Ajker Patrika

লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আ. লীগ নেতার সাক্ষাতে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের ভ্রুকুটি

অনলাইন ডেস্ক    
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪: ২৪
Thumbnail image
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার। ছবি: ফেসবুক

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর গত ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে সাক্ষাতের বিষয়ে আপত্তি তুলে ধরেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, খুন, গুম ও সহিংসতার ব্যাপক অভিযোগ থাকার পরও দলটির নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। গ্লাসগোর ক্রাউন প্লাজা হোটেলে লেবার পার্টির এক ডিনারে তাঁদের মধ্যে দেখা হয়। একটি ছবিতে দুজনকে কথা বলতেও দেখা যায়।

এই সাক্ষাতকে লেবার পার্টি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে কয়েক দশকের ‘সেতুবন্ধনের চূড়ান্ত উদাহরণ’ হিসেবে তুলে ধরেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ আসনে জয় এবং ব্রিটেনের বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে লেবার পার্টির ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে এই সম্পর্ক। এর ফলে শেষ পর্যন্ত ভোটের রাজনীতিতে লেবার পার্টি সুবিধা পেয়েছে।

তবে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে এবং এই দুই দলের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কনটেন্ট বিশ্লেষণ করে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস দেখতে পেয়েছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে লেবার পার্টির সম্পর্ক ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হয়েছে। লেবার পার্টি নির্বাচিত বাংলাদেশি রাজনীতিবিদদের সমর্থন নিয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ব্যক্তির কাছ থেকে স্টারমারকে একটি চেক গ্রহণ করতেও দেখা গেছে।

লেবার পার্টির নেতা ও লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এবং কিয়ার স্টারমার উভয়কেই আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মতো নেতাদের সঙ্গে দেখা গেছে। গত মে মাসে চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাতের একটি ছবি পোস্ট করে সাদিক খান লিখেছিলেন, এটি তাঁর জন্য এক ‘বিশাল সম্মান’।

নির্বাচনী তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত জুলাইয়ে অন্তত ১৭টি পার্লামেন্টারি আসনে ভোটারদের বাংলাদেশি জনসংখ্যা লেবার পার্টির জয়ের ব্যবধানের চেয়ে বেশি ছিল। স্টারমারের নিজের আসন হোলবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাসেও বাংলাদেশি ভোটারের সংখ্যা ৬ হাজারের বেশি।

গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা যুক্তরাজ্যজুড়ে লেবার পার্টির জন্য প্রচারণা চালায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, তারা ল্যাঙ্কাশায়ার ও গ্রেটার ম্যানচেস্টারে বিভিন্ন প্রচারণায় অংশ নেয় এবং টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে প্রচারণায়ও যোগ দেয়।

লেবার পার্টির এক কর্মকর্তা ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানান, সিদ্দিক ও তাঁর পরিবারের বাংলাদেশি রাজনৈতিক ইতিহাস লেবার পার্টির বাংলাদেশি কমিউনিটিতে প্রভাব বিস্তারে ভূমিকা রেখেছে। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত লেবার ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠন লেবার পার্টির প্রচারণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

তবে, সংগঠনটির আওয়ামী লীগের প্রতি পক্ষপাতিত্ব নিয়ে সমালোচনা করেছেন বিএনপির সাবেক সদস্য ও সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ওহিদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি লেবার ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচারণার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত