Ajker Patrika

সিসিলির লৌহ যুগের সমাধিটি এক নারী যোদ্ধার, প্রমাণ দিলেন বিজ্ঞানীরা

সিসিলির লৌহ যুগের সমাধিটি এক নারী যোদ্ধার, প্রমাণ দিলেন বিজ্ঞানীরা

গত ২৪ বছর ধরে রহস্যে মোড়া ছিল বিষয়টি। ২ হাজার বছরের পুরোনো ওই সমাধিটি ১৯৯৯ সালে সিসিলির ব্রাইহার দ্বীপে আবিষ্কৃত হয়েছিল। এরপর থেকে সমাধিটি কোনো পুরুষ নাকি নারীর তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। অবশেষে ‘হিস্টোরিক ইংল্যান্ড’-এর গবেষকেরা দাবি করেছেন, লৌহ যুগে ওই সমাধিতে কোনো পুরুষ নয় বরং এক নারীকে সমাহিত করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, ওই নারী একজন সম্মানিত যোদ্ধা ছিলেন বলেও উল্লেখ করেন গবেষকেরা। 

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে দ্য ইনডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম ইউরোপে লৌহ যুগের যেসব সমাধি আবিষ্কৃত হয়েছে, তার মধ্যে সিসিলির ওই সমাধিটি ছিল সবচেয়ে ব্যতিক্রম। কারণ সেখানে যাঁকে সমাহিত করা হয়েছিল তার সঙ্গে এক তলোয়ার ও একটি আয়না রাখা ছিল। আর এই বিষয়টিই গবেষকদের জটিলতার মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। 

গবেষকেরা জানান, একই সময়ের অন্যান্য সমাধিগুলোতে তলোয়ার এবং আয়নার মধ্যে যে কোনো একটি বস্তু পাওয়া গেছে। তলোয়ার থাকার মানে ওই সমাধিতে কোনো পুরুষকে সমাহিত করা হয়েছিল। আর আয়না থাকার মানে হলো-ওই সমাধিতে কোনো নারীকে সমাহিত করা হয়েছিল। 

এ অবস্থায় ওই সমাধিতে একসঙ্গে দুটি বস্তু থাকায় গবেষকেরা বলছেন, আয়না থাকার মানে হলো-সেখানে একজন নারীকে সমাহিত করা হয়েছিল। আর যেহেতু একটি তলোয়ারও ছিল তাই ধরে নেওয়া যায়—ওই নারী একজন যোদ্ধাও ছিলেন। 

এ বিষয়ে ‘হিস্টোরিক ইংল্যান্ড’-এর মানব কঙ্কাল বিশেষজ্ঞ সারাহ স্টার্ক বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধানগুলো এই গুরুত্বপূর্ণ সমাধিটিকে নতুন করে ব্যাখ্যা করতে একটি উত্তেজনাপূর্ণ সুযোগ দিয়েছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘সমাধিতে পাওয়া বস্তুর প্রতীকী অর্থ সম্পর্কে আমরা পুরোপুরি জানতে না পারলেও একটি তলোয়ার এবং একটি আয়নার যৌথ উপস্থিতি থেকে বোঝা যায় যে, ওই নারী তাঁর সম্প্রদায়ে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ছিলেন এবং স্থানীয় যুদ্ধ কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর ওপর অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।’ 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই সমাধিতে পাওয়া শবের ডিএনএ বিশ্লেষণ করে লিঙ্গ নির্ধারণের কোনো উপায় ছিল না। কারণ হাজার বছরের ব্যবধানে শবের হাড়গুলো অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়েছিল। তবে বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক অগ্রগতি গবেষকদের এ বিষয়ে আরেক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। কারণ দাঁতের এনামেল পরীক্ষার মাধ্যমেও এখন লিঙ্গ নির্ধারণ করা সম্ভব। 

দাঁতের এনামেল মানবদেহের সবচেয়ে শক্ত এবং টেকসই অংশ। এ ছাড়া দাঁতের মধ্যে এক্স কিংবা ওয়াই ক্রোমোজোমের বৈশিষ্ট্য নির্ধারণের মতো প্রোটিন রয়েছে। 

এ অবস্থায় সিসিলির ওই সমাধিতে থাকা ব্যক্তির দাঁত পরীক্ষা করে গবেষকেরা তাঁকে নারী হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। 

ডেভিসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক দলটির অন্যতম সদস্য গ্লেনডন পার্কার এ বিষয়ে বলেন, ‘হাড়গুলো বাজেভাবে ক্ষয় হয়ে গেলেও দাঁতের পরীক্ষা থেকে আমরা ৯৬ শতাংশ পর্যন্ত নিশ্চিত যে, ওই সমাধিতে একজন নারীকেই সমাহিত করা হয়েছিল।’ 

সম্প্রতি দ্য জার্নাল অফ আর্কিওলজিক্যাল সায়েন্স রিপোর্টস-এ গবেষকদের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তুমি ঘুমাও কীভাবে’, সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের বিস্ময়

বিদ্যালয়ে সময় দেন না শিক্ষক, ইউএনওর কাছে অভিযোগ করায় সহকর্মীকে মারধর

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত