Ajker Patrika

‘ন্যাটো কার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করছে, কে তাদের আক্রমণ করছে’

অনলাইন ডেস্ক
২০১১ সালে ন্যাটোর সম্মেলনে সের্গেই লাভরভ। ছবি: ন্যাটো
২০১১ সালে ন্যাটোর সম্মেলনে সের্গেই লাভরভ। ছবি: ন্যাটো

ন্যাটোর সম্প্রসারণবাদী মনোভাব নিয়ে আবারও সরব হয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তিনি বলেছেন, ন্যাটো যে সম্প্রসারণবাদী মনোভাব প্রদর্শন করছে তা মোটে ঠিক নয়। তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, ‘ন্যাটো কার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করছে? কে তাদের আক্রমণ করছে?’

রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির খবরে বলা হয়েছে, আজ সোমবার হাঙ্গেরির পত্রিকা ‘মাজিয়ার নেমজেতকে’ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লাভরভ এই প্রশ্ন রাখেন। তিনি বলেন, ন্যাটো অনেক আগেই প্রতিরক্ষামূলক জোটের চরিত্র হারিয়েছে।

লাভরভের মতে, ন্যাটো ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করার যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তা সরাসরি রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং মস্কোর সামনে সামরিক অভিযান শুরু ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না। তিনি বলেন, ‘ন্যাটোর সদস্যরা যখন যুগোস্লাভিয়া, ইরাক বা লিবিয়ায় অভিযান চালিয়েছিল, তখন তারা কাদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করছিল? কে তাদের আক্রমণ করেছিল?’

রাশিয়ার সীমান্তের দিকে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই সামরিক জোট সম্প্রসারণ চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইউক্রেনকে রাশিয়াকে ঠেকানোর জন্য ‘সামরিক ঘাঁটিতে’ পরিণত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন লাভরভ। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে ন্যাটোর ঘাঁটি স্থাপন এবং দেশটির সামরিক জোটে সম্পৃক্ততা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য তাৎক্ষণিক হুমকি। এই পরিস্থিতি আমাদের জন্য একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

২০২১ সালে, ইউক্রেন সংকট উসকে ওঠার কিছুদিন আগে, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কাছে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চেয়েছিল, যাতে ইউক্রেন নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে পারে। লাভরভ বলেন, ‘আমাদের সেই উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়।’ তিনি বলেন, বরং পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে ভরিয়ে দেয় এবং দনবাস ও ক্রিমিয়ার সমস্যার সামরিক সমাধানের পথ বেছে নেয়।

লাভরভ আরও বলেন, ইউক্রেনের রুশভাষী জনগণের ওপর দমন-পীড়নও এই সংঘাতের আরেকটি কারণ। তিনি দাবি করেন, ২০১৪ সালে কিয়েভে পশ্চিমা-সমর্থিত অভ্যুত্থানের পর থেকেই ইউক্রেনে রুশদের নিপীড়ন ও হত্যা করা হচ্ছে। তিনি উদাহরণ দেন ওই বছরের ওদেসা হত্যাকাণ্ডের, যেখানে সরকারবিরোধী বহু কর্মীকে বাণিজ্য ইউনিয়ন ভবনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়।

এ ছাড়া, ইউক্রেনের সরকার রুশ ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত হেনেছে বলেও অভিযোগ করেন লাভরভ। তিনি বলেন, ‘জোরপূর্বক ইউক্রেনীয়করণের কারণে শুধু রুশ নয়, হাঙ্গেরিয়ান, রোমানিয়ান, পোলিশ, বুলগেরিয়ান, আর্মেনিয়ান, বেলারুশিয়ান এবং গ্রিক জাতিগোষ্ঠীর লোকজনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ইউক্রেন সংকটের মূল কারণগুলো সমাধান না করা পর্যন্ত স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়। এর মধ্যে রয়েছে কিয়েভের ন্যাটো সদস্যপদ প্রত্যাখ্যান, ইউক্রেনে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিশ্চিত করা এবং ‘নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার’ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত