।’
তারেক এবং শিশুরা রাতে স্কুলে অন্যদের সঙ্গে ছিলেন। মূলত প্রিয়জনদের কবর দেওয়ার জন্য লোকজন ঝুঁকি নিয়ে সেখানে ছিলেন। সকালে তাঁরা স্কুলের দেয়ালের একটি ফাঁক দিয়ে লুকিয়ে বেরিয়ে যান।
বাচ্চাদের নামিয়ে দেওয়ার পর, তারেক সারা দিন জাবালিয়ার হাসপাতালগুলোতে মোহাম্মদের খোঁজ করেন। এরপর বিভিন্ন জায়গায় যেখানে বাস্তুচ্যুত লোকেরা জড়ো হয়েছিল সেখানে খোঁজ করেন। কেউই খোঁজ দিতে পারেনি। কিন্তু তারেককে তাঁর অন্যান্য সন্তানদের দিকেও মনোযোগ দিতে হয়েছিল। একে তো সন্তানেরা চোখের সামনে মায়ের মৃত্যু দেখে ভয়ানক মানসিক আঘাত পেয়েছে, তার ওপর খাবার, ওষুধ ও যত্নের প্রয়োজন ছিল তাদের।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে, উত্তর গাজা দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে, তাই তারেক শিশুদের তীব্র ক্ষুধা থেকে বাঁচাতে দক্ষিণে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রাফাহে পৌঁছানোর পর তারেক আবার মোহাম্মদের খোঁজ শুরু করেন। আত্মীয়, স্বজন, পরিচিতজন, প্রতিবেশী, স্কুল, আশ্রয়শিবির তন্ন তন্ন করে খোঁজেন তিনি।
২৭ জানুয়ারি, যখন বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, তখন আবু জাবাল এবং নাবহান পরিবার হেঁটে জাবালিয়ায় ফিরে আসে।
তারেক সকাল ৮টার মধ্যে জাবালিয়ায় তাঁদের বাড়ির ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলাম। তাঁরা ভোর ৪টায় রওনা হয়েছিলেন। আর রাসেম ও ফাওয়াহর পরিবার একটু পরে রওনা হয়। পথে তাঁদের একটি সাক্ষাৎকারের জন্য থামানো হয়। সাংবাদিক তাঁকে শিশুটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। রাসেম বিস্তারিত বলেন। ওই সাংবাদিকই বিষয়টি সম্প্রচার করেন। পরিবারটি অবশেষে জাবালিয়ায় রাসেমের বাবা-মায়ের বাড়িতে পৌঁছায়।
পরের দিন সকালে, তারেক টিভি সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি দেখেন। তিনি বলেন, ‘ওর আচার আচরণ একটুও বদলায়নি, যদিও একটু বড় হয়েছে। আমি ধ্বংসস্তূপের ওপর চিৎকার করতে শুরু করলাম: আমার ছেলে বেঁচে আছে! আমার ছেলে মোহাম্মদ বেঁচে আছে!’
পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে এসে জিজ্ঞেস করে কী হয়েছে। তখন সবাই মিলে টিভি সাক্ষাৎকারটি দেখেন। পরে খোঁজখবর নিয়ে, তারেক জানতে পারেন রাসেমের পরিবার কোথায় আছে। দ্রুত সেখানে ছুটে যান।
তারেক বলেন, ‘আমি রাসেমকে পরিচয় দিলাম। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই আমাকে চিনতে পারলেন। মোহাম্মদ আমাকে চিনতে পারেনি। সে কেঁদে দিয়েছিল।’
তখন নাবহান পরিবার বেশ দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিল। হামুদ, যার নাম তারা এখন জানতে পারছে মোহাম্মদ, তার পরিবারকে খুঁজে পাওয়ায় তারা খুশি। কিন্তু পরিবারের সদস্য হয়ে ওঠা শিশুটি চলে যাবে এই ভেবে তারা কষ্ট পাচ্ছিল।
রাসেম বলেন, সৌভাগ্যবশত, মোহাম্মদের পরিবার ফিরে পেল। ফাওয়াহর চোখে তখনো ছলছল করছিল। ফাওয়াহ বলেন, ‘হামুদের চলে যাওয়ার দুঃখে আমি সারা রাত কেঁদেছি।’
হামুদ ফাওয়াহকে ‘মা’ বলে ডাকে। হামুদকে কাছে টেনে নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েরা পুরো সপ্তাহ ধরে কেঁদেছে। বাড়িটা যেন শোকের বাড়িতে পরিণত হয়েছিল। হামুদ আমাদের পরিবারের অংশ হয়ে গিয়েছিল।’
ফাওয়াহ বলেন, ‘আমি আমার স্বামী ও তারেককে বলেছি, হামুদকে যেন মাঝে মাঝে আমাদের কাছে আনা হয়। সে আমাদের ছেলের মতো।’ ফাওয়াহ হেসে বলেন, ‘সৌভাগ্যবশত, তারা কাছেই থাকে, এবং আমার বাচ্চারা সব সময় তাকে আনতে যায়।’
তারেক বলেন, ‘আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তারা তাকে তাদের নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেছে... সে এমন একটি পরিবারের সঙ্গে ছিল যারা তাকে সেই মায়ের ভালোবাসা ও যত্ন দিয়েছে যাকে সে হারিয়েছে।’ তারেক আফসোস করেন বলেন, ‘দেখেন, মোহাম্মদ যখন রাসেম, তাঁর স্ত্রী ও তাঁদের পরিবারের লোকজনকে দেখে, সে আমাকে একদম ভুলে যায়!’

বাবার কোলে হাসছে ছোট্ট মোহাম্মদ। প্রায় ১৬ মাস আগে, ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত মায়ের নিথর দেহের পাশে বসে কাঁদছিল ১৩ মাস বয়সী এই শিশু। আশ্রয় নেওয়া স্কুলের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে সেদিন আরও কত মানুষ যে প্রাণ হারিয়েছিল, আহত হয়েছিল তার ইয়ত্তা নেই। সেই ভয়াবহ দিনের বিশৃঙ্খলার মধ্যে, মানুষ দিগ্বিদিক পালাচ্ছিল, সেই থেকে হারিয়ে যায় ছোট্ট মোহাম্মদ।
তার বাবা, তারেক আবু জাবাল, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তন্ন তন্ন করে খুঁজেছেন ছেলেকে। অথচ তিনি জানতেনই না, অন্য একজন মানুষ, যিনি একই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তিনিও তারেকের খোঁজ করছিলেন!
ছোট্ট অতিথি
রাসেম নাবহান এবং তাঁর পরিবারও বাস্তুচ্যুত হয়ে উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকার আল-রাফেই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে ইসরায়েলি বোমার আঘাতে কেঁপে ওঠে স্কুলটি। ৪১ বছর বয়সী রাসেম বলেন, ‘আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম, শিশুরা চিৎকার করছিল। কিছুক্ষণ পরই কোয়াডকপ্টার উড়তে শুরু করে এবং সবাইকে অবিলম্বে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। চারপাশে তখন মুহুর্মুহু গুলির শব্দ।’
রাসেম তখন তাঁর স্ত্রী ও সাত সন্তানকে নিয়ে অন্য নারী ও শিশুদের সঙ্গে স্কুল থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নেন। এরপর তিনি বোমা হামলায় বিধ্বস্ত শ্রেণিকক্ষে জ্বলতে থাকা আগুন নেভাতে ছুটে যান। কেউ জীবিত আছে কিনা খোঁজার চেষ্টা করেন।
রাসেম বলেন, ‘দেয়ালগুলোতে রক্তের দাগ। আহত ও নিহতদের মাঝে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল শরীরের বিভিন্ন অংশ। ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়!’
তিনি বলেন, ‘সেই ভয়াবহ দৃশ্যের মধ্যে আমি একটি শিশুকে চিৎকার করে কাঁদতে দেখলাম। তার পাশে পড়ে ছিল এক নারীর দেহ–মাথা ও পেট ছিন্নভিন্ন, সারা শরীর রক্তে ভেজা। আমার মনে হয় তিনিই ছিলেন শিশুটির মা।’
কোনো কিছু না ভেবে রাসেম শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে দৌড়াতে শুরু করলেন। ‘শিশুর মুখ লাল হয়ে গিয়েছিল, কান্নায় তার দম প্রায় বন্ধ হয়ে আসছিল।’ বলেন রাসেম।
রাসেম বলেন, ‘আমি আশপাশে থাকা লোকজনকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলাম: আপনারা কি এই শিশুকে চেনেন? তার মা মারা গেছে। কিন্তু কেউ চিনতে পারলেন না। এটা অবিশ্বাস্য ছিল... মনে হচ্ছিল যেন কেয়ামতের দিন, সবাই সন্তানদের আঁকড়ে ধরে পালাচ্ছে।’

ততক্ষণে ইসরায়েলি ট্যাংক স্কুলটি ঘিরে ফেলেছে, সবাইকে হেঁটে দক্ষিণে যেতে বাধ্য করে তারা। রাসেম শিশুটিকে কোলে নিয়ে হাঁটতে থাকেন। তাঁর স্ত্রী রাস্তার পাশে সন্তানদের নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে শিশুটি দিলাম এবং বললাম, আমি তাকে স্কুলে তার মৃত মায়ের পাশে পেয়েছি।’
৩৪ বছর বয়সী রাসেমের স্ত্রী ফাওয়াহ নাবহান শিশুটিকে কোলে নিলেন। তাঁদের বড় মেয়েরা তাকে কোলে নেওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে।
ফাওয়াহ বলেন, ‘যখন আমরা এই ছোট্ট অতিথিকে স্বাগত জানালাম, এক মুহূর্তের জন্য ভয় উধাও হয়ে গেল! তার মুখটা ছিল খুবই সুন্দর। আমি দেখার সঙ্গে সঙ্গে ওর প্রতি গভীর টান অনুভব করলাম।’
তাঁরা শিশুটির নাম রাখেন হামুদ, যা মোহাম্মদ ও আহমেদ নামের ছোট রূপ। ফিলিস্তিনে দুটি নামই বেশ জনপ্রিয়। তাঁরা শিশুটিকে নিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নেৎসারিম চেকপয়েন্ট পার হয়ে রশিদ স্ট্রিটের দিকে হেঁটে যান।
রাসেম, ফাওয়াহ এবং তাঁদের দুই বড় মেয়ে, ১৯ বছর বয়সী ইসলাম ও ১৮ বছর বয়সী আমিনা পালা করে শিশুটিকে কোলে নেন।
ফাওয়াহ বলেন, ‘সে আমাদের কোলে ঘুমিয়ে পড়ত আবার জেগে উঠত। অন্য শিশুদের মতোই চারপাশে কী ঘটছে সে সম্পর্কে সে সম্পূর্ণ বেখেয়াল।’
পরিবারটি জানত না শিশুটির বয়স কত, তবে তার আকার ও ওজন দেখে তারা অনুমান করেছিলেন, তার বয়স সাত থেকে নয় মাস হবে।
ফাওয়াহ আরও বলেন, ‘আমরা তাকে আগে স্কুলে দেখিনি। তার আসল বয়স বা কখন তার জন্ম হয়েছিল সে সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না।’
পরিবারটি হেঁটে মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহে পৌঁছায়, সেখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয় এবং পরে খান ইউনিসের দক্ষিণে যায়। সেখানে আশ্রয় শিবির বানানো আরেকটি স্কুল খালি আছে বলে তাঁরা শুনেছিলেন।
ফাওয়াহ বলেন, ‘ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, আমার মনে হয়েছিল তাঁবুর চেয়ে স্কুল ভালো। অন্তত আমাদের মাথার ওপর একটি কংক্রিটের ছাদ তো থাকবে!’
এই পরিবারের বাস্তুচ্যুতির গল্প দীর্ঘ এবং জটিল। তাঁরা স্কুল থেকে উদ্বাস্তু শিবির, খোলা আকাশের নিচে ঘুমানো থেকে শুরু করে মাসের পর মাস তাঁবুতে কাটিয়েছেন। এসব কিছুর মধ্যে, রাসেম ও ফাওয়াহ শিশুটিকে উষ্ণতা ও আনন্দের উৎস হিসেবে দেখেছিলেন।
রাসেম স্মরণ করেন, ‘প্রথমদিকে সে চুপচাপ থাকত, কখনোই হাসত না, আমরা যতই চেষ্টা করি না কেন। প্রায় ৫০ দিন সে এমনই ছিল–যেন সে মাকে খুঁজছে এবং ভাবছে আমরা কারা। কিন্তু ধীরে ধীরে সে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। সে আমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। আমরাও তাকে ভালোবেসে ফেলি।’
রাসেম পরিবারের বাস্তুচ্যুতির পুরো সময় জুড়ে, ফাওয়াহ, ইসলাম ও আমিনা শিশুটির যত্ন নেন। কিন্তু যখন তাকে খাওয়ানোর সময় আসত, তখন ফাওয়াহ নিজেই তা করতেন।
তবে ইসরায়েলের গাজায় চালানো নির্বিচার হামলার মধ্যে একটি শিশুর যত্ন নেওয়া অনেক বড় আর্থিক চাপ। কারণ ফর্মুলা দুধ, ডায়াপার এবং পুষ্টিকর খাবার পাওয়াই কঠিন। পাওয়া গেলেও দাম আকাশছোঁয়া।
ফাওয়াহ বলেন, ‘আমরা যখন দক্ষিণে পৌঁছালাম, তখন ফর্মুলা ও একটি প্যাসিফায়ার কিনেছিলাম, কিন্তু সে মুখে নেয়নি। আমার মনে হয় তার মা তাকে বুকের দুধ খাওয়াতেন। একদিক থেকে, এটা স্বস্তির ছিল কারণ ফর্মুলা খুব দামি ছিল। পরিবর্তে, আমি তাকে ডাল, মটরশুঁটি, ভাত দিতাম। আমরা যা খেতাম, সেও তাই খেত।;
‘সে কলা খুব ভালোবাসত। আমরা মাত্র দুটি কিনতে পারতাম–একটি তার জন্য এবং একটি আমার চার বছর বয়সী ছেলে আবদুল্লাহর জন্য।’ যোগ করেন ফাওয়াহ।
ডায়াপার রেশনিং করতে হতো কারণ দাম আকাশছোঁয়া। প্রতিটি ডায়াপার ১০ শেকেল (প্রায় ২.৭০ ডলার) পর্যন্ত পৌঁছেছিল। ফাওয়াহ ব্যাখ্যা করেন, ‘আমি রাতে তাকে একটি ডায়াপার পরিয়ে দিতাম। দিনের বেলা সুতির কাপড় ব্যবহার করতাম। সেটি ঘন ঘন পরিবর্তন করতাম।’

আশীর্বাদ
পরিবারটি যখন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাচ্ছিল, তখন শিশুটি সবার কাছে সুপরিচিত ও আদরের পাত্র হয়ে ওঠে। রাসেম বলেন, শিশুটি তাঁর পরিবারের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনে।
হামুদ নাবহানদের মতো দেখতে ছিল না। লোকেরা রাসেম ও ফাওয়াহকে শিশুটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করত। যখন তাঁরা তার গল্প শুনতেন, তাঁদের খুব বিগলিত ও আপ্লুত হতেন। শিশুটিকে সবাই সাধ্যমতো ছোটখাটো উপহার দিতেন।
ফাওয়াহ হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পের প্রতিবেশীরা শুধু তার জন্য খাবারের থালা পাঠাত। তারা বলত, দেখবেন, সে যেন অবশ্যই এটা খায়।’
ফাওয়াহ শিশুটির দিকে তাকিয়ে নিচু স্বরে বলেন, ‘সে আমার স্বামীকে বাবা এবং আমাকে মা ডাকে। সে আমার কোলে ঘুমায়, যখনই আরামের প্রয়োজন হয় তখনই সরাসরি আমার কাছে ছুটে আসে।’
তিনি বলেন, ‘আমার চার বছর বয়সী আবদুল্লাহ যখনই দেখত আমি বাচ্চাটির দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছি, তখনই সে খুব ঈর্ষান্বিত হয়ে কাঁদত!’
সব মিলিয়ে, দম্পতির অন্য সন্তানেরা–মোহাম্মদ (২০), ইসলাম (১৯), আমিনা (১৮), মারিয়াম (১২), নূর আল-হুদা (১০), মুস্তাফা (৯) এবং আবদুল্লাহ (৪) –শিশুটিকে তাদের নিজেদের একজন হিসেবে গ্রহণ করেছিল।
বিভিন্ন সংস্থা, এতিম স্পনসরশিপ প্রোগ্রাম এবং এমনকি দত্তক নিতে ইচ্ছুক অন্যান্য পরিবারের কাছ থেকে অসংখ্য প্রস্তাব আসা সত্ত্বেও, রাসেম সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
রাসেম বলেন, ‘সে আমার আট নম্বর সন্তান। আমি তাকে গভীরভাবে ভালোবাসি। আমি তাকে আমার কাছ থেকে কেউ কেড়ে নেবে এটা ভাবতেই পারি না। আমি সব সময় সরাসরি বলেছি, একমাত্র তখনই আমি তাকে যেতে দেব যদি আমি তার আসল পরিবারকে খুঁজে পাই।’
এরপর, চাপা স্বরে রাসেম বলেন, ‘কিন্তু আমার অন্তরে, আমি সব দোয়া করতাম যেন আমি তাদের খুঁজে না পাই! আমি তার পরিবারের খোঁজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আমরা তার প্রতি খুব বেশি অনুরক্ত হয়ে পড়েছিলাম।’
এক পিতার জন্য অনুসন্ধান
যখন রাসেম কথা বলছিলেন, তখন ৩৫ বছর বয়সী মোহাম্মদের বাবা তারেক পাশে বসে তাঁর ছোট ছেলের দিকে তাকিয়ে হাসছিলেন। তাঁর তিন সন্তান–ওমর (১৪), তোলায় (৯) এবং মোহাম্মদ (বর্তমানে ২৬ মাস)। নিখোঁজ সন্তানের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেছেন তারেক।
তারেক স্মরণ করেন, ‘যেদিন আল-রাফেই স্কুলে বোমা হামলা হয়, সেদিন আমার স্ত্রী ও তিন সন্তান একটি শ্রেণিকক্ষে ছিল। বিমান হামলার সময় আমি স্কুলের মাঠে ছিলাম। আমি চিৎকার করতে করতে তাদের দিকে ছুটে যাই।’
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আল-রাফেই ও পাশের স্কুলটিতে বোমা বর্ষণ করেছিল। ‘সেই হামলায় আমার স্ত্রী, আমার ভাগনে এবং আরও ছয়জন নিহত হয়–চোখের পলকে আটটি প্রাণ ঝরে যায়, বলেন তারেক।
তিনি বলেন, ‘যখন আমি আমাদের শ্রেণিকক্ষটিতে পৌঁছালাম, তখন আমি ওমর ও তোলায়কে আহত অবস্থায় দেখলাম। ওমরের পিঠে স্প্লিন্টার লেগেছিল এবং আমার মেয়ের পেটে আঘাত লেগেছিল। তারপর আমি আমার স্ত্রীকে দেখলাম... তার শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল।’
বলতে বলতে তারেকের কণ্ঠ ধরে আসে। কোনো রকম বলেন, ‘আমি ভেঙে পড়ি। কিন্তু কোনোমতে নিজেকে সামলে নিয়ে অন্যদের সঙ্গে তার দেহ সরিয়ে নিতে সাহায্য করি।’
তারেকের স্ত্রী, ইমান আবু জাবালের বয়স ছিল ৩৩ বছর। আর তোলায় তিন মাস ধরে পেটে স্প্লিন্টার বহন করেছিল।
তারেক বলেন, ‘শোক, আহত সন্তানদের জন্য ভয়, চিৎকার, তাড়াহুড়ো করে সরিয়ে নেওয়া, মাথার ওপর চক্কর দেওয়া সেনাবাহিনীর ড্রোন... আতঙ্কিত হয়ে, আমি যখন আমার ভাইবোনদের বের করছিলাম তখন মোহাম্মদকে সঙ্গে নিতে ভুলে গিয়েছিলাম।’
যখন তিনি মোহাম্মদের জন্য ফিরে যান, তখন আর তাকে খুঁজে পাননি। তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে জিজ্ঞাসা করতে শুরু করলাম। কেউ কেউ আমাকে বলেছিল সে মারা গেছে। অন্যরা বলেছিল কেউ তাকে নিয়ে গেছে। গল্পগুলো পাল্টাতে থাকে। আমি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমি ভিড়ের মধ্যে খুঁজেছিলাম, কিন্তু সবাই দৌড়াচ্ছিল, চিৎকার করছিল, তাদের সন্তানদের ধরে পালাচ্ছিল।’
তারেক কয়েকজন লোকের সঙ্গে স্কুলে ফিরে যান বোমা হামলায় নিহতদের কবর দেওয়ার জন্য। তারেক স্মরণ করেন, ‘আমরা আমার স্ত্রীর দেহ একটি চাদরে মুড়ে তিন ঘণ্টা ধরে একটি শ্রেণিকক্ষে অপেক্ষা করেছিলাম। উঠানে তাকে কবর দেওয়ার জন্য বাইরে যেতে পারিনি। বোমাবর্ষণ ও গুলিবর্ষণ অবিরাম ছিল, কিন্তু আমি যেভাবেই হোক আমার স্ত্রীকে কবর দিতে চেয়েছিলাম।’
যারা স্কুলে ছিলেন তাদের মধ্যে একজন সার্জন ছিলেন। তিনি তারেকের সন্তানদেরসহ আহতদের সাধ্যমতো চিকিৎসা করেছিলেন। তারেক বলেন, ‘আমার ভাগনের প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। একজন যুবক তাকে স্কুল থেকে বের করে জাবালিয়ার আল-আওদা হাসপাতালে হেঁটে যেতে সাহায্য করেছিল, কিন্তু সে গুরুতর অবস্থায় সেখানে পৌঁছে মারা যায়।’
তারেক এবং শিশুরা রাতে স্কুলে অন্যদের সঙ্গে ছিলেন। মূলত প্রিয়জনদের কবর দেওয়ার জন্য লোকজন ঝুঁকি নিয়ে সেখানে ছিলেন। সকালে তাঁরা স্কুলের দেয়ালের একটি ফাঁক দিয়ে লুকিয়ে বেরিয়ে যান।
বাচ্চাদের নামিয়ে দেওয়ার পর, তারেক সারা দিন জাবালিয়ার হাসপাতালগুলোতে মোহাম্মদের খোঁজ করেন। এরপর বিভিন্ন জায়গায় যেখানে বাস্তুচ্যুত লোকেরা জড়ো হয়েছিল সেখানে খোঁজ করেন। কেউই খোঁজ দিতে পারেনি। কিন্তু তারেককে তাঁর অন্যান্য সন্তানদের দিকেও মনোযোগ দিতে হয়েছিল। একে তো সন্তানেরা চোখের সামনে মায়ের মৃত্যু দেখে ভয়ানক মানসিক আঘাত পেয়েছে, তার ওপর খাবার, ওষুধ ও যত্নের প্রয়োজন ছিল তাদের।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে, উত্তর গাজা দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে, তাই তারেক শিশুদের তীব্র ক্ষুধা থেকে বাঁচাতে দক্ষিণে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রাফাহে পৌঁছানোর পর তারেক আবার মোহাম্মদের খোঁজ শুরু করেন। আত্মীয়, স্বজন, পরিচিতজন, প্রতিবেশী, স্কুল, আশ্রয়শিবির তন্ন তন্ন করে খোঁজেন তিনি।
২৭ জানুয়ারি, যখন বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, তখন আবু জাবাল এবং নাবহান পরিবার হেঁটে জাবালিয়ায় ফিরে আসে।
তারেক সকাল ৮টার মধ্যে জাবালিয়ায় তাঁদের বাড়ির ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলাম। তাঁরা ভোর ৪টায় রওনা হয়েছিলেন। আর রাসেম ও ফাওয়াহর পরিবার একটু পরে রওনা হয়। পথে তাঁদের একটি সাক্ষাৎকারের জন্য থামানো হয়। সাংবাদিক তাঁকে শিশুটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। রাসেম বিস্তারিত বলেন। ওই সাংবাদিকই বিষয়টি সম্প্রচার করেন। পরিবারটি অবশেষে জাবালিয়ায় রাসেমের বাবা-মায়ের বাড়িতে পৌঁছায়।
পরের দিন সকালে, তারেক টিভি সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি দেখেন। তিনি বলেন, ‘ওর আচার আচরণ একটুও বদলায়নি, যদিও একটু বড় হয়েছে। আমি ধ্বংসস্তূপের ওপর চিৎকার করতে শুরু করলাম: আমার ছেলে বেঁচে আছে! আমার ছেলে মোহাম্মদ বেঁচে আছে!’
পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে এসে জিজ্ঞেস করে কী হয়েছে। তখন সবাই মিলে টিভি সাক্ষাৎকারটি দেখেন। পরে খোঁজখবর নিয়ে, তারেক জানতে পারেন রাসেমের পরিবার কোথায় আছে। দ্রুত সেখানে ছুটে যান।
তারেক বলেন, ‘আমি রাসেমকে পরিচয় দিলাম। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই আমাকে চিনতে পারলেন। মোহাম্মদ আমাকে চিনতে পারেনি। সে কেঁদে দিয়েছিল।’
তখন নাবহান পরিবার বেশ দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিল। হামুদ, যার নাম তারা এখন জানতে পারছে মোহাম্মদ, তার পরিবারকে খুঁজে পাওয়ায় তারা খুশি। কিন্তু পরিবারের সদস্য হয়ে ওঠা শিশুটি চলে যাবে এই ভেবে তারা কষ্ট পাচ্ছিল।
রাসেম বলেন, সৌভাগ্যবশত, মোহাম্মদের পরিবার ফিরে পেল। ফাওয়াহর চোখে তখনো ছলছল করছিল। ফাওয়াহ বলেন, ‘হামুদের চলে যাওয়ার দুঃখে আমি সারা রাত কেঁদেছি।’
হামুদ ফাওয়াহকে ‘মা’ বলে ডাকে। হামুদকে কাছে টেনে নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েরা পুরো সপ্তাহ ধরে কেঁদেছে। বাড়িটা যেন শোকের বাড়িতে পরিণত হয়েছিল। হামুদ আমাদের পরিবারের অংশ হয়ে গিয়েছিল।’
ফাওয়াহ বলেন, ‘আমি আমার স্বামী ও তারেককে বলেছি, হামুদকে যেন মাঝে মাঝে আমাদের কাছে আনা হয়। সে আমাদের ছেলের মতো।’ ফাওয়াহ হেসে বলেন, ‘সৌভাগ্যবশত, তারা কাছেই থাকে, এবং আমার বাচ্চারা সব সময় তাকে আনতে যায়।’
তারেক বলেন, ‘আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তারা তাকে তাদের নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেছে... সে এমন একটি পরিবারের সঙ্গে ছিল যারা তাকে সেই মায়ের ভালোবাসা ও যত্ন দিয়েছে যাকে সে হারিয়েছে।’ তারেক আফসোস করেন বলেন, ‘দেখেন, মোহাম্মদ যখন রাসেম, তাঁর স্ত্রী ও তাঁদের পরিবারের লোকজনকে দেখে, সে আমাকে একদম ভুলে যায়!’

দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
৪ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ায় তরুণদের মধ্যে ভয়াবহভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘মলিকিউল’ নামে ওজন কমানোর একটি সস্তা বড়ি। রুশ টিকটকে এই বড়িটি নিয়ে প্রচারণা শুরু হয়েছিল চলতি বছরের শুরুর দিকে। ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, তরুণীরা বলছেন—‘মলিকিউল খাও, খাবারের কথা ভুলে যাও’ বা ‘ওজন কমাও, ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসো না।’
৫ ঘণ্টা আগে
ভারতের রাজস্থানে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে একটি বাসের ধাক্কায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী জয়পুর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে ফালোদি জেলার মাতোদা গ্রামের কাছে ভারত-মালা হাইওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৫ ঘণ্টা আগে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে শুরু হওয়া ‘গোল্ডেন ডোম’ প্রতিরক্ষা প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে ইলন মাস্কের মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স। প্রকল্পটির আওতায় স্পেসএক্স দুই বিলিয়ন ডলার সরকারি অর্থায়ন পেতে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। শনিবার (১ নভেম্বর) এই জাদুঘরের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সরকারি ছুটি পালিত হয়েছে।
গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম সম্পর্কে রোববার (২ নভেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, এটির জন্য ২০০২ সালে মিসর সরকার বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক নকশা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। ওই প্রতিযোগিতায় ১ হাজার ৫৫৬টি প্রস্তাব জমা পড়ে। পরে সবাইকে অবাক করে বিজয়ী হয় ডাবলিনভিত্তিক একটি ছোট আর্কিটেকচার ফার্ম—হেনেগান পেং আর্কিটেক্টস। ওই ফার্মের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রোয়েশিন হেনেগান তখন ভাবতেও পারেননি যে, তাঁর চার সদস্যের ছোট প্রতিষ্ঠান এমন ঐতিহাসিক দায়িত্ব পেতে পারে। তবে এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে শেষ পর্যন্ত সময় লেগেছে ২২ বছর।
মিউজিয়ামটির নির্মাণ পরিকল্পনা প্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল ১৯৯২ সালে। এরপর পেরিয়েছে আরব বসন্তের বিপ্লব, সামরিক অভ্যুত্থান এবং কোভিড-১৯ মহামারির মতো নানা ধাক্কা। তবু টিকে থেকেছে প্রকল্পটি। ২০২৫ সালে এসে অবশেষে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হলো মিসরের এই গর্ব।
এই জাদুঘরকে বলা হচ্ছে ‘প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতার দীর্ঘায়ু ও মহিমার প্রতীক’। ২ লাখ ৫৮ হাজার বর্গফুটজুড়ে বিস্তৃত স্থাপনাটিতে রয়েছে প্রায় এক লাখ নিদর্শন। এর মধ্যে প্রাচীন প্যাপিরাস, টেক্সটাইল, পাত্র, সারকোফাগাস, এমনকি সংরক্ষিত মানব মমিও রয়েছে। সময়ক্রম অনুযায়ী গ্যালারিগুলো সাজানো হয়েছে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে কপটিক যুগ পর্যন্ত—অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ সাল থেকে খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত। সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো তুতেনখামেন গ্যালারি, যেখানে তরুণ রাজা তুতেনখামেনের সমাধি থেকে পাওয়া ৫ হাজার নিদর্শন প্রদর্শিত হচ্ছে।
প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে আছে ৩৬ ফুট উঁচু দ্বিতীয় রামেসিসের মূর্তি, আর বাইরে রয়েছে ৮৭ টন ওজনের এক বিশাল স্তম্ভ। ছাদের ঢাল এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে প্রাকৃতিক আলো পর্যাপ্তভাবে প্রবেশ করতে পারে। নির্মাতা হেনেগান বলেন, ‘প্রাকৃতিক আলোতে এই জাদুঘর যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।’
মিউজিয়ামের মূল অংশটিতে ছয়তলা একটি প্রশস্ত সিঁড়ি দর্শনার্থীদের নিয়ে যায় সময়ের বিপরীতে সাজানো পাথরের ভাস্কর্যের প্রদর্শনীতে। এর চূড়ায় পৌঁছে দর্শনার্থীরা পাবেন এক অনবদ্য দৃশ্য—গিজার মহাপিরামিড কমপ্লেক্সের সরাসরি দৃশ্যপট।
ভবনটির ছাদের ঢাল পিরামিডের সর্বোচ্চ বিন্দুর সমান্তরাল, যেন এটি কখনোই পিরামিডকে ছাপিয়ে না যায়। জাদুঘরের নকশায় ব্যবহৃত জ্যামিতিক রেখা ও স্থান বিন্যাস এমনভাবে সাজানো যে ভবনটি মরুভূমির প্রান্তে একটি নতুন সীমারেখা তৈরি করেছে, অথচ পিরামিডের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখেছে।
দুই দশকের পরিশ্রমে দাঁড়ানো এই স্থাপনা সম্পর্কে হেনেগান বলেন, ‘একটি দীর্ঘ যাত্রার সার্থক পরিণতি। এত সূক্ষ্ম ও ঐতিহাসিক নিদর্শন স্থানান্তরিত করতে সময় লাগবেই। একটু বেশি সময় লাগলেও যদি তা নিখুঁতভাবে করা যায়—তবে সেটাই সবচেয়ে মূল্যবান।’

দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। শনিবার (১ নভেম্বর) এই জাদুঘরের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সরকারি ছুটি পালিত হয়েছে।
গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম সম্পর্কে রোববার (২ নভেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, এটির জন্য ২০০২ সালে মিসর সরকার বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক নকশা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। ওই প্রতিযোগিতায় ১ হাজার ৫৫৬টি প্রস্তাব জমা পড়ে। পরে সবাইকে অবাক করে বিজয়ী হয় ডাবলিনভিত্তিক একটি ছোট আর্কিটেকচার ফার্ম—হেনেগান পেং আর্কিটেক্টস। ওই ফার্মের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রোয়েশিন হেনেগান তখন ভাবতেও পারেননি যে, তাঁর চার সদস্যের ছোট প্রতিষ্ঠান এমন ঐতিহাসিক দায়িত্ব পেতে পারে। তবে এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে শেষ পর্যন্ত সময় লেগেছে ২২ বছর।
মিউজিয়ামটির নির্মাণ পরিকল্পনা প্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল ১৯৯২ সালে। এরপর পেরিয়েছে আরব বসন্তের বিপ্লব, সামরিক অভ্যুত্থান এবং কোভিড-১৯ মহামারির মতো নানা ধাক্কা। তবু টিকে থেকেছে প্রকল্পটি। ২০২৫ সালে এসে অবশেষে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হলো মিসরের এই গর্ব।
এই জাদুঘরকে বলা হচ্ছে ‘প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতার দীর্ঘায়ু ও মহিমার প্রতীক’। ২ লাখ ৫৮ হাজার বর্গফুটজুড়ে বিস্তৃত স্থাপনাটিতে রয়েছে প্রায় এক লাখ নিদর্শন। এর মধ্যে প্রাচীন প্যাপিরাস, টেক্সটাইল, পাত্র, সারকোফাগাস, এমনকি সংরক্ষিত মানব মমিও রয়েছে। সময়ক্রম অনুযায়ী গ্যালারিগুলো সাজানো হয়েছে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে কপটিক যুগ পর্যন্ত—অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ সাল থেকে খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত। সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো তুতেনখামেন গ্যালারি, যেখানে তরুণ রাজা তুতেনখামেনের সমাধি থেকে পাওয়া ৫ হাজার নিদর্শন প্রদর্শিত হচ্ছে।
প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে আছে ৩৬ ফুট উঁচু দ্বিতীয় রামেসিসের মূর্তি, আর বাইরে রয়েছে ৮৭ টন ওজনের এক বিশাল স্তম্ভ। ছাদের ঢাল এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে প্রাকৃতিক আলো পর্যাপ্তভাবে প্রবেশ করতে পারে। নির্মাতা হেনেগান বলেন, ‘প্রাকৃতিক আলোতে এই জাদুঘর যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।’
মিউজিয়ামের মূল অংশটিতে ছয়তলা একটি প্রশস্ত সিঁড়ি দর্শনার্থীদের নিয়ে যায় সময়ের বিপরীতে সাজানো পাথরের ভাস্কর্যের প্রদর্শনীতে। এর চূড়ায় পৌঁছে দর্শনার্থীরা পাবেন এক অনবদ্য দৃশ্য—গিজার মহাপিরামিড কমপ্লেক্সের সরাসরি দৃশ্যপট।
ভবনটির ছাদের ঢাল পিরামিডের সর্বোচ্চ বিন্দুর সমান্তরাল, যেন এটি কখনোই পিরামিডকে ছাপিয়ে না যায়। জাদুঘরের নকশায় ব্যবহৃত জ্যামিতিক রেখা ও স্থান বিন্যাস এমনভাবে সাজানো যে ভবনটি মরুভূমির প্রান্তে একটি নতুন সীমারেখা তৈরি করেছে, অথচ পিরামিডের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখেছে।
দুই দশকের পরিশ্রমে দাঁড়ানো এই স্থাপনা সম্পর্কে হেনেগান বলেন, ‘একটি দীর্ঘ যাত্রার সার্থক পরিণতি। এত সূক্ষ্ম ও ঐতিহাসিক নিদর্শন স্থানান্তরিত করতে সময় লাগবেই। একটু বেশি সময় লাগলেও যদি তা নিখুঁতভাবে করা যায়—তবে সেটাই সবচেয়ে মূল্যবান।’

বাবার কোলে হাসছে ছোট্ট মোহাম্মদ। প্রায় ১৬ মাস আগে, ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত মায়ের নিথর দেহের পাশে বসে কাঁদছিল ১৩ মাস বয়সী এই শিশু। আশ্রয় নেওয়া স্কুলের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে সেদিন আরও কত মানুষ যে প্রাণ হারিয়েছিল, আহত হয়েছিল তার ইয়ত্তা নেই। সেই ভয়াবহ দিনের বিশৃঙ্খলার মধ্যে, মানুষ দিগ্বিদিক পালাচ্ছিল,
২২ এপ্রিল ২০২৫
রাশিয়ায় তরুণদের মধ্যে ভয়াবহভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘মলিকিউল’ নামে ওজন কমানোর একটি সস্তা বড়ি। রুশ টিকটকে এই বড়িটি নিয়ে প্রচারণা শুরু হয়েছিল চলতি বছরের শুরুর দিকে। ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, তরুণীরা বলছেন—‘মলিকিউল খাও, খাবারের কথা ভুলে যাও’ বা ‘ওজন কমাও, ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসো না।’
৫ ঘণ্টা আগে
ভারতের রাজস্থানে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে একটি বাসের ধাক্কায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী জয়পুর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে ফালোদি জেলার মাতোদা গ্রামের কাছে ভারত-মালা হাইওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৫ ঘণ্টা আগে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে শুরু হওয়া ‘গোল্ডেন ডোম’ প্রতিরক্ষা প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে ইলন মাস্কের মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স। প্রকল্পটির আওতায় স্পেসএক্স দুই বিলিয়ন ডলার সরকারি অর্থায়ন পেতে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ায় তরুণদের মধ্যে ভয়াবহভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘মলিকিউল’ নামে ওজন কমানোর একটি সস্তা বড়ি। রুশ টিকটকে এই বড়িটি নিয়ে প্রচারণা শুরু হয়েছিল চলতি বছরের শুরুর দিকে। ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, তরুণীরা বলছেন—‘মলিকিউল খাও, খাবারের কথা ভুলে যাও’ বা ‘ওজন কমাও, ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসো না।’ এই ধরনের প্রচারের ফলেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বড়িটির বিক্রি।
রোববার (২ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের ২২ বছর বয়সী মারিয়া অনলাইনে বড়িটি কিনে খান। দিনে দুটি করে খেয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে তাঁর মুখ শুকিয়ে যায়, ক্ষুধা সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেন, আর মানসিক অস্থিরতা ও উদ্বেগে ভুগতে থাকেন।
মারিয়া বলেন, ‘আমি ক্রমাগত ঠোঁট কামড়াচ্ছিলাম, গাল চিবোচ্ছিলাম—মনে হচ্ছিল কিছু একটা ঠিক নেই।’
টিকটকের অন্য ব্যবহারকারীরাও জানান, বড়ি খাওয়ার পর তাঁদের চোখ বড় হয়ে যাওয়া, হাত কাঁপা ও ঘুমহীনতার মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে। অন্তত তিনজন স্কুলশিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। সাইবেরিয়ার চিতায় এক স্কুলছাত্রী গ্রীষ্মের আগে দ্রুত ওজন কমাতে গিয়ে ওভারডোজে আক্রান্ত হয়। অন্য এক কিশোরকে স্কুলে মোটা বলে ঠাট্টা করা হতো, বন্ধুর মাধ্যমে বড়ি কিনে খেয়ে সে হ্যালুসিনেশনে আক্রান্ত হয়।
রাশিয়ার পত্রিকা ‘ইজভেস্তিয়া’ বড়িটির নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছে, এতে ‘সিবিউট্রামিন’ নামে এক ধরনের নিষিদ্ধ উপাদান রয়েছে। ১৯৮০-এর দশকে এই ‘সিবিউট্রামিন’ প্রথমে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট হিসেবে তৈরি হলেও পরে ওজন কমানোর ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু গবেষণায় দেখা যায়, এটি হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়—বিপরীতে ওজন কমানোর প্রভাব সামান্য। এ জন্য ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বহু দেশ সিবিউট্রামিন নিষিদ্ধ করে।
রাশিয়ায় ‘সিবিউট্রামিন’ শুধুমাত্র চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনে পাওয়া যায়। কিন্তু অনলাইনে নানা অবৈধ বিক্রেতা বেশি মাত্রার ‘সিবিউট্রামিন’ উপাদানসমৃদ্ধ বড়ি বিক্রি করছে। এগুলোর দাম ওজন কমানোর জনপ্রিয় ইনজেকশন ‘ওজেমপিক’ এর তুলনায় অনেক সস্তা।
এ অবস্থায় সরকারি উদ্যোগে কয়েকটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে বড়িটি সরানো হলেও তা ‘অ্যাটম’ নামে নতুন প্যাকেটে আবার ফিরে এসেছে। বিক্রেতারা এখন এসব বড়িকে ‘স্পোর্টস নিউট্রিশন’ তালিকাভুক্ত করছে, যাতে নজর এড়ানো যায়।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, তরুণদের জন্য এই বড়ি প্রাণঘাতী হতে পারে। এন্ডোক্রাইন বিশেষজ্ঞ ক্সেনিয়া সোলোভিয়েভা বলেন, ‘এই ধরনের ওষুধে সক্রিয় উপাদানের পরিমাণ আমরা জানি না—তাই এটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।’

রাশিয়ায় তরুণদের মধ্যে ভয়াবহভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘মলিকিউল’ নামে ওজন কমানোর একটি সস্তা বড়ি। রুশ টিকটকে এই বড়িটি নিয়ে প্রচারণা শুরু হয়েছিল চলতি বছরের শুরুর দিকে। ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, তরুণীরা বলছেন—‘মলিকিউল খাও, খাবারের কথা ভুলে যাও’ বা ‘ওজন কমাও, ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসো না।’ এই ধরনের প্রচারের ফলেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বড়িটির বিক্রি।
রোববার (২ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের ২২ বছর বয়সী মারিয়া অনলাইনে বড়িটি কিনে খান। দিনে দুটি করে খেয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে তাঁর মুখ শুকিয়ে যায়, ক্ষুধা সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেন, আর মানসিক অস্থিরতা ও উদ্বেগে ভুগতে থাকেন।
মারিয়া বলেন, ‘আমি ক্রমাগত ঠোঁট কামড়াচ্ছিলাম, গাল চিবোচ্ছিলাম—মনে হচ্ছিল কিছু একটা ঠিক নেই।’
টিকটকের অন্য ব্যবহারকারীরাও জানান, বড়ি খাওয়ার পর তাঁদের চোখ বড় হয়ে যাওয়া, হাত কাঁপা ও ঘুমহীনতার মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে। অন্তত তিনজন স্কুলশিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। সাইবেরিয়ার চিতায় এক স্কুলছাত্রী গ্রীষ্মের আগে দ্রুত ওজন কমাতে গিয়ে ওভারডোজে আক্রান্ত হয়। অন্য এক কিশোরকে স্কুলে মোটা বলে ঠাট্টা করা হতো, বন্ধুর মাধ্যমে বড়ি কিনে খেয়ে সে হ্যালুসিনেশনে আক্রান্ত হয়।
রাশিয়ার পত্রিকা ‘ইজভেস্তিয়া’ বড়িটির নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছে, এতে ‘সিবিউট্রামিন’ নামে এক ধরনের নিষিদ্ধ উপাদান রয়েছে। ১৯৮০-এর দশকে এই ‘সিবিউট্রামিন’ প্রথমে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট হিসেবে তৈরি হলেও পরে ওজন কমানোর ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু গবেষণায় দেখা যায়, এটি হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়—বিপরীতে ওজন কমানোর প্রভাব সামান্য। এ জন্য ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বহু দেশ সিবিউট্রামিন নিষিদ্ধ করে।
রাশিয়ায় ‘সিবিউট্রামিন’ শুধুমাত্র চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনে পাওয়া যায়। কিন্তু অনলাইনে নানা অবৈধ বিক্রেতা বেশি মাত্রার ‘সিবিউট্রামিন’ উপাদানসমৃদ্ধ বড়ি বিক্রি করছে। এগুলোর দাম ওজন কমানোর জনপ্রিয় ইনজেকশন ‘ওজেমপিক’ এর তুলনায় অনেক সস্তা।
এ অবস্থায় সরকারি উদ্যোগে কয়েকটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে বড়িটি সরানো হলেও তা ‘অ্যাটম’ নামে নতুন প্যাকেটে আবার ফিরে এসেছে। বিক্রেতারা এখন এসব বড়িকে ‘স্পোর্টস নিউট্রিশন’ তালিকাভুক্ত করছে, যাতে নজর এড়ানো যায়।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, তরুণদের জন্য এই বড়ি প্রাণঘাতী হতে পারে। এন্ডোক্রাইন বিশেষজ্ঞ ক্সেনিয়া সোলোভিয়েভা বলেন, ‘এই ধরনের ওষুধে সক্রিয় উপাদানের পরিমাণ আমরা জানি না—তাই এটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।’

বাবার কোলে হাসছে ছোট্ট মোহাম্মদ। প্রায় ১৬ মাস আগে, ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত মায়ের নিথর দেহের পাশে বসে কাঁদছিল ১৩ মাস বয়সী এই শিশু। আশ্রয় নেওয়া স্কুলের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে সেদিন আরও কত মানুষ যে প্রাণ হারিয়েছিল, আহত হয়েছিল তার ইয়ত্তা নেই। সেই ভয়াবহ দিনের বিশৃঙ্খলার মধ্যে, মানুষ দিগ্বিদিক পালাচ্ছিল,
২২ এপ্রিল ২০২৫
দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
৪ ঘণ্টা আগে
ভারতের রাজস্থানে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে একটি বাসের ধাক্কায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী জয়পুর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে ফালোদি জেলার মাতোদা গ্রামের কাছে ভারত-মালা হাইওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৫ ঘণ্টা আগে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে শুরু হওয়া ‘গোল্ডেন ডোম’ প্রতিরক্ষা প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে ইলন মাস্কের মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স। প্রকল্পটির আওতায় স্পেসএক্স দুই বিলিয়ন ডলার সরকারি অর্থায়ন পেতে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের রাজস্থানে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে একটি বাসের ধাক্কায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী জয়পুর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে ফালোদি জেলার মাতোদা গ্রামের কাছে ভারত-মালা হাইওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিরা সবাই যোধপুরের সুরসাগর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তাঁরা বিকানেরের কোলায়েত মন্দির থেকে কপিল মুনি আশ্রমে প্রার্থনা সেরে বাড়ি ফিরছিলেন।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মা এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য সব ধরনের সহায়তা এবং আহত ব্যক্তিদের সঠিক চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘ফালোদি জেলার মাতোদা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এতগুলো মানুষের প্রাণহানি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক। আমি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আহত ব্যক্তিদের সবার যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি ভগবানের কাছে নিহত ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি ও আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’
সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটও প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি এক্সে লিখেছেন, ‘আমি এইমাত্র খবর পেলাম যে ফালোদির মাতোদাতে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন মারা গেছেন। এ খবর শুনে আমার হৃদয় গভীরভাবে ভারাক্রান্ত। আমি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি, যেন তিনি নিহত ব্যক্তিদের তাঁর চরণে স্থান দেন, তাঁদের পরিবারকে শক্তি দেন এবং আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য দান করেন।’
রাজস্থানে সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে। গত মাসে জয়সালমেরে একটি স্লিপার বাসে আগুন লাগার ঘটনায় ২৬ জন পুড়ে মারা যান।

ভারতের রাজস্থানে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে একটি বাসের ধাক্কায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী জয়পুর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে ফালোদি জেলার মাতোদা গ্রামের কাছে ভারত-মালা হাইওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিরা সবাই যোধপুরের সুরসাগর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তাঁরা বিকানেরের কোলায়েত মন্দির থেকে কপিল মুনি আশ্রমে প্রার্থনা সেরে বাড়ি ফিরছিলেন।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মা এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য সব ধরনের সহায়তা এবং আহত ব্যক্তিদের সঠিক চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘ফালোদি জেলার মাতোদা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এতগুলো মানুষের প্রাণহানি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক। আমি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আহত ব্যক্তিদের সবার যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি ভগবানের কাছে নিহত ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি ও আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’
সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটও প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি এক্সে লিখেছেন, ‘আমি এইমাত্র খবর পেলাম যে ফালোদির মাতোদাতে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন মারা গেছেন। এ খবর শুনে আমার হৃদয় গভীরভাবে ভারাক্রান্ত। আমি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি, যেন তিনি নিহত ব্যক্তিদের তাঁর চরণে স্থান দেন, তাঁদের পরিবারকে শক্তি দেন এবং আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য দান করেন।’
রাজস্থানে সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে। গত মাসে জয়সালমেরে একটি স্লিপার বাসে আগুন লাগার ঘটনায় ২৬ জন পুড়ে মারা যান।

বাবার কোলে হাসছে ছোট্ট মোহাম্মদ। প্রায় ১৬ মাস আগে, ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত মায়ের নিথর দেহের পাশে বসে কাঁদছিল ১৩ মাস বয়সী এই শিশু। আশ্রয় নেওয়া স্কুলের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে সেদিন আরও কত মানুষ যে প্রাণ হারিয়েছিল, আহত হয়েছিল তার ইয়ত্তা নেই। সেই ভয়াবহ দিনের বিশৃঙ্খলার মধ্যে, মানুষ দিগ্বিদিক পালাচ্ছিল,
২২ এপ্রিল ২০২৫
দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
৪ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ায় তরুণদের মধ্যে ভয়াবহভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘মলিকিউল’ নামে ওজন কমানোর একটি সস্তা বড়ি। রুশ টিকটকে এই বড়িটি নিয়ে প্রচারণা শুরু হয়েছিল চলতি বছরের শুরুর দিকে। ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, তরুণীরা বলছেন—‘মলিকিউল খাও, খাবারের কথা ভুলে যাও’ বা ‘ওজন কমাও, ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসো না।’
৫ ঘণ্টা আগে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে শুরু হওয়া ‘গোল্ডেন ডোম’ প্রতিরক্ষা প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে ইলন মাস্কের মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স। প্রকল্পটির আওতায় স্পেসএক্স দুই বিলিয়ন ডলার সরকারি অর্থায়ন পেতে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে শুরু হওয়া ‘গোল্ডেন ডোম’ প্রতিরক্ষা প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে ইলন মাস্কের মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স। প্রকল্পটির আওতায় স্পেসএক্স দুই বিলিয়ন ডলার সরকারি অর্থায়ন পেতে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অর্থায়ন গোপনে জুলাই মাসে ট্রাম্প স্বাক্ষরিত একটি কর ও ব্যয়সংক্রান্ত বিলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তবে তখন কোনো নির্দিষ্ট ঠিকাদারের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
‘গোল্ডেন ডোম’ প্রকল্পের আওতায় স্পেসএক্সকে এমন একটি বৃহৎ স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে, যা আকাশে চলমান লক্ষ্যবস্তু—যেমন মিসাইল বা যুদ্ধবিমান শনাক্ত ও ট্র্যাক করতে সক্ষম হয়।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, এই ‘এয়ার মুভিং টার্গেট ইন্ডিকেটর’ সিস্টেমে ৬০০ পর্যন্ত স্যাটেলাইট থাকতে পারে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাব্যবস্থায় মাস্কের প্রভাব আরও বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্পেসএক্স পেন্টাগনের দুটি গোপন স্যাটেলাইট প্রকল্পেও কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে একটির নাম ‘মিলনেট’, যা সংবেদনশীল সামরিক তথ্য নিরাপদে আদান-প্রদানের জন্য তৈরি একটি নেটওয়ার্ক। অন্যটির নাম ‘গ্রাউন্ড ট্র্যাকিং’ সিস্টেম, যা ভূপৃষ্ঠে থাকা যানবাহন পর্যবেক্ষণ ও শনাক্ত করতে সক্ষম আলাদা স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা বলছেন, এসব প্রকল্পে স্পেসএক্সের অংশগ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশভিত্তিক প্রতিরক্ষা কাঠামোয় কোম্পানিটির ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলছে।
তবে মার্কিন প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, ইলন মাস্কের অতীত আচরণ—যেমন নাসার মহাকাশচারীদের বহনকারী স্পেসক্রাফট বন্ধের হুমকি—সরকারকে ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে বহু ঠিকাদারকে অন্তর্ভুক্ত রাখার প্রয়োজনীয়তা মনে করিয়ে দিয়েছে।
‘গোল্ডেন ডোম’ কী?
‘গোল্ডেন ডোম’ প্রকল্পটিকে একটি উন্নত প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা মিসাইল শনাক্ত ও আঘাতের আগেই ধ্বংস করতে সক্ষম একটি ঢালের মতো কাজ করবে। তবে এর কাঠামো বা কার্যপ্রণালি সম্পর্কে পেন্টাগন এখনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।
প্রকল্পটির বড় বড় চুক্তি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া হয়নি। প্রতিরক্ষা দপ্তর ব্যয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করছে।
‘গোল্ডেন ডোম’ প্রকল্পে স্পেসএক্সের সম্পৃক্ততা নিয়ে জানতে চাইলে পেন্টাগনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এ ধরনের প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিস্তারিত প্রকাশ করি না।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে শুরু হওয়া ‘গোল্ডেন ডোম’ প্রতিরক্ষা প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে ইলন মাস্কের মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স। প্রকল্পটির আওতায় স্পেসএক্স দুই বিলিয়ন ডলার সরকারি অর্থায়ন পেতে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অর্থায়ন গোপনে জুলাই মাসে ট্রাম্প স্বাক্ষরিত একটি কর ও ব্যয়সংক্রান্ত বিলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তবে তখন কোনো নির্দিষ্ট ঠিকাদারের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
‘গোল্ডেন ডোম’ প্রকল্পের আওতায় স্পেসএক্সকে এমন একটি বৃহৎ স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে, যা আকাশে চলমান লক্ষ্যবস্তু—যেমন মিসাইল বা যুদ্ধবিমান শনাক্ত ও ট্র্যাক করতে সক্ষম হয়।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, এই ‘এয়ার মুভিং টার্গেট ইন্ডিকেটর’ সিস্টেমে ৬০০ পর্যন্ত স্যাটেলাইট থাকতে পারে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাব্যবস্থায় মাস্কের প্রভাব আরও বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্পেসএক্স পেন্টাগনের দুটি গোপন স্যাটেলাইট প্রকল্পেও কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে একটির নাম ‘মিলনেট’, যা সংবেদনশীল সামরিক তথ্য নিরাপদে আদান-প্রদানের জন্য তৈরি একটি নেটওয়ার্ক। অন্যটির নাম ‘গ্রাউন্ড ট্র্যাকিং’ সিস্টেম, যা ভূপৃষ্ঠে থাকা যানবাহন পর্যবেক্ষণ ও শনাক্ত করতে সক্ষম আলাদা স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা বলছেন, এসব প্রকল্পে স্পেসএক্সের অংশগ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশভিত্তিক প্রতিরক্ষা কাঠামোয় কোম্পানিটির ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলছে।
তবে মার্কিন প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, ইলন মাস্কের অতীত আচরণ—যেমন নাসার মহাকাশচারীদের বহনকারী স্পেসক্রাফট বন্ধের হুমকি—সরকারকে ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে বহু ঠিকাদারকে অন্তর্ভুক্ত রাখার প্রয়োজনীয়তা মনে করিয়ে দিয়েছে।
‘গোল্ডেন ডোম’ কী?
‘গোল্ডেন ডোম’ প্রকল্পটিকে একটি উন্নত প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা মিসাইল শনাক্ত ও আঘাতের আগেই ধ্বংস করতে সক্ষম একটি ঢালের মতো কাজ করবে। তবে এর কাঠামো বা কার্যপ্রণালি সম্পর্কে পেন্টাগন এখনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।
প্রকল্পটির বড় বড় চুক্তি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া হয়নি। প্রতিরক্ষা দপ্তর ব্যয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করছে।
‘গোল্ডেন ডোম’ প্রকল্পে স্পেসএক্সের সম্পৃক্ততা নিয়ে জানতে চাইলে পেন্টাগনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এ ধরনের প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিস্তারিত প্রকাশ করি না।’

বাবার কোলে হাসছে ছোট্ট মোহাম্মদ। প্রায় ১৬ মাস আগে, ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত মায়ের নিথর দেহের পাশে বসে কাঁদছিল ১৩ মাস বয়সী এই শিশু। আশ্রয় নেওয়া স্কুলের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে সেদিন আরও কত মানুষ যে প্রাণ হারিয়েছিল, আহত হয়েছিল তার ইয়ত্তা নেই। সেই ভয়াবহ দিনের বিশৃঙ্খলার মধ্যে, মানুষ দিগ্বিদিক পালাচ্ছিল,
২২ এপ্রিল ২০২৫
দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
৪ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ায় তরুণদের মধ্যে ভয়াবহভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘মলিকিউল’ নামে ওজন কমানোর একটি সস্তা বড়ি। রুশ টিকটকে এই বড়িটি নিয়ে প্রচারণা শুরু হয়েছিল চলতি বছরের শুরুর দিকে। ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, তরুণীরা বলছেন—‘মলিকিউল খাও, খাবারের কথা ভুলে যাও’ বা ‘ওজন কমাও, ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসো না।’
৫ ঘণ্টা আগে
ভারতের রাজস্থানে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে একটি বাসের ধাক্কায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী জয়পুর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে ফালোদি জেলার মাতোদা গ্রামের কাছে ভারত-মালা হাইওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৫ ঘণ্টা আগে