Ajker Patrika

সাইবার প্রতারণার সহজ শিকার ভারতীয়রা, গত বছর হারিয়েছে ২৩০০০ কোটি রুপি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৫, ১৭: ৪৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সাইবার অপরাধী ও প্রতারকদের হাতে ২০২৪ সালে ভারতীয়রা ২২ হাজার ৮৪২ কোটি রুপি খুইয়েছেন বলে জানিয়েছে দিল্লিভিত্তিক মিডিয়া ও প্রযুক্তি কোম্পানি ডেটালিডস। ভারতে ব্যাপক আকার ধারণ করা ডিজিটাল আর্থিক প্রতারণাসংক্রান্ত তাদের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

অন্যদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় সংস্থা ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার, ১৪সি পূর্বাভাসে বলেছে, প্রতারণার কারণে চলতি বছরে ১ দশমিক ২ লাখ কোটি রুপির বেশি ক্ষতি হবে ভারতীয়দের।

ডেটালিডসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইবার অপরাধী ও প্রতারকদের কারণে গত বছর ভারতীয়দের ক্ষতির পরিমাণ ২০২৩ সালের ৭ হাজার ৪৬৫ কোটি রুপির প্রায় তিন গুণ এবং ২০২২ সালের ২ হাজার ৩০৬ কোটি রুপির প্রায় ১০ গুণ।

আজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এনডিটিভি জানিয়েছে, সাইবার অপরাধসংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যাও ২০২৪ সালে বেশি ছিল। সে বছর সাইবার অপরাধসংক্রান্ত প্রায় ২০ লাখ অভিযোগ নথিভুক্ত হয়। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৬ লাখ। গত বছরের অভিযোগ ২০১৯ সালের চেয়ে ১০ গুণ বেশি ছিল।

সাইবার অপরাধসংক্রান্ত অভিযোগ ও ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে—ভারতের ডিজিটাল প্রতারকেরা ক্রমশ আরও বেশি চতুর ও দক্ষ হয়ে উঠছে। প্রায় ২ কোটি ৯০ লাখ বেকারের দেশে তাদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।

ভারতে সাইবার অপরাধ বাড়ার কারণ

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতির ব্যবহার—অর্থাৎ স্মার্টফোনভিত্তিক সেবা, যেমন পেটিএম ও ফোনপে এবং অনলাইনে আর্থিক তথ্য ভাগাভাগি ও প্রক্রিয়াকরণের প্রবণতা আগের চেয়ে বেড়েছে। এগুলোকে সাইবার অপরাধ বাড়ার জন্য দায়ী করা হচ্ছে। তা ছাড়া হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো মেসেজিং প্ল্যাটফর্মকে এনক্রিপ্টেড ও সম্পূর্ণ নিরাপদ মনে করার দিকেও আঙুল তোলা হচ্ছে।

সরকারি তথ্য বলছে, কেবল ২০২৫ সালের জুন মাসেই ইউনিফায়েড পেমেন্ট ইন্টারফেসের (ইউপিআই) মাধ্যমে ১ কোটি ৯০ লাখের বেশি লেনদেন হয়েছে, যার মোট মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক শূন্য ৩ লাখ কোটি রুপিতে।

ডিজিটাল লেনদেনের পরিমাণ ভারতে ২০১৩ সালের প্রায় ১৬২ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ১২০ দশমিক ৮২ কোটি রুপিতে। বিশ্বব্যাপী এ ধরনের লেনদেনের প্রায় অর্ধেক হচ্ছে সেখানে।

এ বৃদ্ধির বড় কারণ করোনা মহামারি ও পরে লকডাউন।

মহামারির সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও কাগজের নোটের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে পেটিএমের মতো ইউপিআই অ্যাপ ব্যবহারে জোর দিয়েছিল ভারত সরকার।

তাদের যুক্তি ছিল, ডিজিটাল পেমেন্ট টুলগুলো আর্থিক সেবার প্রসার ঘটাবে, বিশেষ করে, গ্রামীণ এলাকায়। ২০১৯ সালেই ভারতে ৪৪ কোটি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী ছিল এবং মোবাইল ডেটা রেট ছিল বেশ সস্তা। তখন এক জিবির দাম ছিল ২০০ টাকার মতো (৩ ডলারেরও কম)।

এর অর্থ, ছোট শহরের পাশাপাশি গ্রামের মানুষজন ফোনের মাধ্যমে সহজে আর্থিক সেবা নিতে পারছিলেন, যা নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার চেয়ে অনেক সাশ্রয়ী।

কিন্তু ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেম যত সমৃদ্ধ হয়েছে, ততই বিস্তৃত হয়েছে সাইবার অপরাধী ও প্রতারকদের নেটওয়ার্কও। তারা নিজেদের দক্ষতা উন্নত করে কার্যক্রমের পরিধি বাড়িয়েছে।

ভারতের অনলাইন প্রতারকেরা এখন পুরো আর্থিক খাতকে নিশানা করছে। ব্যাংক থেকে বিমা, স্বাস্থ্যসেবা থেকে খুচরা বাণিজ্য—কোনো কিছুই বাদ যাচ্ছে না। কয়েক স্তরে প্রতারণার জটিল কাঠামো তৈরি করে নজরদারি এড়াচ্ছে তারা।

এ ছাড়া এই সময়ের ডিজিটাল প্রতারকেরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের মতো প্রযুক্তি সম্পর্কে বেশ ওয়াকিবহাল। তারা বিভিন্ন তারকা ও ব্যবসায়ী নেতাদের ছবি ব্যবহার করে ডিপফেক ভিডিও তৈরি করে মানুষের মনে বিশ্বাস স্থাপন করে, যাতে তাঁদের উদ্বেগ দূর হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাবেক কেরানির ২৪টি আলিশান বাড়ি ও ৩০ হাজার কোটির সম্পদ

আরও বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

সব কমিটি থেকে নারীদের সিস্টেমেটিক্যালি সাইড করা হয়েছে: সামান্তা শারমিন

ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে রেখে ‘৪ কোটি টাকা আদায়’

অবরোধকারীদের ‘ভুয়া’ আখ্যা দিয়ে ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধাদের’ হামলা, পুলিশের লাঠিপেটায় শাহবাগ ফাঁকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত