Ajker Patrika

সিরিয়ার বিদ্রোহী নেতাকে গ্রেপ্তারে পুরস্কারের ঘোষণা বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক    
Thumbnail image
হায়াত তাহরির আল-শামের প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। ছবি: এএফপি

সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনে নেতৃত্ব দেওয়া হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আহমদ আল-শারা ওরফে আবু মোহাম্মদ আল-জোলানিকে গ্রেপ্তারের জন্য যে অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র তা বাতিল করা হয়েছে। শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক বারবারা লিফ গতকাল শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছেন। সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, বারবার লিফ সিরিয়ার নতুন নেতা আহমেদ আল-শারাকে জানিয়েছেন যে, ওয়াশিংটন তাঁকে গ্রেপ্তারে যে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল তা বাতিল করছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের আলোচনায় ‘ইতিবাচক বার্তাকে’ স্বাগত জানিয়েছে। এই আলোচনার অন্যতম ইস্যু ছিল সন্ত্রাসবাদ বিরোধী লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি—যা এইচটিএসের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে।

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বারবারা লিফ এইচটিএস প্রধান আহমদ আল-শারার সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পরপরই সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক শীর্ষ কূটনীতিক বারবারা লিফ এ মন্তব্য করেন। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের অবসানের পর দেশটিতে এই প্রথম কোনো মার্কিন কূটনীতিক পা রাখলেন।

এর আগে, গত ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহীদের ঝোড়ো আক্রমণের মুখে পালিয়ে যান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এই অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ইসলামপন্থী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এক সময় আল-কায়দার সিরিয়া শাখার মূলভিত্তি হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার আল-কায়েদা থেকে অনেক দূরে সরে এসেছে।

আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র এইচটিএসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। তবে এরপরও, বাশার আল-আসাদের পতনের পর যুক্তরাষ্ট্র গোষ্ঠীটির সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসেছে। বৈঠক শেষে বারবারা লিফ বলেন, ‘আমাদের আলোচনার ভিত্তিতে, আমি তাকে (আহমদ আল-শারা) জানিয়েছি যে, আমরা বছরের পর বছর ধরে কার্যকর থাকা রিওয়ার্ড ফর জাস্টিস পুরস্কারের প্রস্তাব আর অনুসরণ করব না। আমরা শারার ইতিবাচক বার্তাকে স্বাগত জানিয়েছি।’

মার্কিন এই কূটনীতিক আরও বলেন, ‘আমরা এই নীতি এবং পদক্ষেপগুলোর ক্ষেত্রে অগ্রগতি দেখতে চাই, কেবল কথায় নয়। এ ছাড়া, আমি এই সময়ে অন্তর্ভুক্তি এবং বিস্তৃত পরামর্শের গুরুত্ব সম্পর্কে জানিয়েছি তাঁকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণরূপে সিরিয়ানদের নেতৃত্বে এবং সিরিয়ার মালিকানায় রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সমর্থন করি, যা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার তৈরি করবে, যা সমস্ত সিরিয়ানদের, নারীদেরও, এবং সিরিয়ার বৈচিত্র্যময় জাতিগত ও ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলির অধিকারকে সম্মান করবে।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নীতিগুলোর সঙ্গে শীর্ষ আরব এবং ইউরোপীয় কূটনীতিকদের পাশাপাশি তুরস্কের সঙ্গে ১৪ ডিসেম্বর জর্ডানের আয়রবে এক বৈঠকে একমত হয়েছিল। এক সিরীয় কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করার শর্তে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আগেই নিশ্চিত করা হয়েছিল, মার্কিন প্রতিনিধিদল শারার সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকটি হয়েছে, এবং এটি ইতিবাচক ছিল এবং এর ফলাফল ইতিবাচক হবে, আল্লাহ চাইলে।’

এদিকে, বিদ্রোহীদের অন্যতম সমর্থক তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান সিরিয়ার ভূখণ্ডের অখণ্ডতা এবং ঐক্য পুনঃপ্রতিষ্ঠার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এ সময় তিনি সিরিয়ার বিদ্রোহীদের কুর্দি বিদ্রোহীদের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে ধ্বংস করার সময় এসেছে। বিশেষ করে—আইএস এবং কুর্দি যোদ্ধাদের।

গতকাল শুক্রবার এরদোয়ান বলেন ‘দায়েশ (আইএসআইএস), পিকেকে এবং তাদের সহযোগীরা—যারা সিরিয়ার অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে—তাদের নির্মূল করতে হবে।’ মিসরের রাজধানী কায়রোতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জোট ডি-৮ এর শীর্ষ সম্মেলনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।

সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠী পিপলস প্রোটেকশন ইউনিট (ওয়াইপিজি)। তুরস্ক ওয়াইপিজিকে পিকেকের একটি শাখা হিসেবে অভিযুক্ত করেছে। এই গোষ্ঠীটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তুরস্কের কাছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত