Ajker Patrika

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন

চীনের সীমান্তঘেঁষা লাদাখের বিক্ষোভেও জেন-জিরা, ভারত কি উদ্বিগ্ন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২: ০৯
লাদাখের লেহ শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
লাদাখের লেহ শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

রাজ্যের মর্যাদা ও চাকরিতে স্থানীয়দের কোটার দাবিতে চীনের সীমান্তঘেঁষা লাদাখের লেহ শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত ও ৭০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যদিও সপ্তাহ ধরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলছিল, কিন্তু আজ তা সহিংসতায় রূপ নেয়। এরপরই শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুক শান্তিপূর্ণভাবে এই প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি আজকের ঘটনাকে ‘তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটিকে ‘জেন-জি বিপ্লব’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে আজকের সহিংসতার ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেছে।

এই বিক্ষোভ ও সহিংসতা কেন হলো এবং এর পেছনে কারা রয়েছে তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো—

কেন হচ্ছে এই বিক্ষোভ?

জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে একটি দল ১০ সেপ্টেম্বর থেকে অনশন করছিল। তাদের মূল দাবি হলো, লাদাখকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা।

সোনম ওয়াংচুক আজ বুধবার তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এই তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই তাদের রাস্তায় নামিয়ে এনেছে। গত পাঁচ বছর ধরে তারা বেকারত্বের শিকার, নানা অজুহাতে বারবার তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে এবং লাদাখের দাবিগুলো পূরণ করা হয়নি। আমি বলব, এটি সামাজিক অস্থিরতার একটি ক্ষেত্র। অনেকে মনে করেন, এরা শুধু আমাদের সমর্থক, কিন্তু বাস্তবে পুরো লাদাখ আমাদের এবং এই দাবির সঙ্গে আছে। এটি ছিল একটি জেন-জি বিপ্লব।’

তিনি তরুণদের সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘সহিংসতা আমাদের পাঁচ বছরের প্রচেষ্টাকে নষ্ট করে দেবে। এটা আমাদের পথ নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সরকারের কাছে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে চাই।’

কেন্দ্র সরকার ও লাদাখের প্রতিনিধি দলের মধ্যে রয়েছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি) এবং কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (কেডিএ) সদস্যরা। তাদের পরবর্তী বৈঠক ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

ভারতের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের উপজাতি এলাকার প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করে। এই বিশেষ বিধানটি স্বায়ত্তশাসিত জেলা কাউন্সিলের মাধ্যমে এই অঞ্চলগুলোকে আইন প্রণয়ন, জমি ও বন ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় শাসনব্যবস্থার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। এর উদ্দেশ্য হলো উপজাতিদের অধিকার, ঐতিহ্য ও স্বশাসনকে রক্ষা করা। উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, লাদাখের জনসংখ্যার প্রায় ৯৭ শতাংশই তফসিলি উপজাতি ভুক্ত।

কারা এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে?

রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে লাদাখের লেহতে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি)। এটি বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত একটি জোট।

দা হিন্দুর গত ১০ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোনম ওয়াংচুক দীর্ঘদিন ধরে লাদাখের অধিকার ও উন্নয়নের পক্ষে কাজ করছেন। তিনি এই জোটের একজন সদস্য। ওয়াংচুক অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে মিলে একটি অনশনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যাতে কেন্দ্রের সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনার মাধ্যমে লাদাখের দীর্ঘদিনের দাবিগুলো পূরণ করা যায়।

দা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার অনশন চলাকালীন একজন বয়স্ক নারী ও একজন পুরুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে এলএবি’র যুব শাখা বুধবার লেহতে বনধের (হরতাল) ডাক দেয়। এরপরই এলএবি-এর তত্ত্বাবধানে বিজেপির কার্যালয়ের সামনে বিশাল জনসমাগম হয়। এরপরই সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

আন্দোলনে কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সও (কেডিএ) অংশ নিয়েছে, যারা এলএবি-এর দাবিগুলোকে সমর্থন করে। কেডিএ আগামীকাল ২৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলজুড়ে সংহতি কার্যক্রম ও বনধের ডাক দিয়েছে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এই দুটি সংগঠন গত চার বছর ধরে একসঙ্গে আন্দোলন করছে এবং সরকারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনাতেও বসেছে। কিন্তু এরপরও কোনো সমাধান আসেনি।

কেন বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে দোষারোপ করছে?

বিজেপি নেতা অমিত মালব্য লেহর সহিংসতার ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন। তিনি এক্সে একটি ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘লাদাখে দাঙ্গা সৃষ্টিকারী এই ব্যক্তি হলেন লেহ ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর। সে জনতাকে উসকে দিয়ে বিজেপির কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলে হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রাহুল গান্ধী কি এই ধরনের অস্থিতিশীলতার কথাই কল্পনা করেছিলেন?’

অন্যদিকে, কংগ্রেসের এক সমর্থক লিখেছেন, ‘সোনম ওয়াংচুকের অনশনের কয়েক দিন পর আজ জেন-জি যুবকেরা পূর্ণ শক্তিতে রাস্তায় নেমেছে এবং বিজেপিকে বাস্তব পরিস্থিতি দেখিয়ে দিয়েছে।’

এর আগে কংগ্রেস সাংসদ ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ভারতের তরুণ এবং জেন-জিদের প্রতি গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার আহ্বান জানিয়েছিলেন। নেপালে জেন-জিদের সহিংস বিক্ষোভের কারণে সরকারের পতনের পরেই এই মন্তব্য করেন রাহুল। বিজেপি নেতারা রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের সমালোচনা করে অভিযোগ করেছেন, তিনি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।

জেন-জিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

অনেকেই লাদাখের এই বিক্ষোভকে জেন-জিদের আন্দোলন বলে দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক ব্যক্তি লেহের একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘জেন-জিরা লাদাখের রাস্তায় নেমেছে।’ স্থানীয় আরেকজন উদ্যোক্তা অভিযোগ করেছেন, ‘লাদাখের জেন-জি বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয়ে আগুন দিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে।’

কিছু ব্যক্তি নেপালের সাম্প্রতিক উত্থানের সঙ্গেও লাদাখের এই বিক্ষোভের তুলনা করেছেন, যেখানে জেন-জিরা অলি সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছিল। দা প্রোটাগনিস্ট নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘এটা নেপাল নয়। এটা লাদাখ।’

এদিকে, সোনম ওয়াংচুক আজকের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘লেহতে খুবই দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বার্তা আজ ব্যর্থ হলো। আমি তরুণদের এই নির্বোধ কাজ বন্ধ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি কেবল আমাদের উদ্দেশ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’

আজ লাদাখে কী ঘটেছিল?

লেহতে আজ বুধবার পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। ১৫ দিনের অনশন শেষ করে ওয়াংচুক মঙ্গলবার তাঁর সমর্থকদের সহিংসতা এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ৬ অক্টোবর দিন ধার্য ছিল, কিন্তু বিক্ষোভকারীরা অনশনকারীদের স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে আলোচনার তারিখ এগিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছিলেন।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বুধবার এনডিএস মেমোরিয়াল গ্রাউন্ডে বিশাল জনসমাগম হয়। সেখান থেকে শত শত বিক্ষোভকারী শহরজুড়ে মিছিল করে। তারা লাদাখকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্তির সমর্থনে স্লোগান দেয়।

বিক্ষোভকারীরা যখন বিজেপির কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলে পাথর নিক্ষেপ করা শুরু করে, তখন উত্তেজনা বেড়ে যায়। পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। বিজেপির কার্যালয় ছাড়াও বেশ কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও কাগজপত্র পুড়িয়ে দেয়।

পরে অতিরিক্ত বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং কয়েক ঘণ্টার সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়, তবে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সহিংসতার পর কর্তৃপক্ষ ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ১৬৩ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সমাবেশ নিষিদ্ধ করে কারফিউ জারি করেছে।

এই সহিংসতার কারণে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক লাদাখ উৎসবও মাঝপথে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। কর্মকর্তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘অনিবার্য কারণে’ উৎসব বাতিল করা হয়েছে। তারা স্থানীয় শিল্পী, সাংস্কৃতিক দল ও পর্যটকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

হঠাৎ করে ফুঁসে ওঠা এই সহিংস বিক্ষোভে ভারত কতটা উদ্বিগ্ন?

কৌশলগতভাবে লাদাখ ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে এর আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে, যা এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাফার জোন এবং প্রতিরক্ষার জন্য একটি সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে গড়ে তুলেছে। তাই দিল্লির জন্য লাদাখের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগের।

কার্গিল যুদ্ধের মতো সামরিক সংঘাত, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য এই অঞ্চলের তাৎপর্য অনেক। কৌশলগত দিক থেকে চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলটিকে সব সময় ভারতের নজরে রাখতে হয়।

চীনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর লাদাখের অবস্থান। এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা। এখানে অসংখ্যবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যেমন গালওয়ান উপত্যকায়।

লাদাখের দুর্গম ভূখণ্ড এবং উঁচু স্থান ভারতের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের মতো সামরিক সংঘাত এই অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছিল। সর্বোপরি, সীমান্তবর্তী অঞ্চল হিসেবে আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের জন্য লাদাখের নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫৯০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর এবার দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে বৈঠক হবে ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২৯ ডিসেম্বর হোয়াইট হাউসে বৈঠকে বসছেন। আজ সোমবার ইসরায়েলি সরকারের একজন মুখপাত্র বৈঠকের তারিখটি নিশ্চিত করেছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের প্রাথমিক ঘোষণা আসে। তবে আজ ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র শশ বেদ্রোসিয়ান অনলাইন ব্রিফিংয়ে বৈঠকের প্রধান আলোচ্যসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।

বৈঠকে নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প গাজার যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ এবং ভবিষ্যতের পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবেন। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) মোতায়েনের বিষয়টি নিয়েও কথা হবে।

গতকাল রোববার নেতানিয়াহু বলেছিলেন, বৈঠকের মূল লক্ষ্য হবে গাজায় হামাসের শাসনের অবসান করা এবং হামাস যেন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় দেওয়া ‘প্রতিশ্রুতি’ (নিরস্ত্রীকরণ) পূরণ করে, তা নিশ্চিত করা। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ ‘আরও কঠিন’ হবে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে প্রধানত ইসরায়েলি বন্দী ও ইসরায়েলের হাতে আটক ফিলিস্তিনিদের বিনিময় এবং গাজার কিছু অংশ থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। দ্বিতীয় ধাপের চুক্তিতে যুদ্ধপরবর্তী গাজা প্রশাসন নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা, যা একটি অত্যন্ত জটিল ও বহুলাংশে অমীমাংসিত বিষয়। এই ধাপে নেতৃত্ব, ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং আইএসএফ বাহিনীর ভূমিকা নির্ধারণ করা বাকি রয়েছে।

গত ১০ অক্টোবর থেকে মার্কিন মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী ৫৯০ বারের বেশি এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে বলে জানা গেছে। যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অন্তত ৩৬০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর ফলে মৃতের সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

এদিকে, বৈঠকটি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে ইসরায়েলকে একটি নতুন নিরাপত্তা চুক্তি করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। গত সপ্তাহে তিনি সামাজিক মাধ্যমে ইসরায়েলকে সিরিয়ার সঙ্গে ‘শক্তিশালী ও ফলপ্রসূ সংলাপের’ আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে সিরিয়ায় ইসরায়েলের বারবার অনুপ্রবেশ এবং বিমান হামলা সেই আলোচনাকে বহুলাংশে ব্যাহত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অস্ট্রেলিয়ায় তরুণীকে হত্যার পর ৪ বছর ভারতে লুকিয়ে ছিলেন ঘাতক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ঘাতক রাজবিন্দর সিং ও হত্যার শিকার টোইয়া কর্ডিঙ্গলি। ছবি: সংগৃহীত
ঘাতক রাজবিন্দর সিং ও হত্যার শিকার টোইয়া কর্ডিঙ্গলি। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে আলোচিত একটি হত্যা মামলায় সাবেক পুরুষ নার্স রাজবিন্দর সিংকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ৪১ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ২০১৮ সালে টোইয়া কর্ডিঙ্গলি নামে ২৪ বছর বয়সী এক তরুণীকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। সোমবার জুরি বোর্ডের সদস্যরা তাঁকে দোষী ঘোষণা করলে আদালতে উপস্থিত মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বিবিসি জানিয়েছে, টোইয়া কর্ডিঙ্গলিকে অন্তত ২৬ বার ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। সেদিন বিকেলে তিনি তাঁর কুকুর নিয়ে সমুদ্র সৈকতে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। পরদিন সমুদ্রসৈকতের বালিয়াড়িতে অর্ধেক ঢেকে থাকা অবস্থায় মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেন তাঁর বাবা। কুইন্সল্যান্ডের কেয়ার্নস ও পোর্ট ডগলাস—এই দুই জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রের মাঝখানে অবস্থিত ওই সৈকতটি।

মামলার শুনানিতে আদালত জানান, কর্ডিঙ্গলিকে বারবার ছুরিকাঘাত করা হয় এবং তাঁর দেহ অগভীর বালুকাময় গর্তে ফেলে রাখা হয়—যেখানে তার বেঁচে থাকার কোনো আশাই ছিল না।

অভিযুক্ত রাজবিন্দর সেই সময়টিতে কুইন্সল্যান্ডের ইনিসফেইল এলাকায় বসবাস করতেন, যা হত্যার স্থান থেকে প্রায় দুই ঘণ্টার দূরত্বে। তদন্ত শুরু হওয়ার পরপরই পুলিশের সন্দেহ তাঁর ওপর গিয়ে পড়ে। তবে সেই সময়ই তিনি হঠাৎ অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। ফেলে রেখে যান তাঁর স্ত্রী, তিন সন্তান এবং বাবা-মাকে।

চার বছর ভারতে লুকিয়ে থাকার পর অবশেষে তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অস্ট্রেলিয়ায়। গত মার্চে এই মামলাটির প্রথম বিচার প্রক্রিয়া জুরি বোর্ডের অমতজনিত কারণে স্থগিত হয়েছিল। দ্বিতীয় দফার বিচার শেষে এবার তাঁকে দোষী ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রসিকিউটররা মত দিয়েছেন, রাজবিন্দরের হঠাৎ দেশত্যাগই তাঁর অপরাধবোধের প্রমাণ। ফরেনসিক প্রমাণও তাঁকেই দোষী সাব্যস্ত করে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা একটি কাঠির ওপর পাওয়া ডিএনএ নমুনা অন্য কারও নয়, বরং রাজবিন্দরের হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ৩.৮ বিলিয়ন গুণ বেশি। এ ছাড়া কর্ডিঙ্গলির মোবাইল ফোনের গতিবিধি এবং সিংয়ের গাড়ির অবস্থান হত্যাকাণ্ডের সময়ের সঙ্গে মিলে যায়।

টোইয়া কর্ডিঙ্গলি স্থানীয় স্বাস্থ্য পণ্যের দোকানে কাজ করতেন এবং পশু উদ্ধারকারী সংগঠনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর কুইন্সল্যান্ড জুড়ে ব্যাপক শোক দেখা দেয়।

দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর রাজবিন্দর সিংকে আগামী মঙ্গলবার সাজা ঘোষণার জন্য আবার আদালতে হাজির করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রণধীর জয়সওয়াল। ফাইল ছবি
রণধীর জয়সওয়াল। ফাইল ছবি

পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল আজ সোমবার সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘গণতন্ত্র এবং পাকিস্তান একসঙ্গে যায় না।’ প্রতিবেশী দেশের গণতন্ত্রের অবস্থা, বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং সেখানে চলমান প্রতিবাদ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে জয়সওয়াল এই মন্তব্য করেন।

ইমরান খানের বর্তমান অবস্থা ও সাম্প্রতিক সময়ে তাঁকে নিয়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরীর মন্তব্য, নানান আলোচনার জন্ম দিয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিককাঠামো দুর্বল হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল বলেন, ভারত সেখানকার সব ঘটনার ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন।

জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানের প্রতিটি ঘটনার ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখি। আপনি জানতে চেয়েছেন, পাকিস্তানের গণতন্ত্র দুর্বল হচ্ছে কি না। আসলে গণতন্ত্র আর পাকিস্তান একসঙ্গে যায় না। এ বিষয়ে আমরা যত কম কথা বলব, ততই ভালো।’

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্ত সংঘর্ষ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল আফগান বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘সীমান্তে সংঘর্ষের খবর আমরা দেখেছি। এতে বহু আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আমরা নিরপরাধ আফগান জনগণের ওপর এই ধরনের হামলার নিন্দা জানাই।’ ভারত আফগানিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে তাদের সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেন, এতে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

গত শুক্রবার কারাবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি’ হিসেবে আখ্যা দেন পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী।

জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী দাবি করেন, ‘ইমরান খান সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রচার চালাচ্ছেন, বিদেশি শক্তির সঙ্গে সমন্বয় করছেন এবং নানা ভুল তথ্য ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছেন।’ তাঁর ভাষ্য, পাকিস্তানের ‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতেই’ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন তিনি। এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘রাষ্ট্রের ওপরে কেউ নয়।’

ইমরান খানের নাম উল্লেখ না করে আইএসপিআর মহাপরিচালক বলেন, একজন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব—যাঁর নাম না নিলেও সবার জানা—নিজের অহংকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন যে তিনি মনে করেন, ‘আমিই কিছু।’ এই বিভ্রান্তিকর মানসিকতার কারণেই তাঁর বয়ান ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিতে’ পরিণত হয়েছে।

এর আগে কারাগারে থাকা ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন তাঁর তিন বোন। এরপরই পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কারাগারে মারা গেছেন—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের পর জাপানে সুনামি সতর্কতা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ০৯
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল সমুদ্রের ৩২ মাইল গভীরে। ছবি: জাপান টাইমস
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল সমুদ্রের ৩২ মাইল গভীরে। ছবি: জাপান টাইমস

জাপানের উত্তর উপকূলে আঘাত হেনেছে ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। এরপরই উপকূলীয় এলাকায় সুনামি সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সময় সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাত ৭টা ৪৫ মিনিটে হোক্কাইডো অঞ্চলের উপকূল থেকে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) প্রাথমিক তথ্যে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল সমুদ্রের ৩২ মাইল গভীরে, ৪১° উত্তর অক্ষাংশ ও ১৪২.৩° পূর্ব দ্রাঘিমাংশের কাছাকাছি।

‘জাপান টাইমস’ সহ জাপানের অন্যান্য সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পরপরই উপকূলীয় এলাকায় সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সুনামির কারণে সমুদ্রতটে ঢেউয়ের উচ্চতা সর্বোচ্চ ১ মিটার পর্যন্ত উঠতে পারে। তবে প্রাথমিক পূর্বাভাসে ৩ মিটার উচ্চতার ঢেউয়ের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছিল।

তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। একইভাবে কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা কাছাকাছি থাকা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়নি বলে জানানো হয়েছে।

এর আগে গত ৯ নভেম্বর উত্তর জাপানে আরও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। সেই সময় উপকূলীয় এলাকায় স্বল্প সময়ের জন্য সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। ৬.৯ মাত্রার সেই ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩ মিনিটে ইওয়াতে উপকূলে আঘাত হানে এবং প্রায় ২০ কিলোমিটার গভীর থেকে এর উৎপত্তি হয়। ওই ঘটনার পর বেশ কয়েকটি পরাঘাতও অনুভূত হয়েছিল।

নভেম্বরের ওই ভূমিকম্পে ওফুনাতো, মিয়াকো, কামাইশি, ওমিনাতো ও কুজিসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় ১০ থেকে ২০ সেন্টিমিটার উচ্চতার ক্ষুদ্র সুনামি ঢেউ রেকর্ড করা হয়েছিল। সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়েছিল প্রায় তিন ঘণ্টা পর। তবে বিশেষজ্ঞরা আগেই জানান, ওই অঞ্চলে পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত শক্তিশালী পরাঘাত অনুভূত হতে পারে।

জাপান প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থিত হওয়ায় ভূমিকম্প প্রবণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রায়ই দেশটিতে ছোট-বড় ভূমিকম্প অনুভূত হয় এবং বড় ধরনের কম্পনের ক্ষেত্রে সেখানে প্রায় সময়ই সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়।

সর্বশেষ ভূমিকম্পের ঘটনায় কর্তৃপক্ষ স্থানীয় জনগণকে সতর্ক থাকতে, প্রয়োজন হলে উঁচু স্থানে সরে যেতে এবং সরকারি ঘোষণার প্রতি নজর রাখার অনুরোধ জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত