Ajker Patrika

সংসদে আমাকে অযোগ্য ঘোষণা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: গান্ধী

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস পার্টির নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, সংসদে তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি বলছে, সংসদীয় নিয়ম মেনে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এর আগে একটি মানহানির মামলায় গান্ধী দুই বছরের কারাদণ্ড হওয়ার ১ দিন পর গতকাল শুক্রবার ভারতের পার্লামেন্ট তার এমপির মর্যাদা কেড়ে নেয়। ২০১৯ সালে একটি নির্বাচনী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদবি নিয়ে মন্তব্যের জন্য আদালত তাঁকে এ সাজা দিয়েছে। 

২০১৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশে বলা হয়েছে, একজন আইনপ্রণেতা কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বা তার বেশি বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে সংসদে তিনি অযোগ্য হবেন।

আজ শনিবার একটি সংবাদ সম্মেলনে মিস্টার গান্ধী বলেছেন, ‘আমাকে অযোগ্য ঘোষণা হলে তাতে আমার কিছু যায় আসে না... আমাকে আজীবনের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করুক... আমি চালিয়ে যাব, আমি থামব না।’

ভারতের বিরোধী দলগুলোর অনেকেই গান্ধীকে অযোগ্য ঘোষণা সমর্থন করেছে। তবে গতকাল শুক্রবার ১৪টি দল সুপ্রিম কোর্টের অভিযোগ করেছে যে ফেডারেল সরকার বিজেপির বিরোধীদের দমাতে তদন্তকারী সংস্থাগুলো অপব্যবহার করছে।

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে অভিযোগ করেছেন, আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সংসদীয় তদন্তের দাবি করায় গান্ধীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এই বছরের শুরুতে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে স্টক ম্যানিপুলেশন এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতির অভিযোগ আনে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। তবে আদানি গ্রুপ এ আর্থিক জালিয়াতির বিষয়টি অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গান্ধীকে অযোগ্য ঘোষণার পর তিনি বলেছিলেন, ‘আমার কাজ হলো এই দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করা। অর্থাৎ, দেশের প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করা, দেশের দরিদ্র জনগণের কণ্ঠস্বরকে রক্ষা করা, আদানির মতো মানুষদের সম্পর্কে সত্য বলার অধিকার দেওয়া, যারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে স্বার্থ হাসিল করছে।’

গান্ধী আরও বলেন, ‘আদানিকে নিয়ে আমি পরবর্তী যেই বক্তব্য দেব তার ভয়েই মোদি সরকার আমাকে সংসদে অযোগ্য ঘোষণা করেছে। এই ভয় আমি মোদির চোখে সমুজ্জ্বল।’

গান্ধীর সমর্থকেরা বলছেন, ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যে দুর্বল হয়ে পড়ছে তারই লক্ষণ হলো গান্ধীকে সংসদে অযোগ্য ঘোষণা করা। আগামী দিনে সরকারের বিরুদ্ধে আরও বিক্ষোভের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এদিকে গান্ধীর সাজা স্থগিত না হলে বা মামলায় খালাস না পেলে আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনে তিনি অংশ নিতে পারবেন না।

ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) গান্ধীকে অযোগ্য ঘোষণা করার সিদ্ধান্তটি সংসদীয় আইন অনুসারে ছিল বলে দাবি করেছে। এ ছাড়া রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য কংগ্রেসের সমালোচনা করেছে।

বিজেপি সরকারের শ্রম মন্ত্রী ভূপেন্দর যাদব বলেছেন, ‘গান্ধী অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) বর্ণ ও গোষ্ঠীর সদস্যদের অপমান করেছেন যার অধীনে ‘মোদী’ নামটি পড়ে। কোনো পদবিকে অপমান করা বাক্‌স্বাধীনতা নয়।’

তবে কিছু বিশেষজ্ঞ গান্ধীর শাস্তির তীব্রতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়জিৎ পাল বলেছেন, ‘ভারতে নিম্নস্তরের রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্যরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং জনসভায় প্রায়শই এমন চরম বক্তব্য দিয়ে থাকেন। গান্ধীর মতো প্রথমবারের মতো অপরাধীকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া ‘‘অত্যন্ত অস্বাভাবিক’’।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত