Ajker Patrika

ইউরোপ তার নিজের জন্যই হুমকি

  • ইউরোপীয় সরকারগুলোর বিরুদ্ধে সরব জেডি ভ্যান্স।
  • অভিবাসন নিয়ে ভোটারদের উদ্বেগ উপেক্ষার অভিযোগ।
  • নিরাপত্তা রক্ষায় নিজেদেরই উদ্যোগী হতে হবে।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১: ২৫
ইউরোপ তার নিজের জন্যই  হুমকি

চীন কিংবা রাশিয়া নয়, ইউরোপের হুমকি এই মহাদেশের দেশগুলো নিজেরাই। জার্মানিতে গত শুক্রবার মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে এমন দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।

বিবিসির খবরে বলা হয়, জেডি ভ্যান্স ইউক্রেন যুদ্ধের সম্ভাব্য অবসানের বিষয়ে কথা বলবেন বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু তিনি বক্তব্যের বেশির ভাগ সময়ই ব্যয় করেছেন যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের সরকারগুলোকে দায়ী করে। তাঁর দাবি, সরকারগুলো মূল্যবোধ থেকে সরে আসছে। অভিবাসন ও মুক্তমতের বিষয়ে ভোটারদের উদ্বেগ উপেক্ষা করছে তারা।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট তাঁর বক্তব্যে মূলত ট্রাম্প প্রশাসনের চিন্তাধারাই বারবার তুলে ধরেছেন। ইউরোপের দেশগুলোকে তাদের নিরাপত্তার জন্য নিজেদেরই উদ্যোগী হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ইউক্রেন ইস্যুতে জেডি ভ্যান্স বলেন, একটি যৌক্তিক সমঝোতায় পৌঁছানো যেতে পারে। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শান্তি আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছেন।

ব্যাপক অভিবাসনের জন্য ইউরোপকে দায়ী করার পাশাপাশি কিছু মৌলিক মূল্যবোধ থেকে সরে আসার জন্য ইউরোপের নেতাদের অভিযুক্ত করেন জেডি ভ্যান্স। তবে তাঁর এমন বক্তব্যকে ইউরোপের সঙ্গে ‘লড়াইকে চাঙা করার চেষ্টা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান কাজা কাল্লাস।

জেডি ভ্যান্স তাঁর ২০ মিনিটের ভাষণে যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি একটি মামলার বিষয় তুলে ধরেন, যেখানে একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা একটি গর্ভপাত ক্লিনিকের বাইরে প্রার্থনা করায় ১৫০ মিটার সেফ জোনের নিয়ম লঙ্ঘন করার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন।

এই সেফ জোনের বিষয়টি চালু করা হয়েছে ২০২২ সালের অক্টোবরে। এতে গর্ভপাতের পক্ষে বা বিপক্ষে যেকোনো তৎপরতা, প্রতিবাদ, হয়রানি কিংবা নজরদারি নিষিদ্ধ করা হয়। জেডি ভ্যান্সের দাবি, যুক্তরাজ্যে ধর্ম পালনকারীদের মৌলিক স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে।

জার্মানিতে জাতীয় নির্বাচনের ৯ দিন আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কট্টর ডানপন্থী অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)-কে সহযোগিতা না করারও সমালোচনা করেন জেডি ভ্যান্স। নাৎসিদের পরাজয়ের পর গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনের কয়েক দশক ধরে দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একেবারে ডানপন্থী দলগুলোর সঙ্গে কাজ না করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়। এর সমালোচনা করে জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘গণতন্ত্র এমন একটি নীতি, যেখানে মানুষের কণ্ঠস্বর গুরুত্বপূর্ণ। এখানে দেয়াল তৈরির কোনো জায়গা নেই। আপনি হয় নীতি মানবেন কিংবা মানবেন না।’

জেডি ভ্যান্স এমন মন্তব্যের পর এএফডির চ্যান্সেলর প্রার্থী অ্যালিস ভাইডেল এক্সে ওই বক্তব্যের একাংশ শেয়ার করে লিখেছেন ‘দুর্দান্ত’। তাঁরা পরে সাক্ষাৎও করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

জেডি ভ্যান্স তাঁর বক্তব্যে রোমানিয়ার নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেছেন, যেটি গত ডিসেম্বরে বাতিল হয়ে যায়। কিছু নথি থেকে জানা যায়, ওই নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ছিল। সেদিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যদি আপনাদের গণতন্ত্র বিদেশি কোনো দেশের ১ লাখ ডলারের ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের কারণে ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে সেটি আসলে শুরু থেকেই যথেষ্ট শক্তিশালী নয়।’ তবে রোমানিয়ার প্রধানমন্ত্রী মার্সেল সিওলাসু বলেছেন, তাঁর দেশ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ধারক, যেই মূল্যবোধ ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শেয়ার করে। এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, রোমানিয়ার সব প্রতিষ্ঠান নাগরিকদের ক্ষমতায়ন এবং স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার নিশ্চয়তার মাধ্যমে একটি মুক্ত ও অবাধ নির্বাচনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত