Ajker Patrika

বস্তি থেকে মাইক্রোসফটে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২২, ২৩: ১৯
Thumbnail image

এক সময় থাকতেন বস্তির ঘিঞ্জি পরিবেশে। সেখান থেকে নিজের অদম্য চেষ্টায় আজ তিনি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানির ডিজাইন ম্যানেজার। বলা হচ্ছে, মাইক্রোসফটের প্রোডাক্ট ডিজাইন ম্যানেজার শাহীনা আতরওয়ালার কথা। যিনি শুধু অনুপ্রাণিত করেন না, তাঁর সংগ্রাম এবং দৃঢ়তা সকলের মনেই এক ইতিবাচক দিককে জাগিয়ে তোলে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে মাইক্রোসফটের একজন প্রোডাক্ট ডিজাইন ম্যানেজার শাহীনা আতরওয়ালা  জানিয়েছেন একটি বস্তিতে তাঁর বেড়ে ওঠার অভিজ্ঞতা। টুইটারে তিনি বলেন, নেটফ্লিক্স সিরিজ ‘ব্যাড বয় বিলিয়নিয়ারস ইন্ডিয়া’-তে মুম্বাইয়ের একটি বস্তি দেখানো হয়। যেখানে আমি বড় হয়েছি। সেই সময় জীবন খুব কঠিন ছিল।   লিঙ্গ বৈষম্য ও যৌন হয়রানির মুখোমুখি হতে হয়েছিল। সেখান থেকেই আমি জীবনে বড় হওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছি।

অনলাইনে ভাইরাল হওয়া একটি টুইটার থ্রেডে কীভাবে এটি তাঁর জীবনকে রূপ দিয়েছিল সে সম্পর্কে কথা বলেছেন তিনি। 

শাহীনা আতরওয়ালা স্কুলে প্রথমবার একটি কম্পিউটার দেখার পর থেকেই এর প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করতাম যে কম্পিউটার একটি দুর্দান্ত জিনিস, যে কেউ এর সামনে বসে থাকলে তার জন্য নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হবে।

কিন্তু স্কুলের পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করায় তাঁকে কম্পিউটার ক্লাসে যোগ দেওয়ার পরিবর্তে সেলাইয়ের কাজ করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপরও তিনি প্রযুক্তিতে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন ত্যাগ করেননি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, শাহীনা বান্দ্রা রেলস্টেশনের কাছে দরগা গলি বস্তিতে থাকতেন। তাঁর বাবা আতরের ফেরিওয়ালা ছিলেন, যিনি উত্তর প্রদেশ থেকে মুম্বাইতে চলে আসেন। শাহীনা তাঁর বাবাকে টাকা ধার করতে রাজি করায় যাতে সে স্থানীয় কম্পিউটার ক্লাসে ভর্তি হতে পারে। এরপর তাঁর নিজের কম্পিউটার কেনার জন্য, সে দুপুরের খাবার না খেয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরত। সেই টাকা বাঁচিয়ে রাখত। 

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি নিজের ভাগ্য বদলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এই স্কুলছাত্রীকে।

শাহীনা আতরওয়ালা বলেন, আমি প্রোগ্রামিং ছেড়ে দিয়ে ডিজাইনে ক্যারিয়ার গড়ার অপশন বেছে নিয়েছিলাম। কারণ ডিজাইন আমাকে বিশ্বাস করিয়েছে যে, এখানে সম্ভাবনা আছে এবং সবকিছু বদলে যেতে পারে। আর সেই পরিবর্তনের হাতিয়ার হল প্রযুক্তি।

শাহীনা আরও বলেন, আমার বাবা একজন ফেরিওয়ালা ছিলেন। রাস্তায় ঘুমাতা, আমাদের জন্য একটা ভালো জীবনের স্বপ্ন দেখার সুযোগ ছিল না। ভাগ্য, কঠোর পরিশ্রম এবং লড়াই করে গিয়েছি সব সময়। ২০২১ সালে আমার পরিবার একটি ফ্ল্যাট কিনেছে। যেখানের ব্যালকনি থেকে আকাশ দেখা যায়। জীবনে কিছু অর্জনের জন্য নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করা উচিত। কোনো না কোনো দিন সেটাই গেম চেঞ্জার হয়ে যাবে জীবনে।

আতরওয়ালা তাঁর বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে টুইটারে একটি বিশেষ নোট যোগ করেছেন।  শাহীনা বলেন, আমার বাবার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, কিন্তু তাঁর আতর শিল্প সবকিছু বদলে দিয়েছে। বস্তিতে কয়েক দশক বসবাস করার সময় তাঁর ধৈর্য এবং ত্যাগ আমাদের একটি উন্নত জীবনের দিকে নিয়ে আসতে সাহায্য করেছে। আমরা টাকা জমানোর জন্য কম খরচে জীবনযাপন এবং প্রয়োজনে ত্যাগ স্বীকার করেছি।

এরই মধ্যে শাহীনার এই টুইটে লাইক পড়েছে কয়েক হাজার। ভাইরালও হয়েছে ভিডিওটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত