Ajker Patrika

পশ্চিমা বয়কট যেভাবে মোকাবিলা করছে রাশিয়া

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

ইউক্রেনের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়া থেকে নিজেদের লাভজনক ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে অনেক পশ্চিমা ব্র্যান্ড। মস্কোর ওপর পশ্চিমা দুনিয়ার বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার কারণে এমন পদক্ষেপ নিতে হয়েছে তাদের। প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি এর প্রভাব পড়েছে তাদের রুশ ভোক্তাদের ওপরও। এসব ভোক্তার অনেকেই এখন চেষ্টা করছে বিকল্প উপায়ে তাদের চাহিদা পূরণের। 

নিজের জন্য একটি অ্যাপল ওয়াচ কিনতে চেয়েছিলেন মস্কোর বাসিন্দা জোয়া (৬২)। কিন্তু ইউক্রেন ইস্যুতে আগেই রাশিয়ায় নিজেদের ব্যবসা বন্ধের ঘোষণা দেয় অ্যাপল। ফলে ইতালিতে বসবাসরত মেয়েকে দেখতে গিয়ে সেখান থেকেই ঘড়িটি কেনার পরিকল্পনা করেন জোয়া। 

আল-জাজিরার সঙ্গে আলাপকালে এই নারী জানান, ২০২৩ সালের আগস্টে মেয়ের কাছে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু ওই সফরের সপ্তাহখানেক আগে অনলাইনে কেনাকাটা করতে গিয়ে ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। সেদিন ইয়ানডেক্স ডট মার্কেট নামের একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস ব্রাউজ করছিলেন। হঠাৎ করে অনলাইন প্ল্যাটফর্মটিতে অ্যাপল ওয়াচ দেখতে পান। সেখান থেকে ঘড়িটি কেনেন তিনি। জোয়ার ভাষায়, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, অপরিচিত একটি দেশে দোকানে খুঁজে বেড়ানোর চেয়ে অনলাইনে কেনাকাটা করা অনেক সহজ।’ 

মস্কোর একটি বারের ব্যবস্থাপক মার্গারিটা আল-জাজিরাকে বলেন, রাশিয়া থেকে পার্নোড রিকার্ড ও ব্রাউন-ফরম্যানের মতো অ্যালকোহল ব্র্যান্ডের চলে যাওয়া তাঁর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ক্রেতাদের এখন স্বল্প পরিচিত ব্র্যান্ডের অ্যালকোহল দিয়ে বলতে হচ্ছে, ‘অপেক্ষাকৃত সস্তা দামে আপনি এটি কিনতে পারবেন।’ 

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় ২০২২ সালের পর রাশিয়া থেকে ব্যবসা সরিয়ে নেওয়া প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোম্পানির মধ্যে অ্যাপলের মতো আন্তর্জাতিকস্বীকৃত বেশ কিছু ব্র্যান্ডও রয়েছে। আল জাজিরার অনুসন্ধান বলছে, ওই ঘটনার দুই বছর পর এখনো এসব কোম্পানির অনেক পণ্য রাশিয়ায় ব্যাপকভাবে বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে মূলত একধরনের কৌশলের আশ্রয় নেন রুশ ব্যবসায়ীরা। তাঁরা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে এগুলো আমদানির জন্য বিকল্প সরবরাহ চেইনের একটি নেটওয়ার্ক স্থাপনে সমর্থ হয়েছেন। এই পুরো প্রক্রিয়ায় রুশ সরকারেরও সায় রয়েছে। 

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধের প্রথম বছর রাশিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) যেখানে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল, সেখানে বাস্তবে এটি কমেছে মাত্র ২ দশমিক ১ শতাংশ। 

ব্রাসেলসভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্রুগেল বলছে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর প্রথম চার মাসে রাশিয়ায় আমদানি করা সব পণ্যের দাম আগের চার মাসের তুলনায় অর্ধেকে নেমে আসে। তবে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশটির সামগ্রিক আমদানি কমেছে মাত্র ৮ শতাংশ। যদিও মনে করা হয়, প্রকৃতপক্ষে এ হার ১৫ থেকে ১৬ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত