Ajker Patrika

সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে ব্রিটেনও

অনলাইন ডেস্ক
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। ছবি: এএফপি
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। ছবি: এএফপি

ইসরায়েল যদি ফিলিস্তিনিদের জীবনমান উন্নয়নে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়, তবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে পারে ব্রিটেন। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এমন ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে ফ্রান্সের পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দ্বিতীয় পশ্চিমা সদস্য হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে ব্রিটেন। এর ফলে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার পদ্ধতি নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্বে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ আরও স্পষ্ট হবে।

স্টারমার বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণ দীর্ঘকাল ধরে ভয়াবহ দুর্দশার মধ্যে আছে। গাজায় খেতে না পেয়ে শিশুরা মারা যাচ্ছে। এই দুর্ভোগ শেষ হওয়া দরকার।’ তিনি স্পষ্ট জানান, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কারও একক ভেটো থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যায়ন করে দেখা হবে, ইসরায়েল কত দূর মানবিক সহায়তা প্রবেশের পথ খুলেছে, পশ্চিম তীর দখলের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে এবং একটি টেকসই শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কি না। এই শান্তি প্রক্রিয়ার লক্ষ্য হবে—‘দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান’, অর্থাৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও ইসরায়েল পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করবে।

এই ইস্যুতে আজ মঙ্গলবার গ্রীষ্মকালীন ছুটি ভেঙে জরুরি মন্ত্রিসভা বৈঠক ডাকেন স্টারমার। বৈঠকে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যৌথভাবে গৃহীত নতুন শান্তি পরিকল্পনা ও গাজার ২২ লাখ মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা আরও কীভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়।

দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন সরকার বলে এসেছে, ‘যথোপযুক্ত সময়’ হলে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে লন্ডন, তবে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বা শর্ত আগে নির্ধারণ করা হয়নি। এবার সেই সিদ্ধান্ত বাস্তব রূপ পেতে চলেছে।

গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা ঘনিয়ে আসার প্রেক্ষিতে স্টারমারের লেবার পার্টির অনেক এমপি এখন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন, যাতে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ে।

এ ইস্যুটি আরও জোরালো হয় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ গত সপ্তাহে যখন জানান, ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় ইসরায়েল যে অঞ্চলগুলো দখল করেছে, সেগুলোকে ভিত্তি ধরে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স।

তবে ইসরায়েল ও তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে। তারা বলছে, এটি হামাসের মতো গোষ্ঠীর জন্য একটি ‘পুরস্কার’ হিসেবে দেখা হবে, যারা গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে বর্তমান যুদ্ধের সূচনা করে।

উল্লেখ্য, গত বছর গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় স্টারমার বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিলেন। তবে ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাঁর অবস্থান ধীরে ধীরে আরও কড়া হয়েছে।

স্টারমারের সরকার ইতিমধ্যে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিরুদ্ধে করা আগের সরকারের আপত্তি প্রত্যাহার করেছে এবং ইসরায়েলে কিছু অস্ত্র রপ্তানিও স্থগিত করেছে। এ ছাড়া গত মাসে ব্রিটেন ইসরায়েলের দুজন কট্টর-ডানপন্থী মন্ত্রী— ইতামার বেন-গভির ও বেজালেল স্মোট্রিচের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বারবার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত