Ajker Patrika

উঠানে উঠে এল বিশাল কার্গো জাহাজ, বাড়ির মালিক ঘুমিয়েই রইলেন!

অনলাইন ডেস্ক
সমুদ্র থেকে এভাবেই ডাঙায় উঠে আসে বিশাল জাহাজটির একাংশ। ছবি: সিএনএন
সমুদ্র থেকে এভাবেই ডাঙায় উঠে আসে বিশাল জাহাজটির একাংশ। ছবি: সিএনএন

নরওয়ের বাইনেসেট এলাকায় অবস্থিত ত্রনহেইম ফিয়র্ডের তীরে বসবাসকারী ইয়োহান হেলবার্গের জীবনে ঘটেছে অভাবনীয় এক ঘটনা। তাঁর বাড়ির উঠানেই উঠে এসেছে ১৩৫ মিটার দীর্ঘ একটি বিশাল কনটেইনার জাহাজ। কিন্তু এত বড় কাণ্ড ঘটে যাওয়ার পরও গভীর ঘুমে ছিলেন ইয়োহান!

নরওয়ের টেলিভিশন চ্যানেল ‘টিভি২’ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে ইয়োহানের এক প্রতিবেশী তাঁকে ঘুম থেকে জাগিয়ে জিজ্ঞেস করেন, ‘বাইরে একটা নৌকা দেখেছ?’ দরজা খুলে বাইরে তাকিয়ে ইয়োহান দেখতে পান, বিশালাকৃতির একটি জাহাজ দাঁড়িয়ে আছে তাঁর ঘরের একদম সামনের অংশে।

ইয়োহান বলেন, ‘জাহাজটা যদি একটুখানি পাশের পাথুরে ঢালে ধাক্কা দিত, তা হলে সেটা ঘরের গায়ে উঠে পড়ত। মাত্র কয়েক মিটার দূরত্বে রক্ষা পেয়েছি।’

প্রতিবেশী ইয়োস্তাইন ইয়োরগেনসেন সমুদ্রতট থেকে প্রায় ৪০ মিটার দূরে থাকেন। তিনি জানান, ভোর ৫টার দিকে একটা জাহাজের শব্দে তাঁর ঘুম ভাঙে। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখেন, জাহাজটি দ্রুত তীরের দিকে ধেয়ে আসছে।

ইয়োস্তাইন বলেন, ‘আমি দৌড়ে বাইরে গিয়ে চিৎকার করে সবাইকে সতর্ক করতে থাকি। জাহাজটি ঘরের দেয়াল থেকে মাত্র ৮ মিটার দূরে উঠে গিয়ে আটকে যায়। ইয়োহান তখন ঘুমাচ্ছিলেন এবং ঘুম ভেঙে এমনভাবে চমকে ওঠেন যেন এক অতিথি এসেছে।’

শুক্রবার সিএনএন জানিয়েছে, জাহাজটির নাম এনসিএল সাল্টেন। এটি ফিয়র্ডের দক্ষিণ প্রান্তের ওরক্যাঙ্গার বন্দরের দিকে যাচ্ছিল এবং এতে ১৬ জন ক্রু ছিলেন।

শিপিং কোম্পানি এনসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেন্তে হেটল্যান্ড এই ঘটনাকে গুরুতর বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, ‘ভাগ্যক্রমে কেউ আহত হয়নি, এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তবে কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত নই। বিষয়টি তদন্তাধীন।’

জানা গেছে, দুর্ঘটনার পর প্রথমদিকে টাগবোট দিয়ে জাহাজটিকে সরানোর চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। পরে সন্ধ্যায় জোয়ারের সময় আরও একবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতেও সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় আরও ভূ-প্রযুক্তিগত তদন্তের পর আবার চেষ্টার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

যদিও এখন পর্যন্ত জাহাজ থেকে কোনো তেলের নির্গমন হয়নি, তবুও কর্তৃপক্ষ সতর্কতা হিসেবে একটি তেল উদ্ধারকারী জাহাজ প্রস্তুত রেখেছে।

এই ঘটনার পর নরওয়েজিয়ান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাস্যরসের বন্যা বইছে। কেউ লিখেছেন, ‘কারও বাড়ির উঠানে গাড়ি নয়, জাহাজ পার্ক হয়—এই হলো প্রকৃত নরওয়েজিয়ান অভিজাত জীবন!’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত