Ajker Patrika

মোদির আমলে ১৪১ এমপিকে বরখাস্ত করে রেকর্ড গড়ল ভারত

আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫: ৪২
মোদির আমলে ১৪১ এমপিকে বরখাস্ত করে রেকর্ড গড়ল ভারত

ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা ও নিম্নকক্ষ লোকসভা থেকে গতকাল সোমবার এক দিনে বিরোধীদলীয় ৭৯ জন এমপিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার একই পরিণতি বরণ করেছেন আরও ৪৯ জন এমপি। সব মিলিয়ে বিগত কয়েক দিনে ভারতীয় পার্লামেন্ট থেকে ১৪১ জন এমপিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো, যা ভারতের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা আজ লোকসভার অধিবেশন চলাকালে কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাহ, কংগ্রেসের নেতা শশী থারুর, ক্রান্তি চিদাম্বরম, ন্যাশনাল কংগ্রেসের সুপ্রিয়া সুলে, সমাজবাদী পার্টির ডিম্পল যাদবসহ সব মিলিয়ে ৪৯ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।

গত সপ্তাহে লোকসভার চার স্তরের নিরাপত্তা ভেদ করে অধিবেশনস্থলে দুই ব্যক্তি ঢুকে পড়াকে কেন্দ্র করে এর জবাবদিহি চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য দাবি করে প্রতিবাদ করছিলেন বিরোধী দলীয় এমপিরা। পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই তাঁরা এ নিয়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করছিলেন।

তবে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার বক্তব্য হলো—লোকসভার নিরাপত্তার বিষয়টি লোকসভার নিজস্ব সচিবালয়ের দায়িত্বের আওতায় পড়ে, কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় নয়। তিনি বলেন, ‘সরকার লোকসভার সচিবালয়ের দায়দায়িত্বে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। আমরা তা কোনোভাবেই হতে দেব না।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বিষয়টিকে গুরুতর বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি দৈনিক জাগরণ নামে এক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, এটি খুবই গুরুতর ইস্যু এবং এ ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত। সে সময় তিনি বলেছিলেন, বিষয়টি নিয়ে আর কোনো বিতর্ক হওয়ারও প্রয়োজন নেই।

উল্লেখ্য, ভারতের পার্লামেন্টের এই সাময়িক বরখাস্তের ধারা শুরু হয় গত সপ্তাহেই। লোকসভার অধিবেশনস্থলে দুই ব্যক্তি ঢুকে পড়ার দিনেই বিরোধী এমপিরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্য দাবি করতে থাকেন। সেদিন ১৩ লোকসভা ও ১ রাজ্যসভা এমপিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে বেআইনি আচরণের অভিযোগ আনা হয়। পরে গতকাল সোমবার অধিবেশন আবার শুরু হওয়ার পর পার্লামেন্টের দুই কক্ষ থেকেই ৭৯ জন এমপিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সর্বশেষ আজ মঙ্গলবার আরও ৪৯ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আমি ছিলাম নিখুঁত শিকার—মৃত্যুর আগে লিখে গেছেন ভার্জিনিয়া জিউফ্রে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভার্জিনিয়া জিউফ্রে যে বয়সে জেফরি অ্যাপস্টেইনের যৌন দাসীতে পরিণত হয়েছিলেন। ছবি: দ্য টাইমস
ভার্জিনিয়া জিউফ্রে যে বয়সে জেফরি অ্যাপস্টেইনের যৌন দাসীতে পরিণত হয়েছিলেন। ছবি: দ্য টাইমস

জেফরি অ্যাপস্টেইন ও তাঁর প্রেমিকা গিলেইন ম্যাক্সওয়েলের দ্বারা যৌন দাসত্বের শিকার হয়ে যে কিশোরীর গল্প গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল, সেই ভার্জিনিয়া জিউফ্রে আত্মহত্যার আগে লিখে গেছেন তাঁর জীবনের কাহিনি। মৃত্যুর পর এক ভয়ংকর জীবনের দলিল হিসেবে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ‘নোবডিজ গার্ল’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে ভার্জিনিয়ার আত্মজীবনী। সমালোচকেরা বলছেন—এই বইটি শুধু এক নারীর নির্যাতনের কাহিনি নয়, বরং ক্ষমতা, অর্থ ও শোষণের অন্ধকার জগতের নির্মম সাক্ষ্য।

লন্ডনের সেই রাত ও রাজপরিবারের কেলেঙ্কারি

স্মৃতিচারণামূলক এই বইটির শুরুতেই জিউফ্রে ফিরে যান লন্ডনের সেই কুখ্যাত রাতে, যে রাতে তিনি দেখা করেছিলেন তখনকার ব্রিটিশ রাজপুত্র প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে। তিনি লিখেছেন, সেই রাতে তাঁর পরনে ছিল গোলাপি হাতকাটা টপ ও ঝলমলে জিন্স—যেন ব্রিটনি স্পিয়ার্স বা ক্রিস্টিনা আগুইলেরার মতো পপ তারকাদের পোশাক। তাঁর মালকিন গিলেইন ম্যাক্সওয়েল অবশ্য তাঁকে শালীন পোশাকে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কিশোরী ভার্জিনিয়া নিজের মতোই থাকতে চেয়েছিলেন।

সেই রাতের একটি ছবি এখন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিটিতে দেখা যায়—ভার্জিনিয়ার কোমরে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু। এই ছবিটি পরবর্তীতে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির কারণ হয়। অ্যান্ড্রু সব অভিযোগ অস্বীকার করলেও, ২০২২ সালে তিনি ভার্জিনিয়ার সঙ্গে মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে সমঝোতা করেছিলেন।

শৈশবের অন্ধকার ও ‘নিখুঁত শিকার’-এর জন্ম

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার দরিদ্র শহর লক্সাহাটচিতে ভার্জিনিয়া জিউফ্রের জন্ম ও বেড়ে ওঠা। বাবা স্কাই রবার্টস ও মা লিনের সংসারে দারিদ্র্য ও অবহেলা ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। ভার্জিনিয়া অভিযোগ করেছেন, তাঁর নিজের বাবাই শৈশবে তাঁকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন—যা তাঁর আত্মসম্মান ধ্বংস করে দেয়। আত্মজীবনীতে তিনি দাবি করেছেন, শৈশবের সেই আঘাতই তাঁকে অ্যাপস্টেইনের নিখুঁত শিকার বানিয়েছিল।

মাত্র ১৩ বছর বয়সেই তিনি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন। এ অবস্থায় রন ইপিংগার নামে স্থানীয় এক শিশুকামী বৃদ্ধ তাঁকে ছয় মাস ধরে আটকে রেখে ধর্ষণের জন্য বিভিন্ন পুরুষের কাছে পাঠাতেন। পরে এফবিআই তাঁকে উদ্ধার করেছিল।

লন্ডনের সেই রাতে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে ভার্জিনিয়া, পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন গিলেইন ম্যাক্সওয়েল। ছবি: সংগৃহীত
লন্ডনের সেই রাতে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে ভার্জিনিয়া, পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন গিলেইন ম্যাক্সওয়েল। ছবি: সংগৃহীত

ট্রাম্পের মার-এ-লাগো ক্লাবে চাকরি ও গিলেইন ম্যাক্সওয়েলের আগমন

১৬ বছর বয়সে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার-এ-লাগো ক্লাবে লকাররুম অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে চাকরি পান ভার্জিনিয়া। একদিন ব্রিটিশ উচ্চারণে কথা বলা এক নারী, গিলেইন ম্যাক্সওয়েল, এসে পরিচিত হন তাঁর সঙ্গে। গিলেইন সে সময় ভার্জিনিয়াকে প্রস্তাব দেন—তিনি যেন তাঁর এক ধনী বন্ধুর শরীর ম্যাসাজ করে দেন—এতে কিছু অতিরিক্ত আয় হবে।

গিলেইনের সেই বন্ধুটি ছিলেন আসলে তাঁরই প্রেমিক কুখ্যাত জেফরি অ্যাপস্টেইন। সেদিনই প্রথমবারের মতো অ্যাপস্টেইনের বিলাসবহুল প্রাসাদে যান ভার্জিনিয়া। গিলেইন তাঁকে বাড়িটির একটি কক্ষে নিয়ে যান, যেখানে নগ্ন অবস্থায় অপেক্ষা করছিলেন অ্যাপস্টেইন। এরপর থেকে শুরু হয় এক দুঃস্বপ্নের জীবন, যেখানে প্রতিদিন ভার্জিনিয়াকে অ্যাপস্টেইনের চাহিদা পূরণের জন্য বাধ্য করা হতো।

যৌন দাসত্বের বছরগুলো

অ্যাপস্টেইনের প্রাসাদে কাজের নাম করে ভার্জিনিয়া আসলে যৌন দাসীতে পরিণত হয়েছিলেন। গিলেইন ম্যাক্সওয়েল তাঁকে শেখাতেন, কীভাবে ধনী পুরুষদের খুশি রাখতে হয়। আর প্রায় সময়ই ভার্জিনিয়ার প্রশংসা করে তিনি তাঁর হাতে ২০০ ডলার গুঁজে দিতেন।

অন্যদিকে ভয় দেখানো, হুমকি দেওয়া ও মানসিক প্রভাব—সব মিলিয়ে ভার্জিনিয়া হয়ে ওঠেন জেফরি অ্যাপস্টেইনের পুরোপুরি বশ্য। সেই সময়টিতে অ্যাপস্টেইন তাঁকে নিয়ে যেতেন বিল ক্লিনটন, নাওমি ক্যাম্পবেলের মতো নামকরা ব্যক্তিদের পার্টিতে।

১৫ বছর বয়সে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে ভার্জিনিয়া। ছবি: সংগৃহীত
১৫ বছর বয়সে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে ভার্জিনিয়া। ছবি: সংগৃহীত

রাজপুত্র ও বিলিয়নিয়ারদের ছায়ায়

দুই বছরের মধ্যেই ভার্জিনিয়া হয়ে ওঠেন অ্যাপস্টেইনের তথাকথিত ‘নম্বর ওয়ান’ মেয়ে—যে কি না অন্য মেয়েদেরও এই চক্রে নিয়ে আসত। ‘ললিতা এক্সপ্রেস’ নামে নিজের ব্যক্তিগত একটি এই জেট বিমানেও তাঁকে নিয়ে চড়তেন অ্যাপস্টেইন।

আত্মজীবনীতে ভার্জিনিয়া দাবি করেছেন, প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে মোট তিনবার তিনি যৌনমিলনে বাধ্য হয়েছেন। এর মধ্যে প্রথমবার লন্ডনে, পরে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে এবং শেষ বার ক্যারিবিয়ান দ্বীপে। গিলেইন ম্যাক্সওয়েল তাঁকে নির্দেশ দিয়েছিলেন—‘জেফরির সঙ্গে যেমনটা করো, তুমি তার জন্যও সেটা করবে।’

আত্মজীবনীতে ভার্জিনিয়া উল্লেখ করেছেন, এভাবে আরও অসংখ্য ধনী ও ক্ষমতাবান ব্যক্তির সঙ্গে তাঁকে মিলিত হতে হয়েছে, যাদের অনেকের নামও তিনি জানেন না।

মুক্তি, মাতৃত্ব ও সাহসী প্রত্যাবর্তন

১৯ বছর বয়সে থাইল্যান্ডে ম্যাসাজ কোর্স করার অজুহাতে পালানোর সুযোগ পান ভার্জিনিয়া। সেখানে তিনি পরিচিত হন রবার্ট জিউফ্রের সঙ্গে। পরে তাঁকেই বিয়ে করে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী হন। কয়েক বছর পর তিনি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। মা হিসেবে নিজের মেয়েকে দেখেই তাঁর মধ্যে জেগে ওঠে প্রতিবাদের আগুন।

২০০৯ সালে তিনি ‘জেন ডো’ ছদ্মনামে মামলা করেন অ্যাপস্টেইনের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে তিনি প্রকাশ্যে আসেন এবং অ্যাপস্টেইনের পর গিলেইন ম্যাক্সওয়েল ও প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধেও মামলা করেন। সেই সময়টিতে সমাজের নিন্দা ও কুৎসা তাঁকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেয়। তারপরও তিনি তাঁর লড়াই থামাননি।

ভার্জিনিয়ার এই সাহসই অনুপ্রাণিত করে আরও অনেক নারীকে, যারা নিজেদের ‘সারভাইভার সিস্টার্স’ বলে পরিচয় দেন।

শেষ জীবন ও বেদনার সমাপ্তি

বইটিতে ভার্জিনিয়া স্বীকার করেছেন, তাঁর দাম্পত্য জীবনও ছিল অশান্ত। তাঁর আত্মীয়রাও জানিয়েছেন, স্বামী রবার্টের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ক্রমেই ভেঙে পড়েছিল। এর ফলে ২০২৪ সালে সন্তানদের হেফাজত হারান তিনি। এতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।

নিজের অতীতের ছায়া থেকেও তিনি কখনোই মুক্ত হতে পারেননি। তাই খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম, আত্ম ক্ষতি, এমনকি বারবার আত্মহত্যার প্রচেষ্টাও চালিয়েছেন তিনি। অবশেষে গত এপ্রিলে ৪১ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ার পার্থের উপকণ্ঠে নিজের খামারবাড়িতে আত্মহত্যা করেন ভার্জিনিয়া। মৃত্যুর কিছুদিন আগে নিজের আত্মজীবনীর কথা উল্লেখ করে এক ইমেইলে তিনি লিখেছিলেন—‘আমার আন্তরিক ইচ্ছা, এই পাণ্ডুলিপিটি প্রকাশিত হোক, যে কোনো পরিস্থিতিতে। সত্য জানা অত্যাবশ্যক—যাতে এই ভয়াবহ চক্রের বিরুদ্ধে সচেতনতা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা হয়।’

উল্লেখ্য, যৌন পাচারের অভিযোগে বিচারাধীন অবস্থায় ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট একটি মার্কিন কারাগারে রহস্যজনকভাবে আত্মহত্যা করেন ভার্জিনিয়াকে যৌন দাসীতে পরিণত করা জেফরি অ্যাপস্টেইন। আর ২০ বছরের দণ্ড নিয়ে বর্তমানে মার্কিন কারাগারে বন্দী আছেন গিলেইন ম্যাক্সওয়েল। সম্প্রতি গিলেইন ও অ্যাপস্টেইনের আলোচিত খদ্দের প্রিন্স অ্যান্ড্রুও তাঁর রাজকীয় উপাধি ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ০১
শামখানি নিজের মেয়ের হাত ধরে তেহরানের বিলাসবহুল এসপিনাস প্যালেস হোটেলের এক ‘ওয়েডিং হলে’ প্রবেশ করছেন। ছবি: এক্স
শামখানি নিজের মেয়ের হাত ধরে তেহরানের বিলাসবহুল এসপিনাস প্যালেস হোটেলের এক ‘ওয়েডিং হলে’ প্রবেশ করছেন। ছবি: এক্স

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির নেতৃত্বাধীন ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান এক বিরল কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছে। খামেনির ঘনিষ্ঠ সহযোগী আলী শামখানির মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও ফাঁস হয়েছে। এতে দেখা গেছে, নববধূ (শামখানির মেয়ে) পরেছেন কাঁধ ও বাহু খোলা এক পোশাক। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পর সমালোচকেরা কঠোর হিজাব নীতির জন্য দায়ী শাসকদের বিরুদ্ধে ভণ্ডামির অভিযোগ তুলেছেন।

বিতর্কিত ভিডিওটি ২০২৪ সালে আলী শামখানির মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানের। শামখানি ইরানের অন্যতম সিনিয়র প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং খামেনির ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা। তিনি নারীদের ওপর কঠোর ইসলামি বিধান প্রয়োগের পক্ষে ছিলেন এবং প্রতিবাদ দমনে সহিংস অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২০২২ সালে দেশজুড়ে হিজাববিরোধী আন্দোলনের সময় শামখানি ছিলেন ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান। তখন হাজার হাজার নারী রাস্তায় নেমে হিজাব পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ক্লিপে দেখা যায়, ইরানের এক্সপিডিয়েন্সি কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডমিরাল শামখানি নিজের মেয়ের হাত ধরে তেহরানের বিলাসবহুল এসপিনাস প্যালেস হোটেলের এক ‘ওয়েডিং হলে’ প্রবেশ করছেন। কনে ফাতিমেহ এ সময় পরে ছিলেন উন্মুক্ত গলা ও ডানাকাটা জামা, মাথায় একটি জলের মতো স্বচ্ছ কাপড়ের ঘোমটা।

শামখানির স্ত্রীও পরে ছিলেন খোলা পিঠ ও পার্শ্ববিশিষ্ট নীল লেইসের গাউন। তাঁর মাথায়ও ছিল না কোনো ওড়না। ভিডিওতে উপস্থিত আরও কয়েকজন নারীও হিজাব ছাড়া ছিলেন।

পশ্চিমা ধাঁচের ওই জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ে এবং কনে ও তাঁর মায়ের খোলামেলা পোশাক ‘বাধ্যতামূলক হিজাবের দেশ ইরানে’ খুবই অস্বাভাবিক। বিষয়টি জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সমালোচকেরা বলছেন, খামেনির শাসনব্যবস্থা দ্বিচারিতা করছে।

ইরানের নির্বাসিত সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী মসিহ আলিনেজাদ এক্সে লিখেছেন, ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্রের শীর্ষ আইনপ্রয়োগকারী আলী শামখানির মেয়ে পরেছেন ডানাকাটা পোশাক। অথচ ইরানে সামান্য চুল খোলা রাখায় নারীদের মারধর করা হচ্ছে আর তরুণেরা বিয়ে করতে সামর্থ্যবান হতে পারছে না।’

আলিনেজাদ আরও বলেন, ভিডিওটি লক্ষাধিক ইরানিকে ক্ষুব্ধ করেছে, কারণ, খামেনি সরকার সাধারণ জনগণের ওপর জোরপূর্বক ‘ইসলামি মূল্যবোধ’ চাপিয়ে দেয়। প্রতিবাদ করলে চলে গুলি, লাঠি ও কারাবাস। তবে নিজেদের বেলায় সেসবের কোনো বালাই নেই।

আলিনেজাদ আরও বলেন, খামেনির প্রধান উপদেষ্টা তাঁর মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন বিশাল প্রাসাদে। যে সরকার মাহসা আমিনিকে সামান্য চুল দেখা যাওয়ার কারণে হত্যা করে, গান গাওয়ার কারণে নারীদের কারাবন্দী করে, ৮০ হাজার ‘নৈতিকতা পুলিশ’ দিয়ে মেয়েদের টেনেহিঁচড়ে তুলে নিয়ে যায়—তারা নিজেরাই আবার বিলাসী পার্টি করে। এটি ভণ্ডামি নয়, এটাই তাদের ব্যবস্থা। তারা ‘সংযম’ শেখায়, অথচ নিজেদের মেয়েরা পরে পশ্চিমা পোশাক। বার্তাটি স্পষ্ট, নিয়ম কেবল আম-জনতার জন্য, শাসকদের জন্য নয়।

ইরানি সাংবাদিক আমির হোসেইন মোসাল্লা সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ভিডিওটি প্রমাণ করে, শাসকগোষ্ঠী নিজেরাই তাদের আরোপিত আইনে বিশ্বাস করে না। তারা শুধু জনগণের জীবন দুর্বিষহ করতে চায়।

গতকাল সোমবার ইরানের সংস্কারপন্থী পত্রিকা শার্ঘ প্রথম পাতায় শামখানির ছবি ছাপিয়ে শিরোনাম দেয়, কেলেঙ্কারিতে খুঁড়ল কবর।

ওয়াশিংটনভিত্তিক মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ডনের ইরান বিশেষজ্ঞ ওমিদ মেমারিয়ান নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, এটা ভণ্ডামির সবচেয়ে নির্ভেজাল রূপ। নারী অধিকারকর্মী এলি ওমিদভারি বলেন, ‘তাদের কনে প্রাসাদে, আমাদের কনে মাটির নিচে।’

এমনকি রেভল্যুশনারি গার্ডসের সংবাদমাধ্যম তাসনিমও শামখানির সমালোচনা করে লিখেছে, ইসলামী প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের জীবনযাপন আরও সাদামাটা ও শালীন হতে হবে, যাতে তাঁদের পক্ষে দুটো কথা বলা যায়। তবে তারা ব্যক্তিগত ভিডিও প্রকাশ করাকে ‘অনৈতিক’ বলেও মন্তব্য করেছে।

তবে শামখানি দাবি করেছেন, ইসরায়েল ভিডিওটি ফাঁস করেছে। ইরান ইন্টারন্যাশনাল তাঁকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে হ্যাক করা এখন ইসরায়েলের নতুন কৌশল।

সাবেক ইরানি মন্ত্রী এজাতোল্লাহ জরগামি শামখানিকে পক্ষ নিয়ে বলেন, তিনি (শামখানি) মাথা নিচু করে ছিলেন এবং অনুষ্ঠানটি ছিল শুধু নারীদের জন্য। কিছু নারী ওড়না পরেছিলেন আর অন্যরা ছিলেন নিকটাত্মীয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মৃত্যুদণ্ড নিয়ে ১২ বছর ইন্দোনেশিয়ার কারাগারে, মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরছেন ব্রিটিশ নারী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২০১৩ সালে ইন্দোনেশিয়ার আদালতে বিচারের মুখোমুখি হন লিন্ডসে স্যান্ডিফোর্ড। ছবি: এএফপি
২০১৩ সালে ইন্দোনেশিয়ার আদালতে বিচারের মুখোমুখি হন লিন্ডসে স্যান্ডিফোর্ড। ছবি: এএফপি

ইন্দোনেশিয়ার কারাগারে ১২ বছর বন্দী থাকার পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্রিটিশ নাগরিক লিন্ডসে স্যান্ডিফোর্ডকে যুক্তরাজ্যে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে হওয়া একটি চুক্তির মাধ্যমে তাঁর মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ৬৯ বছর বয়সী স্যান্ডিফোর্ডকে ২০১২ সালে বিপুল পরিমাণ কোকেন বহন করার অভিযোগে বালি বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর লাগেজের গোপন অংশে প্রায় ১৬ লাখ পাউন্ড (২৬ কোটি টাকার বেশি) মূল্যের কোকেন পাওয়া গিয়েছিল। তিনি থাইল্যান্ড থেকে বালিতে আসছিলেন। এক বছর পর ইন্দোনেশিয়ার আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

স্যান্ডিফোর্ড দাবি করেছিলেন, একটি ব্রিটিশ মাদকচক্র এই পাচারে অংশ নিতে তাঁকে বাধ্য করেছিল এবং তারা হুমকি দিয়েছিল—যদি তিনি রাজি না হন, তবে তাঁর এক ছেলেকে হত্যা করা হবে।

ইন্দোনেশিয়ার আইন, মানবাধিকার ও অভিবাসন বিষয়ক সমন্বয় মন্ত্রণালয় দুজন ব্রিটিশ নাগরিকের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে স্যান্ডিফোর্ড ছাড়া মুক্তি পাওয়া অপর ব্রিটিশ নাগরিক হলেন শাহাব শাহাবাদি। ৩৫ বছর বয়সী শাহাব শাহাবাদি ২০১৪ সালে মাদক মামলায় কারাবন্দী হয়েছিলেন।

মুক্তি পাওয়া স্যান্ডিফোর্ড দীর্ঘ বছর ধরে ইন্দোনেশিয়ার কুখ্যাত কেরোবোকান কারাগারে ছিলেন। ১৯৭৯ সালে ৩৫৭ জন বন্দী ধারণ ক্ষমতার এই কারাগার নির্মিত হলেও বর্তমানে সেখানে এক হাজারেরও বেশি বন্দী রয়েছেন। ২০১৭ সালের এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ জানিয়েছিল, এই কারাগারের প্রায় ৮০ শতাংশ বন্দী মাদক-সংক্রান্ত অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত।

কেরোবোকান কারাগারে একাধিকবার দাঙ্গা ও পালানোর ঘটনা ঘটেছে। ২০১৭ সালে চার বিদেশি কয়েদি ৫০ ফুট দীর্ঘ সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পালিয়ে যান। ১৯৯৯ সালের এক বিদ্রোহে সেখান থেকে প্রায় ৩০০ বন্দী পালান।

ইন্দোনেশিয়ায় বিশ্বের অন্যতম কঠোর মাদকবিরোধী আইন চালু রয়েছে। এর ফলে দেশটিতে বহু বিদেশি নাগরিক মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। ২০১৫ সালে দুই অস্ট্রেলীয় নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনায় ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছিল। স্যান্ডিফোর্ডের সাজা কমানোর আবেদনও ইতিপূর্বে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন ইন্দোনেশিয়ার আদালত। তবে এবার স্যান্ডিফোর্ডের মুক্তি নিয়ে যুক্তরাজ্য ও ইন্দোনেশিয়ার নতুন সহযোগিতামূলক সম্পর্ককে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নামাজ পড়ায় গোমূত্র দিয়ে দুর্গ ‘শুদ্ধ’ করলেন বিজেপি এমপি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৩৭
‘শনিবার ওয়াড়া’তে নারীদের নামাজ ও বিজেপি এমপির গোমূত্র দিয়ে শুদ্ধিকরণ। ছবি: এনডিটিভি
‘শনিবার ওয়াড়া’তে নারীদের নামাজ ও বিজেপি এমপির গোমূত্র দিয়ে শুদ্ধিকরণ। ছবি: এনডিটিভি

ভারতের পুনেতে অবস্থিত দুর্গ ‘শনিবার ওয়াড়া’ মারাঠিদের ঐতিহ্য। সম্প্রতি এই দুর্গে নারীদের নামাজ পড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনজন নারী চাদর বিছিয়ে নামাজ পড়ছেন। এ ভিডিও দেখে ওই স্থানটি গোমূত্র দিয়ে ‘শুদ্ধ’ করলেন বিজেপির সংসদ সদস্য মেধা কুলকার্নি। এ ঘটনায় ভারতের রাজনীতিতে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

মেধা কুলকার্নির এক ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি কয়েকটি হিন্দু সংগঠনের নেতাদের নিয়ে নারীদের নামাজ পড়ার স্থানটি ‘শুদ্ধ’ করার জন্য গোমূত্র (গরুর প্রস্রাব) দিয়ে পরিষ্কার করছেন এবং শিববন্দনা করছেন। কুলকার্নির মতে, মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রতীক এই বিখ্যাত পুনের দুর্গে এমন ঘটনা (নামাজ পড়া) প্রত্যেক পুনেবাসীর জন্য ‘উদ্বেগ ও ক্ষোভের কারণ’।

কুলকার্নি বলেন, ‘এটি দুর্ভাগ্যজনক। শনিবার ওয়াড়া নামাজ পড়ার জায়গা নয়। জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করছি। আমরা শনিবার ওয়াড়ায় শিববন্দনা করেছি। স্থানটি শুদ্ধ করেছি। একটি গেরুয়া পতাকা ওড়ানোর চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু কর্মকর্তারা দেননি। এই লোকেরা যেকোনো জায়গায় নামাজ পড়ে। তারপর সেটাকে ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি বলতে থাকে। এখন হিন্দু সমাজ সতর্ক হয়ে গেছে।’

দুর্গে নামাজ পড়া নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নিতেশ রানে। তিনি বলেন, ‘শনিবার ওয়াড়ার একটি ইতিহাস আছে। এটি সাহসিকতার প্রতীক। শনিবার ওয়াড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি হিন্দুরা হাজি আলী দরগায় গিয়ে হনুমান চালিসা পাঠ শুরু করেন, তাহলে কি মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত লাগবে না? আপনারা মসজিদে নামাজ পড়ুন। এমনটা চললে হাজি আলীতে হনুমান চালিসা ও আরতি করলে তাহলে আপনাদেরও আপত্তি করা উচিত হবে না।’

এদিকে বিজেপি সাংসদ মেধা কুলকার্নির এ কাজের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধী নেতারা। অজিত পাওয়ারের এনসিপির মুখপাত্র রূপালী পাটিল থোমব্রে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টার অভিযোগে কুলকার্নির বিরুদ্ধে মামলা করতে পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। থোমব্রে বলেন, তিনি হিন্দু বনাম মুসলিমের প্রশ্ন তুলছেন, অথচ পুনেতে উভয় সম্প্রদায় সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে।

বিজেপিকে ভারতের ‘ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদ ধ্বংস করার’ জন্য অভিযুক্ত করেছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) মুখপাত্র ওয়ারিশ পাঠান। তিনি বলেন, ‘তারা শুধু বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। জুমার দিনে তিন-চারজন নারী একটি জায়গায় নামাজ পড়েছে, তাতে কী সমস্যা হলো? আমরা তো কখনো আপত্তি করিনি, যখন হিন্দুরা ট্রেনে বা বিমানবন্দরে ‘‘গারবা’’ (নবরাত্রি পালনের আচার) করে। এএসআই স্মৃতিসৌধ সবার জন্য। মাত্র ৩ মিনিটের নামাজে আপনার এত বিরক্তির হলো? কিন্তু সংবিধানের ধারা ২৫ ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার দেয়। তাহলে আপনারা আর কত ঘৃণা ছড়াবেন? আপনাদের মন শুদ্ধ করা উচিত, মনে বিদ্বেষ বাসা বেঁধেছে।’

পুলিশ জানিয়েছে, দুর্গে নামাজ পড়ার ঘটনায় ওই নারীদের বিরুদ্ধে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) এক কর্মকর্তার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা করা হয়েছে। দুর্গে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

পুলিশ বলেছে, ‘শনিবার ওয়াড়ার এএসআই স্মৃতিসৌধের ভেতরে ধর্মীয় প্রার্থনা করা হয়েছিল। এএসআই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করব। আমরা অবশ্যই নিরাপত্তা দেব, নিরাপত্তায় কোনো ত্রুটি থাকবে না। এএসআইয়ের কম্পাউন্ডের ভেতরে ঢুকতে আমরা কাউকে অনুমতি দিইনি। এএসআইয়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই আমরা ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত