Ajker Patrika

ইলন মাস্কের সঙ্গে আর কোনো আলোচনা চান না ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
ছবি: এএফপি
ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ইলন মাস্কের সঙ্গে আর কোনো ধরনের আলোচনা করতে আগ্রহী নন। সম্প্রতি করছাড় বিল নিয়ে দুই ব্যক্তির মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। আজ শুক্রবার তাদের মধ্যে ফোনালাপের কথা ছিল। তবে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ট্রাম্প-মাস্কের ফোনালাপের আর কোনো সম্ভাবনা নেই।

এর আগে অন্য এক হোয়াইট হাউসের আরেক কর্মকর্তা বলেছিলেন, শুক্রবার তাঁদের কথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি ইলনের কথা ভাবছি না। আলোচনা দূরের কথা! ওর সমস্যা আছে, বেচারার বড় ধরনের সমস্যা আছে।’

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি ট্রাম্প ও সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্ক বৃহস্পতিবার সরাসরি সামাজিক মাধ্যমে একে অপরকে আক্রমণ করেন। এতে তাঁদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ভাঙন চূড়ান্ত রূপ পায়।

মাস্ক ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে বিপুল অর্থ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাঁকে হোয়াইট হাউসে এনে ‘সরকারি ব্যয় কমানো ও কর্মী ছাঁটাই’ কর্মসূচির প্রধান করে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে সপ্তাহখানেক আগে মাস্ক পদত্যাগ করেন এবং নতুন করছাড় বিলের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন।

তিনি ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বিলটিকে ‘একটি বিপর্যয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। মাস্ক বলেন, এই বিল দেশের ঋণের পরিমাণ আরও বাড়াবে, যা বর্তমানে ৩৬.২ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

এই বিলটি গত মাসে হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভে অল্প ব্যবধানে পাস হলেও বর্তমানে সিনেটে রয়েছে, যেখানে রিপাবলিকানরা আরও পরিবর্তন আনার কথা বলছে। নিরপেক্ষ বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি আগামী ১০ বছরে ২.৪ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণ বাড়িয়ে দেবে।

হাউস স্পিকার মাইক জনসন মার্কিন টিভি চ্যানেল সিএনবিসিকে জানান, তিনি মাস্কের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তবে তিনি বলেন, ‘আমি যেমন রকেট বানানো নিয়ে মাস্কের সঙ্গে তর্ক করি না, তেমনি চাই সে আইন প্রণয়ন নিয়ে আমার সঙ্গে তর্ক না করুক।’

ইলন মাস্ক প্রথম যখন করছাড় বিলের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছিলেন, তখন ট্রাম্প বেশ নীরব ছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার তিনি নীরবতা ভাঙেন এবং সাংবাদিকদের বলেন, তিনি মাস্কের ওপর ‘খুবই হতাশ’। তিনি বলেন, ‘আমি ইলনের ওপর খুবই হতাশ। আমাদের সম্পর্কটা দারুণ ছিল। জানি না, সেটা আর থাকবে কি না।’

এরপরই সামাজিক মাধ্যমে একে অপরকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন ট্রাম্প-মাস্ক। ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যালে আর মাস্ক তাঁর এক্সে।

মাস্ক বলেন, ‘আমার অর্থ ছাড়া ট্রাম্প নির্বাচনে হারত।’ উল্লেখ্য, গত নির্বাচনে মাস্ক ট্রাম্প ও রিপাবলিকানদের পেছনে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্পের আমদানি শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রকে মন্দায় ঠেলে দেবে। তিনি একটি পোস্টে ‘হ্যাঁ’ উত্তর দেন, যেখানে ট্রাম্পকে অভিশংসনের আহ্বান জানানো হয়েছিল। যদিও এটি কার্যত অসম্ভব, কারণ কংগ্রেসের দুই কক্ষেই রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তবে মাস্কের এমন কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আর আগের মতো নেই।

মাস্কের পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প পাল্টা হুমকি দেন, মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরকারের সব চুক্তি বাতিল করে দেবেন। মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্স ও স্টারলিংক যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

জবাবে মাস্ক হুমকি দেন, তিনি স্পেসএক্সের ড্রাগন মহাকাশযান সরিয়ে নেবেন— এটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র মহাকাশযান, যা নভোচারীদের আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পাঠাতে পারে। তবে পরে তিনি এই হুমকি থেকে সরে আসেন।

পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয় যখন ধনকুবের বিনিয়োগকারী বিল অ্যাকম্যান ট্রাম্প ও মাস্ককে সমঝোতার পরামর্শ দেন। এর জবাবে মাস্ক লেখেন, ‘আপনি ঠিকই বলেছেন। আমাদের আলোচনায় বসা উচিত।’ তবে আজকে হোয়াইট হাউস সূত্র যে তথ্য জানাল, তাতে বোঝা যাচ্ছে আলফা মেল ট্রাম্প হয়তো আর কখনোই মাস্কের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না।

তবে এই দ্বন্দ্ব দীর্ঘস্থায়ী হলে তা আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের কংগ্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন করে তুলতে পারে। কারণ, মাস্ক তাঁর আর্থিক সহায়তা কমিয়ে দিতে পারেন এবং প্রযুক্তি খাতের অন্য প্রভাবশালীরাও ট্রাম্পের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে পারেন।

উল্লেখ্য, মাস্ক ইতিমধ্যে রাজনৈতিক ব্যয় কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘যেসব রাজনীতিবিদ আমেরিকান জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তাদের সবাইকে আগামী বছর বরখাস্ত করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ৪ বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র

প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণার পর যা বলল ইইউ

আপনাদের সঙ্গে হাত মেলাব না, বিস্ফোরক তামিম

কাগজে-কলমে মেয়র হওয়ায় দায়িত্ব পালন করলাম: জাতীয় ঈদগাহ পরিদর্শন শেষে ইশরাক

এপ্রিলে নির্বাচন ঘোষণায় বিএনপি ও জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত