Ajker Patrika

প্রতিরক্ষা সম্প্রচার ও টিভিতে পাকিস্তানি আলোচক নিষিদ্ধ করল ভারত

কলকাতা প্রতিনিধি  
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পেহেলগাম হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি করেছে। গতকাল সোমবার (৫ মে) এই নির্দেশনাগুলো জারি করা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

এই নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে— ভারতীয় গণমাধ্যমের আলোচনা অনুষ্ঠানে পাকিস্তানি বিশ্লেষকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা, নির্দিষ্ট কিছু পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করা এবং প্রতিরক্ষা কার্যক্রমের সরাসরি সম্প্রচার নিষিদ্ধ করা।

পাকিস্তানি বিশ্লেষকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা— ভারতের নিউজ ব্রডকাস্টার্স অ্যান্ড ডিজিটাল অ্যাসোসিয়েশন (NBDA) তাদের সদস্য চ্যানেলগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে যাতে তারা পাকিস্তান থেকে আগত কোনো প্যানেলিস্ট বা বিশ্লেষককে টক শো বা বিতর্ক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানায়। এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, পাকিস্তানি বিশ্লেষকেরা প্রায়শই ভারত-বিরোধী বক্তব্য প্রদান করেন, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে।

পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল ব্লক— কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ১৬টি পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল নিষিদ্ধ করেছে ভারত। এই চ্যানেলগুলোর মোট সাবস্ক্রাইবার তথা গ্রাহকসংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৩০ লাখের মতো। ভারত সরকারের সূত্র বলছে, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার মতো কনটেন্ট প্রচারের অভিযোগে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে চ্যানেলগুলো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নিষিদ্ধ হওয়া চ্যানেলগুলোর মধ্যে রয়েছে— পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন, সামা টিভি, এআরওয়াই নিউজ, বোল নিউজ, রাফতার, জিও নিউজ ও সুনো নিউজের ইউটিউব চ্যানেল। সাংবাদিক ইরশাদ ভাট্টি, আসমা শিরাজি, উমর চিমা ও মুনিব ফারুকের ইউটিউব চ্যানেলও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া নিষিদ্ধ হওয়া অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে—দ্য পাকিস্তান রেফারেন্স, সামা স্পোর্টস, উজাইর ক্রিকেট ও রাজি নামা।

ভারত সরকারের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, পেহেলগাম হামলার পর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েনের মধ্যে এই ইউটিউব চ্যানেলগুলো ভারত, ভারতীয় সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক স্পর্শকাতর বিষয়, মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রচার ও ভুল তথ্য ছড়াচ্ছিল। সরকারের মতে, এই চ্যানেলগুলো ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছিল।

প্রতিরক্ষা কার্যক্রমের সরাসরি সম্প্রচার নিষিদ্ধ— তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় মিডিয়া চ্যানেলগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে যাতে তারা প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কার্যক্রমের সরাসরি সম্প্রচার থেকে বিরত থাকে। এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হলো জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করা এবং সেনাবাহিনীর কার্যক্রমের গোপনীয়তা বজায় রাখা।

এই পদক্ষেপগুলি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা এবং পাকিস্তান থেকে আগত বিভ্রান্তিকর তথ্য ও প্রোপাগান্ডা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে গৃহীত হয়েছে। সরকারের মতে, এই সিদ্ধান্ত গুলি দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত