Ajker Patrika

টানেলে আটকে পড়ার ৯৬ ঘণ্টা, এখনো উদ্ধার হননি ৪০ শ্রমিক

আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ১৩: ৫২
টানেলে আটকে পড়ার ৯৬ ঘণ্টা, এখনো উদ্ধার হননি ৪০ শ্রমিক

ভারতের উত্তরাখন্ডের উত্তরকাশি জেলায় টানেল ধসে ভেতরে আটকা পড়েছেন ৪০ জন শ্রমিক। কিন্তু দুর্ঘটনার ৯৬ ঘণ্টা, অর্থাৎ চার দিন পেরিয়ে গেলেও তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে টানেলের পানি পরিবহনের পাইপলাইনের সাহায্যে তাঁদের কাছে প্রয়োজনীয় খাবার, ওষুধসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পাঠানো হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১২ নভেম্বর স্থানীয় সময় সকালে ব্রহ্মখাল-য়ামুনোত্রী মহাসড়কে অবস্থিত টানেলে এই ধসের ঘটনা ঘটে। তারপর থেকেই তাঁদের উদ্ধারে ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে এগিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। কিন্তু এখনো তাঁদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

আটকে পড়া শ্রমিকদের সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হলেও এখনো তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারকর্মীরা আটকে পড়াদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখছেন। শ্রমিকদের উদ্ধারে আমেরিকার অগার মেশিন (যেটি দিয়ে ড্রিল করা হয়) নামানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই মেশিনের ফলে উদ্ধারকাজ আরও দ্রুত এগিয়ে যাবে। 
 
টানেল ধসের তিন দিন পর বেশ অগ্রগতি অর্জন করতে পারলেও নতুন করে আবারও ভূমিধসের ঘটনা ঘটায় উদ্ধারকাজ আবারও ব্যাহত হয়েছে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই উদ্ধারকাজ শেষ করতে নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আরবান ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. সুধীর কৃষ্ণ এনডিটিভিকে বলেছেন, এই অঞ্চল, বিশেষ করে হিমালয় রেঞ্জে অবস্থিত এলাকার মাটি পাথুরে হওয়ায় উদ্ধারকাজে বাধার সৃষ্টি হয়েছে।

ড. সুধীর কৃষ্ণ বলেন, ‘হিমালয় অঞ্চল সাধারণভাবে নরম শিলা নিয়ে গঠিত। তবে নিচের স্তরে শক্ত স্থিতিশীল শিলা রয়েছে। এটি একটি কঠিন পরিস্থিতি। একাধিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে এই উদ্ধারকাজে। প্রথমত ভূমিধস এবং দ্বিতীয়ত ভূমিধসের কারণে ব্যবহারযোগ্য জমিনের পরিমাণ কমে যাওয়া।’

উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, শ্রমিকেরা যে জায়গায় আটকা পড়েছেন, তার আশপাশের প্রায় ২০০ মিটার এলাকাজুড়ে পাথর ছড়িয়ে পড়েছে। উদ্ধারকারীদের সেই পাথর সরিয়ে বা কেটে সুড়ঙ্গ তৈরি করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। আটকে পড়া শ্রমিকদের বেশির ভাগই বিহার, ঝাড়খন্ড, উত্তর প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা, উত্তরাখন্ড ও হিমাচলের অধিবাসী।

স্থানীয় দুর্যোগ পরিষেবা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শ্রমিকেরা মূলত একটি বাফার জোনে আটকা পড়েছেন। তাঁরা এখনো সুস্থ রয়েছেন। টানেলের পানির পাইপলাইনে করে খাবার, অক্সিজেন ও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁরা যেখানে আটকা পড়েছেন, সেখানে প্রায় ৪০০ মিটার এলাকা রয়েছে হাঁটাচলা ও মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেওয়ার জন্য। এরই মধ্যে আটকে পড়াদের কাছে ওয়াকিটকি পাঠানো হয়েছে। তার মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ব্রহ্মখাল-য়ামুনোত্রী মহাসড়কে অবস্থিত এই টানেলের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভূমিধসের কারণেই এই টানেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত