Ajker Patrika

হানিয়া হত্যাকাণ্ড: নতুন বিস্তৃত সংঘাতের পথে মধ্যপ্রাচ্য

আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৪, ১০: ৩১
হানিয়া হত্যাকাণ্ড: নতুন বিস্তৃত সংঘাতের পথে মধ্যপ্রাচ্য

ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া নিহতের ঘটনায় নতুন করে বিস্তৃত সংঘাতের দিকে ধাবিত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য। এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির মধ্যপ্রাচ্য অধ্যয়নবিষয়ক অধ্যাপক নাদের হাশেমি বিবিসিকে বলেন, এই হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যকে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশি সর্বাত্মক যুদ্ধের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।

অধ্যাপক নাদের হাশেমি বলেন, ‘এটি অনেক বড় ঘটনা। আমার ধারণা, লেবাননের ঘটনাপ্রবাহে এর প্রভাব পড়বে। কারণ, ইসমাইল হানিয়া নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই বৈরুতে হিজবুল্লাহর একজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে হত্যার চেষ্টা চালায় ইসরায়েল। মনে করা হচ্ছিল, ইরান ও হিজবুল্লাহ মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার পারদ আর বাড়াতে চায় না। তবে এই হত্যাকাণ্ড সেই ধারণা বদলে দিয়েছে।’

ইরানের মাটিতে ইসমাইল হানিয়াকে এভাবে হত্যার ফলে তেহরান এখন মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত শুরু এবং তা বাড়িয়ে তোলার সুযোগ পাবে বলেও মনে করেন এই বিশ্লেষক। হামাস, ইসরায়েল এবং এই অঞ্চলে সক্রিয় অন্য পক্ষগুলোর বক্তব্যেও নতুন করে উত্তেজনার পারদ বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

ইসমাইল হানিয়া নিহতের পর ইসরায়েল সরকারের মিডিয়া অফিসের ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, ইরানের রাজধানী তেহরানে সুনির্দিষ্ট এক হামলা চালিয়ে হামাসের সর্বোচ্চ নেতাকে ‘নির্মূল’ করা হয়েছে। ঘণ্টাখানেক পর অবশ্য পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। তবে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তেল আবিব প্রস্তুত রয়েছে।’ 

হামাসের মুখপাত্র সামি আবু জুহরি বলেছেন, ‘হামাস একটি আদর্শের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি একটি প্রতিষ্ঠান, যা কোনো ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল নয়। যেকোনো আত্মত্যাগের বিনিময়ে হামাসের পথচলা অব্যাহত থাকবে এবং বিজয়ের ব্যাপারে আমাদের আত্মবিশ্বাস রয়েছে।’ দলের জ্যেষ্ঠ নেতা মুসা আবু মারজুক বলেছেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের পর আমরা চুপ করে বসে থাকব না। অবশ্যই এ ধরনের কাপুরুষোচিত কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে।’ 

তেহরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে এই হত্যাকাণ্ডের দায় নিতে হবে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের দাবি, এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বিষয়টি নিয়ে ওয়াশিংটনের কাছে আগে থেকে কোনো তথ্য ছিল না। 

এ ঘটনায় ইসরায়েলকে ‘কঠিন শাস্তি’ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরানে অবস্থান করা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া ইরানের দায়িত্ব। 

ইরানের মিত্র হিসেবে পরিচিত রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে সব পক্ষকে সংযমের আহ্বান জানানো হয়েছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমুখপাত্র আন্দ্রেই নাস্তাসিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতির নাটকীয় অবনতি ঘটাতে পারে এবং বড় আকারের সংঘাতের সূচনা করতে পারে—এমন যেকোনো পদক্ষেপ থেকে সবাইকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এ ধরনের পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়েছে এবং এ ঘটনা বিদ্যমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।’ রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাইল বোগদানভ এ ঘটনাকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ৪ বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র

প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণার পর যা বলল ইইউ

আপনাদের সঙ্গে হাত মেলাব না, বিস্ফোরক তামিম

কাগজে-কলমে মেয়র হওয়ায় দায়িত্ব পালন করলাম: জাতীয় ঈদগাহ পরিদর্শন শেষে ইশরাক

এপ্রিলে নির্বাচন ঘোষণায় বিএনপি ও জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত