Ajker Patrika

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী আন্দোলনে আবারও উত্তাল ভারত 

কলকাতা 
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী আন্দোলনে আবারও উত্তাল ভারত 

ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলে আবারও বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে। উত্তর–পূর্বাঞ্চলের অত্যন্ত প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনগুলো সিএএ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামায় নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে স্থানীয় বাঙালিদের মধ্যে। ২০১৯ সালে আইনটি তৈরি হলেও তা এখনো কার্যকর না হওয়ায় বিজেপির বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ উঠছে। 

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি নেতারা চাইছেন দ্রুত কার্যকর করা হোক সিএএ। তবে উত্তর–পূর্বাঞ্চলের আদিবাসীদের ক্ষোভের কারণে সেখানকার বিজেপি নেতারা সিএএ নিয়ে নীরব রয়েছেন। এই অবস্থায় নতুন করে শুরু হয়েছে সিএএ বিরোধী আন্দোলন। উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় ছাত্র সংগঠন বা নেসোর পক্ষ থেকে সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘সিএএ বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চলবে।’ 

বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে অমুসলিম শরণার্থীদের শর্ত সাপেক্ষে ভারতে নাগরিকত্ব দিতে নতুন এই আইনটি ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর ভারতের পার্লামেন্টে পাশ হয়। আইনটিতে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পারসি, শিখ ও জৈন ধর্মাবলম্বীরা শরণার্থী হয়ে ভারতে আসতে বাধ্য হলে তাঁদের সরকার চাইলে নাগরিকত্ব দিতে পারবে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বিলটি সংসদের পাশ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনুমোদন করেন। কিন্তু তারপর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও সিএএ কার্যকর করার জন্য বিধি তৈরি হয়নি। ফলে কার্যকর হয়নি আইনটি। 

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁকে জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই সিএএ কার্যকর করা হবে। তাঁর এই ঘোষণার পরপরই উত্তর–পূর্বাঞ্চলে সিএএ বিরোধী আন্দোলন আবারও চাঙা হয়।’ এর আগে, অমিত শাহ নিজেই জানিয়েছিলেন, কোভিডের কারণে সিএএ প্রয়োগে দেরি হচ্ছে। 

বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ—ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রদান সংবিধানের বিরোধী। সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা বিবেচনাধীন রয়েছে। ‘আমরা বাঙালির’ নেতা সাধন পুরকায়স্থের অভিযোগ, ‘সিএএ আসলে বাঙালিদের সঙ্গে প্রতারণা মাত্র। কারণ দেশভাগের শিকার বাঙালিদের অনুপ্রবেশকারী পরিচয় দিয়ে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে।’ তিনি সিএএ কার্যকর করা নিয়ে সরকারের টালবাহানা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। 

আদিবাসীদের অভিযোগ, সিএএ কার্যকর হলে শরণার্থীর ঢল নামবে। স্থানীয়রা বঞ্চিত হবেন বলে অভিযোগ করেছেন, উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় ছাত্র সংগঠন বা নেসোর নেতা সমুজ্জ্বল। তবে এর বিপরীত সুরও রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ চাইছেন দ্রুত কার্যকর হোক সিএএ। এই দাবিতে তাঁরা বহুদিন ধরে আন্দোলনও করছেন। 

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্যে সিএএ কার্যকর করতে দেবেন না তিনি। কারণ মুসলিমদের নাগরিকত্বের কথা বলা হয়নি এই আইনটিতে। আবার বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান ছাড়াও প্রতিবেশী অন্যান্য দেশের ধর্মীয় শরণার্থীদের কথাও উল্লেখ না থাকায়ও সিএএ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এখন নতুন করে সিএএ প্রয়োগের কথা বলে বিতর্ক আরও উসকে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত